X
শনিবার, ০৪ মে ২০২৪
২১ বৈশাখ ১৪৩১

রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের এক বছর ও ‘‘দেবী’’

স্বদেশ রায়
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০১:০৯আপডেট : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০১:০৯

ইউক্রেন- রাশিয়া যুদ্ধ বলা হোক আর ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন বলা হোক, এই ঘটনার শুরু কোনোমতেই আকস্মিক নয় এবং ২০২২-এর ফেব্রুয়ারির ২৪ তারিখও নয়। বাস্তবে ঘটনার শুরু দেখা যায় ২০১৪ থেকে। যে সময় থেকে রাশিয়া ইউক্রেনের ডনবাসে এক ধরনের বিদ্রোহী'র নামে সেখানে সশস্ত্র কার্যক্রম শুরু করে তখন থেকেই। ২০২২-এ যা ঘটে তা হলো সার্বিক আক্রমণ। 

তাই রাশিয়ার আক্রমণের সঙ্গে সঙ্গে ইউক্রেনের ও সেদেশের রাজধানীর সাধারণ নাগরিক অপ্রস্তুত হলেও এ যুদ্ধের দুই পক্ষকে মোটেই অপ্রস্তুত মনে হয়নি। ইউক্রেনের পক্ষে শক্ত অবস্থান নেওয়া আমেরিকা ও ইউরোপের বড় দেশগুলোর প্রতিটি পদক্ষেপ লক্ষ করলে বোঝা যায়, তাদের পূর্ব প্রস্তুতিতে খুব কোনও ঘাটতি ছিল না। এবং গত এক বছর ধরে তারা তাদের প্রস্তুতি অনুযায়ী প্রতিটি কাজ করে যাচ্ছে। এর বিপরীতে রাশিয়া তাদের প্রস্তুতিকে শতভাগ কাজে লাগাতে পারছে না। এমনকি বলা যায় তাদের ছক মতো সবকিছু রাশিয়া চালাতে পারছে না। 

যেমন রাশিয়ার আক্রমণের গতি-প্রকৃতি থেকে বোঝা যায় তারা শুরু থেকে একটি বড় যুদ্ধ আশা করেছিল। তাদের প্রথম দিকের সৈন্যদের মৃত্যুর হার দেখলে ও সৈন্যদের অনেকটা যুদ্ধে ছুড়ে দেওয়া দেখলে বোঝা যায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানি দখলে সোভিয়েত ইউনিয়ন যা করেছিল, রাশিয়া সে কাজটি করতে চেয়েছিল। স্টালিন যেমন ১০ মিলিয়ন সৈন্য'র জীবনের বিনিময়ে জার্মানিতে বিজয় এনেছিলেন, এখানে পুতিনও ক্ষয়ক্ষতি বা নিজের সৈন্যের মৃত্যুর দিকে না তাকিয়ে যুদ্ধে জয় আনবেন মনে করেছিলেন। 

কিন্তু এর বিপরীতে ইউক্রেন ও তার বন্ধুরা যুদ্ধকে ছোট পরিসরে এবং শুধু রাশিয়াকে ইউক্রেন থেকে বিতাড়িত করার যুদ্ধের মধ্যে রাখতে সমর্থ হয়েছে গত এক বছরে। যার ভেতর দিয়ে যুদ্ধের বাস্তব প্রকৃতি রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের ভেতর সীমাবদ্ধ আছে। ইউক্রেন ও তার মিত্ররা কোনোমতেই যুদ্ধকে ইউক্রেনের দিক থেকে রাশিয়া আক্রমণের দিকে নিয়ে যায়নি- যেখানে ইউক্রেনের বর্ডার থেকে সোজা লাইনে রাশিয়ার রাজধানী মস্কো ৪৫০ কিলোমিটার - যা অতি সাধারণ ক্ষেপণাস্ত্রের আওতায় পড়ে।

যুদ্ধকে এই ছোট আকারে সীমাবদ্ধ ও রাশিয়াকে বিতাড়িত করার যুদ্ধের ভেতর রাখার কারণ হয়তো মনে হতে পারে যাতে করে পরমাণু যুদ্ধের দিকে না যায়। এবং পুতিনের সর্বশেষ জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণেও দেখা যাচ্ছে তিনি পরমাণু যুদ্ধের জন্যে এক ধরনের উসকানি দিচ্ছেন। কিন্তু ইউক্রেন নেতা জেলেনস্কির নেতৃত্ব ও আমেরিকার অভিজ্ঞতা দুই মিলে গত এক বছরে রাশিয়ার এই ইউক্রেন আক্রমণকে অনেকটা আমেরিকার ভিয়েতনাম আগ্রাসনের চরিত্রে রূপ দিতে পেরেছে। এবং সেখানে ইউক্রেনের সাফল্যের হার ভিয়েতনামের থেকে অনেক এগিয়ে। কারণ, এ মুহূর্তেই ৯২% ইউক্রেনিয়ান মনে করেন, তারা অবশ্যই রাশিয়াকে বিতাড়িত করতে সমর্থ হবে। অর্থাৎ ইউক্রেনিয়ানদের মানসিকতায় যুদ্ধটা জাতীয়তাবাদী জনযুদ্ধে পরিণত হয়েছে। 

কোনও যুদ্ধ এভাবে জনযুদ্ধে পরিণত হয়ে গেলে সাধারণত দীর্ঘস্থায়ী হয়। ইউক্রেন যুদ্ধের গতি তাই শুরুতে যতটা দীর্ঘস্থায়ী হবে বলে মনে হয়েছিল তার থেকেও আরও বেশি দীর্ঘ হতে পারে। মূলত ইউক্রেন নেতা জেলেনস্কি ও  তার বন্ধুরা পুতিনকে এখন এই ফাঁদেই ফেলে দিয়েছে যে রাশিয়াকে এখন দীর্ঘস্থায়ী জনযুদ্ধ মোকাবিলা করতে হবে। আর যার পরিণতি হয় সবসময়ই আগ্রাসীর পরাজয়।

অন্যদিকে ভবিষ্যতের জয় পরাজয়কে গুরুত্ব না দিয়ে পুতিনও চাইবেন যেন যুদ্ধ কম হলেও ২০২৪ অবধি দীর্ঘ হয়। কারণ, ২০২৪-এ রাশিয়ার জাতীয় নির্বাচন। পুতিনের ইচ্ছে ছিল এই নির্বাচনের আগে তিনি বিজয়ী বীর হিসেবে জনগণের কাছে আসবেন। কিন্তু এখন তিনি বুঝতে পারছেন তা সম্ভব নয়- তাই যুদ্ধটাকে তাকে কাজে লাগাতে হবে নির্বাচনে। এ জন্যে ইতোমধ্যে তিনি লোকাল গভর্নমেন্টসহ অন্যান্য নির্বাচন শুরু করার উদ্যোগ নিয়েছেন।

আবার এর বিপরীতে জনযুদ্ধের কাছে পরাজিত হওয়া অভিজ্ঞ আমেরিকা এবার ইউক্রেনের জনযুদ্ধের পক্ষে। যার ফলে যুদ্ধের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে আমেরিকার অবস্থান অনেক বেশি সাধারণ মানুষের সমর্থন পেয়েছে দেশে দেশে। এমনকি আমেরিকার জনগণের কাছেও। তাছাড়া বাইডেন এই রাশিয়ার বিপক্ষে ইউক্রেনের জনযুদ্ধের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার ফলে আমেরিকায় যে একটা সাইকোলজিক্যাল ওয়ারে রাশিয়া অনেকটা এগিয়ে ছিল তারও পরিবর্তন ঘটেছে।  ট্রাম্পের আমেরিকার কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রক রাশিয়া এমন একটা সাইকোলজিক্যাল বিষয় আমেরিকান মানসিকতায় বেশ ক্ষেত্রে ছিল। সেখান থেকে বাইডেন আমেরিকাকে বের করে আনতে পেরেছেন। আবার গত এক বছরে বাইডেন এই ইউক্রেন যুদ্ধের পক্ষে দাঁড়িয়ে এটাও বুঝতে পেরেছেন, পৃথিবীতে আমেরিকার অবস্থান আগের থেকে পরিবর্তন হয়ে গেছে। সোভিয়েত পতনের পর পরই এমনকি গাল্ফ ওয়ারের সময়ও পৃথিবীর প্রায় সব দেশে যেমন কার্যত ( ডি ফ্যাক্টো) আমেরিকাই ছিল সেই অবস্থা এখন আর নেই। এখন অনেক দেশের নিজের মতো চলার সক্ষমতা অনেক বেশি। 

নিজের মতো চলার সক্ষমতা এশিয়াতে বেশি দেখিয়েছে ভারত ও চায়না। পৃথিবীতে সমরাস্ত্রের যুদ্ধের সঙ্গে সঙ্গে ইকোনমি ওয়ার এই প্রথম নয়। এটা পৃথিবীর যুদ্ধের ইতিহাসের শুরু থেকেই দেখা যায়। রোমান সাম্রাজ্য গড়তে সিজার এই ইকোনমি ওয়ারকে কাজে লাগিয়েছিলেন। আবার রোমান সাম্রাজ্য ভাঙতে মেহমুদও এই ইকোনমি ওয়ারকে কাজে লাগিয়েছিলেন। এমনকি জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে চার্চিল সৃষ্ট বেঙ্গল ফেমিনও ছিল বাস্তবে একটা ইকোনমি ওয়ার। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবীতে যে আধুনিক অর্থনীতি গড়ে উঠেছে তার সমস্ত মেশিনারিজ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আমেরিকা ও তার মিত্রদের হাতে থাকার কারণে পৃথিবী এই প্রথম একটা পরিপূর্ণ ইকোনমি ওয়ার দেখতে পাচ্ছে। তবে ইকোনমি ওয়ারে টিকে থাকার জন্যে নিজ দেশের সক্ষমতা যে অনেক বড় বিষয় তা চায়না ও ভারত অনেকখানি এবার পৃথিবীকে শিখিয়ে দিলো। 

অন্যদিকে ইউক্রেন তার এই যুদ্ধের ভেতর দিয়ে ছোট দেশগুলোর সামরিক সক্ষমতা গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তাও পৃথিবীর সামনে স্পষ্ট করলো। ভিয়েতনাম স্পষ্ট করেছিল গেরিলা যুদ্ধের সক্ষমতা, কিন্তু ইউক্রেনের প্রতিরোধ যুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হলো, ছোট দেশগুলোকে অবশ্যই সামরিক সক্ষমতা তৈরি করতে হবে। যেন বড় কোন দেশ তার প্রতি আগ্রাসী হলে সে তার অন্যান্য মিত্র দেশের সামরিক সহযোগিতা গ্রহণ করা ও ব্যবহার করার যোগ্যতা দেখাতে পারে। তাছাড়া গত এক বছরে আরও একটি বিষয় ইউক্রেন যুদ্ধসহ আরও কিছু ঘটনা দৃশ্যত সামনে নিয়ে আসছে, বড় দেশগুলো ভবিষ্যতে আর শুধু অর্থনৈতিক আগ্রাসনে নিজেদের সীমাবদ্ধ নাও রাখতে পারে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী ও সর্বশেষ সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এমনটি স্পষ্ট হয়েছিল, ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক আগ্রাসনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে বড় বড় দেশগুলো। কিন্তু সে ভাবনার সঙ্গে গত এক বছরে প্রশ্ন জুড়ে যাবার অনেক কারণ ঘটেছে। যা এখানে উল্লেখ করতে গেলে লেখা অনেক দীর্ঘ হয়ে যাবে। তবে কারণগুলো বর্তমানের কিছুটা উন্মুক্ত মিডিয়ার কারণে কম বেশি সকলেই জানেন। 

অন্যদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানির দাম বেড়েছে এটা শতভাগ যে সত্য নয় তাও কিন্তু গত এক বছরে প্রমাণিত হয়েছে। বিশেষ করে ১৯৭৩-৭৪-এর জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার চরিত্রগুলোর সঙ্গে একটু ভালো করে মিলিয়ে দেখলে দেখা যাবে, বর্তমানের জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে অনেক বেশি মিল আছে। ১৯৭৩-৭৪-এ জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার মূল কারণ ছিল আমেরিকাসহ বেশ কিছু দেশে তেলের ব্যবহার বা চাহিদা বেড়ে যাওয়া। আর এই তেলের ব্যবহারের বিপরীতে তখন উৎপাদক দেশগুলো সংঘবদ্ধভাবে তেলের দাম বাড়িয়েছিল। বাজারে চাহিদা থাকলে যেকোনও পণ্য ব্যবসায়ে কার্টেল পদ্ধতি বা সংঘবদ্ধভাবে দাম বাড়ানোর পদ্ধতি একটি অতি প্রচলিত পদ্ধতি। এর বিকল্প না পাওয়া অবধি এই কার্টেল ভাঙা যায় না। এবারও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার মূল কারণ ব্যবহার বেড়ে চাওয়া। আমেরিকার জ্বালানি তেলের চাহিদা বিন্দুমাত্র কমেনি। অন্যদিকে চায়নার জ্বালানি তেলের ক্ষুধা এখন সীমাহীন। ১৯৭৩-এ চায়নার চাহিদা ৪%-এর কাছাকাছি ছিল। তারা এখন পৃথিবীর সব থেকে বড় জ্বালানি তেল চাহিদার দেশ। এর পাশাপাশি পৃথিবীর সব থেকে বেশি জনগোষ্ঠীর দেশ ভারতের জ্বালানি তেলের চাহিদা এখন ছুটছে দুরন্ত গতিতে। পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সকলেরই এখন জ্বালানি তেলের চাহিদা বেড়ে গেছে। তাই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ না হলেও জ্বালানি তেলের দাম এর কাছাকাছিই থাকতো। যেমনটি ঘটেছে পাম ওয়েলের ক্ষেত্রে। যা বেড়েছে চাহিদার কারণে এই যুদ্ধের অনেক আগে। বরং এই যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার ওপর আমেরিকার অর্থনৈতিক অবরোধ আসায় কম মূল্যে জ্বালানি নিয়ে লাভবান হচ্ছে চায়না ও ভারত। 

তবে রাশিয়া তার জ্বালানির জন্যে চায়না ও ভারতকে বড় ক্রেতা হিসেবে এই অর্থনৈতিক অবরোধের মধ্যে পেলেও মূলত অর্থনৈতিকভাবে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাকে কম দামেই জ্বালানি বিক্রি করতে হচ্ছে। তাই সে হিসেবে জ্বালানি বা অন্যান্য ব্যবসার ক্ষেত্রে চায়না ও ভারত আমেরিকার অবরোধ না মানলেও মূলত এই অবরোধের ফলে রাশিয়া ক্ষতিগ্রস্তই হচ্ছে। দুর্বল হচ্ছে তাদের অর্থনীতি। অন্যদিকে পণ্যের ক্রেতা হিসেবে রাশিয়া যদিও চায়না ও ভারতকে পাচ্ছে কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধে এ দুই দেশকে পাশে পায়নি এবং পাবারও সম্ভাবনা নেই। কারণ, যে চায়নাকে নিয়ে পুতিনের সব থেকে বেশি আশা ছিল সেই চায়নার কূটনীতিক ২২ ফেব্রুয়ারিও বলেছেন, ‘চায়না বহুমাত্রিক বিশ্ব ও সম্পর্কের গণতন্ত্রায়নে বিশ্বাসী'।  

আবার গত এক বছরে বারবার বলা হচ্ছে, রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহে বাধা পড়ায় ইউরোপের অর্থনীতি দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে কি ইউরোপের অনেক দেশের অর্থনীতির দুর্বলতা গত এক দশকের বেশি সময় ধরে ধীরে ধীরে প্রকাশ পাচ্ছে না? তাই ইউক্রেন যুদ্ধই ইউরোপের বর্তমান অর্থনীতির টানাপোড়েনের মূল কারণ, এ বক্তব্যেও কি কিছু প্রশ্ন এসে যায় না? 

যদিও পুতিন বারবার বলার চেষ্টা করছেন, রাশিয়া নয়, অর্থনৈতিক অবরোধের ফলে সমস্যায় পড়েছে ইউরোপ। যা তিনি তার সর্বশেষ জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণেও বলেছেন। পুতিনের এই সর্বশেষ ভাষণে- ইউরোপের অর্থনীতি ও নিউক্লিয়ার ওয়ারের প্রস্তুতি এই দুটি দিক ভবিষ্যতের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, পুতিনের মতো অটোক্রেটিক নেতারা যুদ্ধের কোনও একটা সময় গিয়ে কিন্তু নিজেই বিশ্বাস করে বসেন, তিনি আসলেই ভয়াবহ ও বড় একটি যুদ্ধে জয়লাভ করার ক্ষমতা রাখেন। এই বিশ্বাসটি অনেকটা প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায়ের ‘দেবী' গল্পের নায়িকা দয়াময়ীর মতোই ঘটে থাকে। দয়াময়ীর শ্বশুর স্বপ্নে তার পুত্রবধূকে দেবী হিসেবে দেখার পরে তার শ্বশুরসহ আশপাশের প্রায় সকলে মিলে দয়াময়ীকে দেবীর আসনে বসিয়ে দেয়। যা কোনও একসময়ে দয়াময়ীকেও ভুলিয়ে দেয় সে সাধারণ মানুষ। সে নিজেও দেবীর আসনে বসে যায় মানসিকভাবে। সে নিজেকে দেবী হিসেবে বিশ্বাস করতে শুরু করে। তার স্বামীকে ত্যাগ করে নিজের দেবীত্বকেই সত্য মনে করে। এই দেবীত্ব বা নিজেকে সাধারণ মানুষ মনে না করাই মূলত ডিক্টেটরদের চরিত্র। সব ডিক্টেটর শেষ অবধি তার দেশ ও জনগণের সকল স্বার্থ, সকল বাস্তবতাকে বাদ দিয়ে নিজের দেবীত্বতেই বিশ্বাস করে, যা  হিটলারও করেছিলেন। এ কারণে ইউক্রেন- রাশিয়া যুদ্ধের গতি প্রকৃতি ও তার ফলাফল যেদিকেই যাক না কেন, একনায়ক পুতিনের মানসিকতা এই যুদ্ধ ঘিরে সবসময়ই একটা অনিশ্চয়তায় রাখবে পৃথিবীকে।

লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক। সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্যে রাষ্ট্রীয় পদকপ্রাপ্ত।

/এফআর/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
মিল্টন সমাদ্দারের স্ত্রীকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছে ডিবি
মিল্টন সমাদ্দারের স্ত্রীকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছে ডিবি
পদ্মশ্রী পাওয়া শিল্পী এখন দিনমজুর!
পদ্মশ্রী পাওয়া শিল্পী এখন দিনমজুর!
সিলেটে এয়ার অ্যাস্ট্রার বিজনেস পার্টনার মিট
সিলেটে এয়ার অ্যাস্ট্রার বিজনেস পার্টনার মিট
ডি মারিয়ার সঙ্গে চুক্তির গুঞ্জনে যা বললেন মায়ামি কোচ
ডি মারিয়ার সঙ্গে চুক্তির গুঞ্জনে যা বললেন মায়ামি কোচ
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ