একে একে চালু হচ্ছে ঢাকার যোগাযোগ কেন্দ্রিক সরকারের মেগা প্রকল্পগুলো। এতে নগরজীবনে আসছে স্বস্তি, বাড়ছে গতি। মেট্রোরেলের পর আজ শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) ঢাকার আরেক মেগা প্রকল্প এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এক্সপ্রেসওয়েটি হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত। মোট দূরত্ব ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। আজ বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশের উদ্বোধন হচ্ছে।
আগামীকাল (রবিবার) ভোর ৬টা থেকে এই অংশ সর্বসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন ধরনের যানের জন্য আলাদা করে টোল নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। তবে এই টোল অনুযায়ী এ পথে চলাচলকারী বাসের ভাড়া কী হবে তা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। লোকাল বাসগুলো কী নিয়মে চলাচল করবে এ নিয়েও সংশ্লিষ্টদের ঘোর কাটছে না।
এক্সপ্রেসওয়ের এই অংশে যানবাহনকে চার শ্রেণিতে ভাগ করে টোল ঠিক করেছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। এতে সর্বনিম্ন টোল ৮০ ও সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
গত ২১ আগস্ট মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগের উপসচিব আবুল হাসানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফার্মগেট পর্যন্ত সব ধরনের বাসের (১৬ সিট বা এর বেশি) ক্ষেত্রে ১৬০ টাকা টোল নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে এসব বাসে নতুন ভাড়া কত হবে তা জানেন না মালিকরা। বর্তমানে এই দূরত্বের যাত্রীপ্রতি ভাড়া ৩০ টাকা।
এ বিষয়ে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আজমল উদ্দিন আহমেদ (সবুর) বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এক্সপ্রেসওয়ের টোলহার সরকার নির্ধারণ করে দিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এটি সমন্বয় করে বাসের ভাড়া নেওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে টোল অনুযায়ী যাত্রী প্রতি ভাড়া বাড়বে। তবে এ বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। এক্সপ্রেসওয়েটি চালু হওয়ার পর অটোমেটিক ভাড়াও বাড়বে।’
নতুন ভাড়া কী হবে এবং এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের জন্য আলাদা কোনও বাস সার্ভিস চালু হবে কিনা এ নিয়ে কোনও ধারণা নেই বাস চালকদের। কেননা এই অংশে বিভিন্ন স্থানের যাত্রী যাতায়াত করলে তাদের প্রত্যেকে নির্ধারিত স্টপেজে নামিয়ে দিতে হলে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নেমে আবার ঘুরে এসে উঠতে হবে। এক্ষেত্রে বারবার টোল দিতে হলে খরচ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা চালকদের।
বিমানবন্দর-ফার্মগেট রুটে চলাচল করা ‘এয়ারপোর্ট-বঙ্গবন্ধু পরিবহনের’ চালক রাকিব বলেন, ‘এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে আমাদের গাড়ি চলবে নাকি নিচ দিয়ে চলবে- তা এখনও মালিকপক্ষ জানায়নি। টোল থাকায় ভাড়া কত বাড়বে, তাও এখনও ঠিক হয়নি। এসব বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। মালিক যেখান দিয়ে গাড়ি চালাতে বলবে, সেখান দিয়ে চালাবো।’
এই পথ দিয়ে চলা যাত্রীবাহী বিকাশ বাসের হেলপার নাসির বলেন, ‘আমরা তো লোকাল গাড়ি চালাই। আমাদের ওইটা (এক্সপ্রেসওয়ে) দিয়ে উঠলে পোষাবে না। আমরা নিচের রাস্তা দিয়েই যাবো। ওপর দিয়ে গেলে দ্রুত যাওয়া যাবে। কিন্তু তখন কোনদিক দিয়ে নামবো, কোনদিক দিয়ে উঠবো কী নিয়মে চলবো তার তো কিছুই জানি না। নামার পয়েন্ট তো কয়েকটা। আর একেক যাত্রী একেক জায়গায় নামে।’