X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১

মিয়ানমার বিষয়ে বাংলাদেশের কৌশল পরিবর্তন জরুরি

শেখ শাহরিয়ার জামান
২১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৭:১৫আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৭:১৫

২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গা ঢল শুরু হওয়ার পরে মিয়ানমার নিয়ে বাংলাদেশের যে পররাষ্ট্রনীতি সেটির প্রায় পুরোটাই রোহিঙ্গা-কেন্দ্রিক। ওই নীতিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনকে মূল বিষয়বস্তু ধরে মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ করা এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিষয়টিকে উল্লেখযোগ্যভাবে তুলে ধরার প্রয়াস নেওয়া হয়।

ওই সময়ে সামরিক বাহিনীর বাইরে মূল খেলোয়াড় ছিল অং সান সুচি’র নেতৃত্বে মিয়ানমারে রাজনৈতিক সরকার, জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং আন্তর্জাতিক বিচারিক সংস্থাগুলো। ২০২১ সালে মিয়ানমারে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয় এবং ক্যু’র মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে সামরিক জান্তা। এর ফলে খেলোয়াড়দের মধ্যে বড় ধরনের একটি পরিবর্তন দেখা দেয়। খেলোয়াড়দের পরিবর্তনের কারণে গোটা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার যে সমীকরণ সেটির বড় ধরনের পরিবর্তন হয়। নতুন যুক্ত হওয়া খেলোয়াড়দের মধ্যে রয়েছে রাখাইনে আরাকান আর্মি, বিদেশে মিয়ানমারের স্বঘোষিত সরকার ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি) এবং মিয়ানমারের নতুন সামরিক জান্তা। অন্যদিকে বাদ পড়ে যায় অং সান সুচি’র নেতৃত্বে মিয়ানমারের রাজনৈতিক সরকার। এছাড়া রাখাইনে আরাকান ন্যাশনাল পার্টি দুর্বল হয়ে পড়ে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে নতুন একটি বোঝাপড়া বা সমীকরণ অত্যন্ত জরুরি। আরাকান আর্মি এবং এনইউজি রোহিঙ্গাদের প্রতি সহানুভূতিশীল। এই সহানুভূতি অং সান সুচি’র নেতৃত্বাধীন মিয়ানমারে রাজনৈতিক সরকার প্রদর্শন করেনি। অন্যদিকে মিয়ানমারের নতুন সামরিক জান্তারা কখনোই রোহিঙ্গাদের স্বীকার করেনি।

নতুন এই প্রেক্ষাপটে মিয়ানমার নিয়ে রোহিঙ্গা-কেন্দ্রিক পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নের জন্য নতুন কৌশল প্রয়োজন। নতুন যুক্ত হওয়া খেলোয়াড়দের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে বলে প্রতীয়মান হয় না। যেমন, রোহিঙ্গাদের যদি আরাকানে ফেরত পাঠাতে হয় তবে আরাকান আর্মির সঙ্গে অবশ্যই একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে হবে। অন্যদিকে প্রত্যাবাসনের দীর্ঘমেয়াদি সুফলের জন্য এনইউজির সমর্থন লাগবে।

২০১৬ সালে বাংলাদেশের বোধোদয়

১৯৬০-এর দশক থেকে রোহিঙ্গারা নিয়মতান্ত্রিকভাবে নির্যাতনের শিকার। এরফলে ১৯৭৯ এবং ১৯৯২ সালে রোহিঙ্গারা দুই দফা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে এবং তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রত্যাবাসন করা সম্ভব হয় মিয়ানমারের তুলনামূলক দুর্বলতা এবং চীন, ভারত ও আসিয়ান দেশগুলোর ভিন্ন অবস্থানের কারণে।  

২০১২ সালে মিয়ানমার সরকারের প্ররোচনায় জাতিগত দাঙ্গা শুরু হয় রাখাইনে। এর ফলে তখন থেকে অল্প অল্প করে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসা শুরু করে। ২০১৬ সালে দাঙ্গা বড় আকার ধারণ করে। ওই সময়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে বড় একটি পরিবর্তন আনা হয়।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির একটি বড় দিক হচ্ছে জাতিসংঘ বা আন্তর্জাতিক ফোরামে দেশভিত্তিক কোনও রেজুলেশন আনা হলে বাংলাদেশ সেটিকে কখনোই সমর্থন করে না। এর বড় পরিবর্তন আনা হয়েছিল ২০১৬ সালে যখন মিয়ানমারের পরিস্থিতি তদন্ত করার জন্য জাতিসংঘে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিংস মিশন গঠন করার প্রস্তাবে বাংলাদেশ সমর্থন দেয়। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সমর্থন দেওয়ায় ওই সময়ে মিয়ানমারের একজন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক বলেছিলেন, ‘আমরা মনে করেছিলাম বাংলাদেশ আমাদের বন্ধু।’

এখানে উল্লেখ্য, ২০১৬-এর আগে মিয়ানমারের মানবাধিকার লঙ্ঘন সংক্রান্ত যত রেজুলেশন আন্তর্জাতিক ফোরামে ভোটাভুটি হয়েছে, এর কোনোটিতে বাংলাদেশ ভোট দেয়নি। যদিও মিয়ানমার বাংলাদেশের এই সদিচ্ছার কোনও মূল্য কখনোই দেয়নি।

২০১৭ সালে রোহিঙ্গা ঢল

২০১৬ সালের অক্টোবরে সীমান্ত ফাঁড়িতে আক্রমণের অভিযোগে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে প্রথম অভিযান শুরু হয়। ওই সময়ে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। ২০১৭-এর আগস্টে আবার একই ধরনের অভিযোগে বড় আকারে অভিযান শুরু করে মিয়ানমার সামরিক বাহিনী। এর ফলে এক মাসের মধ্যে প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রাণ বাঁচানোর জন্য পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়। ওই সময়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনার বলেছিলেন, ‘জাতিগত নিধনের এটি পাঠ্যবই উদাহরণ।’

ওই সময়ে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রনীতিতে দুটি বিষয় বিবেচ্য ছিল। প্রথমত, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয়ভাবে যোগাযোগ করা এবং দ্বিতীয়ত, এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হওয়ার জন্য দোষী ব্যক্তিদের দায়বদ্ধতা নিশ্চিতের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার প্রক্রিয়ার শরণাপন্ন হওয়া। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ যে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করতে পেরেছিল সেটির ফলে তিন মাসের মধ্যে মিয়ানমার প্রত্যাবাসন চুক্তি করতে বাধ্য হয়।

নতুন খেলোয়াড়: আরাকান আর্মি

রাখাইনে তিন সম্প্রদায়ের লোকের বাস। এরা হচ্ছে আরাকানি, রোহিঙ্গা এবং বার্মিজ বা মিয়ানমারের অন্য জায়গা থেকে আসা বাসিন্দা। এদের মধ্যে আরাকানির সংখ্যা ২০ লাখের বেশি, রোহিঙ্গা প্রায় ১৫ লাখ এবং এদের প্রায় ১০ লাখ এখন বাংলাদেশে। এছাড়া অল্প সংখ্যক বার্মিজ থাকে রাখাইনের দক্ষিণভাগে।

রাজনৈতিকভাবে রাখাইনে আরাকান ন্যাশনাল পার্টি থাকলেও ২০০৯ সালে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মি গঠিত হয় ১৯৭৮ সালে জন্মগ্রহণকারী টুন ম্রাট নেইংয়ের নেতৃত্বে। সংগঠনটির উদ্দেশ্য হচ্ছে রাখাইনের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। প্রথমদিকে পার্শ্ববর্তী প্রদেশ কাচিনের সংগঠন কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্ট আর্মির সহায়তা নেওয়ার পরে ২০১২ সালে কাচিনেই প্রথম মিয়ানমার আর্মির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আরাকান আর্মি।

মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী গত ১৩ বছরে সংগঠনটি ৩০ হাজারের বেশি ব্যক্তিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং আরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এরমধ্যে ৭০ শতাংশের কাচিন ও শান এলাকায় যুদ্ধের অভিজ্ঞতা আছে।

বর্তমানে রাখাইনের উত্তর অংশ অর্থাৎ বাংলাদেশ সীমান্তের দিকের প্রায় পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করে আরাকান আর্মি। রাখাইনের দক্ষিণভাগ অর্থাৎ যেখানে বার্মিজ জনসংখ্যা বেশি সেখানে মিয়ানমার আর্মি নিয়ন্ত্রণ করে। মধ্যভাগে রাতের বেলায় মিয়ানমার আর্মির কর্তৃত্ব থাকে না।

২০২১ সালে সামরিক ক্যু’র পরে অন্যদের মতো বিরোধিতা করেনি আরাকান আর্মি। ওই সময়ে অনানুষ্ঠানিক একটি সমঝোতা ছিল মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরকান আর্মির। কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টে যায় এ বছরের প্রথমদিকে। রাখাইনে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের কারণে আরাকান আর্মির প্রতি সন্দেহ তৈরি হয় মিয়ানমার আর্মির। এরমধ্যে আরাকান আর্মির প্রধান টুন ম্রাট নেইং এক মিডিয়া সাক্ষাৎকারে রোহিঙ্গাদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করেন। এ বছরের মাঝামাঝি দুইপক্ষের মধ্যে বড় ধরনের সংঘাত তৈরি হয়। এর ফলে রাখাইনের উত্তরে চিন প্রদেশ (মিয়ানমারের একটি প্রদেশ) সংলগ্ন এলাকায় যেখানে আরাকান আর্মির শক্ত অবস্থান রয়েছে সেখানে অভিযান শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এর ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বেশ কয়েক দফা মর্টারশেল এসে পড়ে।

আরাকান আর্মির রাজনৈতিক প্রভাব এবং সামরিক শক্তি বিবেচনায় নিলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন করার ক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে আলোচনা করা অত্যন্ত জরুরি। রাখাইনের সংখ্যাগরিষ্ঠ হচ্ছে আরাকানিরা এবং তাদের মধ্যে রাজনৈতিকভাবে সবচেয়ে শক্তিশালী পক্ষের সঙ্গে অন্তত অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট

২০২০-এর নভেম্বরে জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পায় অং সান সুচি’র নেতৃত্বাধীন এনএলডি। ২০২১-এর পয়লা ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ বসার দিন সামরিক ক্যু’র মাধ্যমে ক্ষমতা হারায় এনএলডি এবং বন্দি করা হয় সু চি’কে। এনএলডির সমর্থকরা এর বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এর ফলশ্রুতিতে বিদেশে তৈরি হয় এনইউজি। এনইউজি মিয়ানমারের নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীদের সঙ্গে নতুন বোঝাপড়া গড়ে তুলছে, যা সু চি’র আপসকামী নেতৃত্বে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।  

প্রথম থেকেই বিভিন্ন দেশ অনানুষ্ঠানিকভাবে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে আসছে। এ বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো মালয়েশিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিউ ইয়র্কে এনইউজি প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন, যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

এদিকে এনইউজি রোহিঙ্গাদের প্রতি সহানুভূতিশীল মনোভাব ইতোমধ্যে ব্যক্ত করেছে। ইতোমধ্যে তারা ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসকে অবহিত করেছে রোহিঙ্গা গণহত্যার মামলার রায় তারা মেনে নেবে এবং রোহিঙ্গাদের অধিকার দেবে।

প্রথমদিকে সামরিক বাহিনীর হাতে অনেকে নিহত এবং গ্রেফতার হলেও বর্তমানে দেশের অভ্যন্তরেও এনইউজির অবস্থান অত্যন্ত শক্ত। মিয়ানমারের পত্রিকা মিজিমার রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে মিয়ানমারের ১৭ শতাংশ অঞ্চল সেনাবাহিনীর দখলে, ৫২ শতাংশ এনইউজির দখলে এবং বাকি অংশের দখল নিয়ে সংঘর্ষ চলছে।

২০২১-এর ক্যু এক অর্থে ব্যর্থ হয়েছে। এর আগে সামরিক বাহিনী শক্তহাতে মিয়ানমার শাসন করলেও এবারে শক্ত প্রতিরোধের সম্মুখীন হচ্ছে তারা। মিয়ানমারের রাজনৈতিক শক্তি প্রতিদিন আরও বেশি ক্ষমতাশালী হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ সংঘাত ও দ্বন্দ্ব এবং আন্তর্জাতিক চাপের কারণে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পক্ষে দীর্ঘদিন ক্ষমতা ধরে রাখা মুশকিল হবে বলে মনে হয়, যদিও রাশিয়া ও চীনের সমর্থন তাদের ওপর অব্যাহত আছে।

এই প্রেক্ষাপটে রোহিঙ্গা সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য এনইউজির মতো রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গে আলোচনা করাটা অত্যন্ত জরুরি।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি

আগেই বলেছি রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য আরাকান আর্মি এবং এনইউজির সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তত অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করার প্রয়োজন আছে। বাংলাদেশ যদি এই পদক্ষেপ নেয় তবে স্বাভাবিকভাবে মিয়ানমারের বর্তমান সরকার সেটিকে ভালো চোখে দেখবে না। কিন্তু ভালো চোখে না দেখাটা কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ যখন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বাস্তবিকভাবে কোনও অগ্রগতিই হয়নি গত দুই বছরে।

অন্যদিকে চীন বা এ অঞ্চলের অন্য দেশ এ বিষয়ে বাংলাদেশকে যদি তাদের ভিন্ন মতামত জানায়, তখন বিষয়টি আমাদের জাতীয় স্বার্থে কতটুকু প্রয়োজন সেটি ব্যাখ্যা করার সুযোগ ঢাকার আছে। এখানে লক্ষণীয়, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে কাউকে বেছে নিতে বলা হলে মিয়ানমারের পাল্লা চীনের কাছে ভারী হবে এবং এটি বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকরা জানলেও কোনও সাহসী পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

তবে এখানে উল্লেখ্য, সাহসী পদক্ষেপ অর্থ মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো বা প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নেওয়া বা উসকানিমূলক ব্যবস্থার মতো হঠকারী পদক্ষেপ না নেওয়া। বাংলাদেশের প্রয়োজন আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি করা কিন্তু সহিংস নয় এমন সব কৌশল অনুসন্ধান করা। আসিয়ান দেশসমূহের পাঁচ দফা মিয়ানমার উপেক্ষা করায় ওই জোটে হতাশা রয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর ওপর নতুন প্রভাব বিস্তার করার সময় এসেছে। মিয়ানমারের বর্তমান নেতিবাচক অবস্থানের ব্যাখ্যা করে চীন ও ভারতের সঙ্গে সক্রিয় কূটনীতি সময়ের দাবি।

কূটনীতিতে ‘ভালো নীতি’ গ্রহণ করার বিষয়ে জোরালো তাগিদ আছে। কারণ, ওই নীতি যদি কাজ নাও করে, তারপরেও সেটিকে ডিফেন্ড করা সম্ভব, কারণ ফলাফল খারাপ হলেও নীতিটি ভালো ছিল। সৎপ্রতিবেশীসুলভ আচরণ বজায় রেখে বিবদমান সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে জাতীয় স্বার্থ উদ্ধার করবে সরকার, এটিই প্রত্যাশা। কারণ, কূটনীতিতে সাহসের সঙ্গে সময়মতো সুযোগের সদ্ব্যবহার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একটি জিনিস মনে রাখতে হবে, আজকে আরাকান আর্মি বা এনইউজি যদি পরাজিত হয়, তারপরেও ‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ এবং ‘রাজনৈতিক শক্তির উত্থান’ ঠেকানো সম্ভব হবে না। বাংলাদেশের ‘ভালো নীতির’ সুফল ওই সময়ে পাওয়া যাবে।

লেখক: বিশেষ প্রতিনিধি, বাংলা ট্রিবিউন

/এসএএস/এমওএফ/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
লিভারপুলের নতুন কোচ স্লট!
লিভারপুলের নতুন কোচ স্লট!
ক্ষমতায় যেতে বিএনপি বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করছে: ওবায়দুল কাদের
ক্ষমতায় যেতে বিএনপি বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করছে: ওবায়দুল কাদের
লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ২
লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ২
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ