গাজায় ত্রাণসামগ্রী বোঝাই ১০০টি ট্রাক প্রবেশ করতে দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। তবে ময়দা, শিশুখাদ্য এবং স্বাস্থ্য সরঞ্জামসহ ট্রাকগুলো বুধবার (২১ মে) গাজায় প্রবেশ করলেও সাধারণ মানুষের কাছে কোনও সহায়তা পৌঁছায় নি বলে জাতিসংঘের দাবি। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
গাজায় মানবিক সহায়তা প্রদানকারী কর্মীরা বলেন, প্রায় ১১ সপ্তাহ অবরোধের পর গাজায় ত্রাণের ট্রাক প্রবেশ করতে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। সোম ও মঙ্গলবার মোট ৯৮ ট্রাক প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। কিন্তু এই সরবরাহ একে তো চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল তার ওপর গাজার সুপ কিচেন, বেকারি, বাজার এবং হাসপাতাল পর্যন্ত পৌঁছায় নি।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির কর্মকর্তা আন্তোন রেনার্দ বলেছেন, প্রয়োজনের তুলনায় সামান্য ত্রাণই এসে পৌঁছেছে। আর যেটুকও এসেছে, সেটাও জনসাধারণ পায়নি।
অবরোধের ফলে গাজাবাসী চরম মানবিক সংকটে পড়েছে। এতে ইসরায়েলি সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ চাপ বাড়লেও পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হয়নি। বিরোধীদলীয় এক ইসরায়েলি নেতার ভাষায়, গাজায় অবরোধ দিয়ে ইসরায়েল দিনে দিনে মিত্র হারাচ্ছে।
রেনার্দ বলেছেন, গাজা সীমান্তের কাছে হাজার হাজার টন খাদ্য ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র অপেক্ষমাণ রয়েছে। তবে নিরাপদে বিতরণের ব্যবস্থা না থাকায় তা ঢুকছে না। ফলে গাজার প্রায় এক চতুর্থাংশ জনগণ এখনও দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে।
নিজের সন্তানদের প্রাণ বাঁচাতে প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে খাবার সংগ্রহের চেষ্টা করেন মাহমুদ আল-হো। কোনও দিন তিনি ছয়ঘণ্টা পর্যন্তও অপেক্ষা করেন। তিনি বলেন, ছয়জনের জন্য এক প্লেট খাবার নেওয়ার জন্য সকাল আটটা থেকে অপেক্ষা করছি। অথচ ওই খাবার একজনের জন্যও পর্যাপ্ত না।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, কারেম শালোম সীমান্তে নিরাপত্তাজনিত কারণে ত্রাণ আটকে আছে। তবে বুধবার রাতে ত্রাণ বিতরণের জন্য কয়েকটি ট্রাক এগোতে দেখা গেছে বলে জানা যায়।
রাফার দক্ষিণাঞ্চলে ৭৫টি ময়দাবাহী ট্রাক এবং পুষ্টিকর খাদ্য ও চিনি বহনকারী আরও এক ডজনের বেশি ট্রাক প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছেন পরিবহন ব্যবসায়ী নাহিদ শাহাইবার।
গত মার্চ মাস থেকে গাজায় ত্রাণ প্রবেশে অবরোধ দেওয়া শুরু করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। তাদের অভিযোগ, ত্রাণ লুট করে নিজেদের পুনর্গঠন করছে হামাস। তবে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে বাধ্য হয়ে ত্রাণ সরবরাহ পুনরায় চালু করতে বাধ্য হয়েছে নেতানিয়াহু সরকার।