X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাস্থ্য খাতে উদ্ভাবন: গবেষণার সুযোগ সীমিত হয়ে আছে কেন?

রেজা সেলিম 
২৯ মে ২০২৩, ২০:২৭আপডেট : ২৯ মে ২০২৩, ২০:২৭

স্বাস্থ্যে বাংলাদেশের সাফল্য উল্লেখযোগ্য। উদযাপন করার মতো এ সাফল্য গত ৫০ বছরে এই দেশ অর্জন করেছে। সম্প্রতি ঢাকার এক অনুষ্ঠানে (২৭ মে ২০২৩) যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথের আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য শাখার জ্যেষ্ঠ সহযোগী হেনরি বি পেরি মন্তব্য করেছেন, যেভাবে সাফল্য এসেছে, ভবিষ্যতে একইভাবে সাফল্য না-ও আসতে পারে। ভবিষ্যতের সমস্যা মোকাবিলায় অন্তত আটটি কঠিন কাজ বাংলাদেশকে হাতে নিতে তিনি আটটি সুপারিশ করেন। এগুলো হচ্ছে উদ্ভাবন, স্বাস্থ্য খাতে অর্থায়ন বৃদ্ধি, একটি দৃঢ় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পদ্ধতি গড়ে তোলা, কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মীদের শক্ত পেশাদার হিসেবে গড়ে তোলা, অর্থায়ন বিকেন্দ্রীকরণ ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার ক্ষমতা বৃদ্ধি, বিপর্যয়মূলক স্বাস্থ্য ব্যয় মোকাবিলার জন্য সব নাগরিকের জন্য বিমার ব্যবস্থা, গবেষণা জোরদার করা এবং দৃঢ় নাগরিক নজরদারি ব্যবস্থা গড়ে তোলা।

বিদেশ থেকে আমাদের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে যে যাই-ই বলুক আমরা যারা গ্রাম পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবায় কাজ করছি আমাদের বিবেচনায় দেখছি এই সুপারিশগুলো আমলযোগ্য। হেনরি বি পেরি হয়তো কথাগুলো গুছিয়ে বলেছেন, কিন্তু এই সুপারিশগুলো আমাদের মনের কথা। কারণ দীর্ঘদিন যাবৎ আমরা মাঠের কাজের অভিজ্ঞতা থেকে এই বিবেচনা সূত্রগুলো সরকারের কাছে নানা উপায়ে উপস্থাপন করছি,  কিন্তু কাজের কাজ তেমন হচ্ছে না।

সম্প্রতি (১১ মে ২০২৩) ইউনিসেফ, ডব্লিউএইচও, বিশ্বব্যাংক, সূচনা ফাউন্ডেশন, সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন এবং লন্ডনের চ্যাটাম হাউসের মতো বেশ কয়েকটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সহায়তায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ‘স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার আওতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এই অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথির ভাষণে বলেন, ‘সমগ্র জনগণের জন্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা আমাদের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা এবং আমরা আমাদের সরকারের প্রথম দিন থেকেই তা পূরণ করার চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে যা করেছি তা ছাড়াও আমরা অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে সকলের জন্য স্বাস্থ্যসেবার একটি প্রয়োজনীয় প্যাকেজের সরকারি বিধানসহ বাড়তি পদক্ষেপ গ্রহণ করবো, যাতে আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারি’। প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলোর একটি পূর্ণ প্যাকেজ (ইএসপি) প্রণয়ন, স্বাস্থ্য খাতে শূন্য পদ পূরণ করা, শহুরে এলাকায় প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যার ব্যবস্থা করাসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে তিনি নির্দেশনা দেন, যাতে স্বাস্থ্য খাত সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা (ইউএইচসি) অর্জনের পথে দ্রুত এগিয়ে যেতে পারে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য থেকে একটি বিষয় আমাদের কাছে স্পষ্ট যা তিনি এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা ৩ অর্জনের প্রসঙ্গে খুবই সচেতনভাবে কিছু পদক্ষেপের নির্দেশনা রেখেছেন অর্থাৎ এই অর্জন স্বাস্থ্য খাতের বৈশ্বিক পটভূমিতে যেন বাংলাদেশের অর্জনকে সামনে টেনে নিয়ে আসতে পারে। বলা বাহুল্য, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের যেসব অর্জন ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি পেয়েছে ও প্রশংসিত হয়েছে সবই এসেছে উদ্ভাবন ও প্রায়োগিক গবেষণার হাত ধরে। যদিও একাধিকবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আক্ষেপ করে স্বাস্থ্য গবেষণায় আমাদের পিছিয়ে থাকার কথা তাঁর নানা বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। ১৩ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কমপ্লেক্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্য বিষয়ে গবেষণা আমাদের দেশে খুব কম হচ্ছে। চিকিৎসকরা রোগীর সেবা দিতে যতটা আগ্রহী, ঠিক গবেষণার দিকে ততটা নেই। হাতে গোনা কয়েকজনই নিয়মিত গবেষণা করেন। এ ক্ষেত্রে আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি, আমাদের স্বাস্থ্য বিষয়ে গবেষণা একান্তভাবে দরকার। তবে অন্যান্য গবেষণায় এখন যথেষ্ট আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের এগিয়ে যেতেই হবে’।

একই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘গবেষণার সাথে সাথে এই গবেষণালব্ধ জ্ঞান আমাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কীভাবে ব্যবহার করা যায় তার ওপর আমরা জোর দিচ্ছি। মৌলিক গবেষণার পাশাপাশি প্রায়োগিক গবেষণার ওপরও জোর দিতে হবে। এ বিষয়ে যারা গবেষক তারা নিশ্চয়ই এ বিষয়ে কাজ করবেন’।

২৩ মার্চ ২০২৩ তারিখে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় আয়োজিত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, বিজ্ঞানী, গবেষক ও ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ‘বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ’, ‘এনএসটি ফেলোশিপ’ ও ‘বিশেষ গবেষণা অনুদান’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে চিকিৎসা বিজ্ঞান গবেষণায় বিশেষ মনোযোগ দিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে নতুন বৈশ্বিক প্রযুক্তির সাথে তাল মেলাতে নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই আমাদের গবেষণা সবসময়ই চলবে। কিন্তু একটা দুঃখের কথা না বলে পারি না, সেটা হলো আমাদের কৃষি গবেষণা চলছে, বিজ্ঞানের চলছে। কিন্তু আমাদের স্বাস্থ্য খাতে গবেষণা খুবই সীমিত। তাই চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণায় বিশেষ মনোযোগ দিন’। প্রধানমন্ত্রী হতাশা ব্যক্ত করে আরও বলেন, ‘ডাক্তারদের একটি মহল এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জনের পর চিকিৎসা চর্চা ও গবেষণা বাদ দিয়ে সরকারি চাকরি অথবা রাজনীতিতে চলে যান। আর এক শ্রেণি আছেন, তারা শুধু টাকা কামাতেই ব্যস্ত। একই সাথে সরকারি চাকরি এবং প্রাইভেটে প্র্যাকটিসও করেন। সরকারি চাকরি আর প্রাইভেট প্র্যাকটিসের পর সেখানে কিন্তু আর গবেষণা হয় না। আমাদের স্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষণা খুব দরকার। স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের গবেষণা খুবই সীমিত কয়েকজন করেন’।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই আক্ষেপের সাথে আমরা নিঃসন্দেহে একমত। পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত নানা তথ্যে আমরা লক্ষ করেছি স্বাস্থ্য গবেষণায় ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেবার পরেও তা খরচ হয়নি বলে সে টাকা হয় পড়েছিল বা ফেরত গেছে। প্রধানমন্ত্রীর বরাতে যেসব তথ্য পত্রিকায় ছাপা হয়েছে যার কিছু কিছু আমরা ইতোমধ্যে উল্লেখ করেছি, সবই প্রধানমন্ত্রীর দার্শনিক চিন্তাবৃত্তি অনুধাবন করতে না পারার সীমাবদ্ধতার কারণেই ঘটে চলেছে। হেনরি বি পেরি যেসব সুপারিশ করেছেন সেসবের কোনোটাই প্রধানমন্ত্রীর চিন্তার বাইরের কিছু নয়।

তাহলে শুধু বুঝবার সীমাবদ্ধতা ছাড়াও তৃণমূলের স্বাস্থ্য সেবা ও প্রযুক্তির গবেষণা সমন্বয়ক কর্মী হিসেবে আমাদের অভিজ্ঞতা হলো এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর নীতিকাঠামোর পুনর্গঠন জরুরি। অনেক ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি পূর্বাপর প্রেক্ষাপট অনুসরণে আমাদের দেশের কর্তাব্যক্তিদের অজ্ঞতা বা অনীহা রয়েছে। যেমন ধরুন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের সকল অর্জন ও বিশ্ব স্বীকৃতি এসেছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা অর্জনের পথরেখা অনুসরণ করে ও আমরা এখন জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করেছি, শিক্ষায় ব্যাপক সম্প্রসারণ ও গ্রামীণ অর্থনীতিতে প্রশংসনীয় সাফল্য অর্জন করেছি আর এসবের ফলশ্রুতিতে উন্নয়ন সূচকের যেসব উন্নতি বা সাফল্য এখন দৃশ্যমান সেগুলোর বিপরীত ভাবনা নিয়ে আমাদের এগোনো দরকার এটা তাঁরা বুঝতে পারেন না বা বুঝতে চান না। উদাহরণ হিসেবে যদি আমাদের অর্জিত উন্নয়ন সূচকগুলো থেকে আয়ুষ্কাল বৃদ্ধির সূচক বেছে নিই তাহলেও আমাদের ভাবতে হবে বেশি বয়সের অসুখগুলো নিয়ে, যেসবের বেশিরভাগই অসংক্রামক ব্যাধি (এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা ৩.৪), যার মধ্যে ক্যান্সার, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস ও কিডনির জটিলতা উল্লেখযোগ্য। এই জাতিকে এখন এইব অসুখ নিরাময় ও নিয়ন্ত্রণ কৌশল নিয়ে ভাবতে হবে। কারণ, এই অসংক্রামক অসুখগুলোর চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা ধনী দেশগুলো যন্ত্রের কৌশলে ঢেকে রেখেছে ও ওষুধ ব্যবস্থাপনায় এক অদ্ভুত কূটনীতি বজায় রেখেছে।

৫০ বছর আগে আমরা ডায়রিয়া, কলেরা, যক্ষ্মার মতো মহামারি কোনোদিন নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বা নামমাত্র মূল্যে এসব অসুখের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনাকে সমাজভিত্তিক করে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে এনে দিতে পারবো, তা ভাবতে পারিনি। জগৎ দেখেছে বাংলাদেশের মতো দেশে সেসবের নিয়ন্ত্রণ কতটা শিক্ষণীয় হয়েছে, বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিক যার অন্যতম উদাহরণ।

অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণেও এই সমাজভিত্তিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার সাফল্য আমাদের অর্জন করতে হবে আর তার জন্যে দরকার ব্যাপক প্রায়োগিক গবেষণা। রামপালে আমাদের গ্রাম প্রকল্পের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এনে কিডনি, হৃদরোগ ও স্ট্রোক জটিলতা এড়াতে কার্যকর সচেতনতা ও সামান্য টাকার ওষুধই যথেষ্ট। এই কারণেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটি বক্তব্য গুরুত্বপূর্ণ- ‘মৌলিক গবেষণার পাশাপাশি প্রায়োগিক গবেষণার ওপরও জোর দিতে হবে’। আমরা বিশ্বাস করি এই কাজে ব্যাপক পরিমাণ উদ্ভাবনের সুযোগ আছে। কিন্তু আমাদের অভিজ্ঞতা হলো সে উদ্ভাবনের গবেষণায় যথেষ্ট পরিমাণ সহযোগিতা নেই, না দেশের না বিদেশের। বিদেশের কথা লিখেছি এই কারণে যে ধনী দেশগুলো যেসব অনুদান দেয় সেখানে আজও কোনও দেশ তাদের অগ্রাধিকারে স্বাস্থ্য গবেষণার ছিটেফোঁটাও রাখেনি, অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে তো নয়ই। এরা জানে এই বিভাজন ঘুচে গেলে স্বাস্থ্য বাণিজ্যের একটি বড় বিপণন তাদের হাতে আর থাকবে না। ধনী-দরিদ্রের প্রযুক্তির বৈষম্যের মতো এখানেও একটি বড় বৈষম্য বিশ্বজুড়ে রয়েছে, বাংলাদেশ সে বলয় থেকে বের হতে পারছে না বলেই হয়তো এই দেশে স্বাস্থ্য গবেষণা এগোচ্ছে না।

আমরা তাই সরকারের মুখের দিকে তাকিয়ে আছি যেন স্বাস্থ্য গবেষণায় উদ্ভাবন ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে প্রায়োগিক গবেষণার মাধ্যমে নিরাময় কৌশলের সাধারণের আয়ত্তাধীন সহজ সমাধান পেতে দেশেই নিশ্চিন্তে কাজ করতে পারি। আর আমরা জানি এটা সম্ভব, সে অর্জনের প্রমাণ আমাদের কাছে আছে।

লেখক: পরিচালক, আমাদের গ্রাম

ই-মেইলঃ [email protected]

/এসএএস/এমওএফ/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
অটোরিকশার ধাক্কায় মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে শিশুর মৃত্যু
অটোরিকশার ধাক্কায় মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে শিশুর মৃত্যু
উন্নয়নের ভেলকিবাজিতে বাংলাদেশ এখন ডেথ ভ্যালি: রিজভী
উন্নয়নের ভেলকিবাজিতে বাংলাদেশ এখন ডেথ ভ্যালি: রিজভী
ময়মনসিংহে বাস-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ, দম্পতি নিহত
ময়মনসিংহে বাস-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ, দম্পতি নিহত
নিউইয়র্কে সাকিবের ব্যবহারে মুগ্ধ বাংলাদেশের সাবেক গোলকিপার 
নিউইয়র্কে সাকিবের ব্যবহারে মুগ্ধ বাংলাদেশের সাবেক গোলকিপার 
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ