X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ওয়াকি-টকি তৈরি হয়েছিল যেভাবে

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫:০০আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫:০৭

একাত্তরের আগস্টে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের সর্বত্র। মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে পাকিস্তানি বাহিনী বিপর্যস্ত। একদিকে সুসজ্জিত সেনাবাহিনী আরেক দিকে বাংলার দামাল ছেলেরা। সেই সুসজ্জিত বাহিনীর চলাচল থেকে শুরু করে যুদ্ধের ময়দানে লড়াই চালিয়ে যেতে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে যোগাযোগটা ছিল অনিবার্য। বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদেরকেও তাই বেতার যন্ত্র ওয়াকি-টকি ব্যবহার করতে হয়েছিল।

১৯৭২ সালে প্রকাশিত পত্রিকায় প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধির এক প্রতিবেদনে জানা যায় কীভাবে ওয়াকি-টকি পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধারা বলছেন, ওয়াকি-টকি না থাকায় শুরুর দিকে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়েছে। কেননা, যুদ্ধে সেনাদের মধ্যে যথাযথ যোগাযোগই জয়ের পথে নিয়ে যায় সহজে। তাই যুদ্ধের শুরুতে এই কমতিকে মাথায় রেখেই সামনে এগিয়েছে মুক্তিযোদ্ধারা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেঙ্গল রেজিমেন্ট পুলিশ বাহিনী কিছু কিছু ওয়্যারলেস সেট নিয়ে গিয়েছিল বটে, কিন্তু সংখ্যায় ছিল নগণ্য। খোঁজ পড়লো প্রকৌশলীদের। বাংলাদেশের যেসব প্রকৌশলী তখন কলকাতায় ছিলেন তারা প্রয়োজনের গুরুত্ব অনুভব করলেন। তারা নিজেরাই ওয়্যারলেস সেট ও ওয়াকি-টকি বানানোর চেষ্টা করলেন।

প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ কৌশল বিভাগের তরুণ অধ্যাপক হাসিবুর রহমান তখন কলকাতায়। ১৯৬৯ সালে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ট্রান্সমিটার ছিল সেটাকে কাজের উপযোগী করতে গিয়ে কিছুটা অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলেন তিনি। দায়িত্ব পড়ল তার ওপর। স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগদানকারী বাংলাদেশের অন্য প্রকৌশলীরা তখন বিভিন্ন সেক্টরে ব্যস্ত। হাসিবুর রহমান এবং বাংলাদেশ ওয়াপদার জাফর নামের একজন তড়িৎ প্রকৌশলী মিলে ওয়াকি-টকির মডেল ডিজাইন করেন।

এতই কি সহজ ছিল? ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, কাজটি করতে গিয়ে সমস্যা দেখা দিল দুটো—টাকা এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। ওই দুজন তখন বাংলাদেশ মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে দেখা করলেন। সদস্যরা তাদের ভারতের কয়েকজন ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিলেন। ভারতের বন্ধু প্রকৌশলীরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলেন। বস্তুতঃ তাদের সাহায্য না পেলে ওই সময় ট্রান্সমিটার তৈরি করা সম্ভব হতো না।

সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মোট ৩০-৪০টি ট্রান্স-রিসিভার ও ৫০টির মতো ওয়াকি-টকি। তবে এগুলোর রেঞ্জ খুব বেশি ছিল না। ৩০ থেকে ৬০ মাইলের মধ্যে ব্যবহার উপযোগী ছিল ট্রান্স-রিসিভারগুলো। ওয়াকি-টকির রেঞ্জ ছিল ৮-১০ মাইল।

মুক্তিযোদ্ধা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, যুদ্ধে আমাদের দিক থেকে ওয়াকি-টকি ব্যবহার ব্যাপক ছিল বলা যাবে না। আমরা ছিলাম ১১ নম্বর সেক্টরে। সেখানে যারা নেতৃত্ব দেন তার সঙ্গে যোদ্ধাদের যোগাযোগই মূল লক্ষ্য। সবার কাছে তো থাকতো না। কোম্পানি কমান্ডারের কাছে হয়তো থাকতো। আমি নিজে যুদ্ধের শেষের দিকে এর ব্যবহার দেখেছি।

উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, কর্নেল তাহের যেদিন আহত হলেন, ১৯৭১ সালের ১৪ নভেম্বর, সেটা বড় যুদ্ধ ছিল। সেখানে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে যারা ছিলেন তাদের কাছে ওয়াকি-টকি ছিল। দেখতে কী রকম ছিল প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রযুক্তিতো তখন এত উন্নত ছিল না। সাইজটা একটু বড় ছিল। ছয়-সাত ইঞ্চি লম্বা ছিল। বহন করা যেত এক হাতেই।

/এফএ/
টাইমলাইন: বিজয়ের ৫০
১৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১৯:০০
১৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫:০০
মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ওয়াকি-টকি তৈরি হয়েছিল যেভাবে
১৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:০০
১৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১০:০০
১৬ ডিসেম্বর ২০২১, ০৯:০০
১৬ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০১
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
রাফায় আবারও ব্যাপক হামলা ইসরায়েলের
রাফায় আবারও ব্যাপক হামলা ইসরায়েলের
স্ত্রীকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছেলে, রান্নাঘরে পুড়ে মারা গেলেন মা
স্ত্রীকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছেলে, রান্নাঘরে পুড়ে মারা গেলেন মা
২৫ দিনেও গ্রেফতার হয়নি কেউ, পুলিশ বলছে সিসিটিভির ফুটেজ পায়নি
কুমিল্লা শিক্ষা প্রকৌশল কার্যালয়ে ঠিকাদারকে মারধর২৫ দিনেও গ্রেফতার হয়নি কেউ, পুলিশ বলছে সিসিটিভির ফুটেজ পায়নি
উপজেলা নির্বাচন: অংশ নিতে পারবেন না পৌর এলাকার ভোটার এবং প্রার্থীরা
উপজেলা নির্বাচন: অংশ নিতে পারবেন না পৌর এলাকার ভোটার এবং প্রার্থীরা
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ