কেরানীগঞ্জের প্লাস্টিক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে নিহত শ্রমিকদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ‘শ্রমিক হত্যার বিচার ও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’
বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
কেরানীগঞ্জে আগুনে পুড়ে নিহতদের ক্ষতিপূরণ ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে সমাবেশের আয়োজন করে গণসংহতি আন্দোলন। সমাবেশ থেকে পাটকল শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধ ও ১১ দফা দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
কারখানায় নিরাপদ পরিবেশের অভাবে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে বলে দাবি করে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘সরকার শ্রমিকদের জীবন ও নিরাপত্তা রক্ষার বিষয়টিকেই একদমই তোয়াক্কা করছে না। গার্মেন্ট কারখানাগুলোতে অ্যাকর্ড এবং অ্যালায়েন্সের চাপে কিছুটা নিরাপদ পরিবেশ তৈরি হলেও দেশীয় শিল্পকারখানাগুলোতে নিরাপদ কর্মপরিবেশের কোনও বালাই নেই।’
কেরানীগঞ্জের আগুন লাগা কারখানাটি অনুনোমোদিত ছিল’ বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের এই বক্তব্যের প্রসঙ্গে সাকি বলেন, ‘অথচ বেআইনি এই কারখানা তাদের নাকের ডগায় কীভাবে দিনের পর দিন চলে, তা নিয়ে কোনও জবাবদিহিতার প্রয়োজন তারা অনুভব করেন না। এর আগে লালবাগে প্লাস্টিক কারখানা ও রাসায়নিক গুদামে একের পর এক অগ্নিকাণ্ডে মানুষ নিহত হলেও সরকারের একমাত্র ভূমিকা ছিল কারখানাগুলোকে বেআইনি ঘোষণা দেওয়া।’
বেআইনি কারখানার মালিকদের শাস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়ে সাকি আরও বলেন, ‘পাশাপাশি সরকারের যে দফতরগুলোর দায়িত্ব এই কারখানাগুলো তদারক করা, গ্যাস-বিদ্যুৎ অন্যান্য অনুমোদন দেখ-ভাল করা, তাদেরও শাস্তির আওতায় আনতে হবে। কেননা তাদের দুর্নীতি ও যোগসাজসের কারণেই এই বেআইনি কারখানাগুলো চলতে পারছে।’
খুলনার পাটকল শ্রমিকরা গত ৩ দিন ঠাণ্ডার মধ্যে আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘ইতোমধ্যে একজন শ্রমিক মৃত্যুবরণও করেছেন। সরকারের উদাসীনতাই এই মৃত্যুর জন্য দায়ী। ২০১৫ সালে ঘোষণা করা মজুরি কমিশনের সুপারিশ ২০১৯ সালেও বাস্তবায়ন না করে শ্রমিকদের ২০০৯ সালের কাঠামোয় বেতন দেয়ার বিষয়টিতে প্রমাণ হয়, মধ্যরাতের নির্বাচনের সরকার কোনও কিছুর পরোয়া করে না।’
শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) জোনায়েদ সাকিসহ বামজোটের নেতারা অনশনরত শ্রমিদের সঙ্গে সংহতি জানাতে খুলনায় যাবেন বলেও সমাবেশ থেকে জানানো হয়।
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক ও সাধারণ নাগরিক সমাজের মুখপাত্র মহিউদ্দীন আহমেদ। এছাড়া সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য ফিরোজ আহমেদ, কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা জুলহাসনাইন বাবু, তাসলিমা আখ্তার, বাচ্চু ভূঁইয়া, মনিরউদ্দীন পাপ্পু, দীপক রায় প্রমুখ।