আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ‘গুম-খুন হওয়া’ দলীয় নেতা-কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রবিবার (১০ ডিসেম্বর) মানববন্ধন করবে বিএনপি। ওই কর্মসূচিতে দলটির স্থায়ী কমিটির নেতারা উপস্থিত থাকবেন। গত ২৮ অক্টোবরে পর এই মানববন্ধনের মাধ্যমে ৪৩ দিন পর জড়ো হতে যাচ্ছেন তারা।
এদিন বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি ছাড়াও সরকার পতনের যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দল ও জোট এই দিনে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে মানবাধিকার দিবসের নিজ নিজ কর্মসূচি পালন করবে।
এদিকে সরকারবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত থাকা সংশ্লিষ্ট নেতারা এই মানববন্ধন কর্মসূচিকে বিশেষভাবে দেখছেন। তারা বলছেন, গত ২৮ অক্টোবর ঢাকার নয়াপল্টনে দলীয় মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর গ্রেফতার আতংকে আত্মগোপনে থাকা নেতা-কর্মীদের আবারও রাজপথে একত্রিত করার সুযোগ এসেছে বিএনপির জন্য। তবে মানববন্ধনে কোন কোন কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকছেন, বিএনপির পক্ষ থেকে এই বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি।
বিরোধী দলগুলোর একাধিক নেতা বলেছেন, বিরোধীদলগুলোর রবিবারের মানববন্ধনে সরকারের আচরণের ওপর নির্ভর করবে সরকার পতনের আন্দোলনে পরবর্তী কী কর্মসূচি আসতে পারে।
এবিষয়ে যুগপতে থাকা জোট গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক ফল বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আগামীকাল বিএনপিসহ বিরোধীদলগুলো যে কর্মসূচি দিয়েছে, সেখানে আমরা সরকারের আচরণ দেখবো। যদি কোনও বাধা আসে, তাহলে আমাদের একভাবে চিন্তা করতে হবে। যদি তারা নমনীয় হয় তাহলে আরেকভাবে আমরা আমাদের কর্মসূচি এগিয়ে নিয়ে যাবো।’
এক্ষেত্রে কী ধরনের কর্মসূচি আসতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যদি বাধা না আসে আমরা চেষ্টা করবো নতুন করে সভা সমাবেশের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে আবারও আন্দোলনকে বেগবান করতে। আর যদি বাধা আসে তাহলে আমরা যে অবরোধ হরতাল কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছি তাই করবো।’
তবে বিএনপি সূত্র বলছে, রবিবারের মানববন্ধন কেবলই ১০ ডিসেম্বরের মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক কর্মসূচি। এর সঙ্গে সরকার পতন বা অন্য কোন কিছুর সম্পর্ক দেখছে না দলটি।
এ বিষয়ে বিএনপি মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবসটি জাতিসংঘের থেকে বিশ্বের সব দেশেই প্রতিবছর পালন হয়ে আসছে। তাই বিএনপি থেকেও এই দিবসটি পালন করা হয়। এছাড়া আমাদের দলের নেতাকর্মীরাও নানান ভেবে নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছে। ফলে এই দিবসটি আমাদের জন্য অর্থবহ।’
উল্লেখ্য, গত ২৮ অক্টোবরে পর গত ৪২ দিন ধরে বড় জমায়েতে কোথাও কোনও কর্মসূচি পালন করেনি। এর মাঝে আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ, দ্বাদশ নির্বাচনি তফসিল বাতিল, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের মুক্তি ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের এক দফা দাবিতে গত ২৯ অক্টোবর থেকে ১০ দফায় ২০ দিন অবরোধ এবং তিন দফায় চার দিন হরতাল কর্মসূচি করেছে বিএনপিসহ অনান্য বিরোধীদলগুলো।