জাপানি সংস্থা নিহন হিদানকিয়ো গ্রুপকে ২০২৪ সালের শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করেছে নরওয়েজীয় নোবেল কমিটি। পারমাণবিক হামলায় নিহতদের স্মরণে হিরোশিমায় নির্মিত স্মৃতি উদ্যানের দর্শনার্থীরা আশা প্রকাশ করেছেন, শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সংস্থাটিকে শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করার মধ্য দিয়ে বৈশ্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা আরও জোরালো হলো। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
১৯৪৫ সালে হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে ভয়াবহ পারমাণবিক বোমা হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের প্রতিনিধিত্বকারী এই সংস্থা বহুবছর ধরে পরমাণু অস্ত্র বিলোপে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে।
স্মৃতি উদ্যানে এক বন্ধুর সঙ্গে এসেছিলেন ২১ বছর বয়সী উই তোরিসাওয়া। তিনি রয়টার্সকে বলেছেন, ‘জাপানের নাগরিক হিসেবে আমি বিশ্বাস করি, এমন মর্মান্তিক ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে, তা যেকোনও মূল্যে নিশ্চিত করতে হবে। পারমাণবিক বোমা হামলার শিকার হওয়া একমাত্র দেশ জাপান। তাই অন্য কোনও দেশের ওপর যেন এই অভিশাপ না পড়ে, তা নিশ্চিতে সবচেয়ে বেশি অবদান জাপানই রাখতে পারবে।’
দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ফুকুয়োকা প্রিফেকচার থেকে স্মৃতি উদ্যানে স্ত্রী-সন্তানসহ এসেছিলেন ইয়াসুহিরো সুজুকি। তিনি বলেছেন, ‘পারমাণবিক শক্তি বিশ্বের জন্য অকল্পনীয় সুবিধা নিয়ে আসতে পারে। তবে এর অপব্যবহার থেকে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমি মনে করি, এর মধ্য দিয়ে (নিহন হিদানকিয়োর পুরস্কার প্রাপ্তি) বিশ্ববাসী পারমাণবিক শক্তির বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আবারও ভাবার অবকাশ পেলো।’
হিরোশিমার শান্তি উদ্যান জাপানিসহ বিদেশিদেরও যথেষ্ট আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও এই উদ্যান পরিদর্শন করেছেন।
হিরোশিমা ও নাগাসাকি হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে মনে করেন অনেক জাপানি নাগরিক। পারমাণবিক হামলার পর মার্কিন নিরাপত্তা বলয়ে ঢুকে যায় জাপান। সংবিধান সংশোধন করে নিজেদের যুদ্ধ ঘোষণার অধিকার পরিত্যাগ করে তারা। জাপানের সেনাবাহিনী এখন কেবল প্রতিরক্ষার জন্য নিয়োজিত আছে।
তোরিসাওয়ার সঙ্গে উদ্যানে এসেছিলেন ২২ বছর বয়সী শিক্ষার্থী আয়ানে তাকিগুচি। তিনি বলেছেন, ‘পারমাণবিক বোমা হামলার ভুক্তভোগীদের প্রতিনিধিত্বকারী একটি সংস্থা শান্তি পুরস্কার পেয়েছে। এটি অত্যন্ত সম্মানজনক। আমি সম্প্রতি অনুধাবন করেছি, শান্তি প্রতিষ্ঠায় শিক্ষা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই সিদ্ধান্তে আমি আনন্দিত।’