বাংলাদেশের ব্যাটারদের ব্যাটিং নিয়ে সমালোচনার শেষ নেই। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতে তাদের ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ হচ্ছে সমালোচিত। অন্য দলগুলোতে টপ অর্ডার ব্যাটারদের গড়পড়তা স্ট্রাইক রেট ১৪০ এর উপরে। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাটারদের স্ট্রাইকরেট ১০০ এর একটু বেশি। এমন স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিংয়ের কারণে কুড়ি ওভারের ফরম্যাটে ভুগতে হচ্ছে বাংলাদেশ দলকে। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত অবশ্য জানিয়েছেন, স্ট্রাইক রেট নিয়ে তাদের ভাবনা নেই।
ইনিংসের শুরুতেই টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় কিংবা স্লো ব্যাটিংয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। সেই চাপ থেকে বেশিরভাগ সময় বের হতে পারে না লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ৪-১ ব্যবধানে জিতলেও ব্যাটিংয়ে সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশ। টপ অর্ডার ব্যাটারদের স্ট্রাইক রেট নিয়ে প্রশ্ন করতেই শান্ত বিরক্তি প্রকাশ করলেন, ‘আমার কাছে সেটা মনে হয় না। কারণ আমাদের দেশে স্ট্রাইক রেট নিয়ে অনেক কথা হয়। স্ট্রাইক রেট, স্ট্রাইক রেট...।’
এরপরই শান্ত দাবি করেছেন, ভালো উইকেটে না খেলার কারণেই স্ট্রাইক রেটে প্রভাব পড়েছে। শ্রীলঙ্কার পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও ভালো উইকেটে খেলেছে বাংলাদেশ। তবে অনভ্যস্ততার কারণেই ভালো করতে পারছে না বলে দাবি শান্তর, ‘আমরা সম্প্রতি ভালো উইকেটে খেলা শুরু করেছি। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যে টি-টোয়েন্টি সিরিজটা খেললাম, ওটা ভালো উইকেটে খেলেছি। কিন্তু এর জন্য সময় দিতে হবে। আমরা যদি লম্বা সময় ধরে ভালো উইকেটে খেলা শুরু করি; ছয় মাস, এক বছর কিংবা দুই বছর পর আপনি দেখবেন প্রত্যেকটা ব্যাটার ভালো স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করছে। এটা শুধু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে হলে হবে না, আমরা যে বিপিএলে খেলি ওই জায়গাতেও ভালো উইকেটে খেলতে হবে। লম্বা সময় ধরে খেলার পরই আপনি পার্থক্য দেখবেন।’
পাশের দেশ ভারতে চলতি আইপিএলে রানের বন্যা বইয়ে গেছে। প্রায় প্রতি ম্যাচেই দুইশোর কাছাকাছি রান উঠছে। এমনকি আড়াইশ রান করেও কোনও দল নিজেদের নিরাপদ ভাবতে পারছে না। বাংলাদেশের অধিনায়ক আইপিএলের উইকেটের সঙ্গে পৃথিবীর কোনও উইকেটকে মেলাতে চান না। তার মতে বিশ্বকাপে ১৬০ থেকে ১৮০ রান করতে পারলেই জেতা সম্ভব, ‘আইপিএল যে উইকেটে হয়েছে... আইপিএলের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মেলানোই যাবে না। আমার মনে হয় গত বছর পিএসএলেও এরকম রান হয়েছে, ২০০ প্লাস, আড়াইশ রানও হয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিকে আমি যতটুকু জানি ১৬০ থেকে ১৭৫ কিংবা ১৮০, ২০০ রান যদি কোনও দল করে এটা খুব ভালো স্কোর। এটা সচরাচর নিয়মিত কিন্তু দেখা যায় না। আমার মনে হয় বিশ্বকাপে এরকমই রান হবে, ১৬০-৮০ এর মধ্যেই থাকবে। এর ভেতরই বোলারদের ডিফেন্ড করতে হবে বা রান তাড়া করতে হবে। আইপিএলের সঙ্গে তুলনা করাটা আমার মনে হয় না কখনোই যৌক্তিক।’
রবিবারের ব্যাটিং ব্যর্থতা নিয়ে শান্ত বলেছেন, ‘শুরুটা আমাদের ভালো হয়নি। তারপরে আমরা যেভাবে ক্যামব্যাক করেছি, ভালোভাবে জাত চিনিয়েছি। যেই রানটা করেছিলাম এই উইকেটের জন্য, এটা যথেষ্ট ছিল। কিন্তু আমরা বোলিংটা ভালো করিনি। ফিল্ডিংয়েও একটু আলগা ছিলাম কিছু জায়গায়। সিকান্দার রাজা ও ব্রায়ান বেনেট খুব ভালো ব্যাটিং করেছে। কোনও সুযোগই দেয়নি। এই কৃতিত্ব তাদের দিতেই হবে।’
শুধু আজকেই ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ হয়নি বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে প্রথম দুই ম্যাচে পরে ব্যাটিং করে যথেষ্ট ইনটেন্ট নিয়ে খেলতে পারেনি স্বাগতিকরা। তৃতীয় ম্যাচে ১৬৫ রান করলেও সেখানে টপ অর্ডারের অবদান ছিল কম।
চট্টগ্রামের ম্যাচ নিয়ে শান্ত বলেছেন, ‘সাধারণত চট্টগ্রামে খুব ভালো উইকেট থাকে। কিন্তু নতুন বলে বোলিং করা সবচেয়ে চ্যালেঞ্জ ছিল। এটা হয়তো অনেকে বাইরে থেকে দেখলে মনে করবে চট্টগ্রামের উইকেটে রান হয় অনেক। কিন্তু এবার তিনটা ম্যাচ খেলেছি, নতুন বলে কঠিন ছিল ব্যাটিং করাটা। তার মধ্যে দুইটা ম্যাচে বৃষ্টির কারণে অন অ্যান্ড অফ, অন অ্যান্ড অফ ব্যাটিং করা লাগছে। সুতরাং মোমেন্টামটা ওইভাবে পাইনি। এইগুলো সব অজুহাত মনে হতে পারে।’