আন্তর্জাতিক আইন বিষয়ক পাঠদান, গবেষণা ও পেশাগত চর্চার মাধ্যমে অর্জিত অভিজ্ঞতার আলোকে আমি এই নিবন্ধে বাংলাদেশ সরকারের বিবেচনার জন্য দুটি প্রস্তাব পেশ করতে চাই। প্রস্তাব দুটি হলো: (১) আন্তর্জাতিক চুক্তি বিষয়ক ভিয়েনা কনভেনশন ১৯৬৯-এ সদস্যরাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের যোগদান করা, এবং (২) কূটনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ক ভিয়েনা কনভেনশন ১৯৬১-কে প্রকৃষ্টরূপে কার্যকারিতা দান করার জন্য একটি আইন প্রণয়ন করা।
প্রথমে আন্তর্জাতিক চুক্তি বিষয়ক ভিয়েনা কনভেনশনে (ভিসিএলটি) সদস্যরাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের যোগদানের প্রসঙ্গটি আলোচনা করা যাক। পাঠকের সুবিধার্থে জানাচ্ছি, আন্তর্জাতিক আইন কমিশনের দীর্ঘ দুই দশক বিস্তৃত তথা ১৯৪৯ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত প্রচেষ্টার ফল হলো এই ভিসিএলটি। ভিসিএলটি ১৯৬৯ সালে গৃহীত হয় এবং ১৯৮০ সালে আইনগতভাবে কার্যকারিতা লাভ করে। এটি মূলত রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে সম্পাদিত লিখিত ‘আন্তর্জাতিক চুক্তি’ বা ‘ট্রিটি’-বিষয়ক আন্তর্জাতিক আইন।
অনেকেই জানেন, আন্তর্জাতিক আইনের অভ্যন্তরীণ প্রয়োগের প্রশ্নে বাংলাদেশ দ্বৈতবাদ (ড্যুয়োলিজম) অনুসরণ করে। দ্বৈতবাদী রাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক আইন সরাসরি কার্যকারিতা লাভ করে না, সেজন্য অভ্যন্তরীণ আইনের প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশ দ্বৈতবাদ অনুসরণ করলেও এর সংবিধান বা অন্য কোনও আইনে আন্তর্জাতিক আইন ও দেশের অভ্যন্তরীণ আইনের সম্পর্ক কী হবে সে সম্পর্কিত কোনও সুস্পষ্ট বিধান নেই। আমরা দেখবো, ভিসিএলটিতে অংশগ্রহণ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ আইন এবং আন্তর্জাতিক আইনের মধ্যকার সম্পর্ক স্পষ্টীকরণে ভূমিকা রাখতে সহায়ক হবে এবং এটি আন্তর্জাতিক চুক্তির সম্পাদন, বাস্তবায়ন এবং অবসান সম্পর্কিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় আচরণকে (স্টেট প্র্যাকটিস) সুসংহত করতে সাহায্য করবে।
প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালে গৃহীত বাংলাদেশের মূল সংবিধানে ‘আন্তর্জাতিক চুক্তি’ শব্দটির কোনও উল্লেখ পাওয়া যায় না। সংবিধানে এ অনুল্লেখ থাকা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক চুক্তি সম্পাদনের ক্ষমতা সরকারের নির্বাহী বিভাগ সবসময় প্রথাগতভাবে প্রয়োগ করে এসেছে। উদাহরণস্বরূপ, কাজী মুখলেছুর রহমান বনাম বাংলাদেশ [(১৯৭৪) ২৬ ডিএলআর (সুপ্রিম কোর্ট) ৪৪] মামলায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ আন্তর্জাতিক চুক্তি সম্পাদন করার ক্ষমতা অন্তর্নিহিতভাবে সংবিধানের ৫৫(২) অনুচ্ছেদের অন্তর্ভুক্ত বিধায় তা নির্বাহী বিভাগের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে বলে মত প্রদান করেছেন।
‘আন্তর্জাতিক চুক্তি’ শব্দটি বাংলাদেশ সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে আরও পরে, ১৪৫(ক) অনুচ্ছেদ গৃহীত হওয়ার মাধ্যমে। ১৪৫(ক) অনুচ্ছেদ মতো:
“বিদেশের সহিত সম্পাদিত সকল চুক্তি রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করা হইবে, এবং রাষ্ট্রপতি তাহা সংসদে পেশ করিবার ব্যবস্থা করিবেন–
তবে শর্ত থাকে যে জাতীয় নিরাপত্তার সহিত সংশ্লিষ্ট অনুরূপ কোনও চুক্তি কেবলমাত্র সংসদের গোপন বৈঠকে পেশ করা হইবে।”
লক্ষণীয়, ১৪৫ (ক) অনুচ্ছেদেও সরকারের আন্তর্জাতিক চুক্তি সম্পাদন ক্ষমতা বিষয়ক সুস্পষ্ট কোনও বক্তব্য নেই। মোদ্দাকথা হলো, বাংলাদেশের সংবিধানে আন্তর্জাতিক আইন এবং দেশের অভ্যন্তরীণ আইনের মধ্যে কী সম্পর্ক হবে বা সরকারের আন্তর্জাতিক চুক্তি সম্পাদন বিষয়ক ক্ষমতা ও তার প্রয়োগ কীভাবে হবে সে সম্পর্কে কোনও স্পষ্ট বিধান নেই। এই প্রেক্ষাপটে, ভিসিএলটিতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের আইন ব্যবস্থার উপরিউক্ত অপ্রতুলতা দূর করা সম্ভব হবে এবং আন্তর্জাতিক চুক্তি সম্পাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় আচরণ কেমন হবে সে সম্পর্কে জাতীয়-আন্তর্জাতিক সব স্তরে একটি সুনির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ (যেহেতু একটি দ্বৈতবাদী রাষ্ট্র) যদি ভিসিএলটিতে সদস্যরাষ্ট্র হিসেবে যোগদান করে তবে তা বাস্তবায়ন করার জন্য অভ্যন্তরীণ আইনের প্রয়োজন হবে। এ উদ্দেশ্যে প্রণীত কোনও আইন বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক আইন এবং অভ্যন্তরীণ আইনের মধ্যকার সম্পর্ক স্পষ্ট করতে সহায়ক হবে। এবং আন্তর্জাতিক আইন ও অভ্যন্তরীণ আইনের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বিষয়ক প্রশ্ন নিষ্পত্তি করতে আদালতকে যথাযথ দৃষ্টিভঙ্গি অবলম্বন করতে সাহায্য করবে। যেমন, সুপ্রিম কোর্ট কোনও কোনও মামলায় আন্তর্জাতিক চুক্তির কোনও বিধান উল্লেখ করার সময় উক্ত বিধানের ওপর বাংলাদেশের ‘রিজার্ভেশন’ বিবেচনার্থে গ্রহণ করেনি। উদাহরণস্বরূপ, ড. শিপ্রা চৌধুরী বনাম বাংলাদেশ [(২০০৯) ২৯ বিএলডি (হাইকোর্ট ডিভিশন) ১৮৩] মামলায় দেখা যায়, আদালত নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য দূরকরণ বিষয়ক কনভেনশনের ১৬ নম্বর অনুচ্ছেদ উল্লেখ করার সময় উক্ত অনুচ্ছেদের ১(গ) উপ-অনুচ্ছেদের ওপর বাংলাদেশের ‘রিজার্ভেশন’ বিবেচনার্থে গ্রহণ করেনি।
বর্তমানে, ১১৬টি রাষ্ট্র ভিসিএলটিতে সদস্য হিসেবে যোগদান করেছে। এখন, বাংলাদেশ যদি ভিসিএলটিতে সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে যোগদান করে, তাহলে সে জাতিসংঘের অধিকাংশ সদস্য রাষ্ট্রসহ বিপুল সংখ্যক বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রের সঙ্গে আন্তর্জাতিক চুক্তির সম্পাদন, বাস্তবায়ন এবং অবসান বিষয়ে একটি অভিন্ন আইনি কাঠামোয় অঙ্গীভূত হওয়ার সুযোগ পাবে। ফলে আন্তর্জাতিক চুক্তি সম্পাদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন স্তরের পরিচালন ব্যয় হ্রাস পাবে। বাস্তবতা হলো, যেহেতু অনেক রাষ্ট্র ইতোমধ্যে ভিসিএলটিতে যোগদান করেছে, তাই বাংলাদেশের পক্ষে এর আইনি গুরুত্ব উপেক্ষা করা অসম্ভব। উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, বাংলাদেশ সময়ে সময়ে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে তার আইনি অবস্থানের যথার্থতা তুলে ধরার জন্য ভিসিএলটিকে রেফারেন্স হিসেবে উল্লেখ করেছে। যেমন, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সমুদ্রসীমা নির্ধারণ বিষয়ক মামলায় বাংলাদেশ সমুদ্র আইন বিষয়ক ট্রাইব্যুনালের সম্মুখে উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত ১৯৭৪ এবং ২০০৮ সালের যৌথ বিবরণীগুলো (এগ্রিড মিনিটস) আন্তর্জাতিক চুক্তি হিসেবে গণ্য হওয়া উচিত মর্মে যুক্তি তুলে ধরার সময় ভিসিএলটিকে সাফাই হিসেবে উদ্ধৃতি দিয়েছিল। সর্বোপরি, ভিসিএলটিতে সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে যোগদান করলে বাংলাদেশকে তার অভ্যন্তরীণ আইনি কাঠামোতে বড় ধরনের কোনও পরিবর্তন আনয়ন করতে হবে না।
ওপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়, ভিসিএলটিতে সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে যোগদান বাংলাদেশের জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উভয় ক্ষেত্রে অনেক সুফল নিয়ে আসবে। তাই ভিসিএলটিতে সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে যোগদান করার জন্য বাংলাদেশের আশু পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
এ পর্যায়ে এই নিবন্ধের দ্বিতীয় প্রস্তাব অর্থাৎ কূটনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ক ভিয়েনা কনভেনশনের প্রতি দৃষ্টি দেওয়া যাক।
কূটনৈতিক সম্পর্ক হলো যেকোনও দেশের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মূল ভিত্তি। বিদেশি ভূখণ্ডে কূটনৈতিক প্রতিনিধি ও মিশনের সুরক্ষা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও আন্তর্জাতিক আইনে সবসময় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। কূটনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ক ভিয়েনা কনভেনশন ১৯৬১ (ভিসিডিআর) জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ পর্যন্ত গৃহীত সবচেয়ে ব্যাপক সমর্থন পাওয়া আন্তর্জাতিক চুক্তিসমূহের একটি। এটি ১৯৬৪ সালে আইনগত কার্যকারিতা লাভ করে। বর্তমানে, ভিসিডিআর-এ অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রের সংখ্যা ১৯৩টি।
বাংলাদেশ ১৯৭৮ সালে অনুসৃতির (সাকসেশন) মাধ্যমে ভিসিডিআর-এ যোগদান করলেও এখন পর্যন্ত এ কনভেনশনকে কার্যকারিতা দিয়ে কোনও আইন পাস করেনি। অথচ একটি দ্বৈতবাদী দেশ হিসেবে কোনও আন্তর্জাতিক চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশের নিজস্ব আইনের আবশ্যকতা বিদ্যমান। বর্তমানে বাংলাদেশে কূটনৈতিক বিশেষাধিকার ও দায়মুক্তি সম্পর্কিত প্রধানতম আইন হলো ‘কূটনৈতিক দায়মুক্তি (কমনওয়েলথভুক্ত রাষ্ট্রের প্রতিনিধি) আইন, ১৯৫৭’ (কূটনৈতিক দায়মুক্তি আইন)। লক্ষণীয়, এ আইনটি প্রণীত হয়েছিল বাংলাদেশের জন্মের বহু পূর্বে, এমনকি ভিসিডিআর গৃহীত হওয়ার আগে।
উল্লেখ করা প্রয়োজন, ১৯৫৭ সালের কূটনৈতিক দায়মুক্তি আইনের আওতা সর্বজনীন নয়। এটি কেবল কমনওয়েলথভুক্ত রাষ্ট্রসমূহের কূটনৈতিক প্রতিনিধি, তাদের পরিবারের সদস্য, কর্মচারী প্রভৃতি ব্যক্তিবর্গকে দেওয়ানি মামলা ও আইনি প্রক্রিয়া থেকে সুরক্ষা দেয়। অধিকন্তু এ আইন কমনওয়েলথভুক্ত রাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতদের বাসস্থান, দফতর ও মহাফেজখানার অলঙ্ঘনীয়তার নিশ্চয়তা প্রদান করে। বর্তমানে পৃথিবীতে ৫৬টি কমনওয়েলথভুক্ত রাষ্ট্র রয়েছে। এসব রাষ্ট্রের বাইরে কমনওয়েলথভুক্ত নয় এমন প্রভূত সংখ্যক রাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক বিদ্যমান আছে, যাদের কূটনৈতিক প্রতিনিধিরা উপরোক্ত কূটনৈতিক দায়মুক্তি আইন কর্তৃক প্রদত্ত সুরক্ষার অন্তর্ভুক্ত নয়।
এছাড়াও, কূটনৈতিক দায়মুক্তি আইন ভিসিডিআরের অন্তর্ভুক্ত অধিকাংশ বিষয় সম্পর্কে নিশ্চুপ- যথা, কর/শুল্ক হতে অব্যাহতি; সম্পত্তি, নথিপত্র, কূটনৈতিক ব্যাগ ও দাফতরিক পত্র-যোগাযোগের অলঙ্ঘনীয়তা; কূটনৈতিক প্রতিনিধিদের গ্রেফতার থেকে সুরক্ষা; কূটনৈতিক প্রতিনিধিদের কোনোরূপ ব্যক্তিগত বা সামরিক দায়িত্ব পালন বা সাক্ষ্য প্রদান থেকে নিষ্কৃতি; বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি কূটনৈতিক প্রতিনিধিদের দায়িত্ব ও কর্তব্য ইত্যাদি।
ভিসিডিআরে উল্লিখিত এসব বিষয়কে কার্যকারিতা দান করে প্রণীত একটি আইন কূটনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ আইনি কাঠামোকে একটি সংহত রূপ প্রদান করবে। এরকম একটি আইন গৃহীত হলে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ভিসিডিআর মেনে চলার প্রতি বাংলাদেশের আন্তরিক প্রতিশ্রুতির বহিঃপ্রকাশ ঘটাবে। ফলে বাংলাদেশ অবস্থিত বিদেশি কূটনৈতিক প্রতিনিধিরা আরও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে উদ্বুদ্ধ হবেন এবং হয়তো অনেক রাষ্ট্র বাংলাদেশে কূটনৈতিক মিশন স্থাপনে অধিকতর উৎসাহিত হবে। এটা অনস্বীকার্য যে কোভিড-১৯ মহামারি পরবর্তী জটিল ও অশান্ত ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সফলভাবে টিকে থাকার জন্য বাংলাদেশকে তার আন্তর্জাতিক সম্পর্কের পরিসীমা বৃদ্ধি করতে হবে। কূটনৈতিক বিশেষাধিকার ও দায়মুক্তি সংবলিত একটি সামগ্রিক আইন প্রণয়ন করা হতে পারে এ বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
পরিশেষে, এই ধরনের আইন বাংলাদেশকে অবস্থিত বিদেশি কূটনৈতিক প্রতিনিধিদের কার্যক্রম বা আচরণ প্রকৃষ্টরূপে তদারকি করার সুযোগ দেবে। ভিসিডিআর-এর ৪১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে বিদেশি কূটনৈতিক প্রতিনিধিদের গ্রহীতা রাষ্ট্রের আইন-কানুন মেনে চলা ও সেই রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার বাধ্যবাধকতা আছে। লক্ষ করা গেছে, বিভিন্ন সময়ে বেশ কিছু বিদেশি রাষ্ট্রের কূটনৈতিক প্রতিনিধিরা এমন সব মন্তব্য করেছেন যা রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল এবং তা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল বলে গণ্য হতে পারে। দেশের গণমাধ্যম বা বিভিন্ন মহলের সামনে করা তাঁদের এসব মন্তব্য হয় আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধিভুক্ত বিষয় নয়, নতুবা তা কেবল দ্বিপাক্ষিক বা বহুপাক্ষিক কূটনৈতিক/আইনি ফোরামে উত্থাপিত হতে পারে।
অনেক উদাহরণ আছে যে, দ্বৈতবাদ অনুসরণ করে এরকম রাষ্ট্রসমূহ ভিসিডিআরকে কার্যকারিতা প্রদান করার লক্ষ্যে আইন প্রণয়ন করেছে। যুক্তরাজ্য ১৯৬৪ সালে, অস্ট্রেলিয়া ১৯৬৭ সালে, ভারত ও পাকিস্তান ১৯৭২ সালে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৯৭৮ সালে, শ্রীলঙ্কা ১৯৯৬ সালে, দক্ষিণ আফ্রিকা ২০০১ সালে ভিসিডিআরের বিধানাবলিকে কার্যকারিতা দেওয়ার জন্য আইন পাস করেছে।
আশা করি, বাংলাদেশ সরকার এ প্রস্তাব দুটি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবে এবং অবিলম্বে এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
লেখক: আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও সদস্য, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, বাংলাদেশ।