ঐতিহ্যের তিলোত্তমার নস্টালজিয়া ট্রামের মৃত্যুঘণ্টা কি তবে বেজে গেলো? বছর কয়েক আগেও এই কলকাতার ৮টি রুটে ট্রাম চলত। কিন্তু পুলিশের আপত্তি ও মেট্রোর কাজের জন্য এই মুহূর্তে মাত্র ৩টি রুটে ট্রাম চলে। টালিগঞ্জ-বালিগঞ্জ, গড়িয়াহাট-ধর্মতলা এবং শ্যামবাজার-ধর্মতলা। কিন্তু কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে পরিবহণ দফতরের কাছে এই তিনটি রুটেও ট্রাম চলাচল বন্ধের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। আর এর ফলেই শঙ্কা দেখা দিয়েছে, ইতিহাসের শহর কলকাতায় ঐতিহ্যের ট্রামের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেল। ঢংঢং করে ঘণ্টা বাজিয়ে চলা কলকাতার নস্টালজিয়ার চাকা যাবে থমকে। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে বিভিন্ন ট্রামপ্রেমী সংগঠনের মধ্যে।
যদিও পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘কোনোভাবেই ট্রাম পুরোপুরি তুলে দেওয়া হবে না। তবে যে লাইন দিয়ে ট্রাম চলে না বা ভবিষ্যতে চালানোর পরিকল্পনা নেই, সেই অব্যবহৃত লাইন তুলে দেওয়াই ভালো। কিছু রুটে অবশ্যই ট্রাম চলবে।’
কলকাতা পুলিশ কালীঘাট ব্রিজ, রবীন্দ্র সরণি, বিধান সরণি, বেলগাছিয়া ব্রিজ, আর জি কর রড, এপিসি রোড, এম জি রোড, শিয়ালদহ ফ্লাইওভার, বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট, ডিএইচ রোড, লেনিন রোড, উল্টোডাঙা মেইন রোড, সিআইটি রোড, মানিকতলা মেন রোড, আমাস্ট্রিট, গালিফ স্ট্রিটের ওপর থাকা লাইন তুলে দেওয়ার বিষয়ে পরিবহণ দফতরকে চিঠি লিখেছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, মূল রাস্তায়, ব্রিজে ট্রাম লাইন থাকার কারণে গাড়ির গতি কমে যাচ্ছে, যানজট হচ্ছে। ঘটছে দুর্ঘটনাও। আর তাই সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে শহরকে গতিময় করতে অব্যবহৃত ট্রাম লাইন তুলে ফেলা হোক।
ঘটনা হলো, চলতি বছরে দেড় শ’ বছরে পদার্পণ করবে কলকাতার ট্রাম। কলকাতার ঐতিহ্য ট্রাম সংরক্ষণ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম বন্ধের এই চিঠি ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দফতরে।
স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘আমাদের যেমন সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে হবে। তেমনই ট্রামকেও সংরক্ষণ করতে হবে। ট্রামকে কখনোই তুলে দেওয়া হবে না। কোন কোন রুটে তা চলবে সেটির বিস্তারিত রিপোর্ট আমরা আদালতকে জানাব। কলকাতা পৌরসভা, ট্রাফিক, পরিবহণ দফতর সবাই মিলে বৈঠক করেই তা ঠিক হবে। তবে যে লাইন দিয়ে আর ট্রাম চলবে না, সেগুলো তুলে ফেলাই ভালো।’