X
সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫
২৩ আষাঢ় ১৪৩২

দুর্ভোগ যাত্রা

তুষার আবদুল্লাহ
১০ আগস্ট ২০১৯, ১৪:৩৭আপডেট : ১০ আগস্ট ২০১৯, ১৪:৩৮

তুষার আবদুল্লাহ ধীর লয়ে আছি এখন। ঈদে যারা ঘরে ফিরছেন, তারা পথে বসে আছেন। বিশেষ করে গন্তব্য যাদের উত্তরমুখী। ২৪ ঘণ্টা আগে রওনা দিয়েও ৬-৭ ঘণ্টার গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেননি অনেকেই। সড়কপথের মতো রেলপথেও বিপর্যয় ঘটেছে। ১১-১২ ঘণ্টা দেরিতেও ট্রেন ছাড়বে কিনা, সেই নিশ্চয়তাও পাওয়া যাচ্ছে না। রেললাইনের জটিলতার জন্য পথের মাঝেও ট্রেন আটকে থাকছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ট্রেনের খাবার ও পানীয় ফুরিয়ে যাওয়ায় যাত্রাপথের দুর্ভোগ অসহনীয় মাত্রায় পৌঁছেছে। পদ্মা-যমুনার ফেরির ওপর নির্ভর যাদের যাত্রা, নদীর বৈরী মেজাজের জন্য শিমুলিয়া-পাটুরিয়ায় আটকে আছেন তারা। রাজধানীমুখী যারা তারাও সহজে আসতে পারছেন না। কোরবানির পশুবাহী ট্রাকের ভিড় আছে পথে। অপেক্ষাকৃত সহজযাত্রা এবার চট্টগ্রাম ও সিলেটের পথে। মেঘনা, গোমতী সেতু এবং গাউসিয়া-ভুলতার ফ্লাইওভার চালু হওয়ায় ওই পথে যানবাহনের গতি বেড়েছে। তবে দক্ষিণ এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সড়ক ও রেলপথের গতি শ্লথ হওয়ায় বলা যায় এবারের ঈদে ঘরে ফেরার সুর চলছে ধীর লয়েই।
এই সুরের সঙ্গে আমাদের অভ্যস্ততা নতুন নয়। ঈদের দুই উৎসব ছাড়াও সরকারি ২-৩ দিনের ছুটির ফাঁদের সময়েও সড়ক ও রেলপথের এমন ধীর লয়ের সঙ্গে যাত্রীদের পরিচয় আছে। কেন যানজটে আটকা পড়ে থাকতে হয়, কেন গাড়ির গতি শ্লথ হয়, সেই কারণ কোনও দফতরের অজানা নয়। রেললাইনের অসুখের কথা কার অজানা? শুধু প্যারাসিটামল আর অন্ধভাবে অ্যান্টিবায়োটিক খাইয়ে এখন আর রেলপথ সচল রাখা সম্ভব নয়। রোগ শনাক্ত হওয়ার পরেও প্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার ছাড়া চলছে রেলপথ। স্বাভাবিক শিডিউল সহ্য করার ক্ষমতা যে রেললাইনের নেই, তার ওপর যখন বাড়তি শিডিউল চাপিয়ে দেওয়া হয়, তখন তো বিদ্রোহ করবেই। রোগ গোপন করে রাখতে রাখতে এবার আর রেলপথ বিভাগ চেপে রাখতে পারলো না। শিডিউল বিপর্যয়ের কথা স্বীকার করে নিতে হয়েছে। ঘোষণা দিতে বাধ্য হয়েছে, ট্রেন ঈদ পর্যন্ত এই বিপর্যয় নিয়েই চলবে। যাত্রীরা চাইলে টিকিট জমা দিয়ে টাকা তুলে নিতে পারবেন। অথচ যদি আগে থেকেই তদারকি, মেরামত কাজ ঠিকঠাক মতো হতো তাহলে রেলপথের ট্রাফিক এই পর্যায়ে বিপর্যস্ত হতো না।

বন্যা, বৃষ্টিতে সড়কপথের কিছুক্ষতি হবেই। ঈদের চাপ সামলাতে সেই রাস্তা মেরামত করা যেতো। করা হয়নি। মহাসড়ক, সড়কের কোন কোন স্থান যানজট তৈরি করে, একথা হাইওয়ে পুলিশসহ স্থানীয় প্রশাসনের অজানা নয়। ওই স্থানগুলোতে বাজার-হাট বসতে না দেওয়া, রাস্তার মাঝখানে বাস রেখে যাত্রী ওঠা-নামা করতে না দেওয়া, দ্রুত টোল আদায়ের কোনও পদ্ধতি সাময়িকভাবে চালু করা বিশেষ করে ট্রাক এবং বাসকে অযথা তল্লাশি, মামলার হয়রানির মধ্যে না ফেলা, কোরবানির পশু বহনকারী ট্রাকের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের সুবিধার্থে কৃত্রিম জট তৈরি না করা। উল্টোদিক দিয়ে গাড়ি চালানো বা ওভারটেকিং বন্ধ রাখা। এদিকগুলো খেয়াল রাখলে সড়কপথে যান চলাচলে গতি আনা যেতো। দুঃখজনক হলো, হাইওয়ে পুলিশ বা স্থানীয় প্রশাসন এদিকটায় অন্যান্য সময়ের মতো এবারও গাফিলতি করে গেছে। যার ফলাফল ঘরমুখো যাত্রীরা পথে বসে আছেন। এখানে বাসের বাড়তি ভাড়া আদায় এবং রেল কর্মচারীদের টিকিট কালোবজারির কথাও যোগ করা উচিত। কারণ এই দুইয়ের কারণে ঈদ যাত্রাপথের সুর আনন্দময় না হয়ে করুণ লয়ে বাজছে।

লেখক: বার্তা প্রধান, সময় টিভি

/এসএএস/এমএমজে/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
টেক্সাসে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮২, এখনও নিখোঁজ বহু মানুষ
টেক্সাসে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮২, এখনও নিখোঁজ বহু মানুষ
জুলাই গণহত্যা: শেখ হাসিনাসহ তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ ১০ জুলাই
জুলাই গণহত্যা: শেখ হাসিনাসহ তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ ১০ জুলাই
বরগুনায় ডেঙ্গু আক্রান্ত আরও ২ জনের মৃত্যু
বরগুনায় ডেঙ্গু আক্রান্ত আরও ২ জনের মৃত্যু
কোনও কিছু চাপিয়ে দিচ্ছে না ঐকমত্য কমিশন: আলী রীয়াজ
কোনও কিছু চাপিয়ে দিচ্ছে না ঐকমত্য কমিশন: আলী রীয়াজ
সর্বশেষসর্বাধিক