বিশ্বনাথের জায়গায় বদলি হিসেবে নেমেছিলেন জাহিদ আহমেদ। অতিরিক্ত সময়ে তখন ম্যাচ ১-১ সমতায়। প্রতিষ্ঠিতরা যেখানে হিমশিম খাচ্ছিলেন সেখানে নায়ক হয়ে উঠলেন এই অচেনা ডিফেন্ডার!
জাহিদের গোলেই ২-১ ব্যবধানে ফেডারেশন কাপে মোহামেডানকে হারিয়ে ট্রেবল নিশ্চিত করেছে বসুন্ধরা কিংস। অনেকের কাছে ‘অচেনা’ এই খেলোয়াড় জয়ের নায়ক হবেন- তা কে ভেবেছিল?
রেফারির শেষ বাঁশি বাজতেই ময়মনসিংহ রফিকউদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে নেমে আসে আনন্দের জোয়ার।
কিংসকে ট্রেবল জেতাতে অবদান রেখে যশোর থেকে উঠে আসা জাহিদও আনন্দে আত্মহারা। অনুভূতি জানাতে গিয়ে সংবাদ মাধ্যমকে বললেন, ‘অসাধারণ অনুভূতি। আমার গোলে কিংস ট্রেবল জিতলো। এটা অনেক বড় কীর্তি আমার ক্যারিয়ারে৷’
বড় কীর্তি তো অবশ্যই। ম্যাচ যখন টাইব্রেকার নাম অনিশ্চয়তার পেছনে ছুটছে তখনই আলতো টোকায় গড়ে দিয়েছেন ম্যাচের ভাগ্য। ২০ বছর বয়সী জাহিদ প্রিমিয়ার লিগে চার মৌসুম ধরে খেলছেন। আরামবাগ, সাইফ, মোহামেডান হয়ে এবার বসুন্ধরায়। গত মৌসুমে মোহামেডানের হয়ে ফেডারেশন কাপ জিতেছিলেন। আজ কিংসের হয়ে শিরোপা জেতার পাশাপাশি দলটির জয়ের নায়কও তিনি। ভিন্ন অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলতে গিয়ে জাহিদ জানালেন, ‘আসলেই দারুণ একটা বিষয়। দুই বছর টানা দুই দলের হয়ে টুর্নামেন্ট জয়। পেশাদার ফুটবলার হিসেবে এটা খুব ভালো অভিজ্ঞতা। পরিশ্রম করলে আল্লাহ ফল দেন৷ আমার গোল ও দলের জয় এটারই প্রমাণ৷’
আজ যদিও জাহিদের গোল নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে। মোহামেডানের দাবি, জাহিদ শট নেয়ার আগে কিংসের বিদেশি ফুটবলার গোলকিপার সুজনকে ধাক্কা দেওয়া হয়েছে। গোল নিয়ে অবশ্য জাহিদের বক্তব্য পরিষ্কার, ‘আমি বল পেয়েছি, শট নিয়েছি গোল হয়েছে। এর আগে-পরে কিছু নিয়ে ভাবি না৷’
জাহিদ একাদশে সুযোগ পান না। বদলি হয়ে খেলতে হয়। যশোরের বেনাপোল এলাকায় যেখানে তার বাস, সেখানে আছে মাদকের ভয়াল থাবা! ফুটবলে এ পর্যন্ত আসার জন্য কম ত্যাগ স্বীকার করেননি। জাহিদ বলেছেন, ‘স্থানীয় কোচ পলাশ ভাইয়ের মাধ্যমে আমার ও রাহুলের (ব্রাদার্স ইউনিয়ন) উথান। মাদকের ভয়াল থাবা থেকে পলাশ ভাইয়ের জন্য আমরা ফুটবলে আলোকিত হয়েছি। রাহুলের মতে আমিও একদিন জাতীয় দলে খেলতে চাই।’