ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি ধনী দেশ ২০৩৫ সালের মধ্যে জলবায়ু তহবিলে বছরে ৩০০ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিতে সম্মত হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাতে শনিবার (২৩ নভেম্বর) ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
শুক্রবার সম্মেলন শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ২০০ দেশের মধ্যকার আলোচনায় দীর্ঘসূত্রিতার কারণে তা শনিবার পর্যন্ত গড়ায়। ঐকমত্যের ভিত্তিতে আগামী এক দশকের জন্য বৈশ্বিক জলবায়ু তহবিল পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে এই দীর্ঘ আলোচনা হয়।
শুক্রবার আজারবাইজানের সভাপতিত্বে কপ ২৯ সম্মেলনে ২৫০ বিলিয়ন ডলার তহবিলের খসড়া চুক্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়। তবে উন্নয়নশীল দেশগুলো এই পরিমাণকে 'অপমানজনকভাবে কম' বলে প্রত্যাখ্যান করে।
ধনী দেশগুলো নতুন প্রস্তাবের বিষয়ে সম্মত হয়েছে বলে পাঁচটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। এর মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্যের নাম উঠে এসেছে। তবে এই প্রস্তাব উন্নয়নশীল দেশগুলোর কাছে পৌঁছেছে কি না বা তাদের সমর্থন আদায় করতে পারবে কি না, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বর্তমান প্রস্তাবটি ২০২৫ সালে শেষ হতে যাওয়া বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার তহবিল প্রতিশ্রুতির স্থলাভিষিক্ত হবে। তবে শুধু মোট অর্থের পরিমাণই নয়, আলোচনা চলছে কারা তহবিলে সহায়তা দেবে ও কতটা অনুদান হিসেবে প্রদান করা হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ একাধিক ধনী দেশ জানিয়েছে , চীন ও তেলসমৃদ্ধ উপসাগরীয় দেশগুলোর মতো অন্যান্য অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশকেও তহবিল প্রদানে অন্তর্ভুক্ত করা হোক।
এদিকে, উন্নয়নশীল দেশগুলো বলছে, দুর্বল তহবিল কার্বন নিঃসরণ কমানোর উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের সক্ষমতাকে ব্যাহত করবে। সিয়েরা লিওনের পরিবেশমন্ত্রী জিওয়াহ আবদুলাই বলেছেন, প্রস্তাবিত ২৫০ বিলিয়ন ডলার লক্ষ্যমাত্রা মুদ্রাস্ফীতি বিবেচনায় তেমন কিছুই নয়।
তিনি আরও বলেন, তিন বছর ধরে আলোচনার পর ফলাফল শূন্য। কপ ২৯ সভাপতির কাছে উন্নয়নশীল দেশগুলোর দাবিগুলো উত্থাপন করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
প্রস্তাবটি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত না হলে আলোচনায় অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকার হুমকি দিয়েছে উন্নয়নশীল দেশগুলোর একটি গ্রুপ। সিয়েরা লিওনের মন্ত্রীর মতে, আলোচনা থেকে বেরিয়ে আসার বিষয়টিও তাদের বিবেচনায় থাকতে পারে।
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতির ক্রমবর্ধমান চাপ মোকাবিলা করতে উন্নয়নশীল দেশগুলো তহবিল বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসছে। এই প্রস্তাবের মাধ্যমে ধনী দেশগুলো যদি তাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না করে, তাহলে ভবিষ্যৎ জলবায়ু সম্মেলনগুলোতে বিভাজন আরও গভীর হতে পারে।