বগুড়া-৩ (আদমদীঘি-দুপচাঁচিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক নেতা আবদুল মোমেন তালুকদার খোকা (৭৬) ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
বগুড়া জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি মোশাররফ হোসেন তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, তিন মেয়ে এবং নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন।
স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, আবদুল মোমেন তালুকদার খোকা বগুড়া-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জেলার আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নের কালাইকুড়ি গ্রামের মৃত আবদুল মজিদ তালুকদারের তৃতীয় ছেলে। বাবার মৃত্যুর পর খোকা ওই আসন থেকে ২০০১ ও ২০০৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি কেন্দ্রীয় বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
খোকা দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যায় অসুস্থ ছিলেন। কয়েকদিন আগে তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার দুপুরে তিনি মারা যান।
তার ছোট ভাই আবদুল মুহিত তালুকদার জানান, মঙ্গলবার রাতেই মরদেহ গ্রামের বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নের কালাইকুড়ি গ্রামে আনা হবে। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বাদ জোহর গ্রামে পারিবারিক গোরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হবে।
স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগের শাসনামলে সাবেক এমপি ও বিএনপি নেতা আবদুল মোমেন তালুকদার খোকার বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে। এ ব্যাপারে তৎকালীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তার বিচার শুরু হয়। গত ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারকের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তিনটি অভিযোগে খোকাকে পলাতক অবস্থায় ফাঁসির রায় দেন।
এরপর থেকে আবদুল মোমেন তালুকদার খোকা পলাতক ছিলেন। আওয়ামী লীগ এ রায়কে মানবতার জয় হিসেবে উল্লেখ করলেও বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে প্রচণ্ড ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছিল।