ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আগামী সেপ্টেম্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে বুঝে নেবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। যদিও নির্মাণকাজ শেষে ৫ এপ্রিল বুঝে নেওয়ার কথা ছিল। এখনও ৫ শতাংশ কাজ বাকি থাকায় বেবিচককে ৬ মাস অপেক্ষা করতে হবে তৃতীয় টার্মিনাল বুঝে নিতে।
এ বিষয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, টার্মিনাল ভবন নির্মাণের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টার্মিনালটি হস্তান্তর করে বুঝিয়ে দিতে আরও ছয় মাস চেয়েছে। আরও ৫ শতাংশ কাজ এখনও বাকি আছে। ইতোমধ্যে বোর্ডিং ও ইমিগ্রেশন কাউন্টার, লাগেজে বেল্ট স্থাপন হয়েছে। এসব যন্ত্রপাতি ক্যালিব্রেশন করতে সময় লাগবে। ক্যালিব্রেশন দ্রুত শেষ হলে, যাত্রীদের জন্য টার্মিনাল চালু করা হবে।
বেবিচক জানিয়েছে, ভবনের অবকাঠামোগত নির্মাণ কাজ শেষ হলেও বিভিন্ন যন্ত্রপাতি স্থাপন, ক্যালিব্রেশন ও টেস্টিং বাকি রয়েছে। যন্ত্রপাতি শতভাগ টেস্ট না করে টার্মিনাল যাত্রীদের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা সম্ভব হবে না। এসব কাজ শেষ না হওয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বেবিচকের কাছে সময় বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়।
তৃতীয় টার্মিনালের প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করার জন্য তিনটি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে এভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়াম দায়িত্ব পায়। তিনটি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে—জাপানের মিতসুবিশি করপোরেশন, ফুজিতা করপোরেশন এবং কোরিয়ার স্যামসাং সি অ্যান্ড টি। এভিয়েশন ঢাকা কনসোটিয়ামের সঙ্গে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চুক্তি হয় ২০২০ সালে ১৪ জানুয়ারি। চুক্তি অনুযায়ী ২০২০ সালের ৬ এপ্রিল কাজ শুরু করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। কাজ বাস্তবায়নের মেয়াদ ৪৮ মাস। চুক্তি মূল্য ২০ হাজার ৫৯৮ কোটি ৬৪ লাখ ৮৪ হাজার ৬৯৯ টাকা (সিডি ভ্যাটসহ)।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের সফট লঞ্চিং হয় ২০২৩ সালে ৭ অক্টোবর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
বেবিচক জানিয়েছে, এ বছর অক্টোবরে যাত্রীদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল। তৃতীয় টার্মিনাল তিন তলা বিশিষ্ট। টার্মিনালের আয়তন ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার। যাত্রী ধারণ সক্ষমতা হবে বছরে ১৬ মিলিয়ন। তৃতীয় টার্মিনালের কার পার্কিংয়ে ১২৩০টি গাড়ি রাখা যাবে। উড়োজাহাজ পার্কিং বে থাকবে ৩৭টি। আগমনী যাত্রীদের জন্য লাগেজ বেল্ট থাকবে ১৬টি। বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের জন্য ১ হাজার ৩০০ বর্গটার আয়তনের ১টি কাস্টম হল থাকবে। সেখানে ৬টি চ্যানেল থাকবে। চেক ইন কাউন্টার থাকবে ১১৫টি, এর মধ্যে স্বয়ংক্রিয় ১৫টি।
ইমিগ্রেশন কাউন্টার থাকছে ১২৮টি। এরমধ্যে স্বয়ংক্রিয় ইমেগ্রেশন কাউন্টার ১৫টি। বহিগমন ইমিগ্রেশন কাউন্টার ৬৬টি। আগমনী ইমিগ্রেশন কাউন্টার ৫৯টি। ভিভিআইপি ৩টি। বোর্ডিং ব্রিজ থাকবে প্রথম পর্যায়ে ১২টি বোর্ডিং ব্রিজ থাকবে।
পরবর্তীতে আরকেটি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় আরও ১৪টি বোর্ডিং ব্রিজ যুক্ত করা হবে। বর্তমান টার্মিনাল ২টি টার্মিনালের সঙ্গে তৃতীয় টার্মিনালের কোনও সংযোগ থাকবে না। তবে পরবর্তীতে প্রকল্পে করিডোর নির্মাণ করা হবে।
আরও পড়ুন-
কী কী থাকছে শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনালে?
শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল যাত্রীরা ব্যবহার করবেন কবে?
বাংলাদেশই হবে সারা বিশ্বের যোগাযোগের হাব: প্রধানমন্ত্রী
শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
তৃতীয় টার্মিনালে উদ্বোধনী ফ্লাইট ও গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ে বিমান
কী কী থাকছে শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনালে?
শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের উদ্বোধন শনিবার
পিপিপিতে চলবে বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের পরিচালন-রক্ষণাবেক্ষণ
পদ্মফুলের মতো শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল, নির্মাণে লাগবে ৪ বছর