লবণাক্ত ও অপরিশোধিত পানি ব্যবহারের কারণে দেশের অভ্যন্তরীণ নৌপথে চলাচলকারী নৌযানগুলোর ৮০ শতাংশ শ্রমিক-কর্মচারী চর্মরোগ ও পেটের পীড়াসহ বিভিন্ন ধরনের জটিল আন্ত্রিক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ঢাকার গণমাধ্যমকর্মীদের সংগঠন শিপিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরামের (এসসিআরএফ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সংগঠনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিবেদনের সার সংক্ষেপ প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে নৌ-শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যাত্রী ও পণ্যবাহী সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের নৌযানে পানি শোধনাগার স্থাপন বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করা হয়েছে।
বছরব্যাপী জরিপ ও অনুসন্ধান চালিয়ে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, জরিপকালে ১০ শ্রেণির নৌযানের শতাধিক শ্রমিক ছাড়াও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা হয়েছে।
এ সব নৌযানের মধ্যে রয়েছে যাত্রীবাহী লঞ্চ, পণ্যবাহী বিভিন্ন ধরনের জাহাজ, স্কেভেটর (খননযন্ত্র), ড্রেজার (পলি অপসারণ যন্ত্র), ডাম্ববার্জ ও হাউজবোটসহ বিভিন্ন ধরনের নৌযান।
এসসিআরএফ জানায়, দেশের এক পঞ্চমাংশ উপকূলীয় জনপদ। সেখানকার নদ-নদীর পানিতে প্রায় সারা বছর তীব্র লবণাক্ততা থাকে। এছাড়া দেশের প্রায় সব নদী মারাত্মক দূষণের শিকার। নৌ-শ্রমিকরা দিনের পর দিন নৌযানে থাকেন। কিন্তু সরকারি-বেসরকারি নৌযানগুলোতে কোনও পানি শোধনাগার নেই।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকার ও বেসকারি নৌযান মালিক কোনও কর্তৃপক্ষই বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করে না। স্বল্পবেতনভোগী নৌ-শ্রমিকরা বাধ্য হয়ে সব কাজে নদীর পানি ব্যবহার করছেন। এতে তারা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে এসসিআরএফের প্রতিবেদনে বলা হয়, দীর্ঘদিন নদীর লোনা ও দূষিত পানি ব্যবহারের কারণে চর্ম রোগসহ স্কিন ক্যানসার ও শ্বাসকষ্টজনিত নারা রোগ হতে পারে। লিভার সিরোসিস, রক্ত আমাশয়, আমাশয়, গ্যাস্ট্রিক আলসার ও নিয়মিত ডাইরিয়াসহ বিভিন্ন ধরনের জটিল আন্ত্রিক রোগ হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। এই সংকট দূর করতে অভ্যন্তরীণ নৌপথে চলাচলরত সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের নৌযানে পানি শোধনাগার স্থাপন বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করেছে এসসিআরএফ।