X
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪
১০ বৈশাখ ১৪৩১

যৌন সহিংসতায় ‘গালি’র ভূমিকা

সুমি রেক্সোনা
০৫ নভেম্বর ২০২০, ১৯:৩৬আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২০, ১৯:৪৩

রেক্সোনা পারভীন সুমি অনিয়ন্ত্রিত ক্ষমতা যেমন যৌন সহিংসতার প্রধান কারণ, তার সঙ্গে গালিগালাজে ব্যবহার করা শব্দ, বাক্য তুলনামূলক দুর্বলের ওপর যৌন সহিংসতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতায় গালিগালাজকে সব সময় হালকাভাবে দেখার প্রবণতা দেখা যায় এবং এর পরবর্তী প্রভাব সম্পর্কে সতর্ক হতে বাধা তৈরি করে। গালিগালাজের সাথে সহিংস আক্রমণের ফারাক থাকলেও মানসিকতার দিক থেকে চিন্তা কাঠামোর ঘৃণা ও অবমাননাই মুখ্যত কাজ করে।  
ক্ষোভ প্রকাশের ভাষা হিসেবে অন্যকে মানসিকভাবে ধসিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে সচরাচর বলা বাক্য বা শব্দ ব্যবহার নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাপ উঠেছে। ‘পুরুষকে ‘যৌন চরিত্র’ ও অনাদর্শিক আচরণের জন্য দায় দেওয়া গেলে নারীকে চরিত্রহীন বলা যাবে কিনা’। এই বিষয়ে একবাক্যে বলা সহজ হবে না। কারণ, প্রধানমন্ত্রী নারী হলেও পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতায় পুরুষের দাপটের সামনে নারী এমনিতেই পিছিয়ে আছে। সর্বশেষ নির্বাচনেও তার উদাহরণ দেখা গেছে। আর মুষ্টিমেয় নারীর সাবলীল চলাফেরা, পেশাগত অর্জনও যেখানে বেশ্যাবৃত্তির দায়ে দুষ্ট হয়, সেখানে নারীকে হরদম চরিত্রহীন বলার সুবিধা পেয়ে গেলে তার জন্য ন্যূনতম স্বস্তিতে চলাফেরার সংগ্রামটুকুও আরও কঠিন হয়ে উঠবে। রাজনৈতিক আক্রমণের জবাব অবশ্যই সাবলীল রাজনৈতিক ভাষায় উপস্থাপিত হওয়া জরুরি। অন্যথায় আদর্শ হিসেবে রাজনৈতিক উত্তরণের বদলে অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে আবহমান আন্দোলন-সংগ্রামের ধারণা হতাশ করবে।  
অন্যকে হেয় করা, ক্ষতি করা, তোয়াক্কা না করা, সমান সমান বা অতিরিক্ত শক্তি দেখিয়ে দেওয়া প্রভৃতি ক্ষেত্রে ব্যবহার করা শব্দ,বাক্যের বেশিরভাগ যৌন শব্দ ও যৌনতাকেন্দ্রিক। বলা বাহুল্য, তার মধ্যেও বেশিরভাগ নারীর শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের নাম। যৌন ইঙ্গিত, যৌন দাসত্বের তুলনা, বেশ্যাবৃত্তি ইঙ্গিত করা, যৌন শক্তি প্রদর্শন করে মানসিকভাবে ধসিয়ে দেওয়ার মতো বাক্য ব্যবহার করে যে ক্ষমতা বা অবজ্ঞা দেখায়, সে যাকে গালি দেয় তার তুলনায় নিজেকে একটা উচ্চতর শ্রেণি বোধ করে। ক্ষমতায় নিচু স্তরের প্রতি নিপীড়নের ধকল সামলানো তেমন কঠিন ব্যাপার না। ফলে পিছে ফেলতে পারার প্রতিযোগিতা কেবল অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতাই নয়, নিজের প্রবৃত্তিগত আচরণকে উসকে দেওয়ারও প্রতিযোগিতা। অথচ প্রবৃত্তিগত নিয়ন্ত্রণ করে সবাই মিলে একটা প্রকৃতই সুখি সমৃদ্ধশালী দেশ গড়ার অঙ্গীকার ছিল মুক্তিযুদ্ধের শপথ।
গালি দেওয়ার মাধ্যমে ন্যায়-নীতির অপলাপে যুক্ত হচ্ছেন যারা, তারা ভাবতেও পারছেন না স্বল্প সময়ের উত্তেজনার ফলাফল কী ভয়াবহভাবে তাদেরও আক্রান্ত করছে। সবাই তো বিদেশে নিরাপদ আবাস গড়ার ক্ষমতা রাখে না। জনতা এবং রাজনৈতিকতার এই বিপুল ধস কারও জীবনেই স্বস্তি বয়ে আনবে না। এই যে অবজ্ঞার সক্ষমতা, এটা আসলে পেশিশক্তি প্রদর্শনের সক্ষমতা। সুযোগে সবচেয়ে ভরসার ব্যক্তিও ভরসা হারানোর কাজটি করবে। স্বস্তি পাবে না কেউই। স্বল্প দৃষ্টি দিয়ে নিজের জীবনে সব সুখ ভোগের বাজারি আকাঙ্ক্ষা আসলে সমাজের কোনও উপকারে লাগছে না তা বোঝা দরকার।
মানসিকভাবে ধসিয়ে দেওয়ার কৌশল হিসেবে গায়ের জোর দেখানোর বিকল্প হিসেবে গালিগালাজ শুধু বোধের বিচারে অবমাননাকরই না, সবর্তোভাবে নারীর জন্য হুমকিস্বরূপ। আর যদি শুধু কারও কোনও বক্তব্যের প্রতি আক্রমণেও গালি দেওয়া হয়, তাহলেও কারও ওপর রেগে গিয়ে শক্তিতে না পেরে থুথু দেওয়ার মতো কাজ হবে। কিন্তু থুথু দিলে যেমন কেবল নিজের গায়েই পড়ে, তেমনি অবমাননাকর শব্দের উচ্চারণও ব্যক্তিকে তার সামাজিক অবস্থানে ক্ষতি করে। এবং ক্রমান্বয়ে সমাজও আক্রান্ত হয়। এসব বিশৃঙ্খলা পরিবারের পক্ষে সামাল দেয়া কঠিন হয় বলেই বিষবৃক্ষের মতো উল্লম্ফন ঘটে। “পুরুষ মানুষ তো অমন হতেই পারে” বলে পুরুষকে দায়মুক্তি দেওয়া হয়, আর নারীকে বদ্ধ করা হয়। এখানে নারী পুরুষের তুলনায় যতই যোগ্য হয়ে উঠুক, আকছার শক্তি ও দাপট ব্যবহারের ছাড়পত্র তাকে তার শ্রেণির মানুষের মধ্যেও একটা বিশেষ উচ্চতাবোধে আক্রান্ত করে। ধর্ষণ যেমন শক্তির নৃশংস ব্যবহার, এসব শব্দ-বাক্যের ব্যবহারেও তেমন শ্রেণি চরিত্রের নৃশংসতা ফুটে ওঠে। যে কারণে প্রতাপশালী নেতা ইন্দিরা গান্ধী, বেনজীর ভুট্টোদের গোঁফওয়ালা নারী বলা হতো। যেন গোঁফ না থাকলে নেতৃত্ব দেওয়া যায় না। আসল কথা ভয়াবহ প্রতিকূল  প্রতিযোগিতার পরেও সমসাময়িক পুরুষ নেতাদের টপকে তারা দীর্ঘ সময় ধরে শাসকের যোগ্যতা দেখিয়েছেন।
সবাই গালি দেয় না, কারণ তাদের শব্দের অভাব না। আসলে বোঝাপড়া এবং চিন্তার প্রশ্ন, রুচির প্রশ্ন তো বটেই। লড়াই হবে উপযুক্তর সাথে। গালি কোনও উপযুক্ততা ধারণ করে না। যিনি গালি দেন তিনি নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সঠিক জবাব দেওয়ার যোগ্যতা হারান। একই সাথে তিনি অন্যের করুণার ওপর টিকে থাকেন। রাষ্ট্র যেখানে প্রতিনিয়ত সংগ্রামে বাধ্য করে, সেখানে চিন্তাশীল মানুষের জন্য অন্যের করুণাবহ হওয়া ভয়াবহ।
পাত্তা না দেওয়া অর্থেও পুরুষের ওপর ব্যবহার করা গালিগালাজ আসলেই নারীর ওপর ব্যবহার করা যাবে না। কারণ, মুষ্টিমেয় নারী বাদে এখনও পুরুষ সমাজের নিয়ন্ত্রক। অবমাননাকর শব্দের ব্যবহার নিয়ে একটা শ্রেণির মানুষের ওপর আক্রমণ প্রতিহত করা হলো, অথচ অন্য সময়ে নীরব; এইটুকু যারা দেখতে পান, তারা বাকিটাও দেখার যোগ্যতা রাখেন। যারা সংগঠিত, তারা ব্যক্তি আক্রমণকেও প্রতিহত করতে পারে। যারা অসংগঠিত, তারা সমষ্টির ধ্বংসেও নীরব। বাংলাদেশের মতো পুরুষতান্ত্রিক সমাজে অধস্তন ও দুর্বলকে মর্জি করার জন্য এবং দেখে নেওয়ার জন্য সবচেয়ে সহজ শিকার নারী ও শিশু। মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত এই অবস্থার কোনও বদল ঘটেনি। সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপের ফলে এসিড নিক্ষেপ ও মৌখিক তালাক বন্ধ হয়েছে যদিও; আইন প্রয়োগকারী সংস্থার শাসকের পাহারাদারি ভূমিকা ও বিচার ব্যবস্থার ওপর ক্ষমতাসীনদের হস্তক্ষেপের কারণে ধর্ষণ, নিপীড়ন, খুনের আসামিরা আরও বেপরোয়া হয়। অসংখ্য নৃশংস খবর প্রতিদিন দেখতে হয়, বেশিরভাগ খবরই চাপা পড়ে যায়। মা-বোনকে আক্রমণ করে বলা গালিগালাজ প্রতিদিনের ভাষা প্রয়োগে এতই বহুল ব্যবহৃত হয় যে, পুরুষের ওপর পুরুষের রাগ প্রদর্শন এবং পালটা উত্তরে এই ভাষা প্রয়োগ ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে। ভাষারও আছে মানসিকতা বদলে দেওয়ার ক্ষমতা। নারীর ওপর এই অবমাননার মানে অর্ধেক জনগোষ্ঠীর ওপর দৃষ্টিভঙ্গগত সমর্থনে নিরবচ্ছিন্ন নিপীড়ন।
বংশ পরম্পরায়, অঞ্চলভেদে একই শব্দ বাক্যের ব্যবহার নানা আঙ্গিকে হলেও, অর্থবোধকতার দিক থেকে সবই নিপীড়নের হাতিয়ার। পরবর্তী প্রজন্মও এই প্রবৃত্তির বাইরে পড়ে না। যে কারণে সন্তানকে নিয়ন্ত্রণ করার বদলে পিতার আচরণের উদাহরণ দিয়ে তাকে সুবিধা দেওয়ার নজির পরিবার কাঠামোতে দেখা যায়।
একই কারণে পারিবারিক ধর্ষণ আলোচনায় বেশি গুরুত্ব পায়। "তাই বলে নিজের পরিবারে ধর্ষণ!"- যেন অন্যের পরিবারে ধর্ষণ হলে বিষয়টা জায়েজ হয়ে যায়, নিজের পরিবারে হলে ট্যাবু কাজ করে। পুরুষ পরিবারকে রক্ষা করে বাইরে নিপীড়ন করবে এমন মানসিকতা বহমান থেকে যায়। একটার সাথে আরেকটা যুক্ত। সমাজের পরিবর্তন চাইলে প্রতিটি বিষয়কে বিচক্ষণতার সাথে পর্যবেক্ষণ করা দরকার।
পারিবারিক সহিংসতায় প্রতি বছর নারীদের খুনের সংখ্যা বাড়ছে। এতে কোনও না কোনও পরিবারের মানুষই তো যুক্ত। তার মানে প্রতিটা আচরণই নিজের দিকে ফিরে আসে। তাতে গড়ে মূল্যবোধের অবক্ষয় ত্বরান্বিতই হয়, সমাজ পিছিয়ে থাকে।
খুবই কমনসেন্সের প্রশ্ন, যে দেশে মারাত্মক ধর্ষণ, নিপীড়ন ঘরে ঘরে হয়, সেখানে গালিগালাজে নিজেকে সংযত না করে বরং দুরূহ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত ন্যূনতম বোঝাপড়াকে কদর্য শক্তি প্রদর্শনের জন্য সমতা চাওয়ার মাধ্যমে নামিয়ে আনার মতো ভয়াবহ আকাঙ্ক্ষা বা কেন জন্মাচ্ছে! ব্যক্তি বা সংগঠনের প্রশ্ন নয় আসলে, আসলে বিবেচনার প্রশ্ন। যারা একটু পরিবর্তিত হয়ে মানুষের সমতা, শ্রেণির ন্যায্যতা চাইছেন, তাদের প্রতি বিবেচনা প্রত্যাশা করা যেতে পারে। আসলেই, ভাবা প্র্যাকটিস করেন।
বাংলাদেশের মতো সামাজিক পরিপ্রেক্ষিতে লিঙ্গ নির্বিশেষে নিয়ন্ত্রণের বাইরে ক্ষমতা প্রয়োগের সুযোগ পেলে, বিচারের বাধ্যবাধকতার মধ্যে না পড়লে, জবাবদিহি না থাকলে- ক্ষমতার অপব্যবহার করবেই। ‘লুচ্চা/ চরিত্রহীনে’র যে ব্যবহার তা যদি গড়ে সব লিঙ্গের উপর চাপানোর সুযোগ হয়, তাতে চলমান সিস্টেমকেই সুবিধা করে দেওয়া হয়, পরিবর্তন অনেক দূরের স্বপ্ন হয়ে যাবে। এখানেও ভাবার দরকার। গালিগালাজ মানবীয় বৈশিষ্ট্য হিসেবে ন্যূনতম সমর্থন পেলেও চিন্তাশীল ব্যক্তিবর্গ এর সংস্কার চান। তাই বলে এর সমতা চাইলে ন্যায্যতা হারাবে। ‘বেশ্যা’ ট্যাগ দেওয়ার কালচার আরো সুবিধা পাবে। ফলে লিঙ্গ নির্বিশেষে গালি দেওয়ার সিভিল রাইট চাই, নাকি নিপীড়ন সহিংসতার মচ্ছব ঠেকাতে চাই তা নির্ধারণ করা জরুরি। নিপীড়ন ও সহিংসতার এ বিবেচনা খুবই জরুরি।
মা, বোন, পরিবারের নারী সদস্যদের নামে মৌখিক যৌন আক্রমণের অভ্যাস ঠেকানো গেলে শারীরিক নিপীড়ন, নির্যাতন, ধর্ষণের আকাঙ্ক্ষা শক্তি হারাবে। কথায় কথায় নারীর যেকোনো অর্জনের পেছনে যৌনতা বিক্রির অপবাদ দেওয়ার মানসিকতা ঠেকানো গেলে নারীর যেকোনো স্বাধীন চিন্তা ও অর্জনের জন্য প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে ‘বেশ্যা’ ট্যাগ দেওয়া বন্ধ হবে। পুরুষকে ‘লুচ্চা’ বললে দোষ হয় কিনা সে বিবেচনার দরকারই পড়বে না হয়তো, হয়তো লুচ্চামি নামক শব্দটাই অপরিচিত লাগবে।
ভুলে গেলে চলবে না, পুরুষতান্ত্রিক নিপীড়নের প্রতিটা অভ্যাস আলোচিত পারস্পরিক আচরণের সাথে সম্পর্কিত। যারা অন্তত লেখা পড়া জানেন, তারা নিজেকে পরিবর্তনের জন্য সচেষ্টও হতে পারেন। বাকিদের জন্য আইনি প্রক্রিয়া বাধ্যতামূলক করার সম্মিলিত জোর প্রচেষ্টা সহজ হবে।
মনে রাখা দরকার, দীর্ঘ সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত নারী ও শিশুর ওপর যৌন সহিংসতা প্রতিরোধের জন্য হাইকোর্ট একটি নীতিমালা গ্রহণ করেছেন। এবং সরকারিভাবে প্রতিটা অফিসে এই নীতিমালার আলোকে কমিটি করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। তথাপি কর্মজীবী নারীদের ওপর বাচিক সহিংসতা থেমে নেই। হাইকোর্টের নীতিমালা যদি যৌন সহিংসতা নিরসনের প্রাথমিক ভিত্তি ধরে সমাজের প্রতিটা স্তরে সমান তৎপরতা শুরু করা যায়, তবে তা সব মানুষের মধ্যে যৌন নিপীড়ন ও সহিংসতা বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে সহায়ক হবে।

লেখক: নারী সংহতির সদস্য।

/এসএএস/এমওএফ/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিতে ‘বড় পরিবর্তন’ দেখছে না যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিতে ‘বড় পরিবর্তন’ দেখছে না যুক্তরাষ্ট্র
পদে থেকেই ইউপি চেয়ারম্যানরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন
পদে থেকেই ইউপি চেয়ারম্যানরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন
জীবনানন্দ পুরস্কার পেলেন জাহিদ হায়দার ও মোস্তফা তারিকুল আহসান
জীবনানন্দ পুরস্কার পেলেন জাহিদ হায়দার ও মোস্তফা তারিকুল আহসান
শাকিবের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের জায়গা অন্যরকম: চঞ্চল
শাকিবের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের জায়গা অন্যরকম: চঞ্চল
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ