X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
১৯ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গা নিয়ে কূটনৈতিক তৎপরতা

বখতিয়ার উদ্দীন চৌধুরী
২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৬:১৬আপডেট : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৬:২১

বখতিয়ার উদ্দীন চৌধুরী টেবিলের উল্টোদিকে বসলে সবকিছু বুঝা সম্ভব হয় না। মিয়ানমার যখন রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের দিকে ঠেলে দিচ্ছে তখন বাংলাদেশ সরকার খাদ্যমন্ত্রীকে মিয়ানমার পাঠিয়ে চালের ব্যবসা করে কী কূটনৈতিক প্রয়াস চালাতে চেয়েছে তা আমাদের কাছে বোধগম্য হয়নি। ভারত, চীন, রাশিয়ার সহমতের ও সমর্থনের কারণে মিয়ানমার একটা সুরক্ষিত অবস্থানে বসে রোহিঙ্গা হত্যা ও বিতাড়নের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সত্য, তবে এ তিন রাষ্ট্র ছাড়া সম্পূর্ণ বিশ্বজনমত ও বিভিন্ন শক্তি রোহিঙ্গাদের পক্ষে।
১৯৯০ সালে সার্বরা কসভোর মানুষকে আলবেনিয়ার মানুষ বলে যখন নির্বিচারে হত্যা করেছিলো তখন মনে করেছিলাম কসভোর মানুষকে উদ্ধার করার বুঝি কেউ নেই। ইউরোপ তো ‘আর্কাইভ অব সিভিলাইজেশন’, তারা এতো নির্মমতা সহ্য করে কিভাবে! ন্যাটো বাহিনী ৭৮ দিন যুগোস্লোভিয়ার বিভিন্ন অংশে বোমা বর্ষণ করেছিলো; শেষ পর্যন্ত সবই মিমাংসা হয়েছে আর হত্যাকারীরা ও যুদ্ধাপরাধী সাব্যস্থ হয়েছিলো। এখনও দেখছি ইউরোপীয় পার্লামেন্ট বৈঠকে বসে ২২ দফা প্রস্তাব গ্রহণ করেছে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট প্রকাশ্যে বলে বেড়াচ্ছেন মিয়ানমার যুদ্ধাপরাধী। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ ইতিমধ্যেই আভাস দিয়েছে যে তারা রাখাইনে মানবতার বিপর্যয় রোধ করতে চায়। মিয়ানমার হয়তো বা উপলব্ধি করতে পেরেছে যে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি তার প্রতিকূলে যাচ্ছে।

গত ১৩ সেপ্টেম্বর নিরাপত্তা পরিষদ যে সর্বসম্মত প্রস্তাব পাস করেছিলো তাতেও চীন রাশিয়া স্বাক্ষর করেছে। চীনের ভূমিকার প্রতি আমেরিকা প্রসন্ন নয় কারণ উত্তর কোরিয়াকে সামাল দেওয়ার জন্য আমেরিকা বারবার চীনকে অনুরোধ করেছে। কিন্তু চীন আমেরিকায় সে অনুরোধ আমলে নেয়নি। এখন দেখা যাচ্ছে চীন তার ভূ-রাজনীতির স্বার্থে মিয়ানমারের আরেক কিম ইল সাং এর জন্ম দিচ্ছে। সুতরাং আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বোধ উদয় হওয়া স্বাভাবিক।

অং সান সু চি রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের প্রস্তাব দিয়েছেন। সু চির প্রস্তাব গ্রহণ করে আলোচনায় বসার জন্য হয়ত ভারত, চীন, রাশিয়া চাপ প্রয়োগ করতে পারে বাংলাদেশের ওপর। বাংলাদেশ কিন্তু দ্বিপক্ষীয় কোনও আলোচনায় না বসে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় সমস্যা সমাধানের বিষয়ে দৃঢ় অবস্থানে থাকতে হবে। কারণ মিয়ানমার রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে বার বার পূর্বে আলোচনার শর্ত ভঙ্গ করে বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে।

এখন রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের ভিত্তি হবে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উত্থাপিত পাঁচ দফা প্রস্তাব। এর বাইরে কথা বলার আর কোনও সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রীর পাঁচ প্রস্তাব আনান কমিশনেরই বর্ধিত রূপ। আনান কমিশন গঠন করেছিলো মিয়ানমার সরকার। সুতরাং এ কমিশনের প্রস্তাব বাস্তবায়নে সু চির সরকারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আর একটা বিষয় পরিষ্কার হয়ে গেছে যে অং সান সু চি’র দল এনএলডি গত নির্বাচনে জিতে সরকার গঠন করলেও প্রকৃত ক্ষমতা এখনও সামরিক জান্তার হাতে। শাসনতন্ত্র মোতাবেক ২৫% পার্লামেন্টে রিপ্রেজেনটেশন রিজার্ভ রাখা হয়েছে সেনাবাহিনীর জন্য। তিন জেনারেল হবে দেশ রক্ষামন্ত্রী, সীমান্ত রক্ষা মন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী। সুতরাং সমাধানের বিষয়ে জান্তার কার্যকর অংশ গ্রহণ থাকতে হবে।

আমাদের সরকারি পক্ষ সহনশীল মন নিয়ে কথা বলতে অভ্যস্ত। প্রধানমন্ত্রী তো মানবতাবাদী মানুষ। তিনি বলেই ফেলেছেন ১৬ কোটি মানুষের খাওয়ার ব্যবস্থা হলে ৪/৫ লাখ রোহিঙ্গা নিয়ে আর কতই বা কষ্ট হবে। এতে মিয়ানমার বুঝবে যে আমরা রোহিঙ্গাদেকে বুঝি গ্রহণ করেই নিচ্ছি। জাতিসংঘ অনুমান করেছে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০ লক্ষ রোহিঙ্গা আসবে। ১০ লক্ষ মানুষ সহজ ব্যাপার নয়।

ভারত সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারাও ভারতে আশ্রয় নেওয়া ৫০ হাজার রোহিঙ্গাকে বিতাড়িত করে দেবে। আমাদের অপর বন্ধু রাষ্ট্র চীন কী সিদ্ধান্ত নেয় জানি না। চীনেও নাকি ১০ হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ, ভারতে, চীন, মালয়েশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছে জীবন রক্ষার জন্য। তারা ভারত আর চীনের ভূ-রাজনীতির বলি হয়েছে। ভারত আরাকানে রাস্তার কাজ করছে আর চীন বন্দর বানাচ্ছে আর পাইপ লাইন বসাচ্ছে।

মানবতাবাদী বিশ্বের এখন কর্তব্য হয়েছে রোহিঙ্গাদের তাদের ভিটা মাটিতে ফেরৎ পাঠানো আর পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা আর তাদের নাগরিকত্ব প্রদানের জন্য মিয়ানমারকে বাধ্য করা। তারা বাংলাদেশে বসবাস করতে আসেনি। বাংলাদেশ কৃতজ্ঞ মুসলিম উম্মার প্রতি, কারণ তারা বাংলাদেশের আগেই বিশেষ করে তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া রোহিঙ্গা বিতাড়নের ব্যাপারে বিশ্বজনমত সৃষ্টি করার উদ্যোগ নিয়েছেন।

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় সফরে আমেরিকা গিয়েছিলেন। ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে তিনি দ্বিপক্ষীয় বিষয় ছাড়াও রোহিঙ্গা বিষয়ে ট্রাম্পকে বিস্তারিত বলেছেন। তুরস্কের রাষ্ট্রপতি এরদোয়ান তার স্ত্রীকে রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরজমিনে দেখার জন্য বাংলাদেশে পাঠিয়েছিলেন। তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের সময় শরণার্থীদের দুঃখ-দুর্দশা দেখে কেঁদেছেন। ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী মিয়ানমারও সফর করেছেন। আবার ঢাকাও সফর করেছেন। মালয়েশিয়ায় আদালত বসিয়ে যুদ্ধ অপরাধীদের বিচারও করেছে।

মুসলিম দেশের নেতৃবৃন্দের এসব কর্মকাণ্ড বিশ্বজনমত সৃষ্টিতে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশকে অব্যাহত কূটনৈতিক যোগাযোগ সতেজ রেখে মুসলিম দেশগুলোকে সক্রিয় রাখতে হবে যেন তারা রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি ও রোহিঙ্গার ব্যাপারে খুবই সহানুভূতিশীল, তাদের সহানুভূতিকে আরও সক্রিয় করতে হবে যেন সমস্যাটার একটা শান্তিপূর্ণ সমাধানে পৌঁছানো যায়।

আমেরিকাও মনে হয় রোহিঙ্গা ইস্যুতে সক্রিয় হবে। আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট তাদের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হয়ে নিরাপত্তা পরিষদকে রোহিঙ্গা ইস্যু সমাধানে দ্রুত ও সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলেছেন। আবার আমেরিকার সেনাপ্রধান মিয়ানমারের সেনা প্রধানকে টেলিফোনে রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধের কথা বলেছেন। নিরাপত্তা পরিষদ রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে পুনরায় বৈঠকে বসছে বৃহস্পতিবার ২৮ সেপ্টেম্বর। এ বৈঠক ডাকার জন্য অনুরোধ করেছে আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স সহ ৭টি সদস্য রাষ্ট্র। এ বৈঠকে আমেরিকার অবস্থান সুস্পষ্ট হবে।

বিরাজমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলে মনে হয় যে জাতিসংঘে বাংলাদেশের কূটনৈতিক প্রয়াস সফল হয়েছে। ১৩ই সেপ্টেম্বরের প্রথম নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে আমরা মনে করেছিলাম চীন বা রাশিয়া ভেটো দেবে। কিন্তু তারা ভেটো দেননি বরং সমস্যা সমাধান, হত্যা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে তারা একটা সর্বসম্মত বিবৃতি দিয়েছে।

বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ তার উন্নয়নে ব্যাপক সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে চীন। গত বছর চীনরে প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সফরের সময় সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ৪০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের যে প্রস্তাব বাংলাদেশ দিয়েছিলো-তা তারা গ্রহণ করেছে এবং চুক্তি সম্পাদনও করেছেন। ৪০ বিলিয়ন ডলারের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। চীন নিজের জ্বালানি সরবরাহের সুরক্ষার জন্য আকিয়াব উপকূলে কিয়াউ-কাফিউ বন্দর, স্থাপন কাজ করছে। আর কিয়াউ-কাফিউ বন্দর থেকে পাইপ লাইন স্থাপন করছে কুনমিং প্রদেশ পর্যন্ত। প্রশান্ত মহাসাগরে আমেরিকার নৌ-বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতির পর চীন তার উন্নয়নের লাইফ ব্লাড জ্বালানি সরবরাহের বিষয় নিয়ে চিন্তিত কারণ যে কোনও বিরোধের সূত্র ধরে আমেরিকা মালাক্কা প্রণালীতে ব্লকেইড স্থাপন করলে চীনের উন্নয়ন জ্বালানির অভাবে মুখ থুবড়ে পড়বে। সুতরাং আকিয়াব উপকূলে কিয়াউ-কাফিউ বন্দর স্থাপন এবং সেখান থেকে পাইপ লাইন টেনে নেওয়া চীনের জন্য খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে।

কিন্তু রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে তার আকিয়াবের সব উন্নয়ন কাজ স্থবির হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্র ও আর্থিক সহযোগী রাষ্ট্র হিসাবে চীনকে সাহায্য করা খুবই জরুরি অথচ বাংলাদেশের ভূমিতে আট লক্ষ রোহিঙ্গার উপস্থিতি বাংলাদেশ এখন দুই ধারা অস্ত্রের মাঝে পড়েছে। এখান থেকে উত্তরণ বাংলাদেশের জন্য খুবই কঠিন। বাংলাদেশকে এ সমস্যা হেন্ডেল করতে গিয়ে চূড়ান্ত কূটনৈতিক বিজ্ঞতার পরিচয় দিতে হবে।

বাংলাদেশের এক প্রতিনিধিদল কর্নেল ফারুক খান এবং দীপু মনিসহ চীনে গিয়েছেন এ সমস্যা নিয়ে চীনকে বুঝানোর জন্য তারা কমিউনিস্ট পার্টির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের বুঝানোর চেষ্টা করছেন কিছু যে সফলতা নেই তাও নয়। মনে হয় চীন ইচ্ছে করলে এ সমস্যার একটা শান্তিপূর্ণ ও সম্মানজনক সমাধানে পৌঁছানোর ব্যাপারে সাহায্য করতে পারে। মনে হয় এ বিষয়টা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সক্রিয় হবেন।

আকিয়াব উপকূলের কিয়াউ-কাফিউ বন্দরটা বাংলাদেশের সোনাদিয়ায় স্থাপন করার প্রস্তাব করেছিলো চীন কিন্তু ভারতের প্রতিরোধের মুখে বাংলাদেশ সম্মত হতে পারেনি বলা যায়। অথচ আকিয়াব উপকূল সোনাদিয়া থেকে ১৫০ নটিকেল মাইল দূরে। ভারত কি মিয়ানমারকে প্রতিরোধ করতে পেরেছে? সুতরাং ভারতের মুখের দিকে চেয়ে আমাদের আর কখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিৎ হবে না। ছোট দেশ ও বড়দেশের বিরোধিতার মুখে টিকে থাকতে পারে কিউবা তার প্রকৃত উদাহারণ।

ভারত নেপালের সমতল অঞ্চলে একটা রাজ্য গঠনের প্রস্তাব করেছিলো কারণ সমতলে ভারতীয়রাই বসবাস করে কিন্তু নেপাল ভারতের সে আবদার রক্ষা করেনি। নেপাল ভারতের অবরোধের মুখে পড়েছিলো সত্য কিন্তু নেপাল তো বিলুপ্ত হয়নি। অবরোধও দীর্ঘস্থায়ী করা সম্ভব হয়নি। এবারের সংকটে ভারতের ভূমিকা খুবই খারাপ অথচ আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের বহু অনুরোধ রক্ষা করেছে। ভারতীয় এক কলামিস্টের লেখায় পড়লাম বিএনপির ৫ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল আরএসএস এর সদর দফতর নাগপুরে গিয়ে বসে আছে হয়ত বা ষড়যন্ত্র হচ্ছে লীগ সরকারকে সরানোর। আওয়ামী লীগকে আরও সতর্ক হতে হবে। আমরা আশা করবো ক্ষমতার জন্য আওয়ামী লীগ সরকার কারও সঙ্গে দেশের স্বার্থ নিয়ে আপোস করবে না।

লেখক: রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও কলাম লেখক

[email protected]

এসএএস

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে সকার স্কুলের বাছাইয়ে ৩ বাংলাদেশি কিশোর
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে সকার স্কুলের বাছাইয়ে ৩ বাংলাদেশি কিশোর
দীর্ঘ অপেক্ষার পর ঢাকায় স্বস্তির বৃষ্টি, কমলো তাপমাত্রা
দীর্ঘ অপেক্ষার পর ঢাকায় স্বস্তির বৃষ্টি, কমলো তাপমাত্রা
রোমাঞ্চকর ম্যাচে ১ রানের নাটকীয় জয় হায়দরাবাদের 
রোমাঞ্চকর ম্যাচে ১ রানের নাটকীয় জয় হায়দরাবাদের 
মামুনুল হকের জন্য কাশিমপুর কারাগারের সামনে ভক্তদের ভিড়
মামুনুল হকের জন্য কাশিমপুর কারাগারের সামনে ভক্তদের ভিড়
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ