বিমানে বসে অর্থনীতির এক সমীকরণের সমাধান করার চেষ্টা করছিলেন অধ্যাপক। তবে ভিন্নধর্মী ওই সমীকরণকে সন্ত্রাসী চিহ্ন ভেবে ভুল করলেন একজন সহযাত্রী। অধ্যাপক এতে বিড়ম্বনায় পড়েন। দেরি হয় ফ্লাইট ছাড়তে।
গত বৃহস্পতিবারের (৫ মে) কথা। যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়া থেকে কানাডার অন্তারিওতে যাচ্ছিলেন পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক গিডো মেনজিও। আমেরিকান এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে ওঠেন তিনি। কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেওয়ার কথা ছিল তার; আর সেকারণে প্রস্তুতি হিসেবে বিমানে বসেই ভিন্নধর্মী এক সমীকরণের সমাধান করছিলেন মেনজিও। আর ক্ষণিকের মধ্যে সে সমীকরণই তার জন্য বিড়ম্বনা হয়ে উঠলো। বিমানের এক সহযাত্রী মেনজিওর সে সমীকরণকে সন্ত্রাসী চিহ্ন আর মেনজিওকে সন্ত্রাসী ভেবে ভুল করে বসলেন। আর তার জের ধরেই বিলম্ব করে ছাড়তে হলো ফ্লাইটটি। ফেসবুক পেজে পুরো ঘটনার এমন চিত্র হাজির করে একে ‘অবিশ্বাস্য অভিজ্ঞতা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন মেনজিও।
আরও পড়ুন: ‘আক্রান্ত না হলে’ পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে না উ. কোরিয়া
মেনজিওকে এ ধরনের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে বলে এরইমধ্যে নিশ্চিত করেছে আমেরিকান এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ। শনিবার তারা জানান, বৃহস্পতিবার বিমানে উড্ডয়নের আগে মেনজিওর ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করেন এক নারী। তিনি অভিযোগ করেন, বিমানটির উড্ডয়ন নিয়ে তার শঙ্কা হচ্ছে। পরে এয়ারলাইন্সটির প্রটোকল মেনে ভীত যাত্রীকে আশ্বস্ত করার পাশাপাশি তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করা হয়। পরে তার অভিযোগ সত্য নয় বলে নিশ্চিত হন তারা।
আরও পড়ুন: ইনশাল্লাহ বলায় নামিয়ে দেওয়া হলো বিমানযাত্রীকে
ফেসবুক পেজে মেনজিও লিখেছেন, ‘আমার পাশের আসনে বসা যাত্রী বিমানের এক ক্রুকে ডাকলেন এবং তাকে একটি নোট দিলেন। বিমানটি উড্ডয়নের অপেক্ষায় ছিল। এমন সময় ওই যাত্রী বিমান থেকে নেমে গেলেন।’
এর কিছুক্ষণ পর তাকেও নামতে বলা হলো উল্লেখ করে ফেসবুকে মেনজিও লিখেছেন, ‘এফবিআই সদস্যদের মতো কালো পোশাকধারী কয়েকজন লোক আমাকে জিজ্ঞেস করলেন পাশের সিটের যাত্রীকে কেমন মনে হয়েছে। আমি তাদের বললাম যে তার মধ্যে উদ্ভট আচরণ দেখতে পাইনি। এরপর ওই লোকগুলো আমাকে জানালেন, ওই নারী সহযাত্রী আমাকে সন্ত্রাসী ভেবেছেন কারণ আমি কাগজে উদ্ভট কিছু লিখছিলাম। আমি শুনে হাসলাম। ওই লোকগুলোকে বিমানের ভেতরে নিয়ে আসলাম এবং তাদেরকে আমার করা গণিত দেখালাম।’
সাম্প্রতিক সময়ে যাত্রীদের মধ্যে সন্ত্রাসবাদের আতঙ্কের কারণে বিমানগুলোকে বিভিন্ন সংকটের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। গত মাসে চাচার সঙ্গে মোবাইলে আরবিতে কথা বলার কারণে সহযাত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে এক ইরাকি শিক্ষার্থীকে সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইন্সের বিমান থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আর এ ঘটনার পর নাগরিক অধিকারের দাবিতে সোচ্চার থাকা সংগঠনগুলো ব্যাপক ক্ষোভ জানিয়েছিল। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
/এফইউ/বিএ/