X
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

পুরুষ নির্যাতন ও সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়

কাবিল সাদি
কাবিল সাদি
২৮ মে ২০২১, ১৬:০৬আপডেট : ২৮ মে ২০২১, ১৭:৩৯

কাবিল সাদি সম্প্রতি নারী উন্নয়নের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশের অবস্থান আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত স্থান অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় নেতৃত্ব দেওয়া শীর্ষ তিন নারী নেতার তালিকায় রয়েছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বৈশ্বিক জেন্ডার বৈষম্য প্রতিবেদন ২০২০ অনুযায়ী নারী-পুরুষের সমতার দিক দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় সবার ওপরে বাংলাদেশ।

এছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি প্রতিবেদনে নারীর ক্ষমতায়ন সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে। এসব স্বীকৃতি নিঃসন্দেহে আমাদের দেশের বিরাট অর্জন এবং নারী উন্নয়নে আরও উৎসাহ জোগাবে। দেশের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় সাবেক প্রধান ও বর্তমান প্রধানসহ স্পিকার ও সংসদ নেতা, উপনেতা এবং বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীসহ শীর্ষস্থানীয় পদগুলো এখন নারীরা অলংকৃত করায় এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে এসব আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আমাদের প্রাপ্যই ছিল।

এসব সাম্প্রতিক অর্জনের মধ্যেও নতুন একটি বিপরীতমুখী বিষয় আলোচনায় স্থান করে নিয়েছে আমাদের দেশীয় ও উপমহাদেশীয় গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এক কথায় যার মূল বিষয় হলো 'পুরুষ নির্যাতন'। করোনাকালীন ফেসবুকে ভাইরাল হয় পুরুষ নির্যাতনের এক ভয়াবহ ভিডিও চিত্র, যেখানে একজন নারী তার স্বামীকে সিগারেটের আগুনের ছ্যাঁকা দিচ্ছেন তার বৃদ্ধ মা-বাবাকে একসঙ্গে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়াকে কেন্দ্র করে। ব্যতিক্রম এবং একই সঙ্গে আতঙ্কের বিষয় হলো, এই দম্পতি উচ্চশিক্ষিত চাকরিজীবী, তাই তাদের আইন বা প্রথাগত সামাজিক মূল্যবোধ শেখানোর সুযোগ আমাদের নেই। এরকম আরও অনেক নির্যাতনের কথাই সম্প্রতি উঠে এসেছে বিভিন্ন প্রতিবেদনে, কিন্তু বেশিরভাগ পুরুষই সামাজিক মর্যাদাহানি ও পরিবার, আত্মীয় ও বন্ধুমহলে লজ্জার কারণে এই নির্যাতনের কথা স্বীকার করেন না বা প্রকাশ্যে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান। ফলে নির্যাতনের এই অবস্থা দিন দিন বেড়েই চলেছে, যা বলার অপেক্ষা রাখে না। অনেকের মাঝে নিশ্চয়ই যে প্রশ্নটি ঠোঁটের আগায় এসে দাঁড়িয়েছে তা হলো, নারী শারীরিকভাবে পুরুষের চেয়ে প্রকৃতিগতভাবেই দুর্বল হয়ে কীভাবে নির্যাতন করতে পারে?

এই প্রশ্নের উত্তর দুইভাবে ভাবতে হবে; যার একটি হলো শারীরিকভাবে নির্যাতন আর এই হার হয়তো খুব বেশি নয়, কিন্তু মামলা ভীতি ও মানসিক নির্যাতনের হার ভয়ানকভাবে অবস্থান করছে, যা একজন পুরুষ লজ্জা ও সাধারণ মূল্যবোধের বিপক্ষে গিয়ে কারও সঙ্গে পরামর্শ পর্যন্ত করতে মানসিকভাবে বাধার সম্মুখীন হন। ফলে একসময় তারা আত্মহত্যার পথ পর্যন্ত বেছে নিয়ে থাকেন, যার উদাহরণ উঠে এসেছে চট্টগ্রামের একজন ডাক্তার, ঢাকার মিরপুরে একজন পুলিশ সদস্যের আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়ার মধ্য দিয়ে। এগুলো হলো পারিবারিক পুরুষ নির্যাতনের ঘটনা, যা মূলত স্ত্রীর পরকীয়া, পিতা-মাতা থেকে আলাদা থাকার অতিরিক্ত মানসিক চাপ প্রয়োগ, বউ-শাশুড়ির মিল না থাকা, আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে অধিক দেনমোহর আদায়ের চাপসহ নানা কারণ নিয়েও পুরুষরা নিভৃতে নির্যাতনের শিকার হন। এগুলো হলো মূলত পরিবারের ভেতরে পুরুষ নির্যাতন কিন্তু পরিবারের বাইরেও পুরুষ আজকে নির্যাতনের বাইরে নেই; বরং এই হার বর্তমানে ভয়ানকভাবে বেড়েই চলেছে। এমন অনেক মামলা কেস স্ট্যাডি দেখেছি বা অনেকের দেখার সুযোগ হয়েছে যে, মুরগি নিয়ে ঝগড়া, শেষ পর্যন্ত জিততে না পেরে ধর্ষণ বা নারী নির্যাতন মামলায় গিয়ে জায়গা নিয়েছে। সম্প্রতি ফেসবুকে এক পুলিশ সদস্য তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে তুলে ধরেন এক অন্য রকম চিত্র। যেখানে এক নারী এক মোবাইল বিক্রেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে থানায় আসেন। প্রকৃত ঘটনার সারমর্ম ছিল পছন্দসই মোবাইল সেট পরিবর্তন করতে না পারা। ওই নারী পুলিশের জেরার মুখে তা স্বীকারও করেন। তাহলে বাস্তবতা কতটা ভয়ানক তা ভাবতে হবে। সামান্য মোবাইল সেট পরিবর্তনের আক্রোশ মেটাতে তিনি ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন অথচ সম্প্রতি এই আইনের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। অনেকেই হয়তো বলবেন আইনে সাক্ষী, বিচারের জন্য আদালত রয়েছে কিন্তু তাদের ভুলে গেলে চলবে না জাহালমদের মতো বহু মানুষ দীর্ঘদিন কারাভোগ করে এসে নির্দোষ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছেন তার জীবনের মূল্যবান সময় হারিয়ে আর তার থেকেও আরও ভয়ানক খবর হলো নারায়ণগঞ্জের চলমান একটি চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা, যেখানে খুনিরা ঘটনার বিবরণ দিয়ে নিজেদের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দিও দিয়েছেন এবং মজার ও অলৌকিক বিষয় হলো, আসামিরা জেলহাজতে থাকতেই সেই খুন হওয়া কিশোরী সশরীরে থানায় এসে হাজির হয়েছেন। ভুলে গেলে চলবে না এই জবানবন্দি নেওয়া লোকটি আইনেরই লোক এবং আইন মেনেই তিনি এই মামলা নাটকের স্ক্রিপ্ট তৈরি করেছিলেন অনৈতিক সুবিধা নিয়ে। এগুলো দুয়েকটা উদাহরণ মাত্র। তাই এসব নীতিকথার ওপর ভর করে পুরুষ নির্যাতনের ভয়াবহতা অনুধাবন করা যাবে না।

সম্প্রতি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংস্কার ও ধর্ষণ মামলার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধানের আইনগত স্বীকৃতি একদিকে যেমন সামাজিক অপরাধ হ্রাসের ক্ষেত্রে স্বস্তিদায়ক খবর, ঠিক একই সঙ্গে অন্যদিকে উদ্বেগেরও উপাদান এটি। কারণ, এসব আইনই হতে পারে পুরুষ নির্যাতনের বড় হাতিয়ার। পুরুষ নির্যাতন প্রত্যয়টি নতুন ও অনেকের কাছে হাস্যকর মনে হলেও এটা এখন এক ভয়ানক বাস্তবতার নাম।

সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের জাতীয় বিচার বিভাগীয় সম্মেলনের ঘরোয়া কর্ম-অধিবেশনে জেলা ও দায়রা জজ পদমর্যাদার ৪০টির বেশি ট্রাইব্যুনালের বিচারকেরা এক উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন। এ বিষয়ে প্রস্তুত করা ১০ দফা-সংবলিত একটি প্রাথমিক প্রতিবেদনে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ার কারণ হিসেবে ‘মিথ্যা মামলা’কেই ১ নম্বর সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ দণ্ডবিধির-১৮৬০-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হলো, দশজন অপরাধী খালাস পেলেও একজন নিরপরাধী ব্যক্তি যেন সাজা না পান। বস্তুত বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই উদ্দেশ্যের বিপরীত কার্যকারিতাই লক্ষণীয়; যার বেশিরভাগই ঘটে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ক্ষেত্রে।

দৈনিক প্রথম আলো, দৈনিক যুগান্তরসহ বেশ কয়েকটি শীর্ষ স্থানীয় পত্রিকা ও টেলিভিশন চ্যানেলে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশের ৭২টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে দুই লক্ষাধিক মামলা বিচারাধীন অথচ এসব ট্রাইব্যুনালের বিচারকেরা ইঙ্গিত দিয়েছেন, এগুলোর ‘অধিকাংশই মিথ্যা মামলা’এবং ৮০ শতাংশ মামলা যৌতুক, ধর্ষণ ও যৌন পীড়নের অভিযোগে দায়ের করা হলেও এর আড়ালে রয়েছে অন্য ধরনের বিরোধ। তাই এসব মামলা আপসে নিষ্পত্তির জন্য আদালত থেকে সরিয়ে সুপ্রিম কোর্টের লিগ্যাল এইডের কাছে পাঠানোর সুপারিশ করেছিলেন বিচারকেরা।

সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদের ভুয়া মামলা প্রসঙ্গে মন্তব্য ছিল, দেশের ৮০ শতাংশ নারী নির্যাতন মামলা ভুয়া ও মিথ্যা। তাহলে সাধারণ মানুষের মন্তব্য বা ভুক্তভোগীদের কথা যদি পক্ষপাতিত্বের সন্দেহে নাও গণ্য করা হয় তারপরেও একটি দেশের আইনমন্ত্রী বা বিচারকদের এসব মন্তব্য এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত সাদৃশ্যপূর্ণ এমন প্রতিবেদনের তথ্য অবশ্যই অগ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

তাহলে সাধারণভাবেই এটা অনুমেয় যে দেশের ৮০ ভাগ মিথ্যা মামলার ভুক্তভোগী পরিবারের সামাজিক, আর্থিক এবং শারীরিক নির্যাতনের দায় আমরা এড়িয়ে যাচ্ছি। আর এসব অভিযোগে অভিযুক্ত ভুক্তভোগী প্রথমেই আসবে একজন পুরুষের নাম। তার মানে পুরুষের এই চাপা নির্যাতন আমরা হয়তো হাসি-ঠাট্টা করে উড়িয়ে দিচ্ছি অথচ এই মিথ্যা মামলার নির্যাতন কতটা ভয়ানক প্রভাব ফেলতে পারে এবং সেটা যদি হয় পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম পুরুষ, তাহলে তার কারাভোগ বা ভুক্তভোগী হয়ে পরিবারে তার অনুপস্থিতি কতটা ভোগাতে পারে তা সহজেই অনুমেয়।

'বিয়ের প্রলোভন' দেখিয়ে ধর্ষণ নামে নতুন আরেকটি পুরুষ নির্যাতন হাতিয়ার যুক্ত হয়েছে। প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে গেলেই এই মামলার আশ্রয় নিয়ে থাকেন সেই নারী। সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় এই পর্যায়ে নেমে এসেছে যে নারী-পুরুষের আত্মস্বীকৃত এই সামাজিক অপরাধকে উভয়ের অপরাধ না দেখে নারীর পক্ষ নিচ্ছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে অন্যজনের স্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও তার প্রেমিকের বিরুদ্ধে 'বিয়ের প্রলোভন' দেখিয়ে ধর্ষণ মামলায় অভিযোগ দায়ের করেছে। কতটা হাস্যকর সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়।

এ দেশে যৌতুকবিরোধী আইন থাকলেও অযৌক্তিক মোহরানা আদায়ের বিপক্ষে কোনও স্বীকৃত আইন নেই। ফলে একাধিক বিয়ে করে মোহরানাকে ব্যবসা হিসেবে নেয় কিছু অসৎ নারী। আমরা তাদের অপরাধীও বলতে পারবো না আইনগত স্বীকৃতির অভাবে। শারীরিক নির্যাতনের শিকার নারীর জন্য কথিত নারীবাদের আওয়াজে গণমাধ্যম বা সুশীল সমাজ সরব থাকলেও নারী বা স্ত্রী কর্তৃক পুরুষ বা ঘুমন্ত স্বামীর লিঙ্গ কর্তনের মতো ভয়াবহ শারীরিক নির্যাতনে তাদের নীরব থাকতে অথবা 'চরিত্রহীন পুরুষ' তকমা দিয়ে হেসে এই নির্যাতনের বিচারে সরব না হয়ে এড়িয়ে যেতে দেখা যায়। তাছাড়া এ দেশের এমন কি অন্যান্য দেশের আইনেও পুরুষ নির্যাতনের প্রতিকার নিয়ে তেমন কোন আইনি পদক্ষেপ লক্ষ করা যায় না। কিন্তু আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, এসিডে ঝলসে যাওয়া ধর্ষণের শিকার হওয়া নারীটি যেমন আমাদের মা, বোন বা কন্যা, ঠিক একইভাবে মিথ্যা মামলা অথবা নারী কর্তৃক শারীরিক বা মানসিকভাবে নির্যাতনের শিকার হওয়া পুরুষটিও আমাদের বাবা, ভাই অথবা সন্তান। তাই প্রচলিত আইনের সংস্কার করে পুরুষ নির্যাতন আইন প্রবর্তনের পাশাপাশি মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়ে ভুক্তভোগীর সমপরিমাণ শাস্তির আওতায় আনা উচিত মিথ্যা মামলাকারীর জন্য এবং সেই সঙ্গে প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহি এবং বিচারিক স্বচ্ছতা। এই ক্ষেত্রে মিথ্যা মামলা সাজানো প্ররোচনাদানকারী আইনি সেবায় নিয়োজিত ভুঁইফোড় সংগঠন এবং সেই মামলার আইন পেশায় জড়িত ব্যক্তিকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসাও জরুরি।

সর্বোপরি, আমাদের অবস্থান হোক সব সামাজিক অবক্ষয়ের বিপক্ষে ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ নির্বিশেষে; না হলে কথিত 'নারীবাদের' বিপক্ষে কথিত 'পুরুষবাদের' উত্থানের প্রতিযোগিতায় সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় সময়ের অপেক্ষা মাত্র।

লেখক: নাট্যকার ও ব্যাংক কর্মকর্তা।

/এসএএস/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
নোয়াখালীতে সনি স্মার্ট-এর শোরুম উদ্বোধন
নোয়াখালীতে সনি স্মার্ট-এর শোরুম উদ্বোধন
তাইওয়ানে সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি যুক্তরাষ্ট্রের
তাইওয়ানে সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি যুক্তরাষ্ট্রের
নারীবান্ধব টয়লেট সুবিধা পান না ৯৩ শতাংশ নারী
জরিপের তথ্যনারীবান্ধব টয়লেট সুবিধা পান না ৯৩ শতাংশ নারী
সিলেট নগরীতে অপরাধী শনাক্তে ১১০ সিসি ক্যামেরা
সিলেট নগরীতে অপরাধী শনাক্তে ১১০ সিসি ক্যামেরা
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ