X
শনিবার, ০৩ মে ২০২৫
২০ বৈশাখ ১৪৩২

নাসরাল্লাহকে ইসরায়েলি ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন খামেনি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১০:১৮আপডেট : ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ২৩:২২

ইসরায়েলি হামলায় নিহত হওয়ার কয়েক দিন আগে হিজবুল্লাহ নেতা সাইয়্যেদ হাসান নাসরাল্লাহকে লেবানন থেকে পালাতে সতর্ক করেছিলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। তিনটি ইরানি সূত্র এই তথ্য জানিয়েছে। তারা আরও জানান, খামেনি এখন তেহরানে সিনিয়র সরকারি পদে ইসরায়েলি অনুপ্রবেশ নিয়ে গভীরভাবে চিন্তিত রয়েছেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।

ইরানের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, ১৭ সেপ্টেম্বর হিজবুল্লাহর ওপর পেজার হামলার পরপরই খামেনি একটি দূতের সঙ্গে হিজবুল্লাহ প্রধানকে ইরানে চলে যেতে অনুরোধ করে একটি বার্তা পাঠান। বার্তাটিতে গোয়েন্দা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বলা হয়েছিল, হিজবুল্লাহর মধ্যে ইসরায়েলি অনুপ্রবেশ রয়েছে এবং তারা নাসরাল্লাহকে হত্যার পরিকল্পনা করছে।

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, সেই বার্তাবাহক ছিলেন একজন সিনিয়র ইরানি বিপ্লবী গার্ড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্বাস নীলফরৌশান। ইসরায়েলি বোমা যখন আঘাত হানে নাসরাল্লাহর সঙ্গে তিনিও তখন বাঙ্কারে ছিলেন এবং নিহত হন।

একজন সিনিয়র ইরানি কর্মকর্তা বলেছেন, এই হামলার পর শনিবারই ইরানের অভ্যন্তরে একটি নিরাপদ অবস্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে খামেনিকে। ইসরায়েলে মঙ্গলবারের হামলায় প্রায় ২০০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করতে ব্যক্তিগতভাবে নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। এক বিবৃতিতে রেভোল্যুশনারি গার্ড বলেছে, নাসরাল্লাহ ও নীলফরৌশানের মৃত্যুর প্রতিশোধ হিসেবে এই হামলা চালানো হয়েছে।

বিবৃতিতে জুলাইয়ে তেহরানে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়াহকে হত্যা এবং লেবাননে ইসরায়েলের হামলার কথাও উল্লেখ করা হয়। তবে ইসরায়েল এখনও হানিয়াহের মৃত্যুর দায় স্বীকার করেনি।

মঙ্গলবার দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর ওপর ‘সীমিত’ স্থল আক্রমণ চালিয়েছে ইসরায়েল।

বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের তত্ত্বাবধানকারী ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, হিজবুল্লাহর মিডিয়া অফিস এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় এ বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে রয়টার্সকে সাড়া দেয়নি।

নাসরাল্লাহর হত্যাকাণ্ডের পর দুই সপ্তাহের সুনির্দিষ্ট ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহর অস্ত্রের স্থাপনা ধ্বংস, নেতৃত্ব পরিষদের অর্ধেককে নির্মূল এবং গোষ্ঠীটির শীর্ষ সামরিক কমান্ডকে ধ্বংস করেছে।

এই প্রতিবেদনের জন্য ১০টি সূত্রের সঙ্গে কথা বলেছে রয়টার্স। তাদের কথায় খামেনির নিরাপত্তা নিয়ে ইরানের ভয় এবং হিজবুল্লাহ ও ইরানের প্রতিষ্ঠা ও তাদের মধ্যকার আস্থা কমে যাওয়ার বিষয়টি স্পষ্টভাবে ওঠে এসেছে। তারা এমন একটি পরিস্থিতি বর্ণনা করেছে যেটি ইরানের ইসরায়েলবিরোধী অনিয়মিত সশস্ত্র গোষ্ঠীর প্রতিরোধ জোটের কার্যকারিতাকে জটিল করে তুলতে পারে। এই জোট ১৯৮০-এর দশকে ইরানের সমর্থনে প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘদিন ধরে এই জোটের সবচেয়ে শক্তিশালী সদস্য হিজবুল্লাহ।

চারটি লেবানিজ সূত্র জানিয়েছে, এই বিশৃঙ্খলা হিজবুল্লাহর জন্য নতুন নেতা নির্বাচন কঠিন করে তুলছে। গোষ্ঠীটির ভয়, চলমান অনুপ্রবেশ তাদের উত্তরাধিকারীকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে।

সুইডিশ ডিফেন্স ইউনিভার্সিটির হিজবুল্লাহ বিশেষজ্ঞ ম্যাগনাস র্যানস্টর্প বলেছেন, ‘মূলত,গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ হারিয়েছে ইরান।’ হিজবুল্লাহর গভীর ক্ষতির বিষয়ে তিনি বলেন, আসলে ইসরায়েলের সীমান্তে ইরানের হামলার ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে।

তিনি বলেছেন, এই ঘটনা ‘ইরানকে একদম গোড়া থেকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এটি দেখায় কিভাবে ইরানে তারা গভীরভাবে অনুপ্রবেশ করেছে। তারা শুধু নাসরাল্লাহকেই হত্যা করেনি, নীলফরৌশানকেও হত্যা করেছে’ যিনি খামেনির বিশ্বস্ত সামরিক উপদেষ্টা ছিলেন।

র্যানস্টর্প বলেছেন, হিজবুল্লাহর হারিয়ে যাওয়া সামরিক ক্ষমতা এবং নেতৃত্ব ইরানকে আবারও বিদেশে ইসরায়েলি দূতাবাস ও কর্মীদের ওপর আক্রমণ করার দিকে ঠেলে দিতে পারে যেমনটি তারা সশস্ত্র প্রতিরোধ বাহিনীর গঠনের আগে প্রায়েই করতো।

/এএকে/
টাইমলাইন: ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা
০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১০:১৮
নাসরাল্লাহকে ইসরায়েলি ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন খামেনি
০৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২৭
সম্পর্কিত
মার্কিন বাজেটে ১৬৩ বিলিয়ন ডলার সংকোচনের প্রস্তাব
পাকিস্তানে স্বল্পপাল্লার আবদালি ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ
গাজায় সামরিক অভিযানের মাত্রা বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল
সর্বশেষ খবর
নাটকীয় ড্রয়ে বায়ার্নের শিরোপার অপেক্ষা বাড়লো লাইপজিগ
নাটকীয় ড্রয়ে বায়ার্নের শিরোপার অপেক্ষা বাড়লো লাইপজিগ
পল্টনে সাব্বির টাওয়ারে আগুন
পল্টনে সাব্বির টাওয়ারে আগুন
‘কৃষিতে ভর্তুকি অব্যাহত রাখতে আইএমএফ ছাড়ার চিন্তা সরকারের’
‘কৃষিতে ভর্তুকি অব্যাহত রাখতে আইএমএফ ছাড়ার চিন্তা সরকারের’
কুড়িগ্রামে জামায়াতের রুকনসহ দুই জন বহিষ্কার
কুড়িগ্রামে জামায়াতের রুকনসহ দুই জন বহিষ্কার
সর্বাধিক পঠিত
কেন আবারও আন্দোলনে যাচ্ছেন সহকারী প্রাথমিক শিক্ষকরা?
কেন আবারও আন্দোলনে যাচ্ছেন সহকারী প্রাথমিক শিক্ষকরা?
শুকনো মরিচের দাম কেজিতে কমলো ১০০ টাকা
শুকনো মরিচের দাম কেজিতে কমলো ১০০ টাকা
৩০০ ফিট দিয়ে রামপুরা করিডোর চালুর পরিকল্পনা ডিএনসিসির
৩০০ ফিট দিয়ে রামপুরা করিডোর চালুর পরিকল্পনা ডিএনসিসির
‘নারী সংস্কার কমিশনের প্রতি ঘৃণা উসকে দেওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন’
‘নারী সংস্কার কমিশনের প্রতি ঘৃণা উসকে দেওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন’
‘সাময়িক’ ফ্লাইট বন্ধ করলো নভোএয়ার
‘সাময়িক’ ফ্লাইট বন্ধ করলো নভোএয়ার