অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বিগত সরকারের সময়ে লাগামহীন দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার ফলে চরম সংকটাপন্ন ব্যাংকিং খাতের শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারের মতো কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে। প্রবাসী আয়ের আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি, রফতানি আয়ের ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি, কৃষি ও শিল্প খাতের উৎপাদন অব্যাহত থাকা এবং সঠিক মুদ্রা ও রাজস্ব নীতির সমন্বিত প্রয়োগের সুফল হিসেবে আমরা ইতোমধ্যে কাঙ্ক্ষিত স্থিতিশীলতা অর্জনে অনেক দূর এগিয়েছি। তবে, পরিপূর্ণ স্থিতিশীলতা অর্জন করে অর্থনীতিকে স্বাভাবিক গতিতে ফিরিয়ে আনার পথে এখনও বেশ কিছু ঝুঁকি রয়েছে।
সোমবার (২ জুন) বিকালে বাজেট উপস্থাপন বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, খেলাপি ঋণ বাড়লেও বারবার পুনঃতফশিল করে প্রকৃত অবস্থা গোপন রাখা হয়। ব্যাংক খাতের সময়োপযোগী সমাধান এবং আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ করা হয়েছে। আমানতকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধারে সরকার সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এখন আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী খেলাপি ঋণ ও প্রভিশনিং করা হচ্ছে। প্রকৃত তথ্য সামনে আসায় খেলাপি ঋণ ২০২৩ সালের জুনের ১০ দশমিক ১১ শতাংশ থেকে বেড়ে গত ডিসেম্বরে ২০ দশমিক ২০ শতাংশ হয়েছে। সম্পদের গুণগত মান যাচাইয়ের (একিউআর) মাধ্যমে প্রকৃত অবস্থা নিরূপণ করা হচ্ছে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ব্যাংকিং খাতের দীর্ঘদিনের কাঠামোগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও আমানতকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধারে সরকার গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি, তারল্য সংকট, দেউলিয়াত্ব বা অস্তিত্বের জন্য হুমকি এ ধরনের ঝুঁকির সময়োপযোগী সমাধান এবং আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে ব্যাংক রেজোল্যুশন অধ্যাদেশ করা হয়েছে। ব্যাংকগুলোর সম্পদের গুণগত মান পর্যালোচনা, নীতি ও প্রবিধানগুলোর কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সক্ষমতা ও দক্ষতা বাড়াতে তিনটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চুরি বা পাচার হওয়া সম্পদ উদ্ধারের উদ্যোগ নেওয়া।