২০১৫ সালে নাইজেরিয়াভিত্তিক ইসলামপন্থী সশস্ত্র সংগঠন বোকো হারাম সংগঠনে শিশু বোমা হামলাকারীর সংখ্যা বাড়িয়েছে। গত বছর সশস্ত্র সংগঠনটির হয়ে যতগুলো আত্মঘাতী হামলা হয়েছে তার মধ্যে প্রতি ৫টির ১টি হামলা শিশুরা চালিয়েছে। তাছাড়া ক্যামেরুন, নাইজেরিয়া ও শাদে চালানো হামলার মধ্যে তিন-চতুর্থাংশই মেয়েদেরকে দিয়ে সংঘটিত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে মেয়েদেরকে মাদক প্রয়োগ করে তাদের শরীরে বিস্ফোরক বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ প্রকাশিত নতুন এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
নাইজেরিয়ার চিবুক থেকে বোকো হারামের হাতে ২০০ নারী শিক্ষার্থীর অপহরণের ঘটনার দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে ইউনিসেফের প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, আত্মঘাতী হামলার ৩৭ শতাংশই নারী ও শিশুদের দিয়ে পরিচালনা করা হয়। আরও পড়ুন: নাইজেরিয়ায় বোকো হারামের কাছ থেকে আট শতাধিক বন্দি মুক্ত
২০১৪ সালে বোকো হারাম চারটি হামলা চালালেও ২০১৫ সালে সংগঠনটি হামলার সংখ্যা ১১ গুণ করেছে। অর্থাৎ গত বছর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ৪৪টি হামলা চালিয়েছে বোকো হারাম। আর ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ক্যামেরুন, নাইজেরিয়া ও শাদে সশস্ত্র সংগঠনটির আত্মঘাতী হামলার সংখ্যা ৪০।
জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানায়, ক্যামেরুন, শাদ, নাইজেরিয়া ও নাইজার-এ চারটি দেশের ১৩ লাখ শিশুকে ঘর ছাড়তে বাধ্য করেছে বোকো হারাম। বোকো হারামের প্রতি আনুগত্য প্রকাশের অংশ হিসেবে বালকদের নিজেদের পরিবারের ওপর হামলা চালাতে বাধ্য করা হয়। আর মেয়েদের ওপর যৌন নিপীড়ন চালানোর পাশাপাশি সংগঠনটির যোদ্ধাদের বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়।
আরও পড়ুন: ক্যামেরুনে বোকো হারামের ৮৯ সদস্যের মৃত্যুদণ্ড
প্রতিবেদন অনুযায়ী, আত্মঘাতী হামলাকারী শিশুদের বেশিরভাগই ক্যামেরুনের। এদের মধ্যে ৮ বছরের শিশুও রয়েছে।
বোকো হারামের দৃষ্টিতে ‘পশ্চিমা শিক্ষাব্যবস্থা নিষিদ্ধ’। আর এ নীতির ওপর ভিত্তি করে তারা বিভিন্ন সময়ে স্কুলকে হামলার লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে থাকে। ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, বোকো হারামের কারণে নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও ক্যামেরুনে বন্ধ হয়ে গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আগুনে পুড়ে গেছে কিংবা লুট হয়ে গেছে-এমন স্কুলের সংখ্যা ১৮শ’রও বেশি।
গত ১৫ মাস ধরে নাইজেরিয়ায় সশস্ত্র সংগঠনটির দখলে থাকা বেশিরভাগ এলাকাই বহুদেশীয় বাহিনী অভিযান চালিয়ে পুনর্দখল করে নিয়েছে। বর্তমানে সংগঠনটি নাইজেরিয়ার সাম্বিসা বন থেকে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে বলে ধারণা করা হয়। সূত্র: বিবিসি
/এফইউ/