X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

আমরা সবাই আওয়ামী লীগ!

হারুন উর রশীদ
২৯ এপ্রিল ২০১৯, ১৭:৪১আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০১৯, ২২:১২

হারুন উর রশীদ এখন সবাই আওয়ামী লীগ হতে চায়। যা খবর পাই তাতে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত আওয়ামী লীগের ‘জনসংখ্যা’ হু হু করে বাড়ছে। আর এইভাবে বানের জল আসতে থাকলে আগামী পাঁচ বছরে হয়তো দেশে আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কিছু খুঁজে পাওয়া যাবে না। সার্থকতা পাবে ‘আমরা সবাই আওয়ামী লীগ’ শব্দগুচ্ছ! কিন্তু কী কারণে জানি না এখন খোদ আওয়ামী লীগই যেন ‘নব্য আওয়ামী লীগারদের’ নিয়ে ভীত হয়ে পড়েছে। তাই আদেশ হয়েছে ‘নব্যদের’ তালিকা করার। আর সেই তালিকা আওয়ামী লীগের আগামী কাউন্সিলের আগেই করতে বলা হয়েছে। সতর্ক করা হয়েছে নব্যরা যেন কোনও কিছু গোপন করে কৌশলে কোনও কমিটিতে ঢুকে পড়তে না পারে। 

কাউয়া, হাইব্রিড, নব্য:

কিন্তু দলে যদি নতুনরা আসে তাদের তো রাখার জন্য আরও কিছু সুযোগ-সুবিধা দেওয়া প্রয়োজন! তাদের যত্ন-আত্তিও একটু বেশি করা প্রয়োজন। যেমন, আমরা বিভিন্ন সময় দেখেছি ‘নও মুসলিমদের’ একটু বেশিই দেওয়া হয়। কিছু এনজিও একসময় দেখেছি ‘নও মুসলিমদের’ নানা সুবিধা দেয়। তাদের বিশেষ আর্থিক সহযোগিতাও দেওয়া হতো। এখনও দেওয়া হয় কিনা জানি না। আওয়ামী লীগেও সেটা চালু করলে মন্দ কী?

আসলে বিষয়টি বিবেচনা করা প্রয়োজন। যারা পুরনো আওয়ামী লীগ তাদের বুঝতে হবে, যারা পুরনো দল বা পুরনো প্রেম ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন বা দিচ্ছেন, তারা বড় একটা আত্মত্যাগ করছেন। পুরনো প্রেম ছাড়া কিন্তু অনেক কঠিন। তারা পুরনো প্রেম, পুরনো আদর্শ ছেড়ে নতুন প্রেম এবং নতুন আদর্শের কাছে সমর্পিত হচ্ছেন। তাই তাদের একটু বেশিই গুরুত্ব দেওয়া উচিত। তারা যাতে বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা পান, একটু বেশি গুরুত্ব পান, সেজন্য আলাদা পরিচয়পত্রও দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু হচ্ছে উল্টো। চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকই আসলে ‘নব্যদের’ বিরুদ্ধে কয়েক বছর ধরে কথা বলে আসছেন। তিনিই আওয়ামী লীগে ‘কাউয়া’ এবং ‘হাইব্রিড’ শব্দ দু’টির প্রচলন ঘটান। শব্দ হিসেবে এ দু’টি নতুন না হলেও শব্দ দুটোকে রাজনৈতিক অভিব্যক্তি প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার তিনিই প্রথম করেছেন। রাজনৈতিক সাহিত্যে এই শব্দ দু’টি প্রচলনের জন্য তিনি নিশ্চয়ই পায়োনিয়ার। কিন্তু আমরা কথা হলো শব্দ দু’টি তো খারাপ না। ‘কাউয়া’ পাখি আমাদের এক উপকারী বন্ধু। তারা আবার ময়লা-আবর্জনা খেয়ে আমাদের শহর পরিষ্কার রাখে। দেখতে কালো হলেই কি আমরা তাকে অবহেলা করবো। ‘কাউয়া’র জনসেবাও তো সর্বজনবিদিত। কোকিলের ডিমে তা দেয়। বাচ্চা ফোটায়। এর চেয়ে বেশি আর কী করতে পারে সে। আবার তাদের ঐক্যও দেখার মতো। কাউয়ার ঐক্য রীতিমত মিথ। তবে কণ্ঠটা একটু কর্কশ। আমার মনে হয় তারা আওয়ামী প্রশিক্ষণ পেলে কণ্ঠও সুমধুর হয়ে যাবে।

এরপর থাকে হাইব্রিড। সারা দুনিয়ায় তো এখন হাইব্রিডের জয়জয়কার। কৃষি, খাদ্য, প্রাণি সবখানেই তো এখন হাইব্রিডের কদর। বিশ্বে খাদ্য চাহিদা মিটাতে এখন তো হাইব্রিড শাকসবজি, ফসলের কথাই বলা হচ্ছে। চাষ হচ্ছে। মাছ, মাংস সবখানেই তো এখন হাইব্রিড ইঞ্জিনিয়ারিং। তাহলে দলে কেন হাইব্রিড থাকবে না। এই আধুনিক ডিজিটাল যুগে হাইব্রিড ছাড়া কি চলবে?

কীভাবে তারা আসছেন

কাউয়া, হাইব্রিড আর নব্য আওয়ামী লীগার যে নামেই ডাকুন না কেন, বোঝা যাচ্ছে তারা আওয়ামী লীগে নতুন। আর এই নব্য আওয়ামী লীগাররা আসছেনই। তবে নব্য আওয়ামী লীগ হওয়ার দু’টি পর্ব রয়েছে-

১. নির্বাচনের আগের পর্ব

২. নির্বাচনের পরের পর্ব

জাতীয় নির্বাচনের আগে স্বেচ্ছায় আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন এক দল। আরেক দল যোগ দিতে বাধ্য হয়েছেন। নির্বাচনের আগে সারাদেশেই আমরা দেখেছি যোগদানের মিছিল। একদল সুচতুর। তারা পরিস্থিতি বুঝতে পেরে আওয়ামী লীগে শামিল হয়েছেন। আরেক দল চাপের মুখে। এলাকায় টিকে থাকতে, ব্যবসা-বাণিজ্য টিকিয়ে রাখতে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। তৃণমূলের বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের একটা যোগাযোগ আছে। আমি নির্বাচনের আগে দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকজন তৃণমূল নেতার ফোন পেয়েছি। তারা একবার নয়, একাধিকবার ফোন করেছেন। তাদের একটিই প্রশ্ন ছিল- আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে তো। তারা তাদের দীর্ঘদিনের দল ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার আগে নিশ্চিত হতে চাইছিলেন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে কিনা। কারণ, আগের দল ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার পর যদি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না আসে তাহলে ‘আম ছালা দুটোই যাবে’। নির্বাচনের পরেও তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা এখন নির্ভার। তাদের আমও আছে, ছালাও আছে। কিন্তু তাদের বড় অংশ এখন এই আমের ব্যবসা আরও বাড়াতে চান।

নির্বাচনের আগে সাধারণভাবে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের একাংশ চেয়েছেন দল আরও ভারি করতে। বিজয় নিশ্চিত করতে। তাই যারা যোগ দিতে চেয়েছেন তাদের সাদরে গ্রহণ করেছেন। উদ্বুদ্ধ করেছেন। তবে আওয়ামী লীগের কিছু প্রার্থী ছিলেন, যাদের স্থানীয় আওয়ামী লীগে অবস্থান ভালো ছিল না। মনোনয়ন পেলেও তৃণমূল আওয়ামী লীগের বিরোধিতার মুখে পড়েছেন। এই আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারাও মূল ধারার আওয়ামী লীগ নয়। অর্থ, যোগাযোগ বা নানা কৌশলে তারা মনোনয়ন বাগিয়েছেন। যোগদান পর্বে তাদের ভূমিকা ছিল অসাধারণ। তারা আওয়ামী লীগের বাইরের লোকজনকে দলে ভিড়িয়ে তাদের অবস্থান শক্ত করতে চেয়েছেন। তারা দুয়ার পুরোই খুলে দিয়েছেন। তারা সংসদ সদস্য হয়েছেন। ওইসব এলাকায় এখন স্বাভাবিক কারণেই নব্য আওয়ামী লীগারদের দাপট। পুরনো আওয়ামী লীগাররা কোণঠাসা।

আর নির্বাচনের পরেও আওয়ামী লীগে যোগদান অব্যাহত আছে। দলবেঁধে যোগ দিচ্ছেন। আর এই দলবেঁধে যোগদানকে স্বাগত জানানোর পেছনে আছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সেই পুরনো কোন্দল। এর সঙ্গে যারা ভালো ব্যবসা বাণিজ্য করেন, টাকা পয়সা আছে তারাও আসছেন। এটা আমদানি রফতানি ব্যবসার মতো। এরকম যারা যোগ দিচ্ছেন তারা যোগ দিতে প্রাথমিকভাবে খরচ করলেও এটাকে বিনিয়োগ হিসেবে দেখছেন। তারা বিনিয়োগ উসুল করবেন নিশ্চয়ই।

কারা আসছেন?

আওয়ামী লীগ-এর নৌকা এখন যেন নুহ নবীর (আ.) কিস্তিতে পরিণত হয়েছে। সব জাতের এবং সব মতের লোকজন এখন এখানে আশ্রয় নিচ্ছেন। বিএনপি তো আছেই। আছে জামায়াতও। এর সঙ্গে আছে তাদের সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল, যুবদল, কৃষক দল, ছাত্রশিবির সবাই। ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা তিন বছর আগে জামায়াত থেকে বহিষ্কার হলেও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা তাকে শুধু আশ্রয়ই দেননি, নুসরাত হত্যার পর তার পাশে থাকারও চেষ্টা করেছেন। সিরাজ উদ দৌলা আবার জেলা নেতাদের ফুল দিয়ে নাকি বায়াতও গ্রহণ করেন। সেই বায়াত গ্রহণের ফুলেল ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরালও হয়েছে।

গত ২৬ মার্চ লালমনিরহাটে নব্য আওয়ামী লীগ হামলা চালায় পুরনো আওয়ামী লীগের ওপর। তাদের হামলায় স্থানীয় একজন সাংবাদিক শাহজাহান সাজুও আহত হন। সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ওই হামলার সময় রিপন নামে একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি এখন শিবির করি না, আওয়ামী লীগ করি।’

আর গত ১০ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বিদ্যালয় এলাকায় প্রকাশ্য ধূমপানে নিষেধ করায় ছাত্রদল থেকে সদ্য আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া তানভীর আহমেদের নেতৃত্বে স্থানীয় যুবলীগের আহ্বায়ক উত্তম কুমার বিশ্বাসের বাড়িতে হামলা চালানো হয়।

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় দীর্ঘ ১৮ বছর পর দেওয়া ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ছাত্রদল নেতা, ছাত্রশিবির কর্মী ও মোটরসাইকেল চুরির মামলার আসামিদের স্থান দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে লিখিত প্রতিবাদও করেছেন ‘নব্য’ বিরোধীরা।

আমি কয়েকদিন আগে লালমনিরহাটের একজন সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলি এই নব্য আওয়ামী লীগার ও তাদের দাপট নিয়ে। তিনি আমাকে জানান, ‘পাটগ্রাম ও হাতিবান্ধা এলাকায় বিএনপি এবং জামায়াত এখন আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ন্ত্রক। নেতাদের ডানে-বাঁয়ে সব সময় তাদেরই দেখা যায়। আর এখানে আছে ভোটের হিসাব। ফলে যারা মূল আওয়ামী লীগ কর্মী তারা গুরুত্বহীন হয়ে পড়ছে।’ আওয়ামী লীগ সভাপতির ডানে-বাঁয়ে যে বিএনপি ও জামায়াত তার একটি ছবিও আমাকে পাঠিয়েছেন তিনি। সেটা একটি মসজিদ উদ্বোধনের সময়ের ছবি।’

ঝালকাঠি এলাকার একজন আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি একসময় ছাত্রলীগের বড় নেতা ছিলেন। সেই সময় থেকেই তার সঙ্গে আমার পরিচয়। তার নির্বাচনি এলাকা রাজাপুর-কাঁঠালিয়া। তিনি আমাকে জানান, ‘আমাদের এমপি সাহেব আওয়ামী লীগের মূলধারার লোক নন। তাই এখন তার সঙ্গে যারা আছেন তারা নব্য আওয়ামী লীগার। তার কল্যাণে এখন ইউপি চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃত্ব নব্যদের হাতে চলে যাচ্ছে। যারা জামায়াত বা বিএনপি করতো আমার এলাকায় এখন তারাই বড় আওয়ামী লীগার।
আর কথা না বাড়িয়ে আপনাদের বলি, আপনারা কেউ যদি কষ্ট করে একটু ‘নব্য আওয়ামী লীগার’ লিখে গুগলে সার্চ করেন তাহলে নব্য আওয়ামী লীগারদের অনেক কাহিনি পাবেন। মনে হবে দেশে আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কিছু যেন নেই। যেন ‘আমরা সবাই আওয়ামী লীগ’।

কেন তারা আওয়ামী লীগ:

আমি এই লেখাটি লেখার আগে কয়েকদিনে জেলার সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পর্যায়ের অন্তত চারজন নেতার সঙ্গে কথা বলেছি। কথা বলেছি আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকসহ আরও কয়েকজন নেতার সঙ্গে। তাদের কথা হলো, আওয়ামী লীগ তো আর দরজা বন্ধ করে দিতে পারে না। কেউ যদি আওয়ামী লীগের আদর্শকে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ভালোবেসে আওয়ামী লীগে যোগ দেন তাহলে তাদের তো নিষেধ করা যায় না। তাদের স্বাগত জানাতেই হবে। তবে এখন যারা ‘নব্য আওয়ামী লীগার’ হয়েছেন তারা নানা স্বার্থের কারণে আসছেন। তারা যা বলেছেন তাতে নব্যদের আওয়ামী লীগে আসার বেশ কিছু কারণ স্পষ্ট।

১. নির্বাচনের আগে পরিস্থিতি বুঝে বিএনপি’র অনেকেই রঙ বদলিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন।

২. একটি অংশকে যোগদানে বাধ্য করা হয়েছে হামলা মামলার ভয় দেখিয়ে।

৩. ভোটের হিসাবের কারণে জামায়াতকেও সঙ্গে নেওয়া হয়েছে।

৪. নির্বাচনের পরে সুযোগসন্ধানীরা নানা পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতার সূত্রে আওয়ামী লীগে ভিড়েছেন

৫. স্থানীয় আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্বের কারণে দল ভারি করতে গ্রুপগুলো বিএনপি-জামায়াতকে দলে জায়গা দিয়েছে।

৬. কেউ কেউ ব্যবসা বাণিজ্য বা অবস্থান টিকিয়ে রাখতে আওয়ামী লীগের আশ্রয়ে চলে গেছেন।

৭. কেউ কেউ এখন আওয়ামী লীগ হয়ে ছদ্মবেশ ধারণ করেছেন।

আর এখন যা হয়েছে তা হলো, এই নব্য আওয়ামী লীগারদের চাপ সামলাতে কোথাও কোথাও আওয়মী লীগ হিমশিম খাচ্ছে। ঢাকা উত্তরের একটি আসনের কথাই যদি বলি তাহলে সেখানকার অবস্থা খুবই খারাপ। এমপি সাহেবও আওয়ামী লীগে নতুন। তার অনুসারীরা নতুন। ফলে পুরনো যারা তারা কোণঠাসা। এখন যদি তাদের মধ্যে কাজকর্ম নিয়ে লড়াই হয়? ধরুন একটি উপজেলার কথা- সেখানে পুরনো এবং নব্য সমান সমান হয়ে গেছে। তারা স্বাভাবিকভাবেই পুরনোদের কাজে ভাগ বসাবে। পুরনোদের আয় কমে যাবে। তারা যদি এটা না মানেন, তাহলে কী হবে।

পরিস্থিতি যে ভালো নয় তা বোঝা যায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিমের কথায়। গত ১৯ মার্চ তিনি ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘নব্য আওয়ামী লীগাররা বিএনপি-জামায়াতের চেয়েও ভয়ঙ্কর। এরা সুযোগসন্ধানী। এদের চিনে রাখতে হবে। এখন দেশের সবাই আওয়ামী লীগ হয়ে গেছে। যাদের কখনও আওয়ামী লীগের সভা-সমাবেশে দেখিনি তারাও এখন আওয়ামী লীগ করে। এদের থেকে সাবধান ও সতর্ক থাকতে হবে।’

নব্য আওয়ামী লীগারদের তালিকা কেন?

নব্য আওয়ামী লীগারদের তালিকা কেন হবে? এর উত্তরও আমি জানার চেষ্টা করেছি। নেতারা জবাবে যা বলেছেন তা হলো, তারা যেন আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে কোনও অনৈতিক সুবিধা নিতে না পারেন। তারা যেন মুখে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কথা বলে বাস্তবে আদর্শবিরোধী কাজ করতে না পারেন। আর তারা যেন কোনও কৌশলে কমিটিতে ঢুকতে না পারেন। কোনও সুযোগসন্ধানী যেন আওয়ামী লীগকে ভাঙাতে না পারেন।

কিন্তু আমার কথা হলো, শুধু নব্য আওয়ামী লীগার কেন? যে কেউ আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে অনৈতিক সুবিধা নিলে তাকেই চিহ্নিত করা উচিত। তার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তিনি যদি পুরনো আওয়ামী লীগারও হন তাকে ছাড় দেওয়া যাবে না। ক্ষমতার নাম ভাঙিয়ে অনৈতিক ও অবৈধ কাজ অথবা দুর্নীতি করলে কাউকে রেহাই দেওয়া উচিত হবে না। আওয়ামী লীগ করার কারণে কোনও পর্যায়ে অনৈতিক চাপ সৃষ্টি বা প্রভাব বিস্তার করার সুযোগ থাকবে না। যদি সেটা না করা হয় তাহলে সুযোগসন্ধানী থাকবেই। সবাই আওয়ামী লীগ করতে চাইবেই। আর তখন এটাই চালু হবে- ‘আমরা সবাই আওয়ামী লীগ’।

লেখক: সাংবাদিক

ইমেইল:[email protected]

/এসএএস/এমএমজে/এমওএফ/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা বেড়ে ১৩৭
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা বেড়ে ১৩৭
কানে ডিভাইস নিয়োগ পরীক্ষার কেন্দ্রে বোন, বাইরে থেকে উত্তর বলার অপেক্ষায় ভাই
কানে ডিভাইস নিয়োগ পরীক্ষার কেন্দ্রে বোন, বাইরে থেকে উত্তর বলার অপেক্ষায় ভাই
কাভার্ডভ্যান-লরির মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই গাড়িতেই আগুন, প্রাণ গেলো একজনের
কাভার্ডভ্যান-লরির মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই গাড়িতেই আগুন, প্রাণ গেলো একজনের
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ