X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

সম্মান বর্ষের ছাত্র: ভাবনাটা হোক নিজেকে নিয়ে

মোহাম্মদ আসাদ উজ জামান
১৭ নভেম্বর ২০২১, ১৭:৪৩আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২১, ১৭:৪৩

মোহাম্মদ আসাদ উজ জামান চাকরি এবং পড়াশোনা সূত্রে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মানসিকতা সম্পর্কে কিছুটা অভিজ্ঞতা আমার আছে, বিশেষ করে লেখাপড়ার প্রতি ছাত্রদের মানসিকতা। ছাত্রজীবনে একটা সময় আমি যেমন লেখাপড়া যতটা পারি এড়িয়ে চলেছি, তেমনি একটা সময়ে আমি যথেষ্ট মনোযোগ দিয়েও লেখাপড়া করেছি, দুটো অবস্থারই যথেষ্ট প্রমাণ আমার হাতে আছে। এই আলোকে আজ একটি বিশেষ বিষয়ে লিখতে চাই, সেটা হলো ইমপ্রুভমেন্ট রাখা এবং অহেতুক পরীক্ষা পেছানোর কিছু অজুহাত।

ছাত্রদের জন্যে ইমপ্রুভমেন্ট নামে একটি বিশেষ সুবিধা আছে। ঠিক কী কারণে এই সুবিধার জন্ম এটা আমার জানা নেই। ইমপ্রুভমেন্ট বলতে বুঝি, একজন ছাত্র ফাইনাল পরীক্ষায় একটি বিশেষ নম্বরের কম নম্বর পেলে সে এই বিষয়ে পরের বছর শুধু ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে, কিন্তু এর জন্যে পরের বছর তাকে আর ক্লাস করতে হবে না। এই বিবেচনা থেকে অনুমান করতে পারি কেন ইমপ্রুভমেন্ট নামের এই সুবিধাটা আছে, হয়তো একজন ছাত্র ঠিকঠাকভাবে সব ক্লাস করেছে, কিন্তু পরীক্ষার সময় বিশেষ কোনও ঘটনা বা অসুস্থতার জন্যে পরীক্ষা দিতে পারছে না, বা দিতে পারলেও আশানুরূপ ফলাফল করতে পারেনি। এমন একজন ছাত্রের জন্যে ইমপ্রুভমেন্ট একটি বিশেষ সুবিধা, পরের বছর ক্লাস করে তার যেন সময় নষ্ট না হয়, এবং তার যেন প্রমোশনও আটকে না থাকে (প্রমোশনের জন্যে অবশ্যই বিশেষ একটি মোট নম্বর পেতে হয়), শুধু পরের বছর ফাইনাল পরীক্ষা দিলেই হবে। সুতরাং ছাত্রদের জন্যে ইমপ্রুভমেন্ট খুবই ভালো একটি সুযোগ হওয়ার কথা। কিন্তু মানসিকতার কারণে এই সুযোগ যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করতে গিয়ে অনেক ছাত্রকেই বিপাকে পড়তে দেখা যায়। বিশেষ করে প্রথম বর্ষের ছাত্ররা যখন অহেতুক এই সুবিধাটা নিতে চায়।

প্রথম বর্ষের বেশ কিছু ছাত্রকে দেখা যায় শুরুতেই ওরা ঠিক করে রাখে পরীক্ষার সময় কী কী বিষয়ে ইমপ্রুভমেন্ট রাখবে, এই চিন্তা থেকেই নিজের প্রতি নিজের একটি অহেতুক চাপ সৃষ্টি করা হয়। ধারণাটা অনেকটা এরকম যে পরের বছর পরীক্ষার আগে কয়েক সপ্তাহ পড়েই খুব ভালো পরীক্ষা দিতে পারবে। বোঝার সুবিধার্থে ধরে নিই, একজন ছাত্র প্রথম বর্ষেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুটো বিষয়ে ইমপ্রুভমেন্ট রাখবে। এই চিন্তা থেকে ক্লাস শুরু করলে সেই দুই বিষয়ে মন দিয়ে ক্লাস করা বা মন দিয়ে বই পড়া হয়ে ওঠে না। ইমপ্রুভমেন্ট দিয়ে ভালো করার ক্ষেত্রে অন্তত দুটো স্বীকার্য আগেই ধরে নেওয়া হয়। একটি হলো, কী ধরনের প্রশ্ন বা কোন কোন অধ্যায় থেকে প্রশ্ন আসবে এটা সে আগেই অনুমান করতে পারবে। দ্বিতীয়ত, পরের বছর দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষার সঙ্গে প্রথম বর্ষের পরীক্ষার মাঝে বেশ একটি সময়ের ফারাক থাকতে হবে। এগুলো না হলে পরের বছর দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষার সঙ্গে প্রথম বর্ষের রেখে দেওয়া ইমপ্রুভমেন্ট পরীক্ষায় ভালো করা সত্যিই অনেক কঠিন। ইমপ্রুভমেন্ট নিয়ে একটি স্বাভাবিক প্রশ্ন হলো, পরের বছরের বিষয়গুলো কি আগের চেয়ে একেবারেই সহজ হয়ে যায়, না অপেক্ষাকৃত কঠিন হয়ে থাকে!

স্বভাবতই বর্ষের সঙ্গে বিষয় একটু কঠিন হতে থাকে, এবং বুঝতে সময়ও বেশি লাগে। সেক্ষেত্রে কীভাবে অহেতুক ইমপ্রুভমেন্ট রাখা একজন ছাত্রের জন্যে ভালো কিছু বয়ে আনতে পারে, সহজ বুদ্ধিতে বোঝা যায় না। এই বাড়তি চাপের কারণে হয়তো অনেকের মাঝেই হতাশা আসতে পারে। অবশ্য, পরিস্থিতির কারণে ইমপ্রুভমেন্ট দিতে বাধ্য হলে সেটা অবশ্যই ভিন্ন কথা।

আরও একটি সহজ প্রশ্ন হলো, এই অহেতুক ইমপ্রুভমেন্ট যারা দেয়, তাদের ডিগ্রি শেষ করার জন্যে কি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আলাদা সময় দেয়? যদি না দেয়, তাহলে নিজের ওপর এই বাড়তি চাপটা কেন নিতে হবে, যখন ইমপ্রুভমেন্ট রাখার পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আগেই একজন ছাত্র সিদ্ধান্ত নেয় যে ও বিশেষ কিছু বিষয়ে ইমপ্রুভমেন্ট রাখবে! একই সঙ্গে আরও একটি কথা হলো, বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্ষের সঙ্গে কি কি বিষয় এবং কতটা বিষয় পড়তে হবে এগুলো যারা ঠিক করেন, তাঁরা যথেষ্ট সময় এবং মেধা দিয়েই এগুলো ঠিক করেন। সেখানে একজন ছাত্রের এই অহেতুক ইম্প্রুভমেন্ট রাখার চিন্তাটা অনেকটাই মাত্রাজ্ঞানের অভাবেই হয়ে থাকে বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে।

ইমপ্রুভমেন্ট নিয়ে আরও কিছু সুবিধার কথা কানে আসে। এর সঙ্গে ছাত্রদের জন্যে বেশ টাকা খরচের কথাও শুনতে পাই। হয়তো এগুলোর যৌক্তিকতা আছে। কিন্তু একই সঙ্গে কিছু প্রশ্নও মনে আসে। একজন ছাত্রকে কি নিরবচ্ছিন্নভাবে ভালো করতেই হবে, এর জন্যে কি সময় এবং অর্থ দুটোই অতিরিক্ত ব্যয় করতে হবে! জীবনের দুই একটি বিষয়ে পরীক্ষার ফল আশানুরূপ না হলেই কি জীবন থেমে যায়, দুই একটি কম ফলাফল মেনে নেওয়ার শক্তিরও কি দরকার নেই। জীবন অনেক বড়, শিক্ষাজীবনের ফলাফলের ওপর নির্ভর করে জীবনের অনেক কিছুই নির্ধারিত হয়ে যায় সত্য, তাই বলে দুই একটি বিষয়ে কম ভালো ফলাফলের জন্যে জীবন থেমে যায় না, বরং এটা সহজভাবে মেনে নিয়ে পরবর্তী কোর্সে ভালো করার মানসিকতা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কথা, এতে যেমন সময় নষ্ট হয় না, অতিরিক্ত মানসিক চাপ এড়িয়ে যাওয়া যায়, তেমনি অর্থেরও অপচয় হয় না।  

একইভাবে কিছু কিছু ছাত্রকে দেখা যায় পরীক্ষার সময় অজুহাত বের করতে। নিজের অসুস্থতাসহ পরিবারের অসুস্থতা, এমনকি অনেকের মৃত্যুর খবর পর্যন্ত আনা হয়। খুব কাছের কারোর মৃত্যুতে পরীক্ষা দেওয়ার মতো মানসিক অবস্থা না থাকারই কথা। সেক্ষেত্রে পরীক্ষা না দেওয়াটাও নিজের পরিবারের সদস্যদের প্রতি যেমন গভীর মানসিক সম্পর্কের আভাস পাওয়া যায়, তেমনি পরীক্ষা না দিয়ে এই ক্ষতি মেনে নেওয়াটাও একটি সাহসের বিষয় হতে পারে। জীবন কখনোই একইভাবে চলে না। কঠিন সময়ে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতাটাও খুবই প্রয়োজন। কিন্তু তাই বলে দূরের মানুষের মৃত্যুতে পরীক্ষা না দিয়ে পরীক্ষার শেষে শিক্ষককে তার পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলায় একজন ছাত্রের নিজের প্রতি খুব একটা সম্মান প্রকাশ পায় না। অথচ কিছু দিন আগেই ছাত্ররা বোর্ডের পরীক্ষা দিয়ে এসেছে। সেখানে কারও মৃত্যুর পর কি একজন ছাত্র পরীক্ষা না দিয়ে বোর্ডে গিয়ে বলতে পারে, অমুকের মৃত্যুর জন্যে আমি পরীক্ষা দিতে পারিনি, নতুন করে আমার পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখাপড়ায় অনেক সুযোগ সুবিধাই থাকতে পারে, সব সুবিধার যথেচ্ছ ব্যবহার করতে নেই, এতে নিজের প্রতি নিজের সম্মান কমে যায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক পরিবেশের ওপরও একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। অথচ ফাইনাল পরীক্ষার ক্ষেত্রে পরীক্ষা পেছানোর কথা বলার উপায় নেই। তাই আগে থেকেই নিয়ম মেনে কোনও অজুহাত না তুলে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করাটাই একজন ছাত্রের জন্যে বিশেষ সম্মানের।

একজন ছাত্রের জন্যে তার স্বাস্থ্য এবং তার পরিবারের অন্যদের স্বাস্থ্য অবশ্যই প্রথমে বিবেচনা করতে হবে। লেখাপড়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নয়। এক্ষেত্রে ছাত্রদের জন্যে একটি পরামর্শ হলো, নিজের অসুস্থতা বা পরিবারের কারোর বিশেষ অসুস্থতার কথা যেন শুরুতেই ডিপার্টমেন্টকে জানিয়ে রাখা হয়। এতে দরকার পড়লে একজন ছাত্রকে যেন ডিপার্টমেন্ট প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন মানেই হলো বাস্তবের সঙ্গে মিলিয়ে নিজেকে যতদূর সম্ভব গড়ে তোলা। বাস্তব জীবনে অনাকাঙ্ক্ষিত সবকিছু একপাশে ঠেলে দেওয়ার উপায় নেই। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও বাস্তব জীবনের অংশ এবং একে মেনে নিয়েই শিক্ষাজীবন চালিয়ে নিতে পারলে সামগ্রিকভাবে জীবন অনেক সহজ হয়ে যাওয়ার কথা। মেনে নেওয়ার চর্চাটা শিক্ষাজীবন থেকে শুরু করতে পারলে জীবনে লাভ বই ক্ষতি হয় না।  

এখন আসল কথায় আসি। এ পর্যন্ত যা বলেছি সেগুলোর অধিকাংশই কোর্স শিক্ষকরা তাদের ছাত্রদের উদ্দেশে বলে থাকেন। কিন্তু ছাত্রদের একটি অংশ এই কথাগুলো গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে চায় না। একই সঙ্গে ইম্প্রুভমেন্ট বা কোনও অজুহাতে পরীক্ষা না দেওয়ার ব্যাপারে ছাত্রদের নিজস্ব যৌক্তিক মতবাদ থাকতেই পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা অনেক বেশি বোঝে, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু একটা ব্যাপারে কিছু বলার আছে। আর সেটা হলো নিয়ম না মানার প্রবণতা। বড় হয়ে যাওয়া বা বেশি বোঝার মানে এই না, কেউ নিয়ম এড়িয়ে যাবে। বরং উল্টোটা হওয়ার কথা, যে যত বেশি বড় এবং যত বেশি বুঝবে, সে তত নিয়ম মানবে, শিক্ষকদের সঙ্গে একটি সম্মানজনক সম্পর্ক গড়ে তুলবে, বিশেষ করে লেখাপড়ার ব্যাপারে শিক্ষকদের পরামর্শ মেনে চলা প্রতিটি ছাত্রের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ার কথা। কারণ, লেখাপড়ার ব্যাপারে শিক্ষকদের অনেক দিনের একটি অভিজ্ঞতা আছে। এটা ঠিক, অনেক শিক্ষকই সবার মনের মতো করে পড়াতে পারবেন না, এটাই স্বাভাবিক। সেজন্যে একজন শিক্ষক চাইলেই সবকিছু সবাইকে শেখাতে পারেন না। কিন্তু একজন ছাত্র চাইলে যেকোনও শিক্ষকের কাছ থেকেই অনেক কিছু শিখে নিতে পারে। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সামগ্রিক পরিবেশের ব্যাপারে প্রতিটি ছাত্রেরই একটি ভূমিকা থাকে, এবং যথাযথভাবে এই ভূমিকা পালন করাও একজন ছাত্রের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।

দিনে দিনে ছাত্রদের মাঝে আরও একটি প্রবণতা মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে, আর তা হলো ঠিক সময় ক্লাসে হাজির না হওয়া। এর অনেক বাস্তব কারণ থাকতে পারে। কিন্তু ক্লাসে ঠিক সময়ে হাজির থাকার চেষ্টা না করাটা কোনোভাবেই একজন ছাত্রের জন্যে ভালো না। এতে নিজের জীবনের প্রতি একটি দায়সারা ভাব চলে আসে। তবে বিশেষ কয়েকজনের জন্যে আলাদা, ওরা দেরিতে আসলেই পড়াটা ঠিকই নিজের মতো করে বুঝে নেয়, এবং অনেকে অনেক ভালো করে, ওদের ব্যাপারটা সত্যিই আলাদা, তারপরেও এই দেরি করে ক্লাসে আসাতে নিজের প্রতি নিজের সম্মান প্রকাশ পায় না।

শিক্ষাজীবনের সঙ্গে ক্লাস এবং পরীক্ষা দুটোই অপরিহার্য। ক্লাসে দেরি করে আসা এবং অহেতুক পরীক্ষা পেছানোর জন্যে ছাত্রদের দিক থেকে নানান কারণ থাকতে পারে। যারা হলে থাকে, তাদের জন্যে একরকমের সমস্যা। যারা মেসে বা বাসায় থাকে, ওদের জন্যেও অনেক সমস্যা আছে। এই সমস্যার ভেতর দিয়েই সবাইকে চলতে হবে। এগুলো কম বেশি সবারই জানা। কিন্তু একবার কেউ পিছিয়ে পড়লে, তার দায়টা সহজে কেউই নিতে চায় না। দায়ের প্রশ্ন এলে হল প্রশাসন হয়তো বলবে, হলে তো আরও অনেক ছাত্র আছে, ওদের সমস্যা না হলে তোমার সমস্যা হবে কেন! ডিপার্টমেন্টও একজন ছাত্রের পিছিয়ে পড়ার দায় নিতে চাইবে না। আসলে সবার সব সমস্যা হল বা ডিপার্টমেন্টের পক্ষে সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। সেজন্যে নিজের জীবনের জন্যে একজন ছাত্রকেই এগিয়ে আসতে হবে, নিজেকে নিয়ে ভাবতে হবে। একই সঙ্গে শিক্ষকদের সঙ্গে একটা সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারলে লেখাপড়ার অংশটা একটু সহজ হয়ে যায়। তাদের পরামর্শ মানতে পারলে বেশ এগিয়েও যাওয়া যায়, অন্তত লেখাপড়ার ক্ষেত্রে।

একটা কথা মনে রাখতে হবে, লেখাপড়া জীবনে প্রায় সব ছাত্রেরই কোনও না কোনও একটি সংগ্রাম থাকে, একেক জনের সংগ্রাম একেক রকম। একই সঙ্গে এও মনে রাখতে হবে যে শিক্ষকদের জীবনেও অনেক সংগ্রাম আছে এবং চাইলেই সবাই সবকিছু করতে পারেন না। নিজের জীবনের সংগ্রাম এড়িয়ে অন্যের জীবনের সংগ্রাম সামাল দেওয়ার আশা করাটা অর্থহীন। সবার জীবনেই সংগ্রাম আছে, এবং এই সংগ্রাম করে টিকে থাকার নামই হয়তো জীবন।

একই সঙ্গে আরও একটি কথা গুরুত্বপূর্ণ – সবাইকে একই রকম ভালো করতে হবে তা নয়। ভালো করার মতো সবার মেধা আছে, কিন্তু মেধার সঙ্গে আগ্রহ না থাকলে ভালো করাটা একটু কষ্টকর। কিন্তু ভালো করার চেষ্টাটা চালিয়ে যেতে হবে। এর জন্যে শিক্ষকদের পরামর্শের সঙ্গে একটু নিয়ম মেনে চলতে পারলে লেখাপড়া জীবনটা অনন্ত সহজ হয়ে যেতে পারে।

একজন ছাত্রের জীবন শুধু তার নিজের জন্যে নয়, তার জীবন তার পরিবার, সমাজ, এবং রাষ্ট্রের জন্যে ভবিষ্যৎ। আশা করি এই বোধ কাজে লাগিয়ে প্রতিটি ছাত্রের জীবন হবে সম্মানিত এবং তার উপস্থিতি হবে সবার জন্যে আনন্দের। এর জন্যে নিজেকে নিয়ে নিজের ভাবনাটা খুবই জরুরি। নিজেকে নিয়ে ভাবনা আর শিক্ষকদের পরামর্শ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে প্রতিটি ছাত্র এগিয়ে যাবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশে গুরুত্বপূর্ণ এবং ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারবে – ছাত্রদের প্রতি এটাই আমাদের সামগ্রিক একটি আশা।

লেখক: শিক্ষক

/এসএএস/এমওএফ/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
কানে ডিভাইস নিয়োগ পরীক্ষার কেন্দ্রে বোন, বাইরে থেকে উত্তর বলার অপেক্ষায় ভাই
কানে ডিভাইস নিয়োগ পরীক্ষার কেন্দ্রে বোন, বাইরে থেকে উত্তর বলার অপেক্ষায় ভাই
কাভার্ডভ্যান-লরির মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই গাড়িতেই আগুন, প্রাণ গেলো একজনের
কাভার্ডভ্যান-লরির মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই গাড়িতেই আগুন, প্রাণ গেলো একজনের
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ
যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন তাইওয়ানের প্রতিনিধি
যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন তাইওয়ানের প্রতিনিধি
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ