X
সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫
২৩ আষাঢ় ১৪৩২

সত্তার অন্বেষণ নিজ আঙিনায় শুরু

মাহমুদুর রহমান
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ১৫:৫৬আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ১৫:৫৯

মাহমুদুর রহমানবিশ্বায়নের যুগে শিক্ষা ব্যবস্থা বৈশ্বিক হবে এটা স্বাভাবিক। শিক্ষার গুণগত মানের উন্নয়ন প্রয়োজন সর্বজনবিদিত। সময় মতো বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কাঠের সন্ধানে গাছ হারিয়ে গেলে চলে না। সেরকম এক সন্ধিক্ষণে আমরা যেন পৌঁছে গেছি। লজ্জার হলেও সত্য, দেশের বহু ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ে না আছে বাংলা পাঠ, না আছে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, না আছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। বাংলা নাকি বৈশ্বিক শিক্ষার অংশ নয়, এর নাকি প্রয়োজন নেই। বিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্টদের বক্তব্যে এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে প্রচার মাধ্যমের একটি চ্যানেলের প্রতিবেদনে।
মাতৃভাষার প্রতি এমন অবজ্ঞার জন্য মানববন্ধন হবে না, বুদ্ধিজীবীদের বিবৃতি প্রকাশিত হবে না। শিক্ষামন্ত্রী অবশ্য জানিয়েছেন, এ নিয়ে মন্ত্রণালয় বিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে কাজ করছে। এক দিকে বহিরাগত এবং অভ্যন্তরীণ সাংস্কৃতিক আগ্রাসনে বিপর্যস্ত অন্যদিকে সার্বজনিন বাংলার বেহাল অবস্থার মধ্যে এ যেন হতবুদ্ধিকর চপেটাঘাত। আন্তর্জাতিক কিছু বিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছে মূলত সে দেশের শিক্ষা কার্যক্রম বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি শিশুদের শিক্ষার ধারাবাহিকতা রক্ষায়। সে ক্ষেত্রে বলার খুব একটা কিছু নেই। কিন্তু ওই বিদ্যালয় যখন অর্থনৈতিক কারণে বাংলাদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি করে, তাদের বাংলা শিক্ষা ভেস্তে যায়। ইংরেজি মাধ্যম কিংবা আন্তর্জাতিকই হোক না কেন, এই বিদ্যালয়ের পাঠরত শিক্ষার্থীদের মাতা-পিতারা কী করছেন?
শিক্ষা কার্যক্রম দেখে তারা প্রতিবাদ কেন করছেন না? নাকি বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষা হবে মুখস্ত কিছু বুলি দিয়ে আচ্ছাদিত মামুলি প্রতিবেদন আর টক শোতে অবান্তর আলোচনা দিয়ে? পাকিস্তান আমলে ন্যূনতম ব্যবস্থা চালু ছিল, সহজ বাংলা, সহজ উর্দু। আজ সেটিও নেই।
বাংলা ভাষার এই চরম অপমানের জন্য ওইসব বিদ্যালয়কে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে, সেই সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল (নাকি দায়িত্বহীন) কর্মকর্তাদের। তাছাড়া বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এরকম হেয় করা অভিব্যক্তির সাজা হওয়া প্রয়োজন। যে ভাষা আন্দোলনের মর্ম আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের উদযাপনে বিস্তৃত হয়েছে, সেই ভাষার প্রতি এহেন অপমান গ্রহণযোগ্য তো নয়ই, রীতিমত ন্যক্কারজনক।

সময় থাকতে এই সংক্রমণ থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে। বাড়ন্ত শিশুদের বোঝাতে হবে বাংলা এবং তার ব্যকরণ জানতে হবে। জানাতে হবে তাদের, এই ভাষাই আমাদের অস্তিত্ব এবং পরিচয় বিশেষিত করে।

বাংলা শুধু ভাষা নয়, এ আমাদের সত্তা। সত্তার অন্বেষণ শুরু হয় নিজ আঙিনা থেকেই।

লেখক: কমিউনিকেশন বিশেষজ্ঞ

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
টিভিতে আজকের খেলা (৭ জুলাই, ২০২৫)
টিভিতে আজকের খেলা (৭ জুলাই, ২০২৫)
মধ্যরাতে সংবর্ধনায় বিশ্বকাপ স্বপ্নের কথা বললেন ঋতুপর্ণা ও আফঈদারা 
মধ্যরাতে সংবর্ধনায় বিশ্বকাপ স্বপ্নের কথা বললেন ঋতুপর্ণা ও আফঈদারা 
গণভবন জয় করেছি, এবার জাতীয় সংসদ জয় করবো: নাহিদ ইসলাম
গণভবন জয় করেছি, এবার জাতীয় সংসদ জয় করবো: নাহিদ ইসলাম
একটি দলের কারণে ঐকমত্য কমিশনে মৌলিক সংস্কারের প্রস্তাবনা আটকে যাচ্ছে: আখতার
একটি দলের কারণে ঐকমত্য কমিশনে মৌলিক সংস্কারের প্রস্তাবনা আটকে যাচ্ছে: আখতার
সর্বশেষসর্বাধিক