X
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪
৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

ভয় দেখিয়ে লাভ নেই: প্রধানমন্ত্রী

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৯:৪১আপডেট : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৯:৪৪

আন্দোলন, স্যাংশন, ভিসানীতি এগুলোর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মাঝে মাঝে জানি আন্দোলন-সংগ্রাম দেখে অনেকে একটু ঘাবড়ে যায়। তারপর স্যাংশন আসে। ভিসা, স্যাংশন ইত্যাদি ইত্যাদি। আমার স্পষ্ট কথা। এই মাটি আমাদের। কাজেই ভয় দেখিয়ে কোনও লাভ নেই। ভয়কে জয় করে বাংলাদেশের জনগণ তার উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাবে।

শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি প্রকল্প (কাওলা-ফার্মগেট) অংশের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এই সুধী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: ফোকাস বাংলা)

বিএনপিসহ বিরোধী দলের চলমান আন্দোলন এবং বাংলাদেশ ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ অবস্থানের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সমস্ত ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আমরা দেশ স্বাধীন করেছি জাতির পিতার নেতৃত্বে। বাংলাদেশের মানুষ জানে অধিকার আদায় করতে। তবে বাংলাদেশ তো ছয় ঋতুর দেশ। এজন্য আমরা দেখি কখনও বর্ষা, কখনও ঝড়, কখনও জ্বলোচ্ছ্বাস, কখনও রৌদোজ্জ্বল। আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্নটা দেখে আমাদের অভিজ্ঞতা আছে।

তিনি বলেন, আজ যারা আন্দোলনের নামে রোজই ক্ষমতা থেকে আমাদের ফেলে দিচ্ছে, আমি আপনাদের বলতে চাই, আমি কবির ভাষায় বলবো– মেঘ দেখে কেউ করিসনে ভয়/ আড়ালে তার সূর্য হাসে/ হারা শশীর হারা হাসি/ অন্ধকারেই ফিরে আসে। মেঘের ঘনঘটা আমরা দেখি। তারপরওই তো সূর্য ওঠে। কাজেই ভয় দেখিয়ে কোনও লাভ নেই। ভয়কে জয় করে বাংলাদেশের জনগণ তার উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: ফোকাস বাংলা)

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, নৌকা সারাজীবন উজান ঠেলে ঠেলে এগিয়ে গেছে। ঝড়-ঝঞ্ঝা পাড়ি দিয়েই নৌকা আজ তীরে ঠেকে জনগণের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। নৌকা মার্কা স্বাধীনতা দিয়েছে। নৌকা মার্কা অর্থনৈতিক উন্নতি দিয়েছে। নৌকা মার্কা ডিজিটাল বাংলাদেশ দিয়েছে। নৌকা মার্কাই স্মার্ট বাংলাদেশ আমাদের দেবে।

বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, অনেকেই নাকি গণতন্ত্র চোখে দেখে না। আর গণতন্ত্র উদ্ধার করবেন। যাদের জন্মই হচ্ছে অগণতান্ত্রিকভাবে, সংবিধান লঙ্ঘন করে। উচ্চ আদালত যাদের ক্ষমতা দখলকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। তাদের হাতে গড়া দল কী গণতন্ত্র দেবে? তারা তো গণতন্ত্র দিতে জানে না। তারপরও তারা আন্দোলনের নামে অনেক সময় অনেক কথা বলে।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: ফোকাস বাংলা)

সুধী সমাবেশে উপস্থিত সবার উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবাইকে বলবো আত্মবিশ্বাস রেখে জনগণের জন্য কাজ করলে জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করা সম্ভব। আমরা তা প্রমাণ করেছি। তার জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দরকার। অগ্নিসন্ত্রাস, খুন, হত্যা অনেক কিছু আমরা দেখেছি। কিন্তু সেইগুলো উত্তরণ ঘটিয়ে বাংলাদেশ ইনশাআল্লাহ এগিয়ে যাবে। 

গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতায় দেশের এই উন্নয়ন উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, আজ বাংলাদেশের উন্নয়ন- কেন হয়েছে। একটাই কারণ। ২০০৯ সাল থেকে গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার আমরা নিশ্চিত করে জনগণের ভোটে ক্ষমতায় এসে একটি গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতার পরিবেশ রাখতে পেরেছি। তার কারণেই আজ বাংলাদেশের উন্নয়ন।

সরকারের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করে আমরা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছি। আমরা মেট্রোরেল করেছি। সেটাও সম্পন্ন হবে। রাস্তাঘাট থেকে সমস্ত উন্নয়ন আমরা জনগণের কল্যাণে করেছি। জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে এ কাজগুলো করে যাচ্ছি।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সঙ্গে শেখ রেহানা ও ওবায়দুল কাদের (ছবি: ফোকাস বাংলা)

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকাকে যানজটমুক্ত করার জন্য আমাদের এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। নিজের হাতে টোল দিয়ে ওই সড়ক দিয়ে এখানে এসেছি। ফার্মগেটে নেমে এখানে হাজির হয়েছি। আসতে মাত্র ১২/১৩ মিনিট সময় লেগেছে। বাকি অংশের কাজও তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাবে। আমরা চাই দেশ আরও এগিয়ে যাবে। আমরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বলিয়ারপুর থেকে কেরাণীগঞ্জ-ফতুল্লা ঝালকুড়ি হয়ে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩৯ দশমিক ২৪ কিলোমিটার উড়াল সড়ক নির্মাণের পদক্ষেপ নিয়েছি। এটা হলে যানবাহন ঢাকা শহরে প্রবেশ না করে এ অঞ্চল থেকে আরেক অঞ্চলে চলে যেতে পারবে। কেবল যোগাযোগ নয়, সার্বিকভাবে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

বৈশ্বিক মহামারির প্রসঙ্গ টেনে সরকারপ্রধান বলেন, করোনাভাইরাস, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, স্যাংশন, পাল্টা স্যাংশন- যার কারণে সারা বিশ্বে মুদ্রাস্ফীতি। যার দখল আমাদের ওপরও পড়েছে। যে কারণে আমি সবাইকে আহ্বান করেছি, কোনও অনাবাদী জমি থাকবে না। নিজের ফসল নিজে ফলাবো। নিজের খাবার নিজে খাবো। কারো কাছে হাত পেতে চলবো না। ভিক্ষা চেয়ে চলবো না। সেই ভাবেই বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।

তিনি বলেন, জাতির পিতাকে হত্যার পরে যারা ক্ষমতায় এসেছিল তারা এ জাতিকে ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করেছিল। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আজ আওয়ামী লীগকে সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন বলেই এখন আর আমাদের কারও কাছে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে যেতে হবে না।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা (ছবি: ফোকাস বাংলা)

শেখ হাসিনা বলেন, আজ একটা সাময়িক সমস্যা দেখা দিয়েছে। করোনাভাইরাস, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, স্যাংশন-পাল্টা স্যাংশনে আমাদের ওপর এই ধাক্কাটা এসেছে। ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ এবং ২০০১-২০০৮ সালে বাংলাদেশ যে অন্ধকার যুগে ছিলে, আজ সেই অন্ধকার ‍যুগে বাংলাদেশ নেই। বাংলাদেশ এখন আলোর পথে যাত্রা শুরু করেছে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার পক্ষে এগিয়ে যাচ্ছি। শুধু বর্তমানের উন্নয়ন নয়, ভবিষ্যতে আলোকোজ্জ্বলের জন্য আমরা সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করেছি। এটা আমাদের নির্বাচনি ওয়াদা ছিল, রক্ষা করতে পেরেছি।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: ফোকাস বাংলা)

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার কাজ একটাই– বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা। যে অন্ধকার যুগ ছিল তার থেকে আলোর পথে যাত্রা শুরু করা। আমরা যে ওয়াদা দিয়েছি– একে একে তা পূরণ করেছি। বাংলাদেশের মানুষের কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাণিজ্যসহ প্রতিটি সেক্টরে এই ১৫ বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে, আজ বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল। বিশ্ব তাকিয়ে থাকে অবাক হয়ে।

/ইএইচএস/এফএস/
টাইমলাইন: এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৬:৩৮
০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৯:৪১
ভয় দেখিয়ে লাভ নেই: প্রধানমন্ত্রী
০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৫:২৩
০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৩:০০
০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০
০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:০০
সম্পর্কিত
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নিহত বৈমানিক আসিম জাওয়াদের পরিবারের সাক্ষাৎ
এই দিনে ফিরে এসেছিলেন শেখ হাসিনা
৩০০ ফুট সড়কে বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে ‘ওভার স্পিড’ মামলা
সর্বশেষ খবর
পুতিন ও শি ‘ক্ষতি করার’ পরিকল্পনা করতে এক হচ্ছেন: ট্রাম্প
পুতিন ও শি ‘ক্ষতি করার’ পরিকল্পনা করতে এক হচ্ছেন: ট্রাম্প
প্রিয় দশ
প্রিয় দশ
কাশ্মির সীমান্তের দুই দিকে বিপরীত দুই দৃশ্য
কাশ্মির সীমান্তের দুই দিকে বিপরীত দুই দৃশ্য
ক্যাম্পে জন্ম নেওয়া শিশুদের ‘দেশভাবনা’
ক্যাম্পে জন্ম নেওয়া শিশুদের ‘দেশভাবনা’
সর্বাধিক পঠিত
সিলেটে বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
সিলেটে বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
জাহাজে ওঠার পর কোরআনের সুরা শুনিয়ে দস্যুদের নিবৃত্ত করা হয়
জাহাজে ওঠার পর কোরআনের সুরা শুনিয়ে দস্যুদের নিবৃত্ত করা হয়
এমপিও আবেদন সরাসরি অধিদফতরে পাঠানো যাবে না
এমপিও আবেদন সরাসরি অধিদফতরে পাঠানো যাবে না
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদধারীদের বিরুদ্ধে আসতে পারে আইনি ব্যবস্থা
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদধারীদের বিরুদ্ধে আসতে পারে আইনি ব্যবস্থা
ফুল দিয়ে বরণ, রিট দিয়ে শুরু কোন্দল!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিফুল দিয়ে বরণ, রিট দিয়ে শুরু কোন্দল!