প্রতিনিয়ত খাদ্যদ্রব্যসহ সব ধরনের ফলে ফরমালিন মেশানো হচ্ছে। এটি বন্ধে আইন থাকলেও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির নজির নেই। এ কারণে খাদ্যে ফরমালিন মেশানো বন্ধ হচ্ছে না বলে মনে করছেন পরিবেশবাদীরা।
শনিবার (১৮ মে) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায় চারুকলা অনুষদের সামনে ‘মৌসুমিসহ সব ফল বিষমুক্ত ও নিরাপদ চাই’ শীর্ষক মানববন্ধনের আয়োজন করে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন আন্দোলন (পরিজা)। সেখানে বক্তারা এ সব কথা বলেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ফরমালিনযুক্ত খাবার গ্রহণের কারণে ক্যানসার, কিডনি রোগ, পরিপাক যন্ত্রে রোগসহ মানুষের বিভিন্ন স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে। সব ধরনের ফলে ফরমালিন মেশানো বন্ধে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। না হলে তীব্র থেকে তীব্রতর হবে আমাদের আন্দোলন।
পারিজার সভাপতি ও পরিবেশ অধিদফতরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুস সোবহান বলেন, ‘আমাদের আবহাওয়ার কারণে একেক মৌসুমে একেকটা ফল আসে। এই ফলগুলো আমাদের শরীরে বিভিন্নভাবে উপকার করে। চিকিৎসকরা রোগী বা অন্তঃসত্ত্বা মাকে বিভিন্ন ফল খাওয়া পরামর্শ দেন। কিন্তু তিন মাস পর দেখা গেলো তার অবস্থা আরও খারাপ হলো। এর কারণ, ফলে ফরমালিন মেশানো থাকে। বিভিন্ন দোকানে ক্যামিক্যালমুক্ত ফল লেখা থাকলেও প্রশাসনের কেউ তা যাচাই করে দেখে না। দেশে এটি দমনের জন্য আইন ও লোকবল রয়েছে। কিন্তু এগুলো কার্যকর হচ্ছে। কারণ ১৮ কোটি মানুষের দেশে সামান্য লোকবল দিয়ে এগুলো নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশ সংসদের উপদেষ্টা সানোয়ারুল হক সানী বলেন, ‘আমাদের বিভিন্ন ফলে ক্যামিক্যাল ব্যবহারের কারণে আজ সেগুলো বিষে পরিণত হয়েছে। কৃষক পর্যায় থেকে শুরু করে প্রতি ধাপে ক্যামিক্যাল মেশানো হয়। আমাদের কৃষকদের এগুলো নিয়ে কোনও ধারণা নেই। যারা কৃষকদের মাথায় এগুলো দিচ্ছে, সেই সব দুষ্কৃতকারীদের শাস্তির আওতায় আনা হোক। এ সব বিষ মেশানো ফল খেয়ে জন্ম নিচ্ছে বিকলাঙ্গ শিশু। এগুলো নিয়ে সরকার ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন হতে হবে। তাই আমরা সরকারকে আহ্বান জানাবো, যে সব আইন আছে সেগুলো কঠোরভাবে প্রয়োগ করবেন। আমরা যারা ভোক্তা আছি, তাদেরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন– ঢাবি পরিবেশ সংসদের সাবেক সভাপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম, আলোকচিত্রী অর্ক ইকবাল, পরিবেশ ও বায়ু পরিবর্তন আন্দোলনর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমির আহসান মাসুদ, পারিজার স্বেচ্ছাসেবক আরিফ আহমেদ।