X
শনিবার, ০৪ মে ২০২৪
২১ বৈশাখ ১৪৩১

দায়িত্ববোধ ও দায়বদ্ধতার আগুনপাখি

হায়দার মোহাম্মদ জিতু
১৭ জুলাই ২০২৩, ১৭:৩৮আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২৩, ১৭:৩৮

শেখ হাসিনা, অনিশ্চিত অন্ধকারের সঙ্গে লড়াই করা এক নাম। তাঁর পারিবারিক, রাজনৈতিক জাগরণ ও বন্ধুর পথ সম্পর্কে সকলেই ওয়াকিবহাল। সময়ের প্রেক্ষাপটে সেই লড়াই এখন আগামীর দায়িত্ববোধ ও দায়বদ্ধতার আগুনপাখি। বাঙালির শান্ত সাহস হয়ে প্রবাহিত হওয়া এই জল-জ্যোৎস্না রাজনীতিতে প্রতিনিয়ত বাধাগ্রস্ত হয়েছেন। বুলেট, আর্জেস গ্রেনেড থেকে শুরু করে সকল ষড়যন্ত্র তাঁর সওয়া আছে। ২০০৭ থেকে ২০০৮ সালের সময়টাও সেই ধারাবাহিকতার একটা ছোট্ট উদাহরণ। তথাকথিত ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলার আদলে আসতে শেখ হাসিনাকে মাইনাস করবার নকশা। যা তাঁর কর্মীরা দুর্বারভাবে প্রতিহত করেছেন।

রাজনৈতিক আন্দোলনে এবং জনগণের প্রশ্নে শেখ হাসিনার আপসহীন ম্যান্ডেট সম্পর্কে দেশি-বিদেশি অপশক্তি ওয়াকিবহাল। এজন্য বৈদেশিক স্বার্থের অবাধ বিচরণ ও পূর্বের পাকিস্তানি ভাবধারায় তিনি সবসময়ই একক বাঁধা। এজন্য তাঁকে সরাবার জন্য ২০০৭ সালেও একটা প্লট সাজানো হয়েছিল।

দেশের উত্থান, অগ্রগতি এবং পেছনে টেনে ধরার কৌশল সম্পর্কে ডুব দিলে সেই সময়টাকে এখন আরও স্পষ্ট করে বোঝা যায়।

ভূ-রাজনীতির হিসেবে দেশ এখন বেশ লোভনীয় অবস্থায় আছে। নিয়ন্ত্রণ কিংবা অংশীদারিত্বের গোল্লাছুট খেলায় সকলের নজরদারিতে। ধারাবাহিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পশ্চিমা স্বীকৃত তলাবিহীন ঝুড়িকে উদ্বৃত্ত অর্থনীতি ও খাদ্যের শক্তিতে রূপান্তরিত করেছেন। কিন্তু নিরীক্ষণের বিষয়, বৈশ্বিক হিসেবে শক্তিশালীরা সম্ভাবনাময় দেশগুলোকে অসহায় বানিয়ে সেবাদাসে পরিণত করে রাখে। তাদের সম্পদ ও সম্ভাবনাকে লুট করে। সেখানে সব কিছুকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন। এক কৃষিজ উৎপাদন ধান, মাছ, দুধ, মাংস ইত্যাদিতেই দেশকে সেরা দশে নিয়ে গেছেন।

এই যে স্বাবলম্বী হওয়া কিংবা মেরুদণ্ড সোজা করে মাথা উঁচু করে দূর দেখা এসব মোড়লসহ কাছে-দূরের জন্য অস্বস্তিকর। তাদের রাজনৈতিক চাতুর্য কায়েম করবার জন্য সমস্যাজনক। এ ধরনের পরিস্থিতিতে তাদের পুরোনো কৌশল মানবাধিকার, পরিবেশ বিপর্যয় ও গণতান্ত্রিক আওয়াজের মতো বিষয়বস্তুগুলো ব্যবহারে উন্মুখ। গণতান্ত্রিক কাঠামোয় বহুপক্ষের অংশগ্রহণ থাকে। এখানে তারা যেটা করে তা হলো, যার সঙ্গে নিজেদের স্বার্থগত সম্পর্ক মিলে তাকে সামনে আনতে নিজেদের প্রচারযন্ত্র থেকে শুরু করে সব ব্যবহার করে।

উন্নয়নশীল দেশগুলো বহুক্ষেত্রে দলীয় স্বার্থের সঙ্গে দেশীয় স্বার্থকে গুলিয়ে ফেলে। এটাকে ব্যবহার করে সুযোগসন্ধানীরা। অথচ বাইরের ওই ওরাই নিজেদের ক্ষেত্রে যেই ক্ষমতায় আসুক তাদের রাষ্ট্রীয় স্বার্থ সুরক্ষিত ও অভিন্ন রাখে।

বিশ্বের তাবৎ ব্যবসা মানুষকে কেন্দ্র করে। এ হিসেবে বাজার ও শক্তিমত্তা সব দিক থেকে আগামী বিশ্বে এশিয়ার গুরুত্ব বহুগুণ। এজন্য গোটা এশিয়ারও দায়িত্ব আছে, কেউ যেন তার কোনও প্রতিবেশীর ওপর অযাচিত প্রভাব বিস্তার করতে না পারে এবং নিজেদের মুক্তবাজার অর্থনীতিতে কোনও বিদ্বেষ ছড়াতে না পারে সেদিকে সম্মিলিতভাবে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ, গ্লোবাল ভিলিজের এই সময়টায় প্রতিবেশী ভালো না থাকলে বাকিরাও ভালো থাকতে পারেন না, পারবেনও না। এটাই বহুমাত্রিক বাস্তবতা।

রেজিম চেঞ্জ বা সরকার বদল করে এর আগেও বহু উন্নয়নশীল দেশে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক তাণ্ডব, আগ্রাসন চালাবার নজির আছে। কাজেই দেশের এই উন্নয়নসম্পন্ন সময়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও যে এমন ষড়যন্ত্র হতে পারে বা হচ্ছে সেই বিষয়গুলোকে কৃষক-শ্রমিক, জনতার কাছে পৌঁছাতে হবে। কারণ রুঢ় বাস্তবতা হলো, দেশের যেকোনও সংকটে এরাই সবার আগে এগিয়ে আসবে, বুক চিতিয়ে দাঁড়াবে। দেশের সৃজনশীল, প্রগতিশীল, মুক্তমনা, সচেতন, বুদ্ধিজীবীবৃন্দেরও নিজেদের ফোরামে তৎপর থাকতে হবে। আপনজন শেখ হাসিনা দেশকে যে উচ্চতায় নিয়ে গেছেন সেখান থেকে কেউ যেন একে সরাতে না পারে তাকে সহযোগিতা করতে হবে।

জন পারকিনসের ‘কনফেশন অন অ্যান ইকোনমিক হিট ম্যান’ গ্রন্থ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়টাকে আরও গভীরভাবে পর্যবেক্ষণের তাড়না তৈরি করে। কারণ এতে স্পষ্ট আছে, বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের আলোকে কী করে ভিনদেশিরা তাদের নজরদারি ও গোয়েন্দাগিরি চালনা করে। একটা দেশে দীর্ঘদিন থাকার কারণে এরা সেই দেশের সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানে। এজন্য নির্বাচন, উৎসবসহ সিজনাল সেন্টিমেন্টকে টার্গেট করে প্রচার, অপ্রচার চালিয়ে সুবিধা নিতে চায়।

রেজিম চেঞ্জ করতে পারলে সেই সুবিধা আরও পোয়াবারো হয়। কাজেই মানবিক ছদ্মবেশ, নির্বাচনি রেফারিং করার ছলনায় কেউ যেন সুযোগ নিতে না পারে এবং বাংলার উন্নয়ন ধারাবাহিকতা বাধাগ্রস্ত করতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনে অ্যাকশনে যেতে হবে, বহুমাত্রিক অ্যাকশন। আর ইতিহাস সাক্ষী, জনগণের প্রয়োজনে নেওয়া কোনও অ্যাকশনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কখনোই হারেনি, এবারও হারবে না।

লেখক: সাবেক ছাত্রনেতা

[email protected]

/এসএএস/এমওএফ/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
জিকোর কপালে গভীর ক্ষত, সার্জারির পর হাসপাতালে ভর্তি 
জিকোর কপালে গভীর ক্ষত, সার্জারির পর হাসপাতালে ভর্তি 
লড়াই করেও কিংসের কাছে হারলো আবাহনী
লড়াই করেও কিংসের কাছে হারলো আবাহনী
গণতান্ত্রিক যেকোনও বিষয়কে বিএনপি ফাঁদ মনে করে: ওবায়দুল কাদের
গণতান্ত্রিক যেকোনও বিষয়কে বিএনপি ফাঁদ মনে করে: ওবায়দুল কাদের
২২ বছর পর প্রিমিয়ার লিগে ইপসউইচ
২২ বছর পর প্রিমিয়ার লিগে ইপসউইচ
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ