
স্বামী-সন্তান নিয়ে জীবনের আনন্দ খুঁজতে সমুদ্রের কাছে যাওয়া নারী জানলেন, সমুদ্রের বিশালতায়ও মানুষ কত সংকীর্ণ ও বীভৎস হতে পারে। সমুদ্রের পাড়ে নেকড়েরা ঘুরে বেড়ায় এমন অভিযোগ ছিল। কিছু লক্ষণও ছিল। তাই সেখানে নিরাপত্তা দিতে বাহিনী তৈরির প্রয়োজন দেখা দিয়েছিল। কিন্তু তাদের পরোয়া না করেই নেকড়েরা জিভ বের করে চলেছে প্রকাশ্যে। আট মাস বয়সী সন্তানের মাকে সইতে হলো নেকড়েদের ছোবল। তবে ওই মাকে, ওই নারীকে অভিবাদন; তিনি অপমানে লজ্জায় আড়াল নেননি। ঘৃণা আমাদের সকলের প্রতি যারা নারীকে নিরাপদ রাখতে পারিনি ঘর থেকে সমুদ্রতীর অবধি।
আত্মচিৎকার ভেসে এলো প্রিয় নদী সুগন্ধা থেকে। জলের ওপর ভেসেও আগুনে পুড়ে মরলো কতজন। তাদের অনেকেই বরগুনা যাচ্ছিলেন, বড়দিন বা বছর শেষের ছুটিতে। বাবার বাড়ি, শ্বশুরবাড়ি নয়তো দাদা-নানার বাড়ি। কেউ হয়তো কাজের জায়গাতেই ফিরছিলেন। সুগন্ধার হাওয়ায় চাঁদকে সঙ্গে নিয়ে ঘুমে ডুবে ছিলেন হয়তো সবাই। কিন্তু ইঞ্জিন বিস্ফোরণের আগুনে দগ্ধ হয়ে জীবন দিতে হলো তাদের।
শুধু সড়কে নয়; জলের বাহনও মেয়াদোত্তীর্ণ, ফিটনেস ছাড়াই চলে, এটি সকল কর্তৃপক্ষেরই জানা। কর্তৃপক্ষের সন্তুষ্টির বিনিময়েই হয়তো এমভি অভিযান-১০ সুগন্ধা সাঁতরে বরগুনার পথে ছুটছিল। যদ্দুর জানা গেছে, আগুনের আঁচ পাওয়ার পরেও তীরে বা ঘাটে লঞ্চ ভেড়াননি সারেং। জানা নেই, কোন দগ্ধতা বা জলে আগুনের রঙ দেখার নেশায় মজে ছিল সারেং!
সকালে প্রাতঃভ্রমণে গিয়ে কাজে যাওয়ার সময় আবর্জনার গাড়ি তো এখনও বেপরোয়া। প্রাণ যাচ্ছে মানুষের যখন-তখন। বাস-ট্রাক, মোটরসাইকেল কত নিপুণভাবে কত প্রাণ পিষে দিচ্ছে। গলিপথ ধরে হেঁটে যাওয়াতেও ওঁৎ পেতে থাকে মৃত্যু। রড উড়ে এসে পড়ছে হয়তো আপনার কিংবা আমার ওপর।
ঝরা পাতার জীবন আমাদের। কোথাও কোনও মায়া নেই। আদর নেই। দায়িত্ব নেই। আয়োজন আছে মৃত্যুর। এটাই সত্যি। দৃশ্যমান কান্না। তদন্ত, গণমাধ্যমের বিলাপ– সবই ভনিতা। কত দফতর, কত আধিকারিক, কত নেতা, কত পিতা আমাদের। তারা কি পাষাণ মন নিয়ে দেখে যায়– পোকামাকড়ের চেয়েও তুচ্ছ এই আমাদের মৃত্যু?
এখন তাই কোনও শুভ দিন, কোনও উদযাপনে মন পাখা মেলে না। দিনমান আতঙ্কে থাকি নিজেকে নিয়ে তো বটেই, পরিবার আর বন্ধুদের নিয়েও। সমাজ যতক্ষণ না দায়িত্বশীল ও সেবা ধর্মে দীক্ষিত হতে পারছে, ততক্ষণ মানুষেরা কোনও উদযাপন উপভোগে সক্ষম হয়ে উঠতে পারে না।
তারপরও শুভ দিনে প্রত্যাশা রাখতেই পারি– সুমতি ফিরে আসুক আমাদের আধিকারিকের। তার ব্রত হোন সেবা ধর্মে। এই গোলক, এই দেশ সকলের জন্য নিরাপদ হোক।
আত্মচিৎকার ভেসে এলো প্রিয় নদী সুগন্ধা থেকে। জলের ওপর ভেসেও আগুনে পুড়ে মরলো কতজন। তাদের অনেকেই বরগুনা যাচ্ছিলেন, বড়দিন বা বছর শেষের ছুটিতে। বাবার বাড়ি, শ্বশুরবাড়ি নয়তো দাদা-নানার বাড়ি। কেউ হয়তো কাজের জায়গাতেই ফিরছিলেন। সুগন্ধার হাওয়ায় চাঁদকে সঙ্গে নিয়ে ঘুমে ডুবে ছিলেন হয়তো সবাই। কিন্তু ইঞ্জিন বিস্ফোরণের আগুনে দগ্ধ হয়ে জীবন দিতে হলো তাদের।
শুধু সড়কে নয়; জলের বাহনও মেয়াদোত্তীর্ণ, ফিটনেস ছাড়াই চলে, এটি সকল কর্তৃপক্ষেরই জানা। কর্তৃপক্ষের সন্তুষ্টির বিনিময়েই হয়তো এমভি অভিযান-১০ সুগন্ধা সাঁতরে বরগুনার পথে ছুটছিল। যদ্দুর জানা গেছে, আগুনের আঁচ পাওয়ার পরেও তীরে বা ঘাটে লঞ্চ ভেড়াননি সারেং। জানা নেই, কোন দগ্ধতা বা জলে আগুনের রঙ দেখার নেশায় মজে ছিল সারেং!
সকালে প্রাতঃভ্রমণে গিয়ে কাজে যাওয়ার সময় আবর্জনার গাড়ি তো এখনও বেপরোয়া। প্রাণ যাচ্ছে মানুষের যখন-তখন। বাস-ট্রাক, মোটরসাইকেল কত নিপুণভাবে কত প্রাণ পিষে দিচ্ছে। গলিপথ ধরে হেঁটে যাওয়াতেও ওঁৎ পেতে থাকে মৃত্যু। রড উড়ে এসে পড়ছে হয়তো আপনার কিংবা আমার ওপর।
ঝরা পাতার জীবন আমাদের। কোথাও কোনও মায়া নেই। আদর নেই। দায়িত্ব নেই। আয়োজন আছে মৃত্যুর। এটাই সত্যি। দৃশ্যমান কান্না। তদন্ত, গণমাধ্যমের বিলাপ– সবই ভনিতা। কত দফতর, কত আধিকারিক, কত নেতা, কত পিতা আমাদের। তারা কি পাষাণ মন নিয়ে দেখে যায়– পোকামাকড়ের চেয়েও তুচ্ছ এই আমাদের মৃত্যু?
এখন তাই কোনও শুভ দিন, কোনও উদযাপনে মন পাখা মেলে না। দিনমান আতঙ্কে থাকি নিজেকে নিয়ে তো বটেই, পরিবার আর বন্ধুদের নিয়েও। সমাজ যতক্ষণ না দায়িত্বশীল ও সেবা ধর্মে দীক্ষিত হতে পারছে, ততক্ষণ মানুষেরা কোনও উদযাপন উপভোগে সক্ষম হয়ে উঠতে পারে না।
তারপরও শুভ দিনে প্রত্যাশা রাখতেই পারি– সুমতি ফিরে আসুক আমাদের আধিকারিকের। তার ব্রত হোন সেবা ধর্মে। এই গোলক, এই দেশ সকলের জন্য নিরাপদ হোক।
লেখক: গণমাধ্যমকর্মী