অসহনীয় গরম নেই, নেই ভারি বৃষ্টিপাতও। ঈদের ছুটিতে যান্ত্রিক নগর ছেড়ে কোলাহলমুক্ত পরিবেশে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে ভ্রমণপিয়াসী অনেকেরই গন্তব্য এখন সবুজের চাদরে ঢাকা বান্দরবান।
মঙ্গলবার দেখা গেছে, হাজারো পর্যটকের আনাগোনায় মুখরিত এই পার্বত্য জেলাটি। শহরের বেশিরভাগ হোটেল-মোটেলেই এখন কোনও সিট খালি নেই।
প্রতি বছর ঈদকে কেন্দ্র করে হাজারও পর্যটকের ভিড় লেগে থাকে বান্দরবানে, এর ব্যতিক্রম হয়নি এবারও। সবুজের চাদরে ঢাকা প্রকৃতিকে দেখার এবং সারি সারি পাহাড়ের ওপর দিয়ে মেঘের ভেলা ভেসে বেড়ানোর দৃশ্য দেখার অপূর্ব সুযোগ বর্ষা মৌসুম হলেও বছরের মাঝামাঝি হওয়ায় এবং দুর্গমতার কারণে যাতায়াতের অসুবিধা থাকায় বর্ষা মৌসুমটা একপ্রকার বসেই কাটে পর্যটন সংশ্লিষ্ট লোকজনের, তবে এ বছরটা ব্যতিক্রম। চলতি মাসে ঈদের ছুটি পড়ায় পর্যটকদের বাধ ভাঙ্গা জোয়ার নেমেছে জেলাজুড়ে।
বান্দরবানের নীল আঁচল পর্যটন কেন্দ্রের ম্যনেজার জয় ত্রিপুরা বলেন, বৃষ্টিতে ঈদের ২য় দিন পর্যটক না আসলেও ৩য় দিন থেকে বিপুল সংখ্যক পর্যটক আসতে শুরু করেছে।
পর্যটক আগমনের কথা মাথায় রেখে ঈদের আগে থেকে জেলার পর্যটনস্পটগুলোর সৌন্দর্য বর্ধন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। তাই জেলার নীলগিরি, প্রান্তিকলেক, মেঘলা, নীল আঁচল, স্বর্ণমন্দির, রুমা উপজেলার বগালেক, কেওক্রাডং দেখার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকদের আগমনের কারণে সংশ্লিষ্টদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
বান্দরবান হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সূত্রে জানা গেছে, দুইদিন ধরে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় ঈদের দুইদিন পর্যটকরা না এলেও স্থানীয় ৪৬টি হোটেল-মোটেল এক সপ্তাহের জন্য বুকিং হয়ে আছে। ঈদের ৩য় দিন থেকেই জমে উঠা পর্যটন ব্যবসা আগামী ১ সপ্তাহ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে এমন আশা পর্যটনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের।
জেলা শহরের হোটেল পালকি গেস্ট হাউজের কর্ণধার আলাউদ্দিন বলেন, আমাদের সব হোটেলে বুকিং হয়ে আছে,কোনও সিট খালি নেই।
বান্দরবান জিপ-মাইক্রো মালিক সমিতির সূত্রে জানা গেছে, বান্দরবান সদর এবং রুমা উপজেলায় পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য ২১৫টি চাঁদের গাড়ি ও জিপ গাড়ি ব্যবহার হয়। এখন পর্যটক আসার কারণে ব্যস্ত সময় পার করছে পর্যটকবাহী গাড়িগুলোর চালকরা।
পর্যটকবাহী জিপ চালক রতন মল্লিক বলেন, বেশি পর্যটক আসার কারণে পর্যটকবাহী কোনও গাড়ি এখন স্টেশনে বসে নেই।
পর্যটক আসার কারণে শুধু শহরের হোটেল-মোটেল নয়, পর্যটন শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ব্যবসাতেও এখন চাঙ্গা ভাব। শহরের বিনোদনস্পটগুলো থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকরা তাদের পছন্দের তাঁতের পোশাক কিনছেন।
বান্দরবানের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, পর্যটকদের আগমনের কথা মাথায় রেখে পর্যটনস্পটগুলোতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
/টিএন/