X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

‘বুস্টেড’ শিল্পবোধ আর ‘সিক সেলিব্রিটিজম’

মুনজের আহমদ চৌধুরী
১৮ আগস্ট ২০২১, ১৬:৪৭আপডেট : ১৮ আগস্ট ২০২১, ১৬:৪৭

মুনজের আহমদ চৌধুরী বিলেতে এসে প্রথমে অ্যাসাইলাম চাওয়া অর্থাৎ বসবাসের একটা পথ খোঁজেন বেশিরভাগ মানুষ। তাতে ন্যূনতম পাঁচ থেকে বিশ বছর পর্যন্ত লাগে। বিলেত, ইউরোপ বা আমেরিকায় স্থায়ী বসবাসের ব্যবস্থা হলে আর্থিক নিরাপত্তার ভাবনা তখন আর ভাবতে হয় না। অ্যাসাইলামের মামলা জিততে গ্রাউন্ড বানাবার জন্যই অনেকে তাদের আইনজীবীর পরামর্শে রাজনীতিবিদ, লেখক, সাংবাদিক সেজে কাগজপত্র বানান। তাতে মামলা জিততে সুবিধা হয়। সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে সমীহ আদায়ের চেষ্টাও করেন।

জীবনের অনেক বছর খরচের পর যখন আর্থিক নিরাপত্তা জোটে তখন অ্যাসাইলাম পাওয়া সেসব বেশিরভাগ মানুষজন দেখেন; তাদের আর্থিক নিরাপত্তার বন্দোবস্ত হলেও প্রত্যাশিত সামাজিক মর্যাদা বা অবস্থান তারা অর্জন করতে পারেননি। সুপিরিয়রিটি আর ইনফিউরিটি কমপ্লেক্সে ভোগা সেসব মানুষজন তখন রাতারাতি সামাজিক মর্যাদা বা অবস্থান অর্জনের জন্য শটকার্টে নানা পথ খোঁজেন।

বিদেশে দীর্ঘকাল ধরেই পদ-পদবি, ডক্টরেট বিক্রির ব্যবসায়ীরা আছেন। অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার, এমবিই'র মতো বিলেতের সর্বোচ্চ নাগরিক মর্যাদার সম্মাননা পাইয়ে দেওয়া, ফেসবুকের অ্যাকাউন্ট ভেরিফিকেশন থেকে শুরু করে ডক্টরেট ডিগ্রি সবকিছু পাইয়ে দিতে অনলাইনে অফলাইনে শত শত বিজ্ঞাপন।

ডিগ্রি, ডক্টরেট, সংবর্ধনা, সম্মাননা বিনিময়মূল্যে কিনে ‘এটেনশন সিকার’ মানুষজন সেলিব্রিটি হওয়ার চেষ্টা করেন।  

আত্মপরিচয়ের সংকটে ভোগা এমন মানুষরা কমিউনিটিতে খ্যাতি-পরিচিতি অর্জনের আশায় সকাল বেলা রাজনীতি, দুপুরে সমাজসেবক, বিকালে লেখালেখি- সাংবাদিকতা করেন। রাতের বেলা এই একই মানুষই আবার সাহিত্যসভা নয়তো ধর্মসভার আলোচক হিসেবে নিজের পরিচয় দিতে ভালোবাসেন।

অনেকে দেশ থেকে নামসর্বস্ব ভুয়া বিভিন্ন সংগঠন নামধারী দোকানের কমিটি কিনে এনে সেসব সংগঠনের যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি, সম্পাদক পরিচয় দেন। বাঙালি পাড়াগুলোতে একই ব্যক্তি একইসঙ্গে ১৫-২০টি সংগঠনের সভাপতি সেক্রেটারি বা কর্তাব্যক্তি এরকম চরিত্র একসময় হাতেগোনা থাকলেও এখন অসংখ্য। বাংলা পড়তে বা লিখতে না পারলেও তার নিজের বাংলা ভাষায় লেখা অনেক বই আছে; এমন বিরল প্রতিভাবান লেখকেরও অভাব নেই কমিউনিটিতে।

জালিয়াতির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নিজের ছবি জুড়ে দিয়ে সেই ছবি ফেসবুক কিংবা অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েও কিছু প্রতারক জাহির করার চেষ্টা করেন নিজেদের।

এসবের মধ্যে দিয়ে সাধারণ মানুষের আস্থা, বিশ্বাস বাগিয়ে হাউজিং থেকে শুরু করে এয়ারলায়েন্সে বসার নামে কমিউনিটির মানুষের টাকা মেরে দেওয়ার উদাহরণ আছে ভূরি ভূরি।

দুই.

সম্মান, মানুষের ভালোবাসার মতো মানব জীবনের বৃহত্তম অর্জনগুলো জালিয়াতি, প্রতারণার মাধ্যমে অর্জন করার চেষ্টা করা কিংবা কেনাবেচা–  প্রবাসের এসব বাস্তবতাটুকু এতক্ষণ সচেতনভাবেই লিখছি। কেননা, বাংলাদেশের চিত্র যে ভিন্ন, সেটি নয় কিন্তু। দেশে চেতনার মহাজাগতিক ব্যবসা চলছে। দেশে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ করে  বিলেতে-ইউরোপে এসে বিএনপি-জামায়াত সেজে অ্যাসাইলাম নিয়ে দেশগুলোতে রাষ্ট্রীয় ভিক্ষার টাকায় দিনযাপন করেন। সে টাকায় নিরাপদ দূরত্বে থেকে নিশ্চিন্ত দিনযাপন করেন, আর ফেসবুকে করেন ‘আদর্শ আর চেতনার বিপণন চর্চা’। এরকম অসংখ্য উদাহরণ আছে চারপাশে।

আমরা যা বলি তা বিশ্বাস করি না। যা অন্যকে করতে বলি তা নিজের জীবনে চর্চা করি না। সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে ফেক বা কৃত্রিম জীবন দেখিয়ে, আশপাশের মানুষকে বিভ্রান্ত করি।

দেশে-বিদেশে বহু মানুষ যেকোনও উপায়ে সেলিব্রিটি হতে চান। সেটা করতে গিয়ে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো জাল করে অনলাইনে ইঁদু‌রের ফাঁদে আটকে পড়ছে তারুণ্যের মোটিভেশন বক্তা নামধারী ‘ক্যানভাসার’।

সোশ্যাল মিডিয়ায় সেলিব্রিটি হতে পর্নো তারকা সাজতে গিয়ে অবশেষে আত্মহননে মুক্তি খুঁজছে ফলোয়ার বাড়াতে উন্মুখ বালিকা। ইউটিউব দেখে, আয়নার সামনে মুখস্থ করে বক্তৃতা শেখা মানুষরা কাঁপি‌য়ে বেড়াচ্ছেন টকশোর ময়দান। অন্যের অনুকরণে, চৌর্যবৃত্তিতে উৎপন্ন হচ্ছে হাইব্রিড ইউটিউবার। কম পরিচিত লেখকের লেখা চুরি করছেন ভেরিফায়েড লেখক। তারকা সাংবাদিক অন্যের লেখা চুরি করে থিসিস বানাচ্ছেন। ধরা খেয়ে ‘চোরের মায়ের বড় গলা’য় চৌর্যবৃত্তিকে গবেষণায় জাস্টিফাই করার জন্য প্রকাশ্য নয়তো বোকাবাক্সে গলাবাজি করছেন। অনলাইনের সংক্রমণে ‘ধান্দাবাজ’রা সরাসরি সম্পাদক সেজে আবির্ভূত হচ্ছেন। বাসের হেলপার, পত্রিকার হকাররা সম্পাদক-সাংবাদিকতার পরিচয়কে পুঁজি করে চাঁদাবাজি আর তদবিরবাজি করছে।

অন্যের গান-সুর-গল্প-চিত্রনাট্য চুরি চলছে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে। নেতানেত্রীরা নিজেদের অকাল কুষ্মাণ্ড পুত্রধনদের গৃহশিক্ষক রেখে রাজনীতিবিদ বানাতে চাইছেন। তাদের হাতেই নাকি নিরাপদ হবে দেশ! এভাবে চলছে উত্তরাধিকারের রাজনীতি।

ক্রেডিট ছিনতাইয়ের দৌরাত্ম্য স্কুল শিশুদের আন্দোলনের কৃতিত্ব ছিনতাই অবধি নেমে গেছে আগেই।

মাদকসেবী, মাদক ব্যবসায়ীরা সমাজে উদ্বুদ্ধকরণ বক্তা, মাদকবিরোধী আন্দোলনের রূপকার সেজে প্রচারণা চালিয়ে কতদূর যেতে পারেন, বদিরা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

চটুল চোরাই সংলাপে, টুকলিফাইড লেখা ভেরিফায়েড পেইজে দিয়ে সেলিব্রিটি হতে গিয়ে হোঁচট খাচ্ছে বিকৃতমনা চোরের দল। লাইক-কমেন্ট করতে রীতিমতো নিজস্ব লোকবল নিয়োগ দেওয়া সেলিব্রিটিরা যেমনি আসছেন, তার চেয়েও দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছেন। কারণ, দেবার মতো, মনে রাখার মতো মৌলিক কনটেন্ট, মননের অনুরণন তারা দিতে পারছেন না। গানটাও আর শোনার বিষয় নেই এক দশকের বেশি সময় ধরে। ইউটিউবের কৃত্রিম ভিউ যেখানে শিল্প আর শিল্পীর উচ্চতা মাপার ফিতে হয়ে দাঁড়ি‌য়েছে, সেখানে একটা হিট গানের পর হারিয়ে যাচ্ছেন ‘হাইব্রিড তারকা’রা।

সিংহভাগ সেলেবল লেখক কবিরা ভুল বাক্যে নিজেদের বইয়ের রিভিউ লেখাচ্ছেন, নিজ খরচে আত্মপ্রসাদে চালাচ্ছেন নিজের প্রকাশনা। আগে বইমেলার মাঠে আর ফেব্রুয়ারি মাসে বইয়ের প্রচ্ছেদের আড়ালে সেই শ্রেণির গদ্য -পদ্য লেখকরা নিজেদের বিজ্ঞাপন চালাতেন। আর এখন এ নির্যাতন  বছরজুড়ে চলে ফেসবুকের দেয়ালে। তারপরও বইয়ের পাঠক বাড়ছে না।

সম্মান, ভালোবাসা লাইকের দামে কিনতে যাওয়া তারকা ধরা খাচ্ছেন জনগণের হাতে। পেজে লাখ লাখ লাইক, অথচ রাস্তায় তাদের কথায় ১০০ জন মানুষও নামছে না। লেখকরা সুবিধার দাস হয়ে পাঠকের বিশ্বাস হারাচ্ছেন। পাঠক তাদের বুস্ট দেওয়া লেখা পড়তে বাধ্য হলেও বিশ্বাস করছেন না।

সাধারণ মানুষকে এসব তামাশা দেখে যেতে হচ্ছে, অগত্যা বিকল্প না থাকায়।  

আমাদের প্রচলিত সংবাদমাধ্যমের বড় অংশ ভেসে চলেছে নিয়ন্ত্রিত সময়ে নিয়ন্ত্রক পরিচালিত উন্নয়নের বাঁধভাঙা জোয়ারে। গণমাধ্যম তার রূপ হারিয়ে পরিণতি পেয়েছে পুঁজির প্রচারণার মাধ্যমে। হারিয়েছে বিশ্বাসযোগ্যতার অনেকখানি। ইস্যু দিয়ে ইস্যু হত্যার সময়ে পরীমণির মতো অনেক ইস্যু নিয়ে গণমাধ্যমের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। পরীমণির বাদী ও আসামি হওয়া পরপর দুটি ঘটনায় মিডিয়া ট্রায়ালের পাল্টাপাল্টি ঘটনা ঘটেছে।

গত দেড় যুগ ধরে বাংলা গণমাধ্যমে সাংবাদিকতার চাকরির বেতনের টাকার সাথে আমার জীবিকা জড়িত। নৈতিকতার জায়গায় দাঁড়িয়ে লেখালেখি- সাংবাদিকতাকে একনিষ্ঠভাবে ভালোবাসার অপরাধে অনেকভাবে মূল্য দিতে হয়েছে। সাংবাদিকতা আমার কাছে ইবাদতের মতো সাধনার জায়গা।

সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতার সংকটের জায়গাগুলো আমাকে আহত করে। আক্রান্ত করে।

তিন.

সমাজে  ইমাম- পুরোহিত শিক্ষক, কৃষিবিদ, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিল্পীসহ সব পেশাজীবী ক্ষমতার চাটুকারিতায় সুবিধা খুঁজতে, স্বার্থ বাগাতে মরিয়া।

সেই বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে অবশ্যই আমাকে স্বীকার করতেই হবে, সংবাদকর্মী, সাংবাদিকরা ভিন্ন গ্রহের কেউ নন। সাংবাদিকতাও সমাজ- রাষ্ট্রের বাইরের কোনও দ্বীপ বা উপত্যকা নয়।

বাস্তবতা হলো, সবকিছুকেই রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ বা প্রভাবিত করে। সে কারণে রাজনীতি ও রাজনীতিবিদদের গুণগত পরিবর্তন ছাড়া সমাজের ন্যূনতম অর্থবহ ইতিবাচক পরিবর্তনের আশা করা নিতান্তই অবান্তর।

এ লেখাটির উপজীব্য হলো, ‘বুস্ট দেওয়া’ সম্মান অর্জন করার চেয়ে, আত্মসম্মান নিয়ে, ধরে রেখে বেঁচে থাকাটা অনেক কঠিন। মগজে, মননে আর রুচিতে অতখানি পুষ্টিহীনতা, আয়োডিনহীনতা নিয়ে সেলিব্রিটি হওয়া যায় না। নিজের কিছু পুঁজি থাকতে হয়। অভিনয় দিয়ে, সং সেজে, অনুকরণের বোল-চালে উদাহরণীয় হওয়া যায় না। উল্টো মাঝখান থেকে তারা আত্মপ্রতারণার ফাঁদে জীবনটাই হারায়।

ব্যর্থতার ভার বয়ে ক্লান্ত ভণ্ডরা জীবনের শেষ চেষ্টা হিসেবে ‘মানুষ’ হবার আগে সেলিব্রিটি হওয়ার পথ খুঁজছেন। কিন্তু, সবকিছু ডাউনলোড করা গেলেও ‘অভিজ্ঞতা’টা ডাউনলোড করা যাচ্ছে না। কথার ফুলঝুরি, ভণ্ডামির বেচাকেনায় প্রজন্মকে প্রেরণা দেওয়া যায় না। কিছুটা হলেও তো করে দেখাতে হয়। নেতা সাজতে আসা অভিনেতারা আটকে যাচ্ছেন জনতার চোখে।

যাদের যেখানে থাকার কথা, তারা সেখানে নেই। আর এ শূন্যতার সুযোগে সমাজ-রাজনীতি-সংস্কৃতির অঙ্গনে ভর ও দখল করেছে ভাঁড়েরা।

ব্যতিক্রম যে নেই, তা বলছি না। তবে একইসঙ্গে স্বীকার করতেই হবে; জালিয়াত, স্টান্টবাজদের ভিড়েও ভালো কাজ হচ্ছে। সংখ্যায় স্বল্প ভালোগুলো থাকবার কারণেই, রদ্দি-নকল জিনিসপত্র করা যাচ্ছে।

আশার কথা, চোরাই মাল, কপি-পেস্ট ক্রিয়েটররা ধরা খাচ্ছেন পাঠক দর্শকের হাতে। জালিয়াতির জালের বাইরেও সত্যের, সুন্দরের, শিল্পবোধের চর্চা অনুরিত হচ্ছে। দলবাজি, ভিন্নমতের টুঁটি চেপে ধরা, বিদ্বেষ আর ঘৃণা ছড়ানোর এ সময়ে ন্যায়ের দীপ্যমান বাতিটি ধরে রাখার দায়িত্ব আমাদের প্রজন্মের।

সম্ভাবনার সলতেটুকু পৃথিবীর সব সময়ে-যুগে ‘ইয়েসম্যান’ বা ‘ডমেস্টিক’ না হওয়া তারুণ্যের হাতেই ছিল। মূল্যবোধের সবটুকু এখনও ফেসবুকের স্ট্যাটাসে, সুবিধাবাজির নীতিহীনতায় ভেসে যায়নি। এই দুর্মূল্যের বাজারে এখনও সবকিছু পণ্যও হয়ে যায়নি।

খ্যাতির মরিয়া লালসায়, ক্ষণিকের তারকা সাজার ভিউয়ার, ফলোয়ার উন্মুখ দুপুরের শেষে সন্ধ্যা ঘনায়মান। সেই সন্ধ্যায় বসে এ লেখাটা আসলে আলোময় একটা সকালের জন্য প্রার্থনা।

লেখক: সাংবাদিক, সাধারণ সম্পাদক, ইউকে-বাংলা প্রেসক্লাব।

/এসএএস/এমওএফ/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
বাড়তি ফসল মিষ্টিকুমড়ায় কৃষকের মুখে হাসি
বাড়তি ফসল মিষ্টিকুমড়ায় কৃষকের মুখে হাসি
ধাক্কা মেরে ফেলে চাপা দিলো কাভার্ডভ্যান, মোটরসাইকেলচালক নিহত
ধাক্কা মেরে ফেলে চাপা দিলো কাভার্ডভ্যান, মোটরসাইকেলচালক নিহত
ডিভোর্স দেওয়ায় স্ত্রীকে কুপিয়ে নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন স্বামী
ডিভোর্স দেওয়ায় স্ত্রীকে কুপিয়ে নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন স্বামী
এক সপ্তাহের মাথায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আরেকজন নিহত
এক সপ্তাহের মাথায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আরেকজন নিহত
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ