X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

আবুল মাল আব্দুল মুহিতের দীর্ঘ জার্নির কয়েকটি খণ্ডচিত্র

স্বদেশ রায়
৩০ এপ্রিল ২০২২, ১৪:৫৩আপডেট : ৩০ এপ্রিল ২০২২, ১৪:৫৯

স্বদেশ রায় মুহিত ভাইকে গণফোরাম থেকে মূলত আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নিয়ে আসেন শ্রদ্ধেয় সাংবাদিক, সংবাদ সম্পাদক, মরহুম বজুলর রহমান। সে সময়ে এ নিয়ে বজলু ভাইয়ের সঙ্গে মুহিত ভাইয়ের বেশ কয়েকটি দীর্ঘ আলোচনা হয়। তার কয়েকটি আলোচনায় দুজনেরই প্রিয়পাত্র হওয়ায় আমার থাকার সুযোগ হয়েছিলো। তখন বুঝেছিলাম মুহিত ভাই  আসলে গণফোরামে যোগ দিয়েছিলেন, যতটা না কামাল হোসেনের সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণে তার থেকে বেশি তাঁর ঘনিষ্ট বন্ধু জিয়াউল হক টুলু’র কারণে। টুলু ভাইয়ের বাসা ছিল মুহিত ভাইয়ের নিজস্ব বাসার মতো। টুলু ভাইয়ের সঙ্গে সম্পর্কও তার ঠিক তেমনি। তাই অনেকটা টুলু ভাইয়ের অনুরোধ তিনি উপেক্ষা করতে পারেননি। তবে, তিনি বলতেন, কামাল হোসেন, মাহবুবে আলম ( সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল) এরা শিক্ষিত মানুষ তবে এদের দিয়ে রাজনীতি হবে না। তাছাড়া তাদের সঙ্গে ড. ইউনূসের একটা যোগ থাকায় সেটাকেও একটু ভিন্নভাবে দেখতেন। সত্যি অর্থে ড. ইউনূসের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন ছিল মুহিত ভাইয়ের। তবে তার অর্থনীতির জ্ঞানকে তিনি স্বীকার করতেন। সম্মানও করতেন। যে কারণে তিনি মন্ত্রী হওয়ার পরে ড. ইউনূসের যখন গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি থাকার বয়স চলে যায়, তিনি কিন্তু তাকে গ্রামীণ ব্যাংকে রাখতে চেয়েছিলেন।

ড. ইউনূসের এই গ্রামীণ ব্যাংকে থাকার প্রশ্নে মুহিত ভাই আমাকে বলেছিলেন, দেখ, ব্যাংকটা তার ব্রেইন চাইল্ড শুধু নয়, এর সঙ্গে তার নাম জড়িত। তাই ব্যাংকটার কল্যাণের স্বার্থে তাকে রাখা উচিত। আর এ কারণে, তিনি ড. ইউনূসকে তাঁর অফিসে একটা লাঞ্চে আমন্ত্রণ জানান, এবং সেখানে তিনি তাকে ওই ব্যাংকের চেয়ারম্যান, উপদেষ্ট বা আরও সম্মানজনক কোনও পদে থাকার জন্যে অনুরোধ করেন। সেদিন রাতেই মুহিত ভাইয়ের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, ড. ইউনূসের মত কী? তিনি বলেছিলেন, আমার তো মনে হলো তিনি রাজি। এখন তার তো কিছু পরামর্শদাতা আছে, তারা তাকে নষ্ট না করলে হয়। ওই ব্যাংকে তার দরকার।

কেন দরকার বলতে তিনি বলেছিলেন, দেখ বাংলাদেশে অর্থনীতি বোঝে দুটো লোকে। তারপরে তিনি ওই দুই ব্যক্তি সম্পর্কে একটা মন্তব্য করেছিলেন। সেটা আমি এখানে লিখবো না। এরপরে তিনি লোক দুজনের নাম বলেছিলেন, একজন ড. ইউনূস ও একজন ক্ষমতাশালী ব্যবসায়ী। এর পরে তিনি তাঁর স্বভাব সুলভ হাসি দিয়ে বলেন, কিন্তু এই দুজনের অর্থনীতির বুদ্ধি দেশের মানুষের কোনও কাজে লাগে না। ইউনূস তার বুদ্ধি দিয়ে সারা পৃথিবী থেকে খ্যাতি কেনেন। আরেকজন নিজের অর্থ বাড়ান। দেশের কোনও কল্যাণে আসে না।

মুহিত ভাই অর্থমন্ত্রী থাকা অবস্থায় একটা বিশেষ দিক হয়তো অনেকের নজর এড়িয়ে গেছে বা হয়তো সেটা ইতিহাসের স্রোতের নিচে দিয়ে প্রবাহিত একটা বিষয়। সৎ ও শিক্ষিত সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী থেকে শুরু করে যে কোনও সৎ লোকের পক্ষে তাঁর সাক্ষাৎ পাওয়া খুব সহজ ছিল। দিন হোক, রাত হোক তিনি তাদের সঙ্গে দেখা করতেন। শুধু তাদের কাজের কথা শুনতেন না, তাদের কাছ থেকে দেশের কথা শুনতেন। আবার তার দশ বছরে আজকের অনেক ডাকসাইটে ব্যবসায়ী যারা নানান জায়গায় ছড়ি ঘুরাচ্ছে, তাদেরকে তিনি কখনই সাক্ষাৎ দেননি। তাঁর বক্তব্য ছিল ওরা ক্রক, ওরা দেশটাকে শেষ করে দেবে।

তাকে এ বিষয়ে বলেছিলাম, আপনি একা তাদের দেখা না দিয়ে পারবেন। তাদের তো রাজনীতির নানান জায়গায় সম্পর্ক। তাদেরকে আপনি ঠেকাবেন কীভাবে? তিনি হেসে বলতেন, আমারটুকু তো অন্তত আমি করি। এ কথা বলার পরে তাঁর মুখে একটা কালো ছায়া দেখতাম। আসলে তার ওই মুখ দেখে বুঝতাম রাজনীতিকে ব্যবহার করে এই লাভের বিষয়গুলো তিনি পছন্দ করতেন না। তারপরেও তাঁকে করতে হতো।

যেমন, সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক কেলেঙ্কারি বা জনতা ব্যাংকের একের পর এক অনিয়মের পরে তাকে প্রশ্ন করেছিলাম একদিন– এগুলো কেন ঘটলো? আপনার অফিস বা বাংলাদেশ ব্যাংক কেউ এটা মনিটর করলো না। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্ব কিন্তু ছিল, তারা করেনি। তাছাড়া তার অফিসও সঠিকভাবে এটা করেনি– আবার এই ব্যাংকগুলোর প্রায় সব ডিরেক্টর অনভিজ্ঞ। কেন তিনি অনভিজ্ঞদের নিয়োগ দিলেন? এমনকি তাকে একথাও বলি, আপনি কি বাইরে কী কথা চালু আছে তাদের নিয়ে তা শুনেছেন? তিনি জানতে চাইলে বলি, ‘বাইরে এমনও কথা চালু আছে, যাদের কোনোদিন ব্যাংক একাউন্ট ছিল না, তাদেরকে ব্যাংকের ডিরেক্টর করা হয়েছে।’ তিনি হেসে দিয়ে বললেন, হ্যাঁ, আনিস ( সাবেক মেয়র আনিসুল হক, তখন তিনি সাবেক এফবিসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট) আমাকে এ গল্প বলেছে। তবে আসল সত্য কি জানো, এ সব নিয়োগ হয় রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে। আমি মন্ত্রণালয় চালাই, রাজনীতিটা কম করি।

এই সমস্ত ছোটখাট নিয়োগের বিষয়ে হয়তো তিনি রাজনীতি করতেন না। তবে রাজনীতির প্রতি, রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি তাঁর ছিল অগাধ শ্রদ্ধা। প্রতিটি বাজেটের আগে তিনি ব্যক্তিগতভাবে ডেকে দেশের অনেক কিছু জানতে চাইতেন, যা আমরা সাংবাদিকরা প্র্যাকটিক্যাল অর্থনীতির ক্ষেত্রে দেখতে পাই। তিনি সেগুলো খুব মনোযোগের সঙ্গে শুনতেন। আমাদের দেখা ও বোঝা’র ভেতর যে ভুল থাকে কোথাও কোথাও- সেটাও তিনি ধরিয়ে দিতেন। তারপরে বাজেটে তার অনেক প্রতিফলন দেখেছি। আনন্দিত হয়েছি। আর সে আনন্দ তাঁর সঙ্গে শেয়ার করাতে তিনি আরও বেশি আনন্দিত হতেন ও উৎসাহ দিতেন। আর সব সময় বলতেন, দেখ বাজেট কোনও হিসাব-নিকাষ নয়, এ সম্পূর্ণ একটি রাজনৈতিক বিষয়। রাজনৈতিক দিক-নির্দেশনা।  আর এ কারণে প্রতি বছরই বাজেটের মূল ধারণা আমি পাই আমাদের নেত্রী অর্থাৎ শেখ হাসিনার কাছ থেকে।

দশ বছরে তিনি বাংলাদেশের অর্থনীতি যতটা শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়েছিলেন, এটা এর আগে বা পরে কেউ পারেনি। কিন্তু তিনি সব সময়ই বলতেন, এ সম্ভব হচ্ছে কেবল শেখ হাসিনার রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কারণে। তবে এই রাজনৈতিক সিদ্ধান্তকে বাস্তবায়ন করার জন্যে তিনি কতটা আন্তরিক ছিলেন। তার একটা ঘটনাই কিন্তু প্রমাণ করে দেয়, আমি, চিত্রা ও আমার ছেলে আমাদের এই ছোট্ট সংসারটিকে তিনি তার নিজস্ব পারিবারিক বা আত্মীয় স্বজন গণ্ডির মধ্যেই মনে করতেন। তার যে কোনও নিতান্ত ফ্যামিলি প্রোগ্রামে তাই পরিবার ও আত্মীয়দের বাইরে আমাদেরকে থাকতে হতো। এই সম্পর্কের কারণেই তার মন্ত্রীত্বের দ্বিতীয় টার্মে একদিন দুপুরে তিনি আমাকে তাঁর বাসায় ডেকে বললেন, দেখ আমি একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের পরিবারের সকলে আমার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে, এখন তোমাকে ডেকেছি, তুমি কী বলো সেটা শোনার জন্যে।

অনেকটা ঘাবড়ে গেলাম। কী বিষয় সেটা তো কিছুই বুঝতে পারছি না। তিনি তার হাতের ব্যাগটি থেকে একটা কাগজ বের করে আমার হাতে দিলেন। বললেন, পড়ো। পড়ে দেখি, তিনি প্রধানমন্ত্রী বরাবর পদত্যাগ পত্র লিখেছেন। সেখানে কারণ হিসেবে শুধু ব্যক্তিগত কারণ বলা হয়েছে। আমি কিছু বুঝতে না পেরে তার মুখের দিকে তাকাতেই তিনি বললেন, দেখো একজন অর্থমন্ত্রীকে কমপক্ষে দিনে ষোলো থেকে আঠারো ঘণ্টা পরিশ্রম করতে হয় তার মন্ত্রণালয়ের জন্যে। ( আমি ব্যক্তিগত জানতাম তিনি সেটা করতেন, আর তাঁর এই পরিশ্রম করার জন্যে, তাঁর গোটা পরিবার, বিশেষ করে সাবিহা মুহিত (ভাবী) তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতেন)  কিন্তু এখন আমার যে শরীর তাতে আমি ১২ ঘণ্টার বেশি পরিশ্রম করতে পারছি না। এটা দেশ ও রাষ্ট্রকে ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে। তাই আমি পদত্যাগ করবো। কিন্তু আমার পরিবারের সকলে, ভাইয়েরা ও তাদের পরিবারও এটা চাচ্ছে না। এখন আমি তোমার মতামত চাই।

আমি তখন তাঁকে আমার ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে বলি, ভাই, আপনি আঠারো ঘণ্টা পরিশ্রম করেছেন, আপনার প্রথম টার্মে। সে সময়ে আপনি আমাকে বলেছিলেন, প্রথম ছয়মাস গেছে আপনার বুঝতে। কারণ, আপনি যখন এই মন্ত্রণালয় এরশাদ আমলে ছেড়ে যান সে সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি’র আকার খুব ছোট ছিল এবং স্টেক হোল্ডারও কম ছিল। এখন আকার অনেক বড় এবং স্টেক হোল্ডারও বেশি। তাই আপনাকে ছয়মাস বিষয়টা বুঝতে হয়েছে। তারপরে সাড়ে চার বছর আপনি নিজ সিদ্ধান্ত নিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি বদলে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়,  গোটা বিশ্ব যে সময়ে ২০০৯-১০ এ একটা মন্দায় ভুগছিলো, সে সময়ে আপনি বাংলাদেশকে সে মন্দা বুঝতেও দেননি। তাই গত পাঁচ বছরে আপনার যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তাতেই আমি মনে করি, এখন আপনি ১২ ঘণ্টাতেই ষোলো বা আঠারো ঘণ্টার কাজ করতে পারবেন।

কিন্তু তাঁর মুখ দেখে বুঝি সিদ্ধান্তে তিনি অটল। তখন আমি তাঁকে বলি, আপনি অফিসিয়ালি না পাঠিয়ে, আপনার সঙ্গে হাসিনা আপার যে সম্পর্ক তাতে নিজ হাতে তাঁর কাছে আগে পদত্যাগ পত্রটা জমা দেন। দেখেন তিনি কী বলেন। এই মুহূর্তে ঠিক মনে করতে পারছি না তবে সম্ভবত ওনার ছোট ভাই ( সুজন ভাই) ওনার আরেক আত্মীয় আসাদুল্লাহ ভাই বিষয়টি সমর্থন করেন। আর তিনি সিদ্ধান্ত নেন, সেদিন বিকালেই তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবেন।

বিকাল থেকে বেশ উত্তেজনা কাজ করছিলো মনের ভেতর। তারপরে কেন যেন একটা দৃঢ় বিশ্বাস ছিল প্রধানমন্ত্রী ওনাকে সামলে নেবেন। এবং সে ক্ষমতা তাঁর আছে। তারপরেও নিউজে বসে কাজ করি, আর বার বার ঘড়ির দিকে তাকাই। এর ভেতর রাত নয়টার দিকে ওনার ফোন। ফোন ধরতেই বললেন, কাজ শেষ করে আমার বাসায় চলে এসো।

ওনার বাসায় যেতেই তিনি তার স্বভাব সুলভ উচ্চ হাসি দিয়ে বললেন, তোমারাই জিতে গেলে। প্রধানমন্ত্রীকে ওটা দিতেই উনি এক পলক দেখে তাঁর হাতব্যাগে রেখে দিলেন আর বললেন, আপনি আপনার কাজ করুন। আপনাকে কখন মন্ত্রণালয় ছাড়তে হবে সেটা আমি বলবো। সেদিন উনি অর্থমন্ত্রণালয় ছাড়লে দেশের অনেক ক্ষতি হতো। তাই সেটা না ঘটাতে মনটা ভালো হয়ে যায়। মুক্তিপাই একটা উৎকণ্ঠা থেকে। মনে মনে ধন্যবাদ দেই তার পরিবারের সকল সদস্যদেরকে যারা তার এ পদত্যাগের পক্ষে ছিলেন না। 

মন্ত্রীত্ব ছাড়ার পরেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের কোনও ঘাটতি ঘটেনি। তবে কোভিড এসে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কোভিডের সময় প্রণোদনা ও বাজেট নিয়ে তাঁর ভিন্নমত ছিল। তাঁর মতে প্রণোদনার ফোকাসে ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা আসা উচিত ছিল। বাজেটটা প্রথমেই কোভিডের মধ্যে এক বছরের না করে ছয় মাসের করতে হতো। অর্থনৈতিক ম্যানেজমেন্ট নিয়েও অনেক কথা বলতেন।

শেষ কথা হয় সম্ভবত হাসপাতাল থেকে শেষ বার ফেরার পরে। আর আজ এ লেখা লিখছি শহীদ মিনারে তাঁকে শেষ বারের মতো দেখতে যাবার আগে। ১৯৮২ থেকে তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক। ১৯৮২ থেকে ২০২২ দীর্ঘ সময়। এর ভেতর তত্ত্বাবধায়কের নামে সেনাশাসনের যুগটার সময় আরেক ভিন্ন অধ্যায়। যাকে তিনি ‘হাবসি অধ্যায়’ বলতেন। সব মিলিয়ে তাঁকে নিয়ে কয়েক হাজার পাতা লেখা যাবে। তবে আজ যখন সকলে আমরা তাঁর কথা বলছি, তখন তিনিই শুধু নীরব। এই শেষের লাইনটি রামমোহনের একটা গানের লাইনের গদ্যরূপ। ব্যাংকক এয়ারপোর্টে বসেছিলেন তিনি ও তার ঘনিষ্টবন্ধু অমর্ত্য সেন। সেদিন মুহিত ভাই ও অমর্ত্য দা দুজনেই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতি নিয়ে অনেক কথা বলেন। কথা বলেন ব্রিটিশ ভারতের পরে একক ভারত হলে তার অর্থনীতি কী হতে পারতো। এবং অমর্ত্য সেন বার বার ধন্যবাদ দেন মুহিত ভাইকে তাঁর সফলতার জন্যে। এবং মনমোহন সিংও যে সফলতা পাচ্ছে সেটাও তাঁরা বলেন। তাঁরা এই তিন ঘনিষ্ট বন্ধু, অর্থনীতিবিদ- অমর্ত্য সেন, আবুল মাল আব্দুল মুহিত ও মনমোহন সিং - এ তিন জনই দীর্ঘ জীবন পেলেন। এবং তিন জনের কারো ভেতর কখনই মৃত্যু চিন্তা দেখিনি। বরং  দেখেছি অফুরন্ত  প্রাণশক্তি। যা মানুষের শুধু বেঁচে থাকা নয়, সফলতার জন্যেও দরকার। আর তিন বন্ধুর ভেতর তিনিই প্রথম চলে গেলেন। আজ তাঁর চলে যাওয়া, তাঁকে শহীদ মিনারে গিয়ে দেখবো সেকথা মনে হতেই মনে পড়ছে অফুরন্ত প্রাণ শক্তির একজন মানুষকে নীরব দেখতে হবে। মনে পড়ছে রামমোহনের সেই লাইন,  ‘মনে করো শেষের সেদিন ভয়ংকর, অন্য বাক্য কবে কিন্তু তুমি রবে নিরুত্তর।’ তারপরে মুহিত ভাই সম্পর্কে বাংলাদেশ কখনও নিরুত্তর থাকবে না। বরং তাঁকে নিয়ে সব  মানুষই সরবই থাকবে।  বাস্তবে তিনি চিরকালই বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে থাকবেন। বাংলাদেশ কোনোদিন আবুল মাল আব্দুল মুহিতকে ভুলবে না। কারণ, দেশটি প্রথম উন্নত অর্থনীতির রূপ দেখেছে তাঁর হাত ধরে।   

লেখক: রাষ্ট্রীয় পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক

/এসএএস/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ