X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১

গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে ‘প্রসেস ডকুমেন্টেশন’ কেন জরুরি?

রেজা সেলিম
২৬ এপ্রিল ২০২৩, ১৬:৫১আপডেট : ২৬ এপ্রিল ২০২৩, ১৬:৫১

আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পড়ে কিছুটা বিস্মিত হলাম। ২৪ এপ্রিল ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব জেনোসাইড স্কলার্স (আইএজিএস)-এর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে– সাম্প্রতিক সময়ে অনুষ্ঠিত ভোটের মাধ্যমে ‘বাংলাদেশ রেজ্যুলিউশন’ গৃহীত হয়েছে, যার মাধ্যমে আইএজিএস স্বীকৃতি দিচ্ছে যে, ‘১৯৭১ সালে বাংলাদেশে জেনোসাইড সংঘটিত হয়েছে’।

আমাদের জেনোসাইড স্কলাররা একযোগে দ্বিধাহীনভাবে বাংলাদেশে সংঘটিত জেনোসাইডের নানামুখী আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় করতে কাজ করে চলেছেন। এই নিয়ে দেশে-বিদেশে বাংলাদেশি স্কলার এমনকি বিদেশি বন্ধুদের অনেকে দীর্ঘদিন যাবত জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছেন।

২৪ এপ্রিল আইএজিএস আমাদের সেই প্রচেষ্টার ইতিবাচক ও ফলপ্রসূ সিদ্ধান্ত নিলেও এর পূর্বাপর ঘটনাপ্রবাহের ‘স্বীকৃতি’ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই বিবৃতিতে নেই। থাকলে ভালো হতো এই কারণে যে, আমাদের ইতিহাসের নানা বাঁকে আমরা পথ হারিয়ে ফেলি কারণ ‘প্রসেস ডকুমেন্টেশন’ কাজটি আমরা করি না। কিন্তু একটি জাজ্বল্যমান সরকারি বিভাগ যদিও প্রয়োজনীয় নানা কাজে তাদের পাওয়া যায় না, এসবের কোনও উল্লেখ না করায় বিবৃতিটি একটি সরকারি দায়ের কাজ মাত্র হয়েছে যেখানে পেছনের ঘটনাপ্রবাহ ও সত্য আড়ালে রয়ে গেছে।

আমরা জানি যে, জেনোসাইডের স্বীকৃতি অর্জনের কাজটি মসৃণ নয়। যেহেতু আইনি সংজ্ঞার দ্বারা জেনোসাইড সংজ্ঞায়িত তাই ঘটে যাওয়া অথবা ঘটমান অপরাধসমষ্টিকে কেউ ইচ্ছে হলেই জেনোসাইড সংঘটিত হয়েছে বা হচ্ছে সেরকম ঘোষণা দিতে পারেন না। ইতিহাসের আলোকে নানা কার্যকারণ বিশ্লেষণ করার পাশাপাশি আইনের কষ্টিপাথরে নিখুঁতভাবে যাচাই করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়। জেনোসাইড নিয়ে যারা গবেষণা করছেন, এ বিষয়ে যারা পড়ান, আইনি লড়াই করেন – তারা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পূর্বাপর বিশ্লেষণ করে নির্ধারণ করেন কোথাও জেনোসাইড সংঘটিত হয়েছে কি হয়নি।

আমাদের দেশে ১৯৭১ সালের গণহত্যা সংঘটনের জন্যে পাকিস্তানি সৈন্য বাহিনীকে দায়ী ও অপরাধী সাব্যস্ত করে সেই সংঘটনকে আন্তর্জাতিক মহলে প্রতিষ্ঠিত করার কোনও স্বীকৃত একাডেমিক গবেষণা আমরা অনেকদিন পর্যন্ত করিনি। যা করেছি আবেগের বশবর্তী কিছু রচনা ও সীমিত আকারে কিছু রাজনৈতিক দেন-দরবার।

UN Convention on the Convention and Punishment of the Crime of Genocide of 1948-এর ধারা-২ অনুযায়ী বাংলাদেশে পাকিস্তানি সৈন্য বাহিনী দ্বারা সংঘটিত সকল কর্মকাণ্ড শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। জাতিসংঘের দরবারে এই আলোচনায় আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গুটিকয় সাহসী কর্মকর্তা বাদে বেশিরভাগ কর্মকর্তাদের মনযোগ আকর্ষণ করতে খুব একটা সমর্থ হয়েছি এমন বলা যায় না। এই দফতরের কর্মকর্তাগণ এই বিষয়ে আলোচনা এলেই গম্ভীর হয়ে যান ও কূটনৈতিক বেড়াজালে ফেলে প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রত্যক্ষদর্শী কূটনীতিকগণ যারা ‘৭৫ সালেও কর্মরত ছিলেন পরে তাদের অনেকের ভোল পাল্টাবার উদাহরণ আছে, আমাদের অভিযোগও আছে। তারা যদি সঠিক কাজটি করতেন বা সত্যকে প্রতিষ্ঠা করতে অন্তত বিদেশেও ভূমিকা রাখতেন তা হলে সামরিক শাসনের আমলে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস-বিকৃতি অতো সহজ হতো না। আর তাদের উত্তরসূরী আমাদের দেশের কূটনীতিকগণও ইতিহাসের সত্য সন্ধান করেই কাজ করতেন।

ফলে দেশের মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মের এই দায়িত্ব নিতে হয়েছে যার মধ্যে এই স্কলার্স স্বীকৃতি আদায়ে মূখ্য ভূমিকা পালন করেছেন শহীদ সন্তান তৌহিদ রেজা নূর। আর যদি আমাদের গর্ব করে জাতিকে জানাতে হয় তা হলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ অনুপ্রেরণা। আমি নিজে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও তৌহিদ রেজা নূরের সাথে এই প্রক্রিয়ায় শুরু থেকে যুক্ত বলে এই ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছি।

তৌহিদ রেজা নূর কর্মসূত্রে গবেষক ও আমরা একই কর্মক্ষেত্রে দীর্ঘদিন যাবত যুক্ত। বাংলাদেশের গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ে করণীয় নিয়ে সরকারের নানা মহলে সহযোগিতা চেয়ে সে ঘুরে বেড়িয়েছে। কোনও সাড়া মেলেনি। শেষমেশ আমি ও তৌহিদ প্রধানমন্ত্রীর সাথে এই বিষয়ে আলাপ করার পরিকল্পনা করলাম। একটি অনুষ্ঠানে সুযোগ পেয়ে এরকম চিন্তা করছি এমন কথা জানাতেই প্রধানমন্ত্রী তৌহিদকে নিয়ে একদিন যেতে বললেন। সময় নিয়ে ২০১৯ সালের ১৭ জানুয়ারি আমি ও তৌহিদ প্রধানমন্ত্রীর সাথে তাঁর কার্যালয়ে দেখা করতে গেলাম। আলাপের শুরুতে আমি আমাদের এই স্বীকৃতি আদায়ে ‘একাডেমিক কন্সট্রাকশন’ কেন দরকার তা ব্যাখ্যা করতেই বঙ্গবন্ধু কন্যা খুবই উৎসাহের সাথে তৌহিদের পরিকল্পনা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে জানতে চাইলেন। তৌহিদ তখন এই কাজটি তার পোস্টডক্টোরাল কাজের জন্যে কেমন করে পরিকল্পনা করেছে সেসবের ব্যাখ্যা করলেন। প্রধানমন্ত্রী এই কাজটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে গবেষণা পদ্ধতি কেমন হতে পারে সেসবের নির্দেশনা দিলেন ও একটি লিখিত প্রস্তাবনা-পত্র তৈরি করে এক কপি তাঁকে দিয়ে রাখতে বললেন।

প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে সেই গবেষণা প্রস্তাবনার কপি আমি নিজে প্রধানমন্ত্রীর তৎকালীন একান্ত সচিব (বর্তমানে মূখ্য সচিব) জনাব তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার কাছে দিয়ে এসেছিলাম। এই ক্ষেত্রে তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার ইতিবাচক ভূমিকাও ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে।

তৌহিদ রেজা নূর গত প্রায় পাঁচ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের বিংহামটন বিশ্ববিদ্যলায়ের পোস্টডক স্কলার হিসেবে বাংলাদেশের গণহত্যা সংঘটনের একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একাডেমিক দলিল প্রস্তুত করেছে। করোনা মহামারির কারণে কিছুটা বিঘ্ন হলেও ঝুঁকি নিয়ে এই কাজে সে নানা দেশের স্কলার, কূটনীতিক ও গণহত্যা বিশেষজ্ঞদের সাথে মত বিনিময় করেছে। জাতিসংঘের সদর দফতরে গণহত্যা বিষয়ক প্রতিরোধ কার্যালয়ে মত বিনিময় করেছে যার প্রতিটি ধাপ আমার জানা। ফলে এই পরিশ্রমের ফল আজ বাংলাদেশ পাবে এতে কোনও সন্দেহ নেই।

কিন্তু প্রশ্ন হলো আমাদের সরকারি দফতরগুলো এই স্বীকৃতি আদায় বিষয়ে নিরুত্তাপ কেন? বিশেষ করে আমাদের পররাষ্ট্র দফতরের উদাসীনতা খুবই দুঃখজনক। মাঝে মাঝে তারা কিছু বক্তব্য প্রচার করেন বা স্বীকৃতি আদায়ে জোর প্রচেষ্টা চলছে বলে উল্লেখ করেন। যদিও বিচ্ছিন্ন কিছু উদ্যোগ ছাড়া তারা কী কাজ করছেন বা করেছেন তার কোনও বিবরণ আমরা জানতে পারি না। ব্রাসেলসে আমাদের রাষ্ট্রদূত মাহবুব হাসান সালেহ ছাড়া আর কোনও রাষ্ট্রদূত উদ্যোগ নিয়ে বিশেষ দিন উদযাপন ছাড়া ১৯৭১ সালের গণহত্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কোনও সেমিনার-আলোচনা বা মত বিনিময় করেছেন সেসবের উল্লেখযোগ্য উদাহরণ আমাদের জানা নেই। যা হয়েছে বেশিরভাগই দেশে-বিদেশে বেসরকারি পর্যায়ে।

২৪ এপ্রিল ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব জেনোসাইড স্কলার্স (আইএজিএস)-এর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে যে সাম্প্রতিক সময়ে অনুষ্ঠিত সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে ‘বাংলাদেশ রেজ্যুলিউশন’ গৃহীত হয়েছে যার মাধ্যমে আইএজিএস স্বীকৃতি দিচ্ছে যে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে জেনোসাইড সংঘটিত হয়েছে। কিন্তু পররাষ্ট্র দফতরের প্রেস রিলিজে এই ভোট তথ্যের কোনও উল্লেখ নেই।

কে এই আয়োজনের প্রস্তাবক আর কীভাবে ভোট নেওয়া হলো, সেখানে আর কী কী ঘটনা, প্রতিবন্ধকতা ছিল যেসব কাটিয়ে বাংলাদেশের গণহত্যার স্বীকৃতি বিশ্বের সব নামকরা স্কলারদের মাধ্যমে আদায় হলো দুনিয়ার সবাইকে সেসব তথ্য জানাবার দায় ওই পররাষ্ট্র দফতরেরই।

এখানে এই জয়ের প্রক্রিয়ার পটভূমি সকলের জানা দরকার। স্পেনের বার্সিলোনায় ২০২১ সালের ১৮ থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব জেনোসাইড স্কলার্স (আইএজিএস)-এর দ্বিবার্ষিক কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সে বছর ছিল বাংলাদেশের জন্মের পঞ্চাশতম বছর। তৌহিদ রেজা নূর সেই কনফারেন্সে ‘Fifty Years of Bangladesh Genocide and Aftermaths’ শীর্ষক এক প্যানেল সেশনের প্রস্তাব করেছিল। সে সেশনে তৌহিদ বাংলাদেশে সংঘটিত জেনোসাইডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বিষয়ে উপস্থাপন করে এবং এই আইএজিএস যেন বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে যে জেনোসাইডের ঘটনা ঘটেছে তার স্বীকৃতি দিয়ে এই কনফারেন্স থেকে একটি রেজ্যুলিউশন প্রকাশ করে সে দাবি উত্থাপন করে। আইএজিএস-এর বিজনেস মিটিং-এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তাঁরা গঠনতন্ত্র মোতাবেক ড্রাফট রেজ্যুলিউশন জমা দিতে পরামর্শ দেন। তৌহিদের কাছ থেকেই তখন জানতে পারি, সে প্রস্তাবকে সমর্থন করেন কয়েকজন জেনোসাইড বিশেষজ্ঞ যাদের মধ্যে অন্যতম অধ্যাপক গ্রেগরি স্ট্যান্টন, ড. হেলেন জার্ভিস, অধ্যাপক এডাম জোন্স, জনাব মফিদুল হক, অধ্যাপক এলিসা ভন জোয়েডেন-ফর্জে, ড. শাহরিয়ার ইসলাম এবং জনাব ইমরান আজাদ। রেজ্যুলিউশন ড্রাফট করার ক্ষেত্রে এদেরও ভূমিকা আছে। পরে ২ আগস্ট ২০২১ তারিখে বাংলাদেশের সকল শহীদদের পক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে আইএজিএস-এ ড্রাফট রেজ্যুলিউশনটি তৌহিদ রেজা নূরের মাধ্যমে জমা দেওয়া হয়।

সংযুক্তি হিসেবে সেকেন্ডারি বিভিন্ন দলিলের তালিকা দেওয়া হয়। রেজ্যুলিউশন কমিটি জমাকৃত সকল তথ্য যাচাই-বাছাই করে সেগুলো গ্রহণ করে নির্বাহী কমিটিকে সদস্যদের ভোট সংগ্রহের জন্য পাঠান।

নানা প্রক্রিয়া ও দীর্ঘ যাচাই-বাছাই শেষে ২৩ মার্চ ২০২৩ তারিখে এই রেজ্যুলিউশন ভোটের জন্য সদস্যদের কাছে বিতরণ করা হয়। এক মাস ভোট গ্রহণ শেষে ২৪ এপ্রিল আইএজিএস ভোটের ফলাফল প্রকাশ করে। দেখা যায় মোট ভোট পড়েছে ২১৮টি, এর মধ্যে ২০৮জন ভোট দিয়েছেন পক্ষে, ৪জন ভোট দিয়েছেন বিপক্ষে, এবং ৬ জন ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিলেন। ফলে প্রদত্ত ভোটের শতকরা ৯৫ ভাগ ভোট পড়েছে বাংলাদেশ রেজ্যুলিউশনের পক্ষে যা আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হয়েছে।

ফলে ২০২১-এর জুলাই থেকে শুরু হয়েছিল যে উদ্যোগ তা নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে ইতিবাচক স্বীকৃতি পেলো। এই প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী জেনোসাইড এক্সপার্ট ও স্কলারদের প্রতিষ্ঠান আইএজিএস দ্বিধাহীনভাবে ঘোষণা দিচ্ছে যে, ‘১৯৭১ সালে বাংলাদেশে যে নারকীয়তা সংঘটিত হয়েছিল তা ছিল মূলত জেনোসাইড’। বাংলাদেশে সংঘটিত জেনোসাইডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের ক্ষেত্রে এই সমর্থন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক অর্জন।

এখন আমাদের পররাষ্ট্র দফতরের কাজ হলো আইএজিএস থেকে সকল স্কলার্সের তালিকা সংগ্রহ করে যারা আমাদের ভোট দিয়েছে তাদের ধন্যবাদ জানানো ও যারা দেয়নি বা বিপক্ষে ছিল তাদের বুঝানোর দায়িত্ব নেওয়া। এই স্কলার্সগণ যেসব দেশের নাগরিক সেসব দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ করা ও যাতে বাংলাদেশে গণহত্যা বিষয়ে জাতিসংঘে সর্বসম্মত একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সেই বিষয়ে বিশ্ব দরবারে তদবির করা। 

আমাদের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এই সংবাদ জেনে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সাথে আলাপ করে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেছেন, ‘এই স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের পথে আমাদের আরও এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে। এটি আমাদের বড় অর্জন। এই অর্জনকে সঙ্গে নিয়ে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও জাতিসংঘের স্বীকৃতি আদায়ের জন্য আমাদের ধারাবাহিক কর্মপ্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।’

তিনি বাংলাদেশ জেনোসাইডের স্বীকৃতি আদায়ের আন্দোলনে জড়িত বিশেষজ্ঞ, গবেষক, অ্যাক্টিভিস্টদের অভিনন্দন জানান। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বাংলাদেশের জনগণ, সরকার এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আইএজিএস-এর এ স্বীকৃতির জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘অনেক দেরিতে হলেও তারা অনুধাবন করতে পেরেছেন যে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের ওপর কী নির্বিচার হত্যাকাণ্ড ও জেনোসাইড সংঘটিত হয়েছে। এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই এবং আশা করি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের ক্ষেত্রেও তাদের এই সমর্থন ও প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’

এই বক্তব্য থেকেও আমাদের পররাষ্ট্র দফতর শিখে নিতে পারে এইরকম একটি অর্জনে কী জানাতে হয় ও কীভাবে জানাতে হয়। আর বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় আন্দোলন ইতিহাসের এই পর্বে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যে আশীর্বাদ, অনুপ্রেরণা ও সার্বিক সমর্থন ছিল তা-ও আমাদের জানা থাকতে হবে।

লেখক: পরিচালক, আমাদের গ্রাম

ই-মেইল: [email protected]          

 

/এসএএস/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
ইট-পাথরের নগরীতে একটুখানি প্রশান্তির খোঁজে
ইট-পাথরের নগরীতে একটুখানি প্রশান্তির খোঁজে
তাইওয়ানের কাছে আবারও সামরিক কার্যকলাপ চালালো চীন
তাইওয়ানের কাছে আবারও সামরিক কার্যকলাপ চালালো চীন
বাগেরহাটে ট্রাকচাপায় দুই ভাইসহ ৩ ভ্যানযাত্রী নিহত
বাগেরহাটে ট্রাকচাপায় দুই ভাইসহ ৩ ভ্যানযাত্রী নিহত
শিল্পীদের সমস্যাগুলো সংসদে চিহ্নিত করতে চাই: ফেরদৌস
শিল্পীদের সমস্যাগুলো সংসদে চিহ্নিত করতে চাই: ফেরদৌস
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ