X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন ইসি নিয়ে বিএনপির আগ্রহ নেই কেন?

আমীন আল রশীদ
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৬:২০আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৬:২০
আমীন আল রশীদ নতুন আইনের আলোকে সার্চ কমিটির প্রস্তাবিত নামের তালিকা থেকে পাঁচ জনকে নিয়ে আগামী পাঁচ বছরের জন্য নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হলেও দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি বলছে, এ নিয়ে তাদের কোনও আগ্রহ নেই। অথচ এই কমিশনের অধীনেই আগামী অর্থাৎ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। প্রশ্ন হলো, বিএনপির কেন আগ্রহ নেই? তারা কি আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে চায় না, নাকি তারা ভাবছে যে আন্দোলন করে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার এবং নতুন কমিশন গঠন করে তাদের অধীনে নির্বাচনে যাবে?

অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব কাজী হাবিবুল আউয়ালকে সিইসি করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি হয় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি। এদিন রাতে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘নতুন সিইসি বা কমিশনার কারা হলেন এটা নিয়ে আমাদের কোনও আগ্রহ নেই। এটা নিয়ে আমরা কোনও কথাই বলতে চাই না। আমাদের মূল কথা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ সরকারে থাকলে কোনও নির্বাচন কমিশনের পক্ষে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়।’

মির্জা ফখরুল বলেন,‘দলীয় সরকারের অধীনে যে নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না তা তো ২০১৪ সালের নির্বাচন বলুন, ২০১৮ সালের নির্বাচন বলুন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন বলুন—সব নির্বাচনে তা প্রমাণিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন তাদের আজ্ঞাবহ হয়, তাদের অনুগত হয়ে কাজ করে। তাই সরকারে আওয়ামী লীগ থাকলে নির্বাচন কোনোভাবেই নিরপেক্ষ হবে না—এটা চিরন্তন সত্য।’ অতএব, কোনও দলীয় সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দেন মির্জা ফখরুল।

সেই বিষয়ে যাওয়ার আগে দেখা যাক কাদের নিয়ে গঠিত হলো বহুল আলোচিত নির্বাচন কমিশন। বহুল আলোচিত এই অর্থে যে এবার নির্বাচন কমিশন গঠন ইস্যুতে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে ধরনের আলোচনা ও ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া হয়েছে, অতীতে এমনটি দেখা যায়নি। এমনকি ইসি গঠনে সার্চ কমিটি গঠনের আগে থেকেই বেশ কিছু নামও সম্ভাব্য সিইসি ও কমিশনার হিসেবে গণমাধ্যম ও সোশাল মিডিয়ায় আসতে থাকে। কিন্তু শেষমেশ দেখা গেলো, ওই নামগুলোর একটিও চূড়ান্ত পাঁচ জনের মধ্যে নেই।

কারা নিয়োগ পেলেন?

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হিসেবে অবসর নেওয়া কাজী হাবিবুল আউয়ালকে এবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যদিও তাঁর নামটি এবার গণমাধ্যম ও সোশাল মিডিয়ায় আলোচিত ব্যক্তিদের তালিকায় ছিল না। তবে সরকারের নানা কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে আলোচিত এবং ‘বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী’ হিসেবে পরিচিতি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সার্চ কমিটির সঙ্গে আলোচনার সময় যাদের নাম প্রস্তাব করেছিলেন, সেখানে হাবিবুল আউয়ালের নামটিও ছিল। তবে এই নামটি নিশ্চয়ই আরও একাধিক দলের তালিকায় ছিল। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তালিকায় ছিল কিনা, তা এখনও জানা যায়নি।

স্মরণ করা যেতে পারে, বিচার বিভাগের এই কর্মকর্তাকে আইন সচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলে এটি অবৈধ ঘোষণা করে ২০১০ সালে রায় দেয় আদালত। তার নিয়োগের সময় নীতিমালা মানা হয়নি উল্লেখ করে আদালত তার নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করে। তাছাড়া আইন সচিব থাকা অবস্থায় বিধিবহির্ভূতভাবে দুই বিচারককে অবসরে পাঠানো নিয়েও জটিলতায় জড়িয়ে পড়েন হাবিবুল আউয়াল। সংসদীয় কমিটি এজন্য তাকে তলব করলে তিনি ওই ঘটনার দায় মাথায় নিয়ে ক্ষমাও চান (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২)। ২০১৭ সালে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হিসেবে অবসরে যান কাজী হাবিবুল আউয়াল।

এবার আরও যাদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে তাঁদের মধ্যে রয়েছেন নির্বাচন কমিশনের সাবেক সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর। ২০১৯ সালের ১০ জুন তিনি ইসি সচিব হিসেবে যোগ দেন এবং ২০২১ সালের জানুয়ারিতে অবসরে যান। কিন্তু যখন তাকে ইসি সচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় তখন তাকে ‘ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অনুগত ও বিশ্বস্ত’ উল্লেখ করে বিএনপি এই নিয়োগের বিরোধিতা করেছিল।  

উল্লেখ্য, আগামী পাঁচ বছরের জন্য নিয়োগ পাওয়া বাকি তিন জন কমিশনার হলেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা; অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবীব খান এবং অবসরপ্রাপ্ত সচিব আনিছুর রহমান।

প্রশ্ন হলো, এই কমিশন নিয়ে বিএনপির আগ্রহ নেই কেন? সেই উত্তর দলের মহাসচিব দিয়েছেন যে তাদের মূল লক্ষ্য নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার। কিন্তু সেটি কী করে সম্ভব?

নির্বাচনকালীন সরকার বলে কিছু নেই। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর পরে নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকার বলেও কিছু নেই। তবে কিছু ইঙ্গিত রয়েছে। ৫৬-এর ৪ অনুচ্ছেদে বলা আছে: সংসদ ভেঙে যাওয়া এবং সংসদ-সদস্যদের অব্যবহিত পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্যবর্তীকালে কাউকে মন্ত্রী নিয়োগ করার প্রয়োজন দেখা দিলে সংসদ ভেঙে যাওয়ার অব্যবহিত আগে যারা সংসদ-সদস্য ছিলেন, তারা বহাল থাকবেন। ফলে দেখা যাচ্ছে, নির্বাচন সামনে রেখে যদি সংসদ ভেঙে দেওয়া হয় অথবা সংসদ বহাল রেখেই একটি নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হয়, তারপরও সংসদ সদস্যরা তাদের পদে বহাল থাকবেন।  আর ওই অন্তর্বর্তী মন্ত্রিসভার সদস্য নিতে হবে সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকেই।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি এবং ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগে এরকম ‘নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভা’ গঠিত হয়েছিল। যদিও ২০১৪ সালে বিএনপি সংসদে থাকলেও তারা এই সরকারে তাদের কোনও প্রতিনিধি দেয়নি। এমনকি তারা ওই নির্বাচন বয়কট করে। ২০১৮ সালের সংসদে তারা ছিল না। ফলে আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে যখন আবার এই অন্তর্বর্তী বা নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি আলোচনায় আসবে, তখন সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন উঠবে, এবারও কি বিএনপির কাছে নির্বাচনকালীন সরকারে তাদের প্রতিনিধি চাওয়া হবে? চাইলেই কি বিএনপি তাদের নাম দেবে? দেবে না সেটির প্রমাণ তারা এরইমধ্যে দিয়েছে। কারণ, নির্বাচন কমিশন গঠন ইস্যুতে রাষ্ট্রপতির সংলাপেও তারা অংশ নেয়নি এবং প্রস্তাবিত সিইসি ও কমিশনারদের নামের তালিকাও তারা দেয়নি। বরং নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের অধীনেই তারা অনড়।

সংবিধানে সরাসরি নির্বাচনকালীন সরকারের কথা বলা না হলেও রাষ্ট্রপতি চাইলে একটি ছোট মন্ত্রিসভা গঠন করতে পারেন। আবার সংসদ বহাল থাকা অবস্থায় নির্বাচন নিয়ে যাতে জটিলতার সৃষ্টি না হয় সে বিধানও রয়েছে ৭২ অনুচ্ছেদে। অর্থাৎ একটি অধিবেশন শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে পরবর্তী অধিবেশন শুরুর বাধ্যবাধকতা থাকলেও ৭২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচনকালীন বা অন্তর্বর্তী সরকারের ওই ৯০ দিনের মধ্যে সংসদের অধিবেশন বসবে না।

কথা হচ্ছে, নির্বাচন হবে কার অধীনে? সংবিধান মোতাবেক যদি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সামনে রেখে সংসদ ভেঙে দেন অথবা সংসদ বহাল রেখেই একটি নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করেন, সেখানে শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য কেউ প্রধানমন্ত্রী হবেন, সেটি ভাবার কোনও কারণ নেই। কিন্তু বিএনপি বারবারই বলছে, তারা শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবে না এবং তারা নির্বাচনকালীন একটি নিরপেক্ষ সরকার চায়।

বিএনপি যে ধরনের নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি করছে, তার সারাংশ হচ্ছে শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য কারও অধীনে নির্বাচন; যা বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী সম্ভব নয়। তাহলে বিএনপি কি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বয়কট করবে? তাদের সামনে অন্য পথ হচ্ছে আন্দোলন বা চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায় করা। সেই সক্ষমতা বিএনপি এবং তাদের জোটের আছে কিনা?

সম্প্রতি দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব, যুগ্ম-মহাসচিব, সাংগঠনিক, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকসহ ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলার শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন ও হাইকমান্ডের নেতারা সিরিজ বৈঠক করেছেন। এসব বৈঠকে অংশগ্রহণকারী নেতারা আগামী দিনে দলের কর্মসূচি কেমন হবে, কী করতে হবে, কীভাবে আন্দোলন করা উচিত ইত্যাদি বিষয়ে তাদের মতামত জানান। দাবি আদায়ে আন্দোলন গড়ে তোলার পক্ষেও তারা মতামত দেন। কেউ কেউ ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচ খেলারও পরামর্শ দিয়েছেন বলে গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে।

টানা তিন মেয়াদ ক্ষমতার বাইরে থেকে মামলায় জর্জরিত তৃণমূলের নেতাদের অনেকেই নিষ্ক্রিয়। অনেকে কারাগারে। অনেক দল বদলে ক্ষমতাসীন দলে যুক্ত হয়েছেন। অনেকে রাজনীতি ছেড়ে দিয়েছেন। অনেকে দেশ ছেড়েছেন। কেউ কেউ ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে আপস করে নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্য টিকিয়ে রেখেছেন। এরকম পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের মতো একটি শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে লড়াই করে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায় করা কতটা সহজ?

বিএনপি কি ভাবছে সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ করে তারা এই দাবি আদায় করবে? কারণ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হলে আগে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। ১৯৯৬ সালে যে দাবিটি কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে আদায় করেছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু বিএনপির যে সাংগঠনিক অবস্থা তাতে তারা ওই ধরনের কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলতে পারবে কিনা এবং করার চেষ্টা করলেও সেই আন্দোলনের জনসমর্থন পাবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় আছে। কারণ, করোনা পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতি বিরাট ধাক্কা খেয়েছে। সেই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠা বেশ কঠিন। সুতরাং রাজনৈতিক আন্দোলনের নামে কোনও ধরনের জ্বালাও পোড়াও জনসমর্থন পাবে বলে মনে হয় না।

তৃতীয় অপশন হচ্ছে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা প্রয়োগ। অর্থাৎ তিনি চাইলে নির্বাচনকালীন এমন একটি সরকার গঠন করবেন যেখানে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোর অংশগ্রহণ থাকবে এবং সেখানেও বিএনপিও প্রতিনিধি দিতে পারে। কিন্তু প্রশ্ন আসবে ওই সরকারের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন? শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য কেউ হলে বিএনপি নির্বাচনে যেতে রাজি হবে। কিন্তু শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য কাকে প্রধানমন্ত্রী করা হবে? সেটি আওয়ামী লীগ কেন মানবে? যদি না মনে তাহলে পরিস্থিতি কী হবে?

চতুর্থ অপশন হচ্ছে বিএনপিকে এমন একটি আশ্বাস দেওয়া যে নির্বাচনটি তুলনামূলক অবাধ ও সুষ্ঠু হবে এবং তাতে একাদশ সংসদের মতো সামান্য কয়েকটি আসন নয়, বরং শ’খানেক আসনে যদি তাদের প্রার্থীরা জয়লাভ করেন তাহলে তারা সংসদে শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে থাকবেন। কিন্তু এই আশ্বাস বিএনপিকে কে দেবে এবং দিলেও তারা সেটি মানবে কিনা? সবকিছু মিলিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচন কেমন হবে এবং তার আগে রাজনীতিতে কী কী ঘটবে, তা এখনই বলা মুশকিল।

লেখক: কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এডিটর, নেক্সাস টেলিভিশন।
/এসএএস/এমওএফ/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
ফরিদপুরে দুই শ্রমিক হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতার দাবিতে খেলাফত মজলিসের মিছিল
ফরিদপুরে দুই শ্রমিক হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতার দাবিতে খেলাফত মজলিসের মিছিল
মশা তাড়ানোর ৫ প্রাকৃতিক উপায়
মশা তাড়ানোর ৫ প্রাকৃতিক উপায়
মেলা থেকে অস্ত্রের মুখে দুই নারীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ
মেলা থেকে অস্ত্রের মুখে দুই নারীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ
তীব্র গরমে সিল্কসিটি ট্রেনে আগুন
তীব্র গরমে সিল্কসিটি ট্রেনে আগুন
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ