X
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪
১০ বৈশাখ ১৪৩১

সঠিক ও নির্ভুল আয়কর রিটার্ন করদাতার বড় সম্পদ

মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন
২৬ আগস্ট ২০২১, ১৫:৫১আপডেট : ২৬ আগস্ট ২০২১, ১৫:৫১
মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন অনেক করদাতা মাঝে মাঝে প্রশ্ন করেন, ‘আয় নেই, রিটার্ন দেবো কীভাবে, টাকা-পয়সা নেই, রিটার্নের দরকার কী? রিটার্ন দিয়ে লাভ কী? রিটার্ন দেখলেই অযথা টানাটানি, রিটার্ন দেবো না, দালালকে দিয়েছি– সে কীভাবে কীভাবে সরিয়ে দিয়েছে বলতে পারবো না’­­– ইত্যাদি হাজারো কথা সমাজে চলমান আছে।

দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা করা নাগরিক দায়িত্ব। প্রতিটি আইন দেশের মানুষের কল্যাণে প্রণয়ন করা হয়। যুগে যুগে আইনের ইতিহাসে তা প্রমাণ করে। কিন্তু আমাদের আইনের পরিপালন করতে গিয়ে যখন কোনও বিপথগামী কর্মকর্তা এর অপব্যবহার করেন তখন কষ্ট হয় সাধারণ জনগণের। ফলে আইনের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধাবোধ ধীরে ধীরে কমে আসে। এটা ভালো লক্ষণ নয়।

আয়কর আইনের মূল উদ্দেশ্য হলো নিয়মতান্ত্রিকভাবে রাজস্ব আহরণ। রাজস্ব আদায়ের শৃঙ্খলা বজায় রাখা। আইনে যারা আয়কর যোগ্য আয় ও সম্পদের মালিক থাকেন তাদের নিয়মিত আয়কর দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। আবার একটা নির্ধারিত সময় শেষে উক্ত আয়-ব্যয়, সম্পত্তির হিসাব সরকারের কাছে জমা দেওয়ার বিধানও রয়েছে। একে বলে আয়কর রিটার্ন। আয়কর রিটার্ন তৈরি করার জন্য এনবিআর-এর পক্ষ থেকে বিভিন্ন ফরম দেওয়া হয়েছে। এসব ফরমের নির্ধারিত কলামে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে রিটার্ন তৈরি করতে হয়।

আজ আমরা রিটার্ন তৈরি করার ক্ষেত্রে কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। এ তথ্যগুলো বাদ পড়লে বা মিথ্যা তথ্য দিলে বা গরমিল লক্ষ করা গেলে সংশ্লিষ্ট সার্কেল থেকে অডিটের সুপারিশ বা রিটার্ন পুনঃজমা বা সংশোধনের আদেশ দিতে পারে। সন্তোষজনক জবাব না পেলে বা ভুল তথ্য দেওয়ার জন্য আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর ১৩৩ এ ধারা (অর্থ আইন ২০১৮ তে সংযোজন) মোতাবেক জরিমানার বিধান রয়েছে।

তাই অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে আয়কর রিটার্ন প্রস্তুত করতে হবে। নিম্নবর্ণিত কারণগুলো যথাযথভাবে রিটার্নে না আসলে উপ-কর কমিশনার কর্তৃক অডিটের জন্য সুপারিশ প্রেরণ বা পুনঃজমা বা সংশোধন বা জরিমানার আওতায় আসতে পারে–

১. আয়করের খাত যথাযথভাবে নির্ধারণ করা না হলে;

২. নির্ধারিত সময়ের জন্য আয়কর গণনায় ভুল হলে;

৩. আগের বছরের তুলনায় আয় কম দেখালে বা বাদ পড়া আয় এ বছর হিসাবে দেখানো হয়েছে কিন্তু যথাযথভাবে ব্যাখ্যা না দিলে;

৪. বিনিয়োগের রেয়াত গণনায় ভুল হলে বা যত টাকা রেয়াত পাওয়ার কথা তার চেয়ে কম বা বেশি রেয়াত দেখালে;

৫. বিনিয়োগের পরিমাণে যথাযথ দলিলপত্রাদি না দেখালে;

৬. করদাতা যদি বাড়ি বা স্থাপনা ভাড়া খাতে আয় থাকে এবং মাসিক ভাড়া ২৫ হাজার টাকা বেশি হয়, তাহলে ব্যাংক চ্যানেল ব্যবহার না করে নগদে ভাড়া আদায় দেখালে;

৭. সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ দেখানো হয়েছে, কিন্তু সঞ্চয়পত্রের মুনাফা রিটার্নে না দেখালে;

৮. কৃষি জমি দেখানো হয়েছে, কিন্তু কৃষি খাতে আয় দেখানো না হলে;

৯. দোকান বা মার্কেট আছে ভাড়া বা ব্যবসা খাতে আয় দেখানো না হলে;

১০. সংযুক্তিসমূহ, যেমন- সম্পত্তি ক্রয়/বিক্রয় হলে দলিলের ফটোকপি, ব্যাংক স্টেটমেন্ট ইত্যাদি ডকুমেন্ট সংযুক্ত না করলে;

১১. একাধিক গাড়ি থাকলে সারচার্জ না দিলে;

১২. স্ত্রী বা স্বামীর বা অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানের নামে থাকা সম্পত্তির হিসাব না দিলে;

১৩. দেশি বা বিদেশি আত্মীয় থেকে উপহার গ্রহণ করলে এবং তা আয়কর বিবরণীতে না দেখালে;

১৪. ফ্ল্যাট ক্রয় সংশ্লিষ্ট এলাকার মৌজা রেটের কম দেখালে বা অধিক মূল্যে ক্রয় করে কর ফাঁকি দেওয়ার জন্য কমমূল্য দেখিয়ে রেজিস্ট্রি করা হলে;

১৫. আয়ের ক্ষেত্রে বৈধ ডকুমেন্ট দেখাতে ব্যর্থ হলে;

১৬. গাড়ি দেখানো আছে, কিন্তু গাড়ি মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ ও গাড়িচালকের ব্যয় না দেখালে;

১৭. এফডিআর দেখানো হয়েছে, কিন্তু এফডিআর থেকে প্রাপ্ত মুনাফা/সুদ দেখানো না হলে;

১৮.খাতভিত্তিক পারিবারিক খরচ দেখানো না হলে;

১৯. ব্যাংকের চ্যানেল ব্যতীত ব্যক্তিগত লোন আদান-প্রদান করা হলে;

২০. একই বিষয়ে বা কোনও স্থায়ী সম্পত্তি ক্রয়ের জন্য বহু বছর ধরে অগ্রিম দেখানো;

২১. পারিবারিক খরচ আবাসিক অবস্থানের তুলনায় কম বা বেশি দেখানো হলে;

২২. রিটার্ন গরমিল থাকলে বা না মিললে বা পজিটিভ বা নেগেটিভ অঙ্ক পরিলক্ষিত হলে;

২৩. পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকৃত তহবিলের ওপর বিগত সময়ে অপ্রদর্শিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির বিপরীতে ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রতিস্থাপিত ধারা ১৯-এ মোতাবেক ২৬.২৫% হারে কর পরিশোধ না করে সম্পত্তি প্রদর্শন করলে;

২৪. পুরুষ করদাতার বয়স ৬৫ বছর বা তার ঊর্ধ্বে নয়, কিন্তু করমুক্তসীমা হিসাব করা হয়েছে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ইত্যাদি।

এছাড়া আয়কর নথির সঙ্গে সংযুক্তিগুলো যথাযথভাবে লক্ষ রাখা দরকার। প্রতিটি সংযুক্তিই সংশ্লিষ্ট আয়-ব্যয় সম্পদের পক্ষে যুক্তির অংশ। তাই সংশ্লিষ্ট সব করদাতার এ সংযুক্তিগুলোর প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া জরুরি।

যেমন, ১/বেতন আয়ের ক্ষেত্রে বেতন বিবরণী; ২/ ব্যাংক সুদের ক্ষেত্রে ব্যাংক বিবরণী; ৩/সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে সুদ প্রদানকারী ব্যাংকের সনদপত্র; ৪/গৃহ সম্পত্তির আয়ের ক্ষেত্রে ভাড়ার চুক্তিপত্র; ৫/ গৃহঋণের ক্ষেত্রে সুদ থাকলে ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সনদপত্র/বিবরণী; ৬/পৌর কর খাজনা প্রদানের রসিদ; ৭/ পেশাগত আয় থাকলে আয়কর বিধি-৮ মোতাবেক আয়ের সপক্ষে বিবরণী; ৮/বিমা কিস্তি প্রদান থাকলে প্রিমিয়াম প্রদানের রসিদ; ৯/ মূলধনী মুনাফা থাকলে প্রমাণাদি; ১০/অংশীদারী ফার্মের আয় থাকলে অংশীদারী ফার্মের আয় নির্ধারণী আদেশের কপি/আয়-ব্যয় হিসাব ও স্থিতিপত্র; ১১/ অন্যান্য আয় থাকলে প্রমাণাদি; ১২/ ডিভিডেন্ট আয় থাকলে ডিভিডেন্ট প্রাপ্তির সনদ; ১৩/ ব্যবসার আয় থাকলে আয়-ব্যয়ের বিবরণী, উৎপাদন হিসাব, বাণিজ্যিক হিসাব, লাভ-ক্ষতির হিসাব এবং স্থিতিপত্র; ১৪/ সঞ্চয়পত্র, এল.আই.পি, ডিপিএস, জাকাত, স্টক/শেয়ার ক্রয়, ইত্যাদিতে বিনিয়োগ থাকলে প্রমাণাদি; ১৫/ আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর তৃতীয় তফসিল অনুযায়ী অবচয় দাবি থাকলে অবচয় বিবরণী।

এছাড়া কখনও কখনও কিছু পৃথক বিবরণী দাখিল করার প্রয়োজন হতে পারে। যেমন- ১. করদাতার স্ত্রী বা স্বামী (করদাতা না হলে) নাবালক সন্তান বা নির্ভরশীলদের নামে কোনও আয় থাকলে; ২. কর অব্যাহতি বা করমুক্ত আয় থাকলে; ৩. স্ত্রী/স্বামী/নাবালক সন্তান/বড় ভাই/বোন/ এরা কেউ করদাতা নয়, কিন্তু তাদের নামে সম্পত্তি থাকলে, সম্পত্তির উৎসের বিবরণী সংযুক্ত করতে হবে; ৪. প্রতি ৫ বছর পরপর করদাতার নতুন ও আপডেট ছবি সংযুক্ত করা; ৫. করদাতা ফার্ম হলে অংশীদারদের টি.আই.এন.সহ নাম ও ঠিকানা; ৬. করদাতার নিজের বা আইনানুগ প্রতিনিধির স্বাক্ষর বাধ্যতামূলক ইত্যাদি প্রয়োজনীয় তথ্যাদি।

যেসব কারণে করদাতা রিটার্ন অডিটের জন্য সুপারিশের বাইরে থাকতে পারে:

১. রিটার্নের ভিত্তিতে ফেরতযোগ্য কর সৃষ্টি না হলে;

২. রিটার্নে কোনোরূপ দান গ্রহণ না থাকলে;

৩. করমুক্ত আয় থাকলে এবং তার সপক্ষে প্রয়োজনীয় দলিলাদি সংযুক্ত থাকলে;

৪. আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর ধারা ৪৪ জারিকৃত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী হ্রাসকৃত হারে আয়কর প্রযোজ্য হয় এরূপ কোনও আয় প্রদর্শন না করলে;

৫. ব্যাংক বীমা বা অন্য কোনও উৎস থেকে ৫ টাকা বা তার অধিক কোনও ঋণ গ্রহণ করলে এবং উক্ত ঋণের পক্ষে প্রয়োজনীয় দলিলাদি সংযুক্ত করা হলে;

৬. বিগত বছরের তুলনায় ১৫%-এর অধিক আয় না থাকলে ইত্যাদি।

আয়কর রিটার্ন করদাতার সম্পদ কেন:

আমার দেখা একটা বাস্তব উদাহরণ শেয়ার করলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে বলে আশা করছি। আমাদের খুব কাছের একজন বন্ধু, তিনি ৫ বছর আগে আয়কর যোগ্য বেতনে চাকরি করতেন, নিয়মিত কর দিতেন এবং রিটার্ন জমা দিতেন। কিন্তু পাঁচ বছর যাবৎ তাঁর তেমন কোনও করযোগ্য আয় ছিল না এবং  তিনি রিটার্নও জমা দেননি। তিনি বন্ধু, প্রতিবেশী,আত্মীয় থেকে ধারদেনা করে একটা ব্যবসা শুরু করার পরিকল্পনা করলেন। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করতে গেলেন। ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করতে পারছেন না। এবার গেলেন ট্রেড লাইসেন্স করতে। সেখানে টিআইএন নম্বর আছে, কিন্তু আয়কর নথি আপডেট কপি বা আপডেট ট্যাক্স সার্টিফিকেট জমা দিতে বলছে। এসব ঝামেলা দেখে একজন আয়কর পেশাজীবীর কাছে গেলেন। তাঁর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সার্কেলে মোটামুটি বড় অঙ্কের জরিমানা দিয়ে আয়কর নথি হালনাগাদ করলেন। কিন্তু করযোগ্য আয় থাকুক আর না থাকুক তিনি যদি নিয়মিত রিটার্ন জমা দিতেন বা আইনগত পদক্ষেপ নিতেন তাহলে তাকে আইনগতভাবে এ ঝামেলাগুলোতে পড়তে হতো না। এ অর্থে আমরা আয়কর নথিকে করদাতা সম্পদ হিসেবে গণ্য করতে পারি।

অন্যদিকে একজন করদাতা বিদেশে ছিলেন বহু বছর। তিনি ৫ বছর আগে দেশে ফিরে আসছেন। একটা বাড়ি করলেন, একটা গাড়ি কিনলেন, কিছু জায়গা জমিও কিনলেন। সব জায়গায় দালালের মাধ্যমে কাজ করেছেন। সব জায়গায় ভুয়া টিআইন সাটিফিকেট দিয়ে তার কাজ সমাপ্ত করেছেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তিনি কোনও ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশন গ্রহণ করেননি। এরপর সিটি করপোরেশনের ট্যাক্স জমা দিতে গিয়েছেন। সেখানে দেখা গেলো তিনি ইতিপূর্বে যতগুলো কাজ করেছেন, দালাল তাকে ফাঁকি দিয়ে ভুয়া আয়কর সার্টিফিকেট দিয়ে কাজগুলো করিয়েছেন। অর্থাৎ তাঁর নামে ইস্যু করা আয়কর সার্টিফিকেট ছিল বেওয়ারিশ। তখন তাঁর মাথায় হাত। দ্রুত চলে গেলেন একজন আয়কর পেশাজীবীর অফিসে। ই-টিআইএন খুললেন। বকেয়া আয়করসহ ও জরিমানাসহ বিশাল অংকের টাকা খরচ করতে হলো। সমাধান করলেন। কিন্তু ইতোপূর্বে তিনি দালালকেও মোট অংকের অর্থ দিয়েছেন।

সম্মানিত করদাতার আর্থিক ক্ষতি হতো না যদি না তিনি আইন মেনে, জেনে সঠিকভাবে সকল স্তরে কাজ করতেন। তাহলে তাকে আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হতে হতো না। এই অর্থেও আয়কর রিটার্ন করদাতার একটি বড় সম্পদ।

সুতরাং করদাতাকে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে এবং সংরক্ষণে রাখতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা হলো প্রত্যেক করদাতাকে তার নিজের আয়-ব্যয়ের হিসাব নিজেকেই রাখতে হবে এবং সঠিকতা যাচাই করতে হবে। নথি জমা দেওয়ার পর একটি কপি তিনি তার হেফাজতে রাখবেন। হাল নাগাদ রিটার্ন করদাতার বড় সম্পদ, এটা বুঝতে পারেন যখন তিনি আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হয়ে যান।    

লেখক: আয়কর আইনজীবী  

[email protected]
 
/এসএএস/এমওএফ/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
মিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিমিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
বুধবার গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়
বুধবার গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়
‘রানা প্লাজার দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে কর্মক্ষেত্রকে নিরাপদ করতে হবে’
‘রানা প্লাজার দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে কর্মক্ষেত্রকে নিরাপদ করতে হবে’
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাকি দুই টি-টোয়েন্টিতে অনিশ্চিত রিজওয়ান
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাকি দুই টি-টোয়েন্টিতে অনিশ্চিত রিজওয়ান
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ