X
বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫
১৮ আষাঢ় ১৪৩২

গর্ত খোঁড়ার উন্নয়ন

আমীন আল রশীদ
২০ মার্চ ২০১৬, ১২:১০আপডেট : ২০ মার্চ ২০১৬, ১২:১২

আমীন আল রশীদউন্নয়নের সহজ সংজ্ঞা হলো, গতকালের চেয়ে ভালো থাকা। অর্থাৎ গতকাল যেটি ছিল বাঁশের সাঁকো, আজ সেটি কালভার্ট অথবা সেতু। গতকাল যেটি টিনের ঘর, আজ সেটি দালান।
কিন্তু এই উন্নয়নকে টেকসই করার জন্য লাগে সুশাসন। অর্থাৎ সেতু কালভার্ট নির্মাণে যদি আপনি অর্ধেকের বেশি চুরি করেন, যদি প্রয়োজনীয় ইট-রড-বালু-সিমেন্ট না দেন, তাহলে সেই উন্নয়নের চাপায় নাগরিকের মৃত্যু হবেই।
উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে যদি সঠিক নজরদারি আর জবাবদিহিতা না থাকে, তাহলে ফ্লাইওভারের লোহার টুকরা পড়ে পথচারীর মৃত্যু নিশ্চিত; তখন গ্যাসের পাইপলাইন বিস্ফোরণে একটি পরিবার পুড়ে ছারখার হবেই; সেই উন্নয়নের গর্তে পড়ে নাগরিকের জীবন বিপন্ন হবেই। বস্তুত বছরের পর বছর এসব উন্নয়নই হচ্ছে রাজধানী ঢাকায়। শুধু ঢাকাতেই নয়-সারাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নের চিত্র মোটামুটি একইরকম।
ঢাকা শহরের যে এলাকাতেই আপনার বসবাস হোক না কেন, বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান যেমন- ওয়াসা, তিতাস, সিটি করপোরেশন বা টিঅ্যান্ডটির বছরব্যাপী নানাবিধ ‘উন্নয়ন কমর্কাণ্ডে’ আপনি অবশ্যই অতিষ্ঠ। আপনার বাসা যদি হয় একটু গলির ভেতরে, তাহলে আপনার দুর্ভোগ আরও বেশি।
বাসা থেকে বের হয়েই দেখবেন রাস্তাজুড়ে খোঁড়াখুঁড়ি। তার ওপর একটু বৃষ্টি হলে পুরো পথ কাদায় মাখামাখি। আপনার ইস্ত্রিকরা শুভ্র জামা-কাপড় আর পলিশড জুতোর ওপর দিয়ে যাবে উন্নয়নের রেলগাড়ি। আপনি নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলবেন। বির বির করবেন। বিরক্তি প্রকাশ করবেন। কিন্তু কাউকে কিছু বলতে পারবেন না। বললেও কেউ আপনার কথা কানে নেবে না। আপনি আপনার ওয়ার্ড কমিশনারের কাছেও যেতে পারবেন না। কারণ এসব উন্নয়নের দেখভাল তারা করেন না। তাদের আরও অনেক ‘গুরুত্বপূর্ণ’ কাজ আছে। আবার এসব কাজের দেখভাল করার এখতিয়ারও অনেক সময় তাদের থাকে না। অতএব চোখের সামনেই আপনি দেখতে থাকবেন বছরজুড়ে এসব উন্নয়নের নৈরাজ্য। রাজধানীর ভাগ্যবান নাগরিক হিসেবে আপনাকে উন্নয়নের এই যাঁতাকলে পিষ্ট হতে হবেই।
২.

নতুন ও উন্নত পাইপলাইন বসিয়ে নাগরিককে আরও বেশি পরিমাণে এবং আরও বিশুদ্ধ পানি দেওয়ার দায়িত্ব ওয়াসার। তারা সেই মহান ব্রত পালনের জন্য দফায় দফায় রাস্তা খুঁড়ে যাবে এবং তারপর তিতাসেরও মনে হবে, নাগরিকের জীবনমান উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার স্বার্থে গ্যাসের পাইপলাইন সংস্কার করা দরকার। সুতরাং তারাও রাস্তা খুঁড়বে। এরপর টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মনে হবে, যোগাযোগই শক্তি। অতএব অপটিক্যাল ফাইবার লাইন বসাতে হবে। কিন্তু রাস্তা খুঁড়ে চলে যাবার পরে কারা ওই রাস্তাটি সংস্কার করবে বা যানবাহন ও নাগরিকের চলাচলের উপযোগী করে তুলবে, সেই লোক আপনি খুঁজে পাবেন না। ফলে উন্নয়নের এই ঘানি আপনাকে টানতেই হবে।

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
হোলি আর্টিজানের ঘটনার বিষয়ে ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্য নিয়ে যা জানালো ডিএমপি
হোলি আর্টিজানের ঘটনার বিষয়ে ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্য নিয়ে যা জানালো ডিএমপি
এনআরবিসি ব্যাংকের অডিট কমিটির সভা
এনআরবিসি ব্যাংকের অডিট কমিটির সভা
কলার চেয়েও বেশি পটাশিয়াম মেলে এই ৪ খাবারে
কলার চেয়েও বেশি পটাশিয়াম মেলে এই ৪ খাবারে
ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলেও ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থা রয়ে গেছে: নাহিদ ইসলাম
ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলেও ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থা রয়ে গেছে: নাহিদ ইসলাম
সর্বশেষসর্বাধিক