X
রবিবার, ০৫ মে ২০২৪
২২ বৈশাখ ১৪৩১

গণমুখী বাজেট, গণবিরোধী বাজেট!

চিররঞ্জন সরকার
০৩ জুন ২০১৬, ১৪:৩৯আপডেট : ০৩ জুন ২০১৬, ১৪:৪৩

চিররঞ্জন সরকার আমাদের দেশে জুন-জুলাই সময়টা পরিণত হয়েছে ‘বেশি কথার বলা'র মৌসুমে। এ মৌসুমে কেন জানি সবাই বেশি বেশি বকবক করে। এর মূল কারণ সম্ভবত নতুন অর্থবছরের জাতীয় বাজেট ঘোষণা। রীতি অনুযায়ী আমাদের দেশে জুন মাসেই জাতীয় বাজেট ঘোষণা করা হয়। আর বাজেট মানেই হচ্ছে কথার ফুলঝুরি। আয়-ব্যয়ের হিসেব মেলাতে নানারকম গোঁজামিল, ভালো ভালো বাক্য দিয়ে বাজেটকে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা। সরকারি দলের নেতাকর্মী-স্তাবকরা না বুঝেই বাজেটের পক্ষে দিস্তার পর দিস্তা বাক্য রচনা করে যান। এটা যে অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের শ্রেষ্ঠ বাজেট তা প্রমাণ করতে আদা-জল খেয়ে লাগেন।
পক্ষান্তরে বিরোধী দল বাজেট উপস্থাপন করা মাত্রই ‘গণবিরোধী বাজেট' বলে প্রত্যাখ্যান করেন। এজন্য তাদের কোনওরকম অর্থনৈতিক জ্ঞান এবং জানা-বোঝার দরকার হয় না। বিরোধী দলের কাছে বাজেট মানেই হচ্ছে 'দিকনির্দেশনাহীন, গরিব মারার লুটপাটের বাজেট'। কিভাবে? তা তারা জানেন না। জানার দরকারও হয় না। যেমন- বাজেট ঘোষণার অব্যবহিত পরই বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে ‘প্রতিক্রিয়াশীল’ আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন!
এক শ্রেণির বুদ্ধিজীবী আছেন যারা আবার নানারকম কথার মারপ্যাঁচে দুর্বোধ্যতার আবহ তৈরি করেন। তাদের বাজেট আলোচনা শুনলে বা পড়লে কারো পক্ষে বোঝার উপায় নেই- বাজেট ভালো না মন্দ!'এও হয় অও হয়' মার্কা নিরপেক্ষ, বুদ্ধিজীবীরাও কথার ভেলকি কম দেখান না!
এদিকে জনগণের কাছে বাজেট মানেই হচ্ছে নতুন করের বোঝা, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের আরেক দফা মূল্যবৃদ্ধি, আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সামঞ্জস্য বিধানের ক্ষেত্রে আরেক দফা নাকানি-চুবানি। বাজেট ঘোষিত হলে জনগণ সঙ্গত কারণেই ক্ষুব্ধ ও উত্তেজিত হয়ে যায়। প্রতিকারহীন ক্ষোভ বেহুদা বেশি কথায় পর্যবসিত হয়। শুধু জনগণই নয়, বিভিন্ন টিভি চ্যানেল, এনজিও, সুশীলসমাজ, অর্থনীতিবিদসহ সমাজের বিভিন্ন ব্যক্তি ও গোষ্ঠী বাজেট-প্রতিক্রিয়ায় মুখর হয়ে ওঠে। বাজেট নিয়ে সভা-সেমিনার-গোলটেবিল বৈঠক-আলোচনা ইত্যাদির জোয়ার বয়ে যায়। বাজেট নিয়ে কিছু বলা প্রত্যেকেরই যেন পরম কর্তব্যে পরিণত হয়। ক্ষমতাসীনরা ঘোষিত বাজেটের পক্ষে সমবেত প্রশংসা-সঙ্গীত পরিবেশনে মত্ত হয়ে পড়েন। সব মিলিয়ে পুরো দেশ কথায় কথায় সয়লাব হয়ে যায়।
বাস্তবতা হচ্ছে, সমালোচনা, ক্ষোভ, পরামর্শ, সুপারিশ—ক্ষমতাসীনরা এসবের তোয়াক্কা না করে তাদের স্বার্থ ও সুবিধা আদায়ের বাজেট ঠিকই প্রণয়ন ও গ্রহণ করেন। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হবে বলে মনে হয় না। বৃহস্পতিবার বিকেলে ভবিষ্যতের সমৃদ্ধ বাংলাদেশকে পরিকল্পনায় রেখে ২৯% ব্যয় বাড়িয়ে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা ব্যয়ের ফর্দ জাতীয় সংসদের সামনে উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বাজেটে ৭.২% প্রবৃদ্ধির আশা করা হয়েছে। বাজেট ঘোষণার পর থেকেই আলোচনা-সমালোচনার উত্তাপ চড়তে শুরু করেছে। বাজারেও উত্তাপ সৃষ্টি হয়েছে।
আমাদের দেশে বর্তমানে যে অর্থনীতি চালু রয়েছে সেখানে বাজেটের জাদুকরি ফল হচ্ছে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়া, ক্রমাগত বাড়তে থাকা। আমাদের দেশে অবশ্য জিনিসপত্রের দাম বাড়ার জন্য বাজেটের অপেক্ষা করতে হয় না। দাম বাড়ার জন্য কোনও কারণও লাগে না। বাজেটের আগে বাড়ে, পরেও বাড়ে। ঝড়, বৃষ্টি হলে বাড়ে, না হলেও বাড়ে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দাম বাড়লেও বাড়ে। তবে বিস্ময়করভাবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দাম কমলেও আমাদের দেশে দাম কমে না। এমনকি দেশে বাম্পার ফলন হলেও খাদ্যশস্যের দাম কমে না। মানুষের বয়সের মতো, আমাদের জীবনের সামগ্রিক হতাশার মতো জিনিসপত্রের দাম কেবল বাড়ে, বাড়তেই থাকে। দাম অবশ্য আপনা-আপনি বাড়ে না, বাড়ানো হয়। বলা বাহুল্য, এ দাম বাড়ার ক্ষেত্রে আমদানিকারক, ব্যবসায়ী, আড়তদার, চাঁদাবাজ ইত্যাদির ভূমিকা থাকলেও সরকারের ভূমিকাই প্রধান। দাম বাড়লে সরকার যাদের ওপর নির্ভর করে ক্ষমতায় আসে বা টিকে থাকে—সেই দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পুঁজির ধ্বজাধারীদের লাভ হয়। পাবলিকের তাতে বারোটা বাজে ঠিকই; কিন্তু পাবলিকের স্বার্থ কে দেখে?

সরকার চলতি অর্থবছরের যে বাজেট ঘোষণা করেছে সেখানে গোঁজামিলই দেখা গেছে বেশি। দুর্নীতি দমন, অপচয় রোধ এবং আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার কোনও নীতি চোখে পড়েনি। বাজেটে যে বিশাল ঘাটতি রেখে দেওয়া হয়েছে তার সঙ্গে সার্বিক মুদ্রানীতির সমন্বয় কি করে হবে—এ বিষয়েও নেই কোনও স্পষ্ট দিকনির্দেশনা।

আরও পড়তে পারেন: নন-এমপিও শিক্ষকদের হতাশ করলেন অর্থমন্ত্রী, আবার আন্দোলনের হুমকি

চোর-জোচ্চর-বাটপারবান্ধব দেশ এটা। এখানে নানা ফিকিরে রাতারাতি বড়লোক হওয়া মানুষগুলোর ওপর ব্যাপক কর চাপানোর কাজটি কখনই করা হয় না। তাদের সাত খুন মাফ। হঠাৎ বড়লোক হওয়া কালো টাকার মালিকদের ধরার জন্য এখানে নেই কোনও কার্যকর ও সৃজনশীল উদ্যোগ। উল্টো তাদের কালো টাকা সাদা করার জন্য নানা প্রক্রিয়া-পদ্ধতি বাতলে দেওয়া হয়। কিন্তু কর চাপানো হয়- বেশির ভাগ পরোক্ষ কর গরিব মানুষের ওপর। ভ্যাট বা করের হার যত বাড়ে, জিনিসপত্রের দাম তত বাড়ে। জিনিসপত্রের দাম বাড়লে জোতদার, ব্যবসায়ী, পুঁজিপতিদের পোয়াবারো। গরিবদের সর্বনাশ। এ সর্বনাশের অবকাঠামো গত কয়েক দশক ধরে অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে তৈরি করা হয়েছে। সৌখিন বিলাস দ্রব্যের আমদানি দিন দিন বাড়ছে। বিদেশি ভোগ্যপণ্য, সুখের পাত্র পূর্ণ করার জন্য নানা উপাচার, বিদেশি মদ, বিদেশি জামা-কাপড়, আসবাব থেকে শুরু করে বিদেশি সংস্কৃতি পর্যন্ত। যাদের সঞ্চয়ের সাধ্য ছিল, তাদের সম্ভোগের লোভ দেখানো হচ্ছে এসব আমদানির অবাধ ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে। তালিম দেওয়া হচ্ছে ভোগ করুন, আরও, আরও, আরও। সঞ্চয়ের ব্যাপার নিয়ে কেউ চিন্তা করবেন না। চালের বদলে ভ্যানিশিং ক্রিম কিনুন। বেকার? কোনও চিন্তা নেই। সস্তায় মোবাইলফোন সেট ও রঙিন টিভি পাওয়া যায়। কারও বুকে ছুরি ধরে কিছু টাকা বাগিয়ে নিন। সেই টাকায় একটা স্মার্টফোন আর কালার টিভি কিনে দিন-রাত বসে বসে নখের ব্যায়াম করুন। রিমোটের বোতাম টিপুন। বলিউডি নায়িকাদের নাচ দেখুন। ধুমধারাক্কা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট দেখুন। কেউ আর বেকার থাকবেন না। আমাদের দেশে মোবাইলফোন টেপা, টিভি দেখাও কাজ!

অথচ দেশে বিনিয়োগ নেই। ফলে আমাদের কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য কোনও কিছুরই তেমন প্রসার ঘটছে না। অনেক সাধ্যসাধনা করে, হাতে-পায়ে তেল মেখে, চা-সিগারেট খাইয়েও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা যাচ্ছে না। শুধু আবেদন-নিবেদনে তো আর বিদেশি পুঁজিপতিদের পাষাণ হৃদয় গলে না। তারা দেখে তাদের স্বার্থ। যে দেশে আইনের শাসন নেই, বিদেশি নাগরিকরা অবাধে খুন হয়, চাপাতির আঘাতে যখন-তখন যে কারও কল্লা ফেলে দেওয়া হয়, যেখানে রাজনৈতিক স্থিতি নেই- সেখানে কে বিনিয়োগ করতে আসবে? এ দেশে তাদের স্বার্থের অনুকূল পরিবেশও সৃষ্টি হয় না, কাজেই বিদেশি বিনিয়োগও এদেশে আসে না। যতটুকু যা আসে তাতে বড়লোকের সম্ভোগ আর স্বার্থ সাধনেই সব ব্যয় হয়ে যায়। দেশের বেশির ভাগ মানুষ, হতদরিদ্র মানুষ, তারা কেবল প্রতিশ্রুতি আর বক্তৃতা গিলেই সময় পার করে দেন। তাদের জীবনে আশাভঙ্গের যন্ত্রণা আর বঞ্চনা ছাড়া অন্য কোনও যৌতুক নেই।

অথচ এসব নিয়ে সরকারের কর্তাব্যক্তিদের তেমন কোনও বিকার আছে বলে মনে হয় না। আমাদের অর্থমন্ত্রী এবং সরকারি দলের নেতাদের বেশ নিশ্চিন্তই মনে হচ্ছে। এটা খুবই বিপদের। কারণ, যারা অর্থনীতির খোঁজ-খবর রাখেন, তারা জানেন, সমৃদ্ধির মুহূর্ত নয়, বাংলাদেশের অর্থনীতি যাকে সঙ্গি করে এগিয়ে চলছে, তার নাম সংকট। সেই সংকটের সন্ধানে অবশ্য বেশি দূর যেতে হবে না। পরিসংখ্যান বলছে, আমাদের দেশে মূলধনী বিনিয়োগ যথেষ্ট হচ্ছে না। অর্থাৎ, অর্থনীতির শিখাটি উজ্জ্বল বটে, কিন্তু প্রদীপে যথেষ্ট তেল নেই। সলতের জোরে তেলের ঘাটতি পূরণ করা যায় না। গত চার-পাঁচ বছরে মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধির হার কিছুটা মাথা তুলে দাঁড়াতে আরম্ভ করেছে, কিন্তু জিডিপি’র অনুপাতে মূলধন নির্মাণের হার হ্রাস পেয়েছে। অর্থাৎ, অর্থনীতির স্বাস্থ্যের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরেনি। দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হবার জন্য এই খবরটি যথেষ্ট। পাশাপাশি, নির্মাণ শিল্পে বৃদ্ধির হার অথবা শিল্পোৎপাদনের সূচকের বৃদ্ধির হারও আয়বৃদ্ধির হারের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। অর্থাৎ আমাদের অর্থনীতি এখনও বিনিয়োগের জোরে নয়, বস্তুত ভোগব্যয় ও রাষ্ট্রীয় ব্যয়ের জ্বালানিতেই চলছে। দীর্ঘমেয়াদে তা যথেষ্ট চিন্তার কারণ।

সমস্যা আরও আছে। বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত নিজেই বলেছেন- দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় প্রধান প্রতিবন্ধক অনিশ্চিত স্থানীয় শাসনব্যবস্থা। ঘনবসতির স্বল্প আয়তনের এই দেশে ক্ষমতার প্রতিসংক্রম ছাড়া কোনও উন্নয়ন উদ্যোগ গতিশীলতা পাবে না, যাতে বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ১০ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। তাই স্থানীয় শাসনব্যবস্থার গুণগত সংস্কার অত্যন্ত জরুরি।

কিন্তু এজন্য সরকার আগামীতে কী করবে-তা সুষ্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি। দেশে দলীয় ভিত্তিতে যে স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তাতে নির্বাচন কমিশনকে ছাপিয়ে শাসকদলের যে একচেটিয়া দাপট প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে, তা দেখে ভবিষ্যতে ‘স্থানীয় শাসনব্যবস্থা উন্নয়ন’ বা অর্থমন্ত্রীর ভাষায় ‘ক্ষমতার প্রতিসংক্রম’ কতটুকু কী হবে তা সহজেই অনুমেয়! দলতন্ত্র, সর্বগ্রাসী দুর্নীতিকে সঙ্গী করে অদক্ষ জনপ্রশাসন দিয়ে, বিনিয়োগ-খরাকবলিত দেশে কর্মসংস্থান, শিল্পায়নই বা কিভাবে হবে, কিভাবে প্রবৃদ্ধি বাড়বে সেটাও একটা গোলক ধাঁধা। কোন আলাদ্বীদের চেরাগ দিয়ে এসব মৌলিক সংকটের মোকাবেলা করা হবে-তা আল্লাহই মালুম!

তবে এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে সিম বা রিম কার্ডের মাধ্যমে সেবার ওপর বিদ্যমান তিন শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত; ফলে মোবাইলফোন গ্রাহকদের ব্যয় বাড়বে। সরকারের এই উদ্যোগটা মন্দ নয়। ‘কথানির্ভর’ জাতির কথার ওপর ট্যাক্স বসিয়ে দেশে বকবকানি ও ‘শব্দ দূষণ’ যদি কিছুটা কমে তাতে সবাইরই উপকার হবে। মানুষ কথা কম বললে সরকারেরও তাতে সুবিধা। গণতন্ত্রও তাতে ‘নিষ্কণ্টক’ হতে পারে!

লেখক: কলামিস্ট

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
দুবাইতে বিশ্বের ২৩ নম্বর চীনের সুপার গ্র্যান্ডমাস্টারের সঙ্গে ড্র করে ফাহাদের চমক
দুবাইতে বিশ্বের ২৩ নম্বর চীনের সুপার গ্র্যান্ডমাস্টারের সঙ্গে ড্র করে ফাহাদের চমক
বরিশালে পরিবহন শ্রমিকদের সংঘর্ষ, অর্ধশতাধিক থ্রি-হুইলার ভাংচুর
বরিশালে পরিবহন শ্রমিকদের সংঘর্ষ, অর্ধশতাধিক থ্রি-হুইলার ভাংচুর
জিরোনার মাঠে বার্সেলোনার নাটকীয় হারে চ্যাম্পিয়ন রিয়াল
জিরোনার মাঠে বার্সেলোনার নাটকীয় হারে চ্যাম্পিয়ন রিয়াল
‘ফাইভ স্টার’ ম্যানসিটি, চার গোল হাল্যান্ডের
‘ফাইভ স্টার’ ম্যানসিটি, চার গোল হাল্যান্ডের
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ