X
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
১০ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গা নিয়ে বাংলাদেশকে জিম্মি করছে সবাই

আনিস আলমগীর
০৬ অক্টোবর ২০২০, ১৩:৫৬আপডেট : ০৬ অক্টোবর ২০২০, ১৩:৫৮

আনিস আলমগীর গত ৫ অক্টোবর বাংলাদেশের মাটিতে প্রথম পা দিয়েই নবনিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী আখাউড়ায় স্থলবন্দরে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ভারতের সবচেয়ে কাছের বন্ধুরাষ্ট্র। এই বন্ধুরাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অটুট ও আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যাবো।’ অন্যদিকে দিল্লির কাছ থেকে বাংলাদেশকে কাছে টেনে তার প্রধান উন্নয়ন সহযোগী হতে চায় বেইজিং— সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সঙ্গে চীন-ভারতের সম্পর্কের এমন মধুর কথাই শুনি আমরা। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন প্রমাণ দেয়।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের ১১ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ভরসা করেছিল দক্ষিণ এশিয়ার দুই শক্তিশালী রাষ্ট্র চীন এবং ভারতের ওপর। কিন্তু এই দুই রাষ্ট্র রোহিঙ্গা সমস্যা উত্তরণে আশ্বাস ভিন্ন কোনও সহযোগিতাই এখন পর্যন্ত করেনি। বরং বাংলাদেশের সঙ্গে চালাকি করছে এবং মিয়ানমারের সবচেয়ে আপন হওয়ার জন্য দুই দেশ একে অন্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছে। ফলে রোহিঙ্গারা ভারত আর চীনের ভূ-রাজনীতির বলি হতে চলছে। আর বাংলাদেশ এই বোঝা কতদিন বইবে কেউ জানি না, যে সমস্যার শুরু ১৯৭৮ সাল থেকে।

রোহিঙ্গারা বারবার মিয়ানমারের সেনাদের নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আসলেও মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ও স্থানীয় বৌদ্ধ মিলিশিয়ারা ২৫ আগস্ট ২০১৭ থেকে ‘clearance operations’ বা ‘ছাড়পত্র কার্যক্রম’ শুরু করলে ওই বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বরে হত্যা, ধর্ষণ নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাভাষী এই মুসলিম জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বড় সংখ্যায়, প্রায় সাড়ে সাত লাখ, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। মিয়ানমারের বেসামরিক প্রধান নেত্রী অং সান সু চির ওপর আন্তর্জাতিক মহল থেকে চরম নিন্দা নেমে আসে তখন। কিন্তু সবার আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেদ্র মোদি ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ৫ দিনের সফরে ইয়াংগুন গিয়ে সু চির সঙ্গে হাত মিলিয়ে আসেন। ভারতীয় পত্রিকার মতে, ওই সময়ে তার এই সফরের উদ্দেশ্য ছিল কৌশলগত ও অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বকে প্রসারিত করা।

মিয়ানমারের সঙ্গে সামরিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করতে ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এম এম নারভানে এবং পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা ৪ অক্টোবর ২০২০ মিয়ানমার সফর করেছেন। মোদি যেমন তার মিয়ানমার সফরকালে রোহিঙ্গা শব্দটিও উচ্চারণ করেননি তেমনি ভারতের পররাষ্ট্র দফতরও রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ করে না। এমনকি তাদেরকে ‘শরণার্থী’ বলে ভারত মিয়ানমারের বিরাগভাজন হতে চায় না। গত আগস্ট মাসে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের ঢাকা সফর নিয়ে ভারতীয় পররাষ্ট্র দফতরের জারি করা বিবৃতিতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরকে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত লোক (internally displaced persons) বলেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সর্বশেষ গত সপ্তাহে দু’দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর টেলিবৈঠক নিয়ে জারিকৃত যৌথ ঘোষণায় রোহিঙ্গাদেরকে বলপূর্বক বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে বলতে গিয়ে ‘বলপূর্বক’ (forcibly) শব্দ প্রয়োগে আপত্তি জানায় ভারত। পরে বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে ভারতের পক্ষে একটি শব্দ যোগ করার বিনিময়ে তারা তা দিতে সম্মত হয়।

অন্যদিকে, চীন রোহিঙ্গা ইস্যুকে আন্তর্জাতিক রূপ না দিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিকভাবে সমাধানের জন্য বাংলাদেশকে পরামর্শ দিয়ে আসছে শুরু থেকে এবং মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় থাকবে আশ্বাসও দিয়েছে। কিন্তু কার্যত কিছুই করেনি। বরং জাতিসংঘ যখনই মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিতে চায় তখনই চীন ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করে মিয়ানমারের পক্ষে। প্রায় এক শতাব্দী ধরে মিয়ানমার ব্রিটিশ শাসিত ছিল, এখন মনে হচ্ছে কার্যত চীন শাসিত।

আমেরিকা এবং ভারতের বলয় থেকে তার এই দরিদ্র প্রতিবেশীকে আরও ঘনিষ্ঠভাবে বেইজিংয়ের প্রতি আটকে রাখার ব্রত নিয়ে চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং গত জানুয়ারিতে মিয়ানমার সফর করেছিলেন। শি’র সফরকালে দু’দেশ অবকাঠামোগত বিনিয়োগের জন্য কয়েক ডজন চুক্তি তৈরি করে। তার তালিকার শীর্ষে ছিল চীন-মিয়ানমার অর্থনৈতিক করিডোরের সমাপ্তি, যা চীনকে বঙ্গোপসাগরের গভীর জলাশয়ে সরাসরি প্রবেশাধিকার দেবে। এটি বিতর্কিত দক্ষিণ চীন সাগর এবং মালাক্কা উপকূলের বিকল্প পথ হিসেবে চীনা বাণিজ্যের জন্য একটি নতুন, পশ্চিমমুখী প্রবেশদ্বার উন্মুক্ত করতে সক্ষম হবে।

গত ডিসেম্বর মাসে হেগে মিয়ানমারের শীর্ষ বেসামরিক নেতা অং সান সু চির আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) হাজির হওয়ায় বিশ্ব একটু আশাবাদী হয়েছিল যে রোহিঙ্গারা হয়তো বিচার পাবে। দেশে ফিরতে পারবে। গাম্বিয়ার করা ওই মামলায় সু চি আইসিজেতে নৃশংসভাবে গণহত্যা অভিযানের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন এবং সামরিক জান্তাকে রক্ষা করে বলেন, এটি ছিল রাখাইন সেনাবাহিনী এবং রোহিঙ্গা ‘জঙ্গি’ ও সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মধ্যেকার ‘অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব’। তিনি বলেন, সেনারা অন্যায়ের জন্য দোষী প্রমাণিত হলে তাদের শাস্তি দেওয়া হবে।

আইসিজে জানুয়ারিতে তার অন্তর্বর্তীকালীন রায় প্রদান করে মিয়ানমারের নেতৃত্বকে গণহত্যা প্রতিরোধের আইনি দায়বদ্ধতার প্রতি সম্মান জানাতে এবং রোহিঙ্গাদের হত্যা, নির্যাতন বন্ধে ‘তার ক্ষমতার মধ্যে যতটুকু সম্ভব ব্যবস্থা গ্রহণ’ করার আদেশ দেয়। আদালত মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে অপরাধের প্রমাণ নষ্ট না করার এবং এ বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করারও নির্দেশ দেন। আদালত তার ফলাফল জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাঠানোর কথা ছিল।

কিন্তু বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্ট অনুসারে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা এখনও হত্যা থামায়নি। স্যাটেলাইটের চিত্রে দেখা যাচ্ছে যে সামরিক বাহিনী তিন বছর আগে রোহিঙ্গা গ্রাম কান কায়ার ধ্বংসাবশেষে বুলডোজার চালিয়েছে এবং এর নাম এবং অন্যান্য ধ্বংসপ্রাপ্ত গ্রামের নামগুলো সরকারি মানচিত্র থেকে মুছে ফেলেছে। মিয়ানমার সরকার আদালতে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করেনি বা গণহত্যা বিষয়ে বিশ্বাসযোগ্য তদন্তও চালায়নি।

এদিকে, রাখাইন অভিযানে অংশ নেওয়া দুই সৈন্যের নতুন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য মিয়ানমারের জন্য সবচেয়ে খারাপ অবস্থা নিশ্চিত করেছে। তারা কীভাবে সামরিক বাহিনী গণহত্যা চালিয়েছিল, গণকবর খনন করেছিল, গ্রামগুলোকে ধ্বংস করেছে এবং নারী ও মেয়েদের ধর্ষণ করেছিল তা তারা বিস্তারিত জানিয়েছেন। এদের একজন জাও নাইং তুন বলেছেন, তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাকে বলেছিলেন: ‘আপনি বাচ্চা বা প্রাপ্তবয়স্ক সবাইকেই হত্যা করুন।’

গার্ডিয়ান জানিয়েছে গতমাসে ব্রিটেনের পক্ষ থেকে মিয়ানমারকে আইসিজে-র দাবি মেনে চলা, তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন, মানবিক কাজে প্রবেশাধিকারের অনুমতি এবং রোহিঙ্গা ভোটারদের নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে একটি প্রস্তাব আনা হয়েছিল। নিরাপত্তা পরিষদের আটজন সদস্য এর পক্ষে ভোট দিলেও চীন এতে ভেটো প্রদান করে প্রস্তাবটি আটকিয়ে দেয়।

এরমধ্যে মিয়ানমার আবারও মিথ্যাচারের পুরনো চরিত্রে ফিরে গিয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৫তম অধিবেশনে বলে যে বাংলাদেশ মিয়ানমারে সন্ত্রাসের মদত দিচ্ছে এবং রোহিঙ্গাদের ফেরত দিতে চায় না। বাংলাদেশ রাখাইন রাজ্যের ঘটনা এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে মিয়ানমারের মিথ্যা এবং বিকৃত তথ্যকে পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছে। জাতিসংঘে পাল্টা বক্তব্যে বাংলাদেশ মিয়ানমারের সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, সন্ত্রাস, সন্ত্রাসে অর্থায়ন এবং অন্য যে কোনও সন্ত্রাসবাদের প্রতি জিরো টলারেন্স নীতি মেনে চলে শেখ হাসিনার সরকার। বাংলাদেশ কখনও সন্ত্রাসীদেরকে তার ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেয় না। মানবাধিকার সুরক্ষা করে সব ধরনের সন্ত্রাস মোকাবিলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের রেকর্ড সব মহলে প্রশংসিত। মিয়ানমারের উচিত আয়নায় নিজের চেহারা দেখা। মিয়ানমারে জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর অমানবিক আচরণের রেকর্ড নতুন নয়।
রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো সম্পর্কে বাংলাদেশ জানায়, ২০১৮ সালের নভেম্বর এবং ২০১৯ সালের আগস্টে দু’দফায় প্রত্যাবাসন শুরুর উদ্যোগ নেওয়া হয়; কিন্তু দুর্ভাগ্য, একজন রোহিঙ্গাও যেতে রাজি হয়নি। মিয়ানমারে আর কোনও নির্যাতন চালানো হবে না, এই মর্মে তারা মিয়ানমার থেকে কোনও আশ্বাস পায়নি। ৩৫০ জন রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে ফিরে গেছেন, মিয়ানমারের এমন দাবির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ জানতে চেয়েছে ওই ৩৫০ জন কারা? তারা এখন কোথায় আছে? ১১ লাখ লোকের মধ্যে ৩৫০ জন ফিরে যাওয়া কি রাখাইন রাজ্যের অবস্থার উন্নতির প্রমাণ বহন করে? বাংলাদেশ তার বক্তব্যে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে প্রস্তুত জানিয়ে অবিলম্বে মিয়ানমারকে তার নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ফেরত নিতে বলেছে এবং এসব নিশ্চিত করার জন্য মিয়ানমারকে সহায়তা করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিও অনুরোধ জানিয়েছে।

এদিকে দেশের অভ্যন্তরে কিছু রোহিঙ্গাকে কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে নতুন উত্তেজনার জন্ম হয়েছে। রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করে এমন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং এনজিওগুলো রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের বিরোধিতা করছে। তাদের যুক্তি হচ্ছে, দুনিয়ার সব দেশে শরণার্থী শিবিরগুলো সীমান্ত এলাকায় হয়ে থাকে। এতে শরণার্থীদের মনের মধ্যে নিজ দেশে ফেরত যাওয়ার একটা ঝোঁক থাকে। কিন্তু ভাসানচরে স্বাধীনভাবে বসবাসের সুযোগ দিলে তারা নিজ দেশে ফেরত যেতে চাইবে না।

এর মধ্যে ভাসানচরে থাকা ৩০৬ জন রোহিঙ্গা কক্সবাজার ক্যাম্পে ফিরে যাওয়ার আন্দোলন করলে তাদেরকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে নৌবাহিনীর একদল সদস্যের বিরুদ্ধে। কিন্তু আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)-এর এ অভিযোগকে ‘অবাস্তব’ বলেছে আইএসপিআর। গত মে মাসে ক্যাম্পের বাইরে থেকে দুই দফায় এসব রোহিঙ্গাকে সেখানে নেওয়া হয়। নৌকায় করে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় তাদের আটক করা হয়েছিল।

পর্যবেক্ষকরা অভিযোগ করেছেন যে উদ্বাস্তুদের জন্য কাজ করা এনজিও এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নয়, কক্সবাজারে থাকার জন্য উদ্বুদ্ধ করছে। ভাসানচর একটি প্রত্যন্ত অঞ্চল হওয়ায় এনজিও কর্মকর্তারা সেখানে যেতে চান না। অন্যদিকে কক্সবাজার ক্যাম্পে স্থান সংকুলান এবং পরিবেশ বিপর্যয়সহ নানা সামাজিক সমস্যা রয়েছে, তাই রোহিঙ্গাদের একাংশকে ভাসানচরে পাঠানোর বিকল্প নেই। গত ৪ অক্টোবরও কক্সবাজারের উখিয়া শরণার্থী ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীর মধ্যে মারামারিতে দুই রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। ‘এলাকায় আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করাকে কেন্দ্র করে’ এই বন্দুকযুদ্ধ হয়েছিল বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের আদেশ দেখিয়ে, বিশ্বের সর্বাধিক শক্তিশালী দেশগুলো মিয়ানমারের ওপর অস্ত্রের নিষেধাজ্ঞা, আর্থিক নিষেধাজ্ঞা এবং সম্পদ ফ্রিজ করা, লাভজনক ব্যবসা ও বিনিয়োগের চুক্তিতে অবরোধের সুযোগ থাকলেও কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না। তারা মিয়ানমারের সঙ্গে তাদের রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক স্বার্থ বাদ দিতে পারছে না, কিন্তু বাংলাদেশকে রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে নসিহত দিচ্ছে। একদিকে, বেইজিংয়ের রাজনৈতিক সমর্থন এবং জাতিসংঘে দেওয়া ভেটো মিয়ানমারের জেনারেলদের ক্রমাগত দায়মুক্তি নিশ্চিত করছে, অন্যদিকে লাভজনক ব্যবসা হারানোর ভয়ে আমেরিকা ও ইউরোপ মিয়ানমারকে খুব বেশি চাপ দিচ্ছে না। সবকিছু দেখে মনে হচ্ছে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ অপরাধ করেছে এবং আশ্রিত রোহিঙ্গা থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক মহল এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে জিম্মি করতে চাচ্ছে।

লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট, ইরাক ও আফগান যুদ্ধ-সংবাদ সংগ্রহের জন্য খ্যাত।

[email protected]

 

/এসএএস/এমএমজে/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
জাবির সিনেট ও সিন্ডিকেট প্রতিনিধি নির্বাচন: বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের নিরঙ্কুশ জয়
জাবির সিনেট ও সিন্ডিকেট প্রতিনিধি নির্বাচন: বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের নিরঙ্কুশ জয়
ঝুঁকি নিয়ে পজিশন বদলে সব আলো কেড়ে নিলেন রাফায়েল
ঝুঁকি নিয়ে পজিশন বদলে সব আলো কেড়ে নিলেন রাফায়েল
স্টয়নিস ঝড়ে পাত্তা পেলো না মোস্তাফিজরা
স্টয়নিস ঝড়ে পাত্তা পেলো না মোস্তাফিজরা
রানা প্লাজা ধস: ১১ বছরেও শেষ হয়নি তিন মামলার বিচার
রানা প্লাজা ধস: ১১ বছরেও শেষ হয়নি তিন মামলার বিচার
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ