X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভারতের নিরাপত্তায় আফগান প্রভাব

আশিষ বিশ্বাস
১০ জুলাই ২০২১, ১৭:০১আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২১, ১৩:০০

আশিষ বিশ্বাস দুই দশকেরও বেশি সময়। তবু আফগানিস্তানের তালিবান জঙ্গিদের কাছে হারতে হলো যুক্তরাষ্ট্রকে। আফগানিস্তান ছেড়ে চলে গেছে তারা। আর তাই দ্রুত দিল্লিকে যা করতে হবে, তা হলো- জম্মু ও কাশ্মিরকে ভারতের মূলধারার রাজনীতিতে নিয়ে আসা। কেননা, আফগানিস্তানে ফের জঙ্গিবাদের উত্থানের প্রভাব পড়বে পাকিস্তানেও। ‘কাশ্মিরিদের জন্য সুবিচার নিশ্চিতের বৈধ সংগ্রাম’ শুরু করেছিল দেশটি। এখন তারা ওই স্লোগান ধরে কোন পথে এগোবে, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে জোরেসারে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। পাকিস্তানের ভাষ্যে যেটা কিনা তাদের ‘১৯৪৭ এর দেশভাগের অসমাপ্ত কাজ’।

সমস্যাক্রান্ত কাশ্মির উপত্যকাকে ঘিরে কী ঘটতে পারে? এর ভবিষ্যৎ নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্যগুলোই বেশি প্রবল। খুব কম লোকই এটা বিশ্বাস করবে যে, ওই অঞ্চলে এখন যে মৃদুমন্দ শান্তির বাতাবরণ দেখা যাচ্ছে, সেটা দীর্ঘস্থায়ী হবে। ভারতীয় বাহিনী ও রাজনৈতিক অফিসগুলোর ওপর পাকিস্তানের স্পন্সর করা সহিংসতা এখানে সময়ের ব্যাপার, ‘যদি’র প্রশ্ন এখানে আসবে না। তাই সতর্ক আছে ভারত সরকার। জঙ্গি হামলায় পাকিস্তানের পৃষ্ঠপোশকতার যে ইতিহাস আছে, তাতে করে আফগানিস্তানের তালেবানকে ব্যবহার করে ভারতের বিপদ বাড়ানোর বিরুদ্ধে দেশটাকে ঠেকানো মুশকিল হয়ে দাঁড়াবে।

এবার নেপথ্যের চিত্রটা একটু ভাবুন। ভারতের চেয়ে কিন্তু তালেবানের সঙ্গেই অন্তরঙ্গ সম্পর্ক উপভোগ করে পাকিস্তান। আফগানিস্তানে দুই দশক ধরে যে যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত তালেবানবিরোধী অভিযান চলেছে, তখন দলে দলে আফগান-তালেবানরা তাদের পরিবার ও আত্মীয়স্বজনসহ আশ্রয় পেয়েছিল পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে। আর ওটা যে ইসলামাবাদের চমৎকার এক কৌশলগত বিনিয়োগ ছিল সেটাই দেখা গেলো সম্প্রতি। এখন পাকিস্তানে প্রায় ২৫ লাখ আফগান শরণার্থী আছে। তাদের অনেকেই খুব তাড়াতাড়ি স্বদেশে ফিরবে। তালেবানরাও বিনিময়ে সামনের দিনগুলোতে যেটুকু করতেই পারে, সেটা হলো- এমন দিলদরিয়া প্রতিবেশীর সঙ্গে যতটা সম্ভব কাছাকাছি থেকে রাজনৈতিক সহযোগিতা বজায় রাখা। ভারতবিরোধী হাক্কানি গ্রুপের সঙ্গে এক ধরনের মিথোজীবী সম্পর্কে জড়াতে তালেবান যোদ্ধাদের একটা বড় অংশের এখন আর কোনও বাধা নেই। এখানে আর আলাদা করে পাকিস্তানি আর্মির ‘হক’ ও সর্বত বিরাজমান আইএসআই-এর কথা না বললেও চলে।

এরইমধ্যে কিছু আলামত দেখা গেছে। জঙ্গিরা ভারত সমর্থিত একটি বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পকে টার্গেট করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের জন্য তাদের পশ্চিম প্রান্তে এটাই সবচেয়ে বাজে দশা। আফগানদের গণতন্ত্র শেখাতে নিজে থেকে যে লক্ষ্য নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, সেটাকে ব্যর্থ ঘোষণা করে মাঝপথে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছে দেশটি। ওদিকে এ অঞ্চলের আরেক বড় ক্ষমতাধর চীনও কিন্তু ভারতের বন্ধু নয়! তো এখন ভারতকে সরাসরিই মোকাবিলা করতে হচ্ছে তালেবানদের, যার খুঁটিনাটি এখনও ঠিক জানা যাচ্ছে না।

পাকিস্তান ও তালেবান-শাসিত আফগানিস্তানের নতুন এই ভাতৃপ্রতীম সম্পর্ক কিন্তু আশরাফ ঘানির নতুন সরকারের সম্পূর্ণ বিপরীতেই যাওয়ার কথা। তথাপি অবরুদ্ধ এ আফগান সরকার আবার পাকিস্তানকে এও বলেছে যে দেশটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাচ্ছে, শান্তি প্রক্রিয়ায় বাধা দিচ্ছে ও ইসলামিক জঙ্গিবাদ উসকে দিচ্ছে। আর আফগানিস্তানে এখনই যে ‘সম্ভাবনা’ দেখছে পাকিস্তান, তাতে এটা পরিষ্কার যে দেশটি তাদের ‘ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ চালাতে নানা ‘প্রক্সি’র সাহায্য নেবে। যে প্রক্সিগুলোর অনেকে এখনও জঙ্গি গোষ্ঠী হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে তালিকাভুক্ত হয়নি। আর এর ফাঁকতালেই নতুন নতুন জঙ্গি দলের আবির্ভাব যে ঘটবে, সেটাও বা রুখবে কে! এটাও জানা কথা যে, আমেরিকান আগ্রাসনের শুরুতে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় অনেকেই আল কায়েদা ছেড়ে যোগ দিয়েছিল আইএস-এ।

২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বালাকোটে জঙ্গিদের ক্যাম্পে বোমা মেরে ভারত শক্তপোক্ত কাউন্টার-স্ট্রাইক দেখিয়েছিল। এমন নয় যে, ওই জঙ্গিদের ব্যাপারে পাকিস্তানের কিছুই করার ছিল না। ওই বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামা অঞ্চলে পাকিস্তানপন্থী জিহাদিরা যে ভারতের আধা-সামরিক বাহিনীর ওপর চোরাগোপ্তা হামলা করেছিল, মূলত সেটারই জবাব দিচ্ছিল ভারত। কিন্তু বালাকোট বম্বিংয়ের পরদিনই ভারত অধ্যুষিত কাশ্মিরে প্রতিশোধমূলক বিমানহামলা চালায় পাকিস্তান।

ইলেকট্রনিক মাধ্যমে আড়ি পেতে জিহাদিদের মধ্যে যে কথাবার্তা শোনা গেছে তার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, পাকিস্তানের নীতিনির্ধারকরা ওইসব জঙ্গিদের সুনির্দিষ্ট করে বলে দিয়েছেন, তারা যেন আপাতত আর কোনও অভিযান বা ভারত-বিরোধী কার্যক্রমে (উর্দুতে যেটাকে বলেছেন ‘কারওয়াহি’) না জড়ায়। এমনটা বলার কারণ হলো- পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অভিব্যক্তিটা ‘শত্রুভাবাপন্ন’ থেকে ক্রমে ‘রাগ’-এর দিকে গড়াচ্ছে।

তবে এর মধ্যে সময় গড়িয়েছে যথেষ্ট। এখন পিওকে (পাকিস্তান অধ্যুষিত কাশ্মির) ভিত্তিক জঙ্গি দলগুলো নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে আরেক রাউন্ড ‘অ্যাকশন’-এর জন্য তৈরি হচ্ছে। যেহেতু একবার আফগানিস্তান ছেড়ে চলেই গেছে, তাই এখন ইন্দো-পাক দ্বন্দ্বে কোনও মার্কিন বাহিনী এসেও কিন্তু নাক গলাবে না।

এতে করে কি এটা বোঝায় যে, ভারতবিরোধী কোনও অ্যাডভেঞ্চারে নামলে অল্প সময়ের জন্য পরিস্থিতি পুরোপুরি পাকিস্তানের অনুকূলে যাবে?

আমার তা মনে হয় না। কেননা, এই মধ্যবর্তী সময়ে আঞ্চলিক/আন্তর্জাতিক আরও কিছু বিষয় উঠে এসেছে। যার কারণে পরিস্থিতি পাকিস্তানের অনুকূলে যাবে, এমন সম্ভাবনা কমে এসেছে। কমে এসেছে উপত্যকাঘেঁষা সংঘাতময় এ সীমান্ত এলাকায় সুসংগঠিত আক্রমণের আশঙ্কাও।

তবে, যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রত্যাবর্তনে ভারতকে তার সামরিক অঙ্গনে প্রতিরক্ষামূলক আচরণ দেখাতে হতে পারে কূটনৈতিক অঙ্গনে নয়। পাকিস্তান রুটিনমাফিক যতই বলে যাক না কেন যে, ভারতে আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদের উত্থানে তাদের কোনও হাত নেই- তথাপি সর্বক্ষেত্রে সহিংস হামলার স্ফূরণ মোকাবিলা করতে হবে, এমনটা ভেবেই প্রস্তুত থাকতে হবে ভারতকে। আর এক্ষেত্রে বড় সুবিধা একটাই- ইসলামাবাদ যতই অস্বীকার করুক না কেন, বেশিরভাগ দেশই এখন জানে যে পাকিস্তানই হলো ইসলামিক জঙ্গিবাদের আঁতুড়ঘর।

ভবিষ্যতের সংঘাতময় পরিস্থিতি কখন তৈরি হবে বা কতদূর গড়াবে সেটা এখনই পরিমাপ করা যাচ্ছে না। পাকিস্তানপন্থী সশস্ত্র পক্ষগুলো ভারতের নিয়ন্ত্রণে থাকা কাশ্মিরে ঢুকেই ভারতীয় বাহিনী কিংবা প্রশাসনিক কার্যালয়গুলোতে হামলা চালাতে মরিয়া থাকবে। সপ্তাহ দুয়েক আগেই দীর্ঘবিরতি ভেঙে এ অঞ্চলের পুলিশকে টার্গেট করে চোরাগোপ্তা হামলা হয়েছে। নতুন করে যুদ্ধ শুরু করতে ওই জঙ্গিরা এখন কতটা তৈরি? তাদের অস্ত্রগুলোই বা কোন স্তরের? তাদের বর্তমান কৌশল, স্থানীয় সাপোর্ট কিংবা আর্থিক অবস্থা কেমন? আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই উত্তরগুলো চলে আসার কথা।

এটা ভালো যে, কাশ্মিরের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক করতে বা নিদেনপক্ষে সেই চেষ্টাটুকু পুনরায় শুরু করতে চাচ্ছে এনডিএ-টু সরকার। পরিচিত পক্ষগুলো সবাই সেখানে আছে- আব্দুল্লাহ, বেগম মেহবুবা মুফতি, ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) এবং পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি)। এরাই এখানকার বড় খেলুড়ে। আর ওদিকে সাইডলাইনে পড়ে আগের চেয়ে ঢের দুর্বল হয়েছে পাকিস্তানপন্থী হুরিয়াত, কংগ্রেস ও অন্যরা।

এমনকি সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির কথা ধরলেও– ধরা যাক ভবিষ্যতের কোনও অ্যাসেম্বলি নির্বাচনে একটি নন-বিজেপি জোট ক্ষমতায় এলো। তখনও এনডিএ রাজনৈতিকভাবে লাভবান হবে। আর্টিকেল-৩৭০ তথা কাশ্মিরিদের আধা-স্বায়্ত্তশাসন রদ করার পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যে কঠিন সমালোচনা করেছিল, এতে দলটি আবার তাদের হারানো মর্যাদা ও গ্রহণযোগ্যতার অনেকটুকুই ফিরে পেতে পারে।

রাজনৈতিক নেতাদের বন্দি করা ও সাধারণ মানুষর নাগরিক অধিকার হারানোর ফলেও পরবর্তীতে বেশ দোষ পড়েছিল সরকারের ঘাড়ে। নির্বাচনের পর দিল্লি এটা দাবি করতে পারবে যে, এটি কোনোভাবেই মুসলমানদের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বানিয়ে ফেলছে না- যে অভিযোগ ক্ষমতাসীন এনডিএ’র বিরুদ্ধে প্রায়ই উঠতো।  

জম্মু ও কাশ্মিরে একটি নির্বাচিত সরকার এলেও সেখান থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনী কিংবা আধা-সামরিক বাহিনীর সংখ্যা কমানো হবে, এমন সম্ভাবনা ক্ষীণ। যদি সেখানে নতুন করে আবার সংঘাতের শুরু হয়, তবে সেটার বোঝা গিয়ে চাপবে রাজ্যের বাসিন্দা (যার বেশিরভাগই মুসলমান) ও তাদের নেতাদের ওপর। এত দশক ধরে কাশ্মিরের ভারতবিরোধী সংঘাতগুলোর কারণে সেখানকার অন্য যেকোনও সম্প্রদায়ের চেয়ে মুসলমানরাই যে বেশি ভুগেছে এটা এখন প্রতিষ্ঠিত। তবে যেহেতু সেখানে এখন একটি নির্বাচিত অ্যাসেম্বলি আসতে যাচ্ছে, তাই ভবিষ্যতে যা-ই ঘটুক, তার জন্য এককভাবে ক্ষমতাসীন বিজেপিকে আর দায়ী করা যাবে না।

ভারতের প্রতিরক্ষা চক্রও এ ব্যাপারে পুরোপুরি অবগত যে, সাবেক জঙ্গিগোষ্ঠী জিইএম, এলইটি, হাক্কানি গ্রুপ কিংবা আফগানিস্তান থেকে আসা তালেবান জিহাদিদের মতো যদি নতুন কোনও প্রক্সি দল বা অ-রাষ্ট্রীয় গোষ্ঠীকে পাকিস্তান দুধ-কলা খাইয়ে থাকে তবে দিল্লির শাসকদের নিঃসন্দেহে এক যন্ত্রণাদায়ক সময়ের মুখোমুখি হতে হবে। এমনটা ঘটলে হয়তো জীবন ও সম্পদের বড় রকমের ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো যাবে না।

ব্যাক চ্যানেলে যোগাযোগের মাধ্যমে দিল্লির নীতিনির্ধারকরা তালেবানের সঙ্গে কূটনৈতিক আলাপ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এর ফল জানা যায়নি। অবশ্য একটি দল হিসেবে তালেবানের ভেতরও সহনশীল ও চরমপন্থী শাখা-উপশাখা আছে। তবে তালেবানদের চরিত্র, ষড়যন্ত্রের ধরন ও ক্ষমতার লড়াইটা বেশি পরিচিতি পেয়েছে মূলত তাদের কুখ্যাত অপ্রত্যাশিত আচরণের জন্যই।

ভারতের নামকরা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আফগানিস্তান আবারও একটি শক্তিশালী ধর্মীয় নেতা ও উপনেতাদের হাতে শাসিত হতে চলেছে, যাদের মধ্যে নিজ এলাকার প্রতি রয়েছে প্রগাঢ় মমত্ববোধ। এতে করে অন্যদিকে, আফগানিস্তান লাগোয়া বাদাকশান সীমন্ত এলাকায় বাস করা পাকিস্তানি আদিবাসীদের সঙ্গে স্থানীয় শাসকদের এক ধরনের মিথোজীবী সম্পর্ক গড়ে উঠবে। পশ্চিমের হেরাত প্রদেশের স্থানীয় ক্ষমতাধর নেতারা আবার তাদের সীমান্তে থাকা ইরানি ভ্রাতাদের সঙ্গেই ঘনিষ্ট সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য খ্যাত। তাজিকিস্তান সীমান্তে থাকা পুরনো আফগান-বিরোধী জোটটাও নিজেদের হাতে কিছু ক্ষমতা রাখে। এ দল আবার ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্কের খাতিরে সুপরিচিত।

এখন এটাও পরিষ্কার- ক্ষমতাসীন তালেবান কিংবা পাকিস্তান- এদের কেউ একজনও এতগুলো ভিন্ন ভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীকে (যাদের স্বার্থের জায়গাটাও ভিন্ন ভিন্ন) নিয়ন্ত্রণ করার মতো অবস্থানে নেই।

পাকিস্তান আবার হৃষ্টচিত্তে চীনের সমর্থনও উপভোগ করছে, যারা কি-না এ অঞ্চলের আরেকটি বড় পক্ষ। সত্যি বলতে, সামনের মাসগুলোতে ভারতের কূটনীতিক ও নীতিনির্ধারকরা এক দুরূহ দায়িত্বের মুখে পড়তে যাচ্ছেন। সীমান্তে অস্ত্রসজ্জিত ও ‘মোটেও বন্ধুবৎসল নয়’ এমন দুই ক্ষমতাধরের হাত থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে চলতে হবে বৈকি।

অবশ্য, সামনের দিনগুলোতে চীনের সঙ্গে মৈত্রীর মনোভাব নিয়ে ভারত আলোচনার উদ্যোগ নেয় কিনা সেটাও দেখার আছে। চীনের জন্য খুব বেশি কিছু ছাড় দিতে পারবে না ভারত। অবশ্য এর মধ্যে যা থাকতে পারে তা হলো- সিপিইসি প্রজেক্টে যোগ দিতে রাজি হওয়া কিংবা অল্পকিছু অর্থনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ। অন্যদিকে ‘কোয়াড’-এ ভারতের যোগদান ও সীমান্তে সাম্প্রতিক সংঘাত নিয়ে পারস্পরিক উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের কারণে রাজনৈতিক উত্তাপ কমাতে আলোচনার জায়গাটা বেশ ছোট হয়ে এসেছে- অন্তত এখনকার সাপেক্ষে।

পাশাপাশি, আচমকা আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্থানে ভারতের জন্য একটা বড় শিক্ষাও আছে। বার্তাটা হলো- অফিসিয়াল চুক্তি বা কূটনৈতিক প্রতিশ্রুতিতে যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রদের যত যাই বলুক না কেন, জাতীয় স্বার্থ রক্ষা কিংবা গণতান্ত্রিক ভোটারদের তুষ্ট করার প্রশ্ন যখন আসে তখন ওয়াশিংটন নিজের বন্ধুরাষ্ট্রকেও ছেড়ে যেতে দ্বিধা করে না, এমনকি তাদের বিপদের মুহূর্তেও!

লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক, কলকাতা

 

/এফএ/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
ওজন কমিয়ে সাকিব পুরো ফিট, সন্তুষ্ট সহকারী কোচ
ওজন কমিয়ে সাকিব পুরো ফিট, সন্তুষ্ট সহকারী কোচ
ক্যানসারে আক্রান্ত অভিনেতা রুমি, ভর্তি হাসপাতালে
ক্যানসারে আক্রান্ত অভিনেতা রুমি, ভর্তি হাসপাতালে
বুয়েটে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন শিক্ষার্থীদের
বুয়েটে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন শিক্ষার্থীদের
শিশুশিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারপিট, মাদ্রাসাশিক্ষক আটক
শিশুশিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারপিট, মাদ্রাসাশিক্ষক আটক
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ