বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান বলেছেন, ‘হিরো আলমকে হারাতে পারেনি সরকার। হেরেছে গণতন্ত্র, হেরেছে দেশের জনগণ।’ শুক্রবার (২১ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের উদ্যোগে লক্ষ্মীপুরে কৃষক দল নেতা শহীদ সজীব হোসেনের হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে এক প্রতিবাদ সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
আহমেদ আযম খান বলেন, ‘বিএনপির পদযাত্রায় সরকারের নির্দেশে হামলা করা হয়েছে। লক্ষ্মীপুরে কৃষক দলের নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। অথচ বিএনপি'র ১৭ হাজার নেতাকর্মীর নামে মামলা করা হয়েছে কেন? এ স্বাধীন দেশে শকুনের মতো হামলা কেন? বাংলাদেশের নির্বাচনের ওপর সরকারের শকুনের চোখ পড়েছে। ২০১৪ ও ২০১৮-এর মতো আবারও একটি নির্বাচন করতে চায় সরকার। কিন্তু তাদের চক্রান্ত সফল হবে না।’
তিনি বলেন, ‘১৭ তারিখে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচন হয়েছে। এই নির্বাচন সম্পর্কে সাবেক নির্বাচন কমিশনার শাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, সেখানে ফলস ভোট হয়েছে।’
সরকারের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘গত কয়েক মাসে বিএনপির ১৯ জনকে হত্যা করেছেন। গত ১০ বছরে লাখ লাখ নেতাকর্মীর নামে মামলা দিয়েছেন। আন্দোলন থামাতে পেরেছেন? দিন দিন রাজপথে নেতাকর্মী বাড়ছে। যত জুলুম, নির্যাতন, মামলা, হামলা, খুন করেন না কেন, আমাদের আন্দোলন দমাতে পারবেন না। আপনাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।’
প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেন, ‘এই ফ্যাসিবাদী সরকার বিশ্বব্যাপী আজ প্রত্যাখ্যাত, গলাবাজি দিয়ে সরকারের অবৈধ সত্তাকে সুরক্ষা দেওয়া যাবে না। এবারে আওয়ামী লীগের তরী ডুবন্ত, এটিকে আর টেনে তোলা যাবে না। ক্ষমতা ধরে রাখার আর কোনও কৌশল তাদের কাজে আসবে না।’
তিনি বলেন, ‘কথা পরিষ্কার। আগামী নির্বাচন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হবে, শেখ হাসিনার অধীনে নয়। এটিই বাংলাদেশের জনগণের ভাষা। এবার এর বাইরে যাওয়ার কোনও সুযোগ নেই। তাই সময় থাকতে এই ফ্যাসিবাদী সরকার সংসদ ভেঙে দিয়ে পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন, এটা জনগণের দাবি।’
সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ সাইদুর রহমান বলেন, ‘আওয়ামী সরকারের পদত্যাগের পক্ষে জনগণের রায় ঘোষিত হয়েছে এই একদফা দাবির কর্মসূচিতে। পদযাত্রায় বাঁধভাঙা স্রোতের মতো সর্বস্তরের মানুষের সমাগম ঘটে। এই পদযাত্রার বিশাল পরিসর দেখে আওয়ামী নেতা-মন্ত্রীদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। মানসিক অসুস্থ রোগীর মতো আওয়ামী নেতাকর্মীরা আচরণ করছেন। এই কারণে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও মহানগরীতে সহিংসতা, হানাহানি ও কাপুরুষোচিত হামলা চালানো হয়েছে। পুলিশের গুলিতে প্রাণ কেড়ে নেওয়া হয়েছে লক্ষ্মীপুরের কৃষক দল নেতা সজীব হোসেনের । সারা দেশে গুলি এবং অস্ত্রের আঘাতে জখম ও পঙ্গু করা হয়েছে কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে।’
বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি মোহাম্মদ সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হক চৌধুরীর সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে আর বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবীব লিংকন, বিএনপির সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ (ভিপি হারুন), কৃষক দলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শাহজাহান মিয়া সম্রাট, বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের উপদেষ্টা এম নাজমুল হাসান, কৃষক দলের যুগ্ম সম্পাদক শাহ আব্দুল আল বাকি, যুব জাগপার সভাপতি মীর আমির হোসেন আমু, সমমনা পেশাজীবী গণতান্ত্রিক জোটের সহকারী সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মাইনুদ্দিন মজুমদার প্রমুখ।