X
বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪
২৫ বৈশাখ ১৪৩১

মামুনুলের অপরাধসমূহ

প্রভাষ আমিন
০৮ এপ্রিল ২০২১, ১৬:১৩আপডেট : ০৮ এপ্রিল ২০২১, ১৬:১৩

প্রভাষ আমিন হেফাজত নেতা মামুনুল হকের রিসোর্ট কেলেঙ্কারির পর ফেসবুকে আমার এক স্ট্যাটাসে একজন প্রশ্ন করলেন, ‘মামুনুল হককে আইনের আওতায় না এনে ছেড়ে দেওয়া হলো কেন?’ আমি তার কাছে জানতে চেয়েছিলাম, স্থানীয় জনগণ আবেগের বশে মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করলেও পুলিশ কোন অপরাধে তাকে আটক বা গ্রেফতার করবে? আমার বিবেচনায় সেখানে কোনও অপরাধ সংঘটিত হয়নি। পুলিশ এসেছিল ঘটনাস্থলে। যথারীতি মামুনুল হক দাবি করেছেন, সাথের নারী তার শরিয়তসম্মতভাবে বিয়ে করা স্ত্রী। পুলিশ তার কথায় বিশ্বাস করে তাকে ছেড়ে দিয়েছে। মামুনুল হকের মতো একজন প্রভাবশালী মানুষের কথায় পুলিশ বিশ্বাস রাখতেই পারে। তবে আমার ধারণা, পুলিশ মামুনুলকে ছেড়ে দেয়নি, ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। হেফাজতের উগ্র অনুসারীরা রয়েল রিসোর্টে ব্যাপক ভাংচুর চালিয়ে আসলে মামুনুলকে ছিনিয়ে নিয়েছে। অবশ্য মামুনুল না হয়ে অন্য কেউ হলে এত সহজে নিস্তার মিলতো না। পুলিশ নিশ্চয়ই দুজনকেই আরও অনেক জিজ্ঞাসাবাদ করতো। পুলিশ বিশ্বাস করে ছেড়ে দিলেও মামুনুল হক সেই বিশ্বাসের মর্যাদা রাখেননি। পরে ঘটনাপ্রবাহে প্রমাণিত হয়েছে, মামুনুল হক বারবার মিথ্যা বলেছেন। মিথ্যা বলাটাও হয়তো তাকে গ্রেফতার করার মতো অপরাধ নয়। তবে মামুনুল হকের মতো একজন মানুষ নিজের কেলেঙ্কারি ঢাকতে একের পর এক নির্জলা মিথ্যাচার করবেন এটা অবিশ্বাস্য। এখন একটা বিষয় পরিষ্কার, মামুনুল হক যাকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী বলে পরিচয় দিয়েছেন, তাকে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করেননি। বিয়ে করা ছাড়াই তিনি দুই বছর ধরে তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখছিলেন। এখন ধরা পড়ে দাবি করছেন, একজন অসহায় ‘বেগানা’ নারীকে সাহায্য করতেই তিনি তাকে কলেমা পড়ে বিয়ে করেছেন। ধরা পড়লে কলেমা পড়ে বিয়ের দাবি অনেক পুরনো ও ছেলেমানুষি। অন্তত মামুনুল হকের মতো মানুষের কাছ থেকে এত বড় খোঁড়া যুক্তি অপ্রত্যাশিত। মামুনুলের রিসোর্ট কেলেঙ্কারিতে অপরাধ একটি হয়েছে এটা নিশ্চিত। হয় তিনি বিয়ে না করেই একজন নারীকে প্রলোভন দেখিয়ে দিনের পর দিন ব্যবহার করে তার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। আর যদি সত্যি কলেমা পড়ে বিয়ে করেও থাকেন, সেটা তিনি প্রথম স্ত্রীকে জানাননি। তার মানে তিনি প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে দিনের পর দিন প্রতারণা করেছেন।

তবে একজন মামুনুল হক বিয়ে করেছেন কী করেননি, তিনি নিজের স্ত্রী বা বন্ধুর স্ত্রীকে নিয়ে রিসোর্টে গিয়েছেন কী যাননি; তা নিয়ে সত্যি আমার কোনও মাথাব্যথা নেই। সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টের জনরোষ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ যে তাকে নিরাপদে বাড়ি ফেরার সুযোগ করে দিয়েছে, তাতেও আমার কোনও আপত্তি নেই। আমি মনে করি পুলিশ তাকে নিরাপদে যেতে দিয়ে ঠিক কাজটিই করেছে। মামুনুল রয়েল রিসোর্টে গিয়ে কোনও অপরাধ না করলেও তার অনুসারীরা তাকে ছিনিয়ে আনার নামে যে তাণ্ডব চালিয়েছে, তা অবশ্যই শাস্তিযোগ্য অপরাধ। স্থানীয় লোকজন দুই ঘণ্টা মামুনুলকে অবরোধ করে রাখলেও শুরুর দিকে একটু ধাক্কাধাক্কি ছাড়া কেউই মামুনুল হক বা তার কথিত দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে কোনও অশোভন আচরণ করেনি। কিন্তু তার অনুসারীরা এসে ২০ মিনিটের মধ্যে তছনছ করে দিয়েছে রয়েল রিসোর্ট এবং আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়িঘর, অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এর থেকে একটা বিষয় আবারও প্রমাণিত হয়েছে, হেফাজত কোনও স্বাভাবিক, গণতান্ত্রিক সংগঠন নয়; এটি একটি অশুভ শক্তির সম্মিলন, নাশকতা আর সহিংসতা ছাড়া আর কোনও ভাষা তাদের জানা নেই।

কলেমা পড়ে বিয়ে করা ‘সেকেন্ড ওয়াইফ’ বা ‘আমগোর শহীদুল ভাইয়ের ওয়াইফ’, যাকে নিয়েই মামুনুল রয়েল রিসোর্টে গিয়ে থাকেন, আমার কোনও আপত্তি নেই। এ ঘটনায় তার নৈতিকতা প্রশ্নবিদ্ধ হলেও আইনের কোনও ব্যত্যয় ঘটেনি। আমরা মামুনুল হকের অপরাধ মূল ‘ডিশ আড়াল করে চাটনি’ নিয়ে মেতে আছি। আমি অনেক দিন ধরেই মামুনুল হকের গ্রেফতার দাবি করে আসছি। আমি মনে করি, বাংলাদেশে ‘অশুভ শক্তি’র প্রতিভূ হয়ে ওঠা এই ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনলে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে, স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে। ২০১৩ সালে ঢাকায় হেফাজতের যে তাণ্ডব, তারও অন্যতম হোতা ছিলেন এই মামুনুল হক। তখনও তাকে বঙ্গভবন, গণভবনে রক্তের বন্যা বইয়ে দেওয়ার হুমকি দিতে দেখা গেছে। যদিও রাত পোহানোর আগেই পালিয়েছিলেন তারা। তবে অনেক চেষ্টা করেও মামুনুল হক আলোচনায় আসতে পারেননি। তখন হেফাজতের একক নিয়ন্ত্রণ ছিল আসলে আল্লামা শফীর হাতে। আর সরকার আল্লামা শফীর সঙ্গে অশুভ আঁতাত করে হেফাজতকে নিয়ন্ত্রণ করে। তবে গত বছর বাবুনগরী গ্রু‌পের বিদ্রোহের মুখে বিনা চিকিৎসায় আল্লামা শফীর মৃত্যুর পর পাল্টে যায় দৃশ্যপট। সরকারের সঙ্গে হেফাজতের আঁতাতের সুতাটি ছিঁড়ে যায়। হেফাজতের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় উগ্রপন্থী বাবুনগরীদের হাতে। আর এই অংশের প্রধান সিপাহসালার হিসেবে সামনে চলে আসেন মামুনুল হক। নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলতে তিনি একের পর এক উগ্র এবং উসকানিমূলক বক্তৃতা দিয়ে মাঠ গরম করতে শুরু করেন। আলোচনায় আসার জন্য তিনি বেছে নেন বঙ্গবন্ধুকে। মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরোধিতার নামে যে আন্দোলন শুরু করেন মামুনুল হক, তা অস্থিতিশীল করে তোলে গোটা দেশকে। মামুনুল যে ভাষায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রতি বিদ্বেষ ছড়াতে থাকেন, তা রীতিমত রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। বঙ্গবন্ধুর সমালোচনা তো দূরের কথা, সাধারণ বিরূপ আলোচনায়ও যেখানে সাধারণ মানুষকে জেলে যেতে হয়; সেখানে মামুনুল হক বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেওয়ার হুমকি দিয়েও বহাল তবিয়তে বক্তৃতা দিয়ে, রিসোর্টে ফুর্তি করে বেড়াচ্ছেন।

সর্বশেষ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে নাশকতা চালায় হেফাজতের অনুসারীরা। আর এই উসকানির মূল হোতা এই মামুনুল হক। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের যুদ্ধক্ষেত্রে ঠেলে পাঠিয়ে মামুনুল হক রিসোর্টে চলে যায় ফুর্তি করতে। এর আগে মতিঝিল শাপলা চত্বরে অনুসারীদের বিপদে ফেলে পালিয়ে যাওয়ার রেকর্ডও আছে এই মামুনুলদের। নরেন্দ্র মোদির সফরের প্রতিবাদে চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নাশকতার দায় অবশ্যই মামুনুল হককে নিতে হবে। মামুনুল হক দিনের পর দিন ঘৃণা ছড়াচ্ছেন, উসকানি দিচ্ছেন এবং ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। এই মামুনুলরা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে, প্রগতির বিরুদ্ধে, প্রচলিত আইনের বিরুদ্ধে, নারী স্বাধীনতার বিরুদ্ধে, ব্যক্তিস্বাধীনতার বিরুদ্ধে। এরা বাংলাদেশকে আফগানিস্তান বানাতে চায়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার প্রধান বাধা এরা। তারা বাংলাদেশকে অন্ধকারে ঠেলে দিতে চায়। তাই এখনই তাদের রাশ টেনে ধরতে হবে।

সরকারের কৌশলগত সমঝোতার সুযোগে অশুভ এই শক্তিটি ধর্মের দোহাই দিয়ে এরই মধ্যে সমাজে বেশ খানিকটা অবস্থান গড়তে পেরেছে। আর যেন বাড়তে না পারে, সে ব্যবস্থা নিতে হবে এখনই। হেফাজতের গণতান্ত্রিক আন্দোলন করার অধিকার, প্রতিবাদ করার অধিকার, মত প্রকাশের অধিকারের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। তবে যতক্ষণ সেটাই আইনি কাঠামোর মধ্যে থাকে ততক্ষণ। আন্দোলনের নামে তারা যদি নাশকতা করে, সহিংসতা করে, সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করে, থানায় হামলা করে; তখনও নিশ্চয়ই তাদের প্রতিবাদ করার সুযোগ দিতে হবে না। কিন্তু সমাজে তাদের গ্রহণযোগ্যতা এই পর্যায়ে পৌঁছে গেছে, অনেকেই আজ প্রতিবাদ করার অধিকারের নামে হেফাজতে ইসলামকে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের সুযোগ দিতে চান। সেই সুযোগ পেলে তারা কতটা ভয়ংকর হতে পারে; তা আমরা শাপলা চত্বরে, সুনামগঞ্জে, চট্টগ্রামে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বারবার দেখেছি। অনেকে বলছেন, মামুনুল তো কাউকে জোর করে নিয়ে যায়নি, তাহলে ছাত্রলীগ-যুবলীগ রিসোর্টে গেলো কেন? একের পর এক টেলিফোন ফাঁসে বেরিয়ে আসছে মামুনুলের নানামুখী মিথ্যা আর প্রতারণার কাহিনি। মামুনুলের কেলেঙ্কারির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে নয়, অনেকে প্রশ্ন তুলছেন টেলিফান ফাঁসের বৈধতা নিয়ে। তাদের আবদার শুনে মনে হচ্ছে, ছাত্রলীগ-যুবলীগ যদি মামুনুলকে রিসোর্টে  না আটকাতো, যদি টেলিফোন ফাঁসে তার অপকর্ম বেরিয়ে না আসতো; তাহলেই বুঝি ভালো হতো। জাতির সামনে মামুনুল থাকতেন প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর, ইসলামের হেফাজতকারী। সমস্যাটা হলো আল জাজিরা টেলিফোন ফাঁস করলে সেটা অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা। আর বাংলাদেশের মিডিয়ায় সাম্প্রদায়িক শক্তির টেলিফোন ফাঁস হলে সেটা অপসাংবাদিকতা! ব্যক্তিগতভাবে আমি মানুষের ব্যক্তিস্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। যে কারও টেলিফোনে আড়ি পাতার বিরুদ্ধে আমি। কিন্তু মামুনুলদের মতো ভয়ংকর অপশক্তির মুখোশ উন্মোচনের জন্য কখনও কখনও আড়ি পাততে হতে পারে। নইলে তারা জাতির সামনে ধোয়া তুলসি পাতা হয়েই থাকবে। মামুনুল হকরা তো সাধারণ গণতান্ত্রিক শক্তি নয়, যে আইনের সাধারণ সুরক্ষা তারা পাবে। এই বিষাক্ত শক্তিকে দমন করতে বিষই লাগবে। বিয়ে করা না করা বা রিসোর্টে যাওয়াকে অনেকে মামুনুলের ব্যক্তিস্বাধীনতা বলে মন্তব্য করছেন। এমনকি ঘটনার পর দিন হেফাজতের সংবাদ সম্মেলনে মামুনুলের বিয়ে নিয়ে প্রশ্ন করতেই হেফাজত নেতারা মোনাজাত শুরু করে দেন। আপনি একজন সাধারণ মানুষ হলে আপনার ব্যক্তিজীবন নিয়ে আমার কোনও কৌতূহল থাকবে না। কিন্তু আপনি যদি একটি প্রভাবশালী সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক হন, আপনাকে অবশ্যই জবাব দিতে হবে। আপনাকে অবশ্যই উচ্চ নৈতিকতার অধিকারী হতে হবে। মামুনুল হকের মতো প্রতারকের মুখে আমরা আর ইসলাম হেফাজতের কথা শুনতে চাই না।  

মামুনুল হককে আইনের আওতায় আনতে অনেক সাক্ষী-সাবুদ লাগবে না। ইউটিউবে মামুনুল হক লিখে সার্চ দিলেই তার কয়েকশ ভিডিও পাওয়া যাবে। তার নিজের বক্তব্যই আদালতে তার বিপক্ষে সাক্ষ্য দেবে। তাই আমি উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে নাশকতা চালানো, দিনের পর তিন ঘৃণা ছড়ানো, ইসলামের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা, নারীদের অবমাননা করা, রাষ্ট্রের মূল চেতনার বিরোধিতা করার দায়ে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট মামলা করা এবং অবিলম্বে তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। মামুনুল তার নিজের স্ত্রী বা বন্ধুর স্ত্রী নিয়ে কোথায় বেড়াতে গেলো সেটা নিয়ে ব্যস্ত না থেকে আমরা যেন মামুনুলের আসল অপরাধগুলোর দিকে নজর দেই। 

লেখক: হেড অব নিউজ, এটিএন নিউজ

/এসএএস/এমওএফ/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
কিশোরগঞ্জের তিন উপজেলায় বিজয়ী হলেন যারা
কিশোরগঞ্জের তিন উপজেলায় বিজয়ী হলেন যারা
কদমতলীতে গলায় ফাঁস লেগে দশ বছরের শিশুর মৃত্যু
কদমতলীতে গলায় ফাঁস লেগে দশ বছরের শিশুর মৃত্যু
জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত উৎসব শুরু আজ থেকে
জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত উৎসব শুরু আজ থেকে
আজিজ মোহাম্মদসহ ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড চায় রাষ্ট্রপক্ষ, খালাসের দাবি আসামিপক্ষের
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যাআজিজ মোহাম্মদসহ ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড চায় রাষ্ট্রপক্ষ, খালাসের দাবি আসামিপক্ষের
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ