X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মানসিক ও অর্থনৈতিক নির্যাতনের দগদগে ক্ষত

হায়দার মোহাম্মদ জিতু
১৬ এপ্রিল ২০২২, ১৪:১৬আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২২, ১৪:১৬

হায়দার মোহাম্মদ জিতু সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে রচিত শাসন ব্যবস্থার নাম গণতান্ত্রিক শাসন। বৈশ্বিক ব্যবস্থায় জনপ্রিয় এই মাধ্যম সময়ের ধারাবাহিকতায় প্রাচ্য অঞ্চলেও দৃশ্যমান এবং চলমান। কিন্তু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় প্রশ্ন উত্থাপনের যে বিষয় তা অনেকাংশে এখানে আড়াল করার চেষ্টা করা হয়। বিষয়টি অনেকটা ব্যাকরণকে ব্যবহার করবার মতো। যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকু টুকে নেওয়া হয়, বাকিটা আড়াল করা হয়। এক সময়ের প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল বিএনপি এই কৌশলকে ব্যবহার করছে। তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করে আগামী নির্বাচন কেন্দ্রিক নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে তৎপরতা শুরু করেছে।

ডিজিটাইজেশনের কল্যাণে তাদের এ কৌশল ব্যর্থই হবে। কারণ দেশে এখন তথ্যের অবাধ প্রবাহ আছে। কে চোর, কে সাধু তার তুলনামূলক আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত জনগণের হাতে আছে। এই আলোকে জনগণ আগামীতে করবে তারা কেন বিএনপিকে ভোট দেবেন?

নব্বইয়ের দশকে একটি ধোঁয়া তোলা হয়েছিল, ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’। কিন্তু সেই অযাচিত এবং অমূলক স্লোগানের ধোঁয়ায় জনগণকে যে আর প্রভাবিত বা প্ররোচিত করা যাবে না সেই বিষয়টি এখন পরিষ্কার। কারণ যে অজ্ঞতা এবং অন্ধকারকে উপজীব্য করে বিএনপি জনগণকে বিভ্রান্ত করেছিল তা এখন অসম্ভব। শেখ হাসিনার অনড় অগ্রযাত্রায় হাতে হাতে বিনামূল্যে বই ও শিক্ষার আলো পৌঁছে গেছে। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ গেছে। নারী ঘরের আঙ্গিনা রাঙ্গিয়ে বৈশ্বিক বিনিয়োগ এবং উন্নয়নের অংশীদার হয়েছে।

আর্কাইভ চিত্র ও খবর পর্যালোচনায় দেখা যায়, বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক অংশ পৃষ্ঠপোষকতা বা মদদ পেয়ে থাকে। কাজেই তাদের জন-ক্ষমতায় এনে নারীরা ঘর বন্দী কিংবা জনগণ তাদের নিজেদের এগিয়ে চলার পথ রুদ্ধ করবে না এটাই বাস্তবতা। তাছাড়া খেলায় জিতবার পূর্বে তো অংশগ্রহণের যোগ্যতা অর্জন করতে হয়। সে হিসেবে তাদের দলীয় প্রধান বেগম খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাতের মামলায় জেলে, কো-প্রধান বা উপ-প্রধান তারেক জিয়া অস্ত্র মামলা ও হত্যা চেষ্টার দায়ে বিদেশে ফেরারি আসামি। কাজেই আইনের শাসন অনুযায়ী তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য এখন পর্যন্ত অযোগ্য।

ভিন্ন প্রসঙ্গে, আপনজন হারানো জনগণ ভুলে যায়নি ক্ষমতার মসনদ পাবার লোভে বিএনপি-জামায়াতের পেটোয়া বাহিনীর সাম্প্রদায়িক তাণ্ডব। দেশের জনগণের ওপর শারীরিক, মানসিক এবং অর্থনৈতিক নির্যাতনের দগদগে ক্ষত। তারা শীতের রাতে ঘুমন্ত বাসের যাত্রীদের ওপর পেট্রোল বোমার মতো আগুন সন্ত্রাস চালিয়েছে। যা বৈশ্বিক উঠোন পর্যন্ত গড়িয়েছে, নিন্দা উঠেছে।

গণতন্ত্রের আরেক গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো বিরোধীদলের প্রতি সহানুভূতিশীল আচরণ করা। অথচ বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে সরাসরি গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল। যুদ্ধ সরঞ্জামের অনুসন্ধানে জানা যায়, যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুকে নিশ্চিহ্ন করতে এই গ্রেনেড ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ হামলায় আইভি রহমানসহ প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের হত্যা করা হয়। আমৃত্যু পঙ্গু করে দেওয়া হয় হাজারো আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের।

জনগণের প্রতিনিধিত্ব করতে চাওয়া অবশ্যই নৈতিক দায়বদ্ধতার ফলাফল। এটি পরম পবিত্র এবং সৌভাগ্যের। জনগণও চায় বহুমাত্রিক ও বৈশ্বিক জ্ঞান সম্পন্ন মানুষই তাদের নেতৃত্ব দেবেন। একারণেই জনগণ এখন জানতে চান এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করা, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় দণ্ডিত, মানুষ পুড়িয়ে মারা এসব দণ্ডে দণ্ডিতদের কেন তারা ভোট দেবেন?

বিএনপিও জানে দেশের জনগণ এখন অনেক সচেতন। একারণেই নির্বাচনের মাঠে আসি আসি করেও আসার আত্মবিশ্বাস পাচ্ছেন না। বৃহৎ অর্থে, তারা বুঝে গেছেন তাদের প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস নেই। এ কারণেই ধরি মাছ না ছুই পানির মতো করে নির্বাচনে না এসে, লড়াই না করেই ক্ষমতায় যাওয়ার পায়তারায় কথায় কথায় ভিন্ন সীমানার মানুষের আচরণ প্রত্যাশা করেন। আদতে এটা তাদের একটা সেফ এক্সিট।

কারণ তারা জানেন দণ্ডিত আসামিরা কখনই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পায় না। একারণে খেলায় হার জেনে যেমন কিছু লোক খেলা ভণ্ডুল করে দেবার পাঁয়তারা করে বিএনপি সেই তরিকাই বাস্তবায়নে তৎপর। এক্ষেত্রে জনগণই ভরসা, ঐক্যবদ্ধ জনগণই এর সমুচিত জবাব দেবেন। তারা নিশ্চয়ই দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে দেবেন না। এটাই তরুণ প্রজন্মের অঙ্গীকার, আগামীর বাংলাদেশের উন্নয়ন মানচিত্র।

লেখক: প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয়, নির্বাহী সংসদ

[email protected]

/এসএএস/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
মেলা থেকে অস্ত্রের মুখে দুই নারীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ
মেলা থেকে অস্ত্রের মুখে দুই নারীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ
তীব্র গরমে সিল্কসিটি ট্রেনে আগুন
তীব্র গরমে সিল্কসিটি ট্রেনে আগুন
দ্বিতীয় বিয়ে করায় স্বামীর অঙ্গহানি করলেন স্ত্রী
দ্বিতীয় বিয়ে করায় স্বামীর অঙ্গহানি করলেন স্ত্রী
প্রচণ্ড গরমেও ভোটকেন্দ্রে ভোটার, ভোটদানের হার ৬১ শতাংশ
ভারতে দ্বিতীয় দফায় ভোটপ্রচণ্ড গরমেও ভোটকেন্দ্রে ভোটার, ভোটদানের হার ৬১ শতাংশ
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ