দিনাজপুরে মোবাইল চুরির সন্দেহে এক শিশুকে মারধর করে বস্তায় ভরে নদীতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এলাকার লোকজন তাদের মারধর দিয়ে পুলিশের নিকট সোপর্দ করেছে।
আজ বুধবার (১৪ মে) দুপুর দেড়টার দিকে দিনাজপুর সদর উপজেলার শশরা ইউনিয়নের সাহেবগঞ্জ হাটের পশ্চিমে গাবুড়া নদী ঘাট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
দিনাজপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এই ঘটনায় অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় শিশুটির পিতা অভিযোগ দায়ের করবেন।
আটকরা হলেন- দিনাজপুর সদর উপজেলার কমলপুর ইউনিয়নের আইহাই গ্রামের মৃত মহিউদ্দিনের ছেলে খাদিমুল ইসলাম (৩৮) ও তার ভাতিজা মোহাম্মদ নুর হাবিব নয়ন (২০)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুরে গাবুড়া নদীর পাড়ে দুই ব্যক্তি এক শিশুকে (১৪ বছর বয়স নাম সাজেদুর রহমান) মারধর করে। পরে ওই শিশুটিকে একটি চটের বস্তায় ঢুকিয়ে মুখ বেঁধে নদীতে ফেলে দেয়। বিষয়টি স্থানীয় একজন দেখে ফেলে চিৎকার চেঁচামেচি করলে স্থানীয় লোকজন এসে নদী থেকে বস্তাবন্দি শিশুকে উদ্ধার করে এবং ওই দুই জনকে আটক করে। এ সময় তাদের মারধর করে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেন। দুপুর আড়াইটার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্ত দুই ব্যক্তিকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
শিশুটির বাবা হাফেজুর রহমান জানান, তার ছেলে লেখাপড়ার পাশাপাশি রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করেন। গত শনিবার সন্ধ্যায় কমলপুর বাজারের মুদি দোকান থেকে নুর হাবিব নয়নের একটি স্মার্টফোন হারিয়ে যায়। সন্ধ্যার দিকে তার ছেলে ওই দোকানে গিয়েছিল বিধায় তার ছেলেকে চোর সন্দেহ করা হয়। এটি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও বিষয়টি অস্বীকার করে সে।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কাজের উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় টেম্পু থেকে তার ছেলেকে আটক করে একটি মোটরসাইকেল তুলে নেয় নয়ন ও তার চাচা খাদিমুল ইসলাম। পরে তার ছেলেকে নদীর ঘাটে নিয়ে গিয়ে মারধর করে এবং একপর্যায়ে বস্তায় ভরে মুখ বেঁধে নদীতে ফেলে দেন। এই ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানান তিনি।
দিনাজপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান বলেন, ‘একটি মোবাইল ফোন চুরির সন্দেহে ওই ছেলেকে একটি মোটরসাইকেলে করে অভিযুক্ত দুইজন অপহরণ করে। পরে ওই ছেলেকে নদীর ধারে নিয়ে গিয়ে মারধর করে। একপর্যায়ে চটের বস্তায় ভরে এবং বস্তার মুখ বেঁধে নদীতে ফেলে দেয়। এ সময় স্থানীয় একজন সেটি দেখে ফেলে চিৎকার চেঁচামেচি করলে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে অভিযুক্তদের আটক করে মারধর করে এবং শিশুটিকে নদী থেকে উদ্ধার করে। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান শেষে অভিযুক্তদের আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। এই ঘটনায় ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করবেন সেই প্রস্তুতি চলছে।’