রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আমেনা বেগম নামে চিকিৎসাধীন এক রোগীকে ভুল ইনজেকশন দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (২০ মে) দুপুর সোয়া ১টার দিকে মেডিসিন ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটে। ওই নারী সেনাসদস্য জিয়ার মা।
এ ঘটনায় সেনাসদস্যের আহাজারিতে পুরো ওয়ার্ডে শোকাবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অন্য রোগীর স্বজনরাও বিক্ষোভ ফেটে পড়েন। এ সময় দুদক রংপুরের একটি টিম হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসা কার্যক্রম পরিদর্শন করছিলেন। সেনাসদস্যের মায়ের আকস্মিক মৃত্যুর বিষয়টি তাদেরও নজরে আসে।
রংপুর সেনানিবাসের মেডিক্যাল কোরে কর্মরত সেনাসদস্য জিয়া জানান, তাদের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার সদর থানার জাফরের চর গ্রামে। তার মা সেখানেই থাকেন। শনিবার হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কুড়িগ্রাম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে তিনি কুড়িগ্রাম হাসপাতালে ছুটে যান। চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করার পরামর্শ দেন। এরপর রবিবার তার মাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসকরা এমআরআই করতে বললে হাসপাতালের বাইরে প্রাইভেট হাসপাতাল থেকে এমআরআই করিয়ে আনেন। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এক চিকিৎসক এসে জরুরি ভিত্তিতে ইনজেকশন দিতে বলেন। এরপর হাসপাতালে সেই ইনজেকশন না থাকায় বাইরে থেকে ইনজেকশন কিনে এনে শরীরে পুশ করার সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
ঘটনার আকস্মিকতায় হতবিহ্বল হয়ে পড়েন সেনা সদস্য জিয়া ও স্বজনরা। এ সময় সেনা সদস্যের বুক ফাটা আর্তনাদ হাসপাতাল এলাকা ভারী হয়ে ওঠে। তিনি বিলাপ করতে করতে অভিযোগ করেন, তার মাকে ভুল ইনজেকশন দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে।
এ সময় দুদকের রংপুর সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শাওন মিয়া দুদকের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে ওই ওয়ার্ডে গেলে তার কাছে বিচার দাবি করে কাঁদতে থাকেন সেনা সদস্য ও স্বজনরা।
মেডিসিন ওয়ার্ডের কোনও চিকিৎসককে সেখানে পাওয়া যায়নি। পরে হাসপাতালের পরিচালক ডা. ইউনুছ আলীর সঙ্গে তার চেম্বারে কথা বলতে গেলে তিনি জানান, বিষয়টি কিছুক্ষণ আগে জেনেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।