কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে নিহত হন সিভিল এভিয়েশনের গাড়িচালক মো. আরমান আলী (২৬)। গত ১৩ নভেম্বর এই ঘটনা ঘটে। ২০ দিন পর ৩ ডিসেম্বর (রবিবার) হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে দুই ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
সোমবার (৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর উত্তরা র্যাব-১ এর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোশতাক আহমেদ। তিনি জানান, ৩ ডিসেম্বর রাতে গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. আকাশ (১৯) ও মো. বিল্লাল হোসেন (৩০) গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয় যেটি ভিকটিমের কাছ থেকে ছিনতাই করা হয়েছিল।
১৪ মাস ধরে সিভিল এভিয়েশন অথরিটির গাড়িচালক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন মো. আরমান আলী। গত ১৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় প্রতিদিনের মতো অফিস শেষে কাওলা আবাসিক এলাকা দিয়ে পায়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় কাওলা রেলক্রসিং থেকে রেললাইনের দক্ষিণ দিকে ৫০০ গজ দূরে অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন ছিনতাইকারী তাকে আটকায়। ছিনতাইকারীরা তার কাছে থাকা মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনতাই করার চেষ্টা করে। এ সময় ভিকটিমের সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তি হয়।
ছিনতাইকারীরা চাকু দিয়ে ভিকটিমের শরীরে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। তারা তার সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন ও ২০ হাজার টাকাসহ মানিব্যাগ ছিনতাই করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পথচারীরা আরমানকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরবর্তী এ হত্যার দায়ে ভিকটিমের দুলাভাই মো. মোকলেছ উদ্দিন বাদী হয়ে ঢাকার রেলওয়ে থানায় একটি ছিনতাইসহ হত্যা মামলা করেন।
র্যাব কর্মকর্তা মোশতাক আহমেদ বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার দুইজনই র্যাব-১ এর কাছে এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে। তারা উভয়ে আরও জানায়, তারা একটি সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য। তারা বিমানবন্দর রেলস্টেশন ও তার আশেপাশের এলাকায় রেল বা বাস যাত্রীদের কাছ থেকে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা, মোবাইলসহ বিভিন্ন মূল্যবান জিনিসপত্র প্রতিনিয়ত ছিনতাই করে থাকে। ছিনতাইয়ে বাধা দিলে তাদের হাতে থাকা চাকু বা স্পেয়ার ব্লেডসহ বিভিন্ন ধারালো জিনিস দিয়ে ভিকটিমকে হত্যার চেষ্টা করে।
আসামি আকাশের নামে দক্ষিণখান থানায় একটি হত্যা মামলাসহ আরও চারটি মামলা এবং আসামি বিল্লালের নামে দক্ষিণখান থানায় একটি ছিনতাই মামলা আছে।