X
মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
৩ আষাঢ় ১৪৩২

ট্রাম্পের ইসরায়েলপন্থি মন্ত্রিসভা বাছাইয়ে হতাশ মুসলিম ভোটাররা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৩:০১আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪:৩৭

নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড  ট্রাম্পের মন্ত্রিসভার সদস্য বাছাই নিয়ে হতাশা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুসলিম নেতারা। গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ ও লেবাননের ওপর হামলায় বাইডেন প্রশাসনের সমর্থনের প্রতিবাদে রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন করেছিলেন এই মুসলিম নেতারা। কিন্তু ট্রাম্পের নতুন মন্ত্রিসভা পদের জন্য বাছাই করা ব্যক্তিদের দেখে গভীরভাবে হতাশ হয়েছেন বলে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন তারা।

ফিলাডেলফিয়ার বিনিয়োগকারী রাবিউল চৌধুরী। পেনসিলভানিয়ায় কমলা হ্যারিসকে ত্যাগ কর প্রচারের নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গের ‘মুসলিমস ফর ট্রাম্প’ প্রতিষ্ঠা করেন। রয়টার্সকে তিনি বলেছেন, ‘ট্রাম্প আমাদের কারণে জিতেছেন। কিন্তু আমরা তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে বাছাই করা ব্যক্তি ও অন্যদের নিয়ে সন্তুষ্ট নই।’

কৌশলবিদরা মনে করেন, ট্রাম্পের প্রতি মুসলিমদের সমর্থন তাকে মিশিগান রাজ্যে জিততে সাহায্য করেছিল। এছাড়া অন্য দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতেও ট্রাম্পের জয়ে তারা ভূমিকা রেখেছেন।

ট্রাম্প রিপাবলিকান সিনেটর ও ইসরায়েলের কট্টর সমর্থক মার্কো রুবিওকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে নিয়োগ দিয়েছেন।

চলতি বছরের শুরুতে রুবিও গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন যে তিনি বিশ্বাস করেন ইসরায়েলকে হামাসের ‘প্রত্যেকটি উপাদান’ ধ্বংস করা উচিত। তিনি হামাসকে ‘নিষ্ঠুর প্রাণী’ বলে উল্লেখ করেছেন। 

নতুন প্রশাসনে ইসরায়েলপন্থিদের মনোনীত করেছেন ট্রাম্প। ছবি: বিবিসি।

এছাড়া সাবেক আরকানসাস গভর্নর মাইক হাকাবিকে ইসরায়েলে পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত করেছেন ট্রাম্প। হাকাবি কট্টর ইসরায়েলপন্থি রক্ষণশীল নেতা হিসেবে পরিচিত। পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি দখলের সমর্থক এবং ফিলিস্তিনে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানকে 'অকার্যকর' বলে অভিহিত করেছেন তিনি।

রিপাবলিকান প্রতিনিধি এলিস স্টেফানিককে জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাম্প। গাজায় হত্যার নিন্দা জানানোয়  জাতিসংঘকে ‘ইহুদিবিদ্বেষের দুর্গন্ধময় স্থান’ বলেছিলেন তিনি।

আমেরিকান মুসলিম এনগেজমেন্ট অ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্ট নেটওয়ার্ক (এএমইইএন) এর নির্বাহী পরিচালক রেক্সিনাল্ডো নাজারকো বলেছেন, মুসলিম ভোটারদের আশা ছিল-ট্রাম্প শান্তির জন্য কাজ করবে এমন মন্ত্রিসভার সদস্যদের বেছে নেবেন। কিন্তু তার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ‘আমরা খুবই হতাশ’, তিনি বলেন। ‘মনে হচ্ছে এই প্রশাসন পুরোপুরি রক্ষণশীল, চরম ইসরায়েলপন্থি ও যুদ্ধপন্থি লোকদের দিয়ে পরিপূর্ণ। ট্রাম্পের শান্তি এবং যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনের পক্ষের প্রচারণার ব্যর্থতা এটি।’

নাজারকো আরও বলেন, ‘তবে গাজায় যুদ্ধের অবসান নিয়ে তাদের চাপ অব্যাহত থাকবে। অন্তত আমরা এখনও মানচিত্রে আছি।’

মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক এবং ‘কমলা হ্যারিসকে ত্যাগ কর’ প্রচারণার সহ-প্রতিষ্ঠাতা হাসান আবদেল সালাম বলেছেন, ট্রাম্পের কর্মী পরিকল্পনাগুলো চরম হবে বলে তিনি আগে থেকেই জানতেন। কিন্তু এটি তার প্রত্যাশার চেয়েও বেশি প্রমাণিত হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময়ই সন্দেহপ্রবণ ছিলাম... অবশ্যই আমরা এখনও অপেক্ষা করছি প্রশাসন কোথায় যাবে তা দেখার জন্য। কিন্তু নতুন প্রশাসনের কর্মী বাছাই যেন ইসরায়েলপন্থি কার্যক্রমকে অত্যন্ত চরমভাবে বাস্তবায়নের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।'

এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক মন্তব্যের জন্য রয়টার্সের পাঠানো কোনও ইমেইলের জবাব দেয়নি ট্রাম্পের প্রচারণা শিবির।

কয়েকজন মুসলিম এবং আরব ট্রাম্প সমর্থক বলেছেন, তারা আশা করেছিলেন যে ট্রাম্পের প্রাক্তন জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক রিচার্ড গ্রেনেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। রিচার্ড গ্রেনেল মুসলিম ও আরব আমেরিকান সম্প্রদায়ের কাছে মাসব্যাপী প্রচারণা চালিয়েছেন এবং তাকে সম্ভাব্য পরবর্তী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছিল।

ট্রাম্পের আরেক গুরুত্বপূর্ণ মিত্র ও তার মেয়ে টিফানির লেবানিজ শ্বশুর মাসাদ বুলোস আরব আমেরিকান এবং মুসলিম নেতাদের সঙ্গে বারবার সাক্ষাৎ করেছিলেন। আরব আমেরিকান এবং মুসলিম ভোটারদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, ট্রাম্প শান্তির প্রার্থী এবং তিনি মধ্যপ্রাচ্য ও এর বাইরের যুদ্ধগুলো দ্রুত বন্ধ করবেন।

ট্রাম্প নিজেও আরব আমেরিকান এবং মুসলিম জনসংখ্যার বৃহত্তম শহরগুলোতে বিশেষ করে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম শহর ডিয়ারবোর্নে বেশ কয়েকবার সফর করেছেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, তিনি মুসলিমদের ভালোবাসেন। এছাড়া পিটসবার্গ শহরে ‘মুসলিমস ফর ট্রাম্প’কে  সুন্দর আন্দোলন বলে উল্লেখ করেছিলেন তিনি।

ডিয়ারবোর্ন হাইটসের মেয়র বিল বাজ্জিও ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়েছিলেন। বিল বাজ্জিও বলেছেন, তিনি নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তিনবার সাক্ষাৎ করেছেন। মন্ত্রিসভার নিয়োগ সত্ত্বেও তিনি এখনও বিশ্বাস করেন যে ট্রাম্প যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য কাজ করবেন।

মিশিগানে রিপাবলিকান পার্টির ভাইস চেয়ার ফর আউটরিচ ও লেবানিজ আমেরিকান মুসলিম রোলা মাক্কি তার সঙ্গে একমত পোষণ করেন। বলেন, ‘আমি মনে করি না ট্রাম্পের প্রতিটি নিয়োগ সবাইকে খুশি করবে।' তবে ফলাফলটাকেই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন তিনি।

সূত্র: রয়টার্স

/এস/
টাইমলাইন: মার্কিন নির্বাচন ২০২৪
১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৩:০১
ট্রাম্পের ইসরায়েলপন্থি মন্ত্রিসভা বাছাইয়ে হতাশ মুসলিম ভোটাররা
০৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৬
০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৩:১০
০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৮:৩৯
সম্পর্কিত
আবারও এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি, কলকাতায় জরুরি অবতরণ
ম্যাক্রোঁকে আক্রমণ ট্রাম্পের, বললেন যুদ্ধবিরতি নয়, বড় কিছু ঘটছে
যুক্তরাষ্ট্রে সোশ্যাল মিডিয়াই এখন সংবাদের প্রধান উৎস
সর্বশেষ খবর
আবারও এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি, কলকাতায় জরুরি অবতরণ
আবারও এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি, কলকাতায় জরুরি অবতরণ
সব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণসহ ৬ দাবি শিক্ষকদের
সব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণসহ ৬ দাবি শিক্ষকদের
বটগাছের ডালে ঝুলে ছিল ট্রাকচালকের মরদেহ
বটগাছের ডালে ঝুলে ছিল ট্রাকচালকের মরদেহ
‘ওয়াস বাজেট বণ্টনে গভীর বৈষম্য’ 
‘ওয়াস বাজেট বণ্টনে গভীর বৈষম্য’ 
সর্বাধিক পঠিত
ক্রিকেটার সাকিবসহ ১৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
ক্রিকেটার সাকিবসহ ১৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
শপথের সুযোগ নেই, পরিপক্ব আচরণ প্রত্যাশা করি: আসিফ মাহমুদ
শপথের সুযোগ নেই, পরিপক্ব আচরণ প্রত্যাশা করি: আসিফ মাহমুদ
ইরানের ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা ‘অবমূল্যায়ন’ করেছে ইসরায়েল
ইরানের ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা ‘অবমূল্যায়ন’ করেছে ইসরায়েল
তেহরানের আকাশসীমায় পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার দাবি ইসরায়েলের
তেহরানের আকাশসীমায় পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার দাবি ইসরায়েলের
জয়ের পথে ইসরায়েল: নেতানিয়াহু
জয়ের পথে ইসরায়েল: নেতানিয়াহু