X
বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫
২৫ বৈশাখ ১৪৩২

বিশ্ব জনসংখ্যার গতি-প্রকৃতি

ড. হাসিনুর রহমান খান
১১ জুলাই ২০২৪, ২০:০৭আপডেট : ১১ জুলাই ২০২৪, ২০:০৭

প্রতি বছর ১১ জুলাই বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালিত হয়। এই দিনটি আমাদের পৃথিবীর জনসংখ্যা এবং এর সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং পরিবেশগত প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ। বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালনের পেছনের কারণটি ১৯৮৯ সালে জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি (UNDP) দ্বারা শুরু হয়েছিল। ১৯৮৭ সালের ১১ জুলাই পৃথিবীর জনসংখ্যা ৫০০ কোটি পৌঁছায়। এই বিশাল মাইলফলকটি বিশ্বের জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধি এবং এর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তাকে সামনে নিয়ে আসে।

জাতিসংঘের উদ্যোগে ১৯৮৯ সালে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা প্রথমবার ১৯৯০ সালে পালিত হয়।

বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালনের উদ্দেশ্য হলো জনসংখ্যার বৃদ্ধি, বণ্টন এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো। এই দিবসটি বিশেষভাবে পরিবার পরিকল্পনা, লিঙ্গ-সমতা, দারিদ্র্য দূরীকরণ, মাতৃস্বাস্থ্য এবং মানবাধিকার বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি শুধু একটি সংখ্যা নয়, বরং এটি সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং পরিবেশগত ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।

২০২৩ সালে, পৃথিবীর জনসংখ্যা ৮০০ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। বর্তমানে তা প্রায় ৮১০ কোটির মতো। বিভিন্ন দেশ এবং মহাদেশে জনসংখ্যার বৃদ্ধি এবং হ্রাসের ধরন বিভিন্ন রকম। এশিয়া এবং আফ্রিকা মহাদেশে জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যেখানে ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কম। জাতিসংঘের জনসংখ্যা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০৫০ সালের মধ্যে পৃথিবীর জনসংখ্যা ৯৭০ কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে। এই বৃদ্ধির প্রায় ৫০ শতাংশ এশিয়া এবং আফ্রিকার দেশগুলোতে হতে পারে।

এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোতে মূলত উচ্চ জন্মহার এবং কম মৃত্যুহারের কারণে জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নাইজেরিয়ার জনসংখ্যা ২০৫০ সালের মধ্যে দ্বিগুণ হয়ে যেতে পারে। বাংলাদেশে বর্তমানে জনসংখ্যা প্রায় ১৭০ মিলিয়ন। জাতিসংঘের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্রায় ১৯০ মিলিয়ন ছাড়িয়ে যেতে পারে। ভারতের বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ১.৪ বিলিয়ন।

২০৫০ সালের মধ্যে ভারতের জনসংখ্যা প্রায় ১.৬ বিলিয়ন হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর কিছু দিনের মধ্যেই ভারত পৃথিবীর সবচেয়ে জনবহুল দেশ হয়ে উঠবে, চীনকে অতিক্রম করে। কেননা চীনের বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ১.৪৩ বিলিয়ন।

তবে চীনে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কম এবং বয়স্ক জনসংখ্যার সংখ্যা বাড়ছে। ২০৫০ সালের মধ্যে চীনের জনসংখ্যা কমে প্রায় ১.৩ বিলিয়ন হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর ফলে চীনের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক কাঠামোতে পরিবর্তন আসতে পারে। পাকিস্তানের বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ২৩৫ মিলিয়ন।  ২০৫০ সালের মধ্যে পাকিস্তানের জনসংখ্যা প্রায় ৩৮০ মিলিয়ন ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার দেশগুলোতে জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার কম। ইউরোপের বেশিরভাগ দেশে জন্মহার কম এবং মৃত্যুর হার বেশি। ইউরোপিয়ান কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০৫০ সালের মধ্যে ইউরোপের জনসংখ্যা প্রায় ৪৫০ মিলিয়ন থেকে ৪০০ মিলিয়নে হ্রাস পেতে পারে। যেমন, জার্মানির জন্মহার প্রতি মহিলার জন্য ১.৫ শিশু, যা জনসংখ্যার প্রয়োজনীয় স্থিতিশীলতার জন্য পর্যাপ্ত নয়।

ইউরোপের দেশে গড় আয়ু বৃদ্ধির ফলে বয়স্ক জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইউরোপিয়ান কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০৫০ সালের মধ্যে ইউরোপের জনসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশ বয়স্ক হবে, যা বর্তমানে প্রায় ২০ শতাংশ। এই বৃদ্ধির ফলে স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পাবে। বয়স্ক জনসংখ্যার বৃদ্ধির কারণে কর্মক্ষম জনসংখ্যার সংখ্যা কমছে। এটি অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতা এবং পেনশন সিস্টেমের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। ইউরোপিয়ান কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০৫০ সালের মধ্যে ইউরোপের কর্মক্ষম জনসংখ্যা প্রায় ৪৫ মিলিয়ন কমতে পারে।

উত্তর আমেরিকার দেশগুলোতেও জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কম। যুক্তরাষ্ট্রের জন্মহার প্রতি মহিলার জন্য ১.৭ শিশু (টিএফআর), যা জনসংখ্যার প্রয়োজনীয় স্থিতিশীলতার জন্য পর্যাপ্ত নয়। যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় অভিবাসনের কারণে জনসংখ্যার বৃদ্ধি কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে। অভিবাসনের ফলে কর্মক্ষম জনসংখ্যার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক হচ্ছে। উত্তর আমেরিকার দেশগুলোতেও বয়স্ক জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে জনসংখ্যার প্রায় ১৬ শতাংশ বয়স্ক, যা ২০৫০ সালের মধ্যে ২২ শতাংশ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যার একটি বড় অংশ শহরে বাস করছে এবং এই ধারা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। ২০৫০ সালের মধ্যে, বিশ্বের প্রায় ৬৮ শতাংশ জনসংখ্যা শহরে বাস করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শহুরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা এবং অবকাঠামোর ওপর চাপ বাড়বে। বিশ্বব্যাপী বর্তমানে শহুরে জনসংখ্যা প্রায় ৫৬ শতাংশ, যা প্রায় ৪.৪ বিলিয়ন। প্রতিদিন প্রায় ২ লাখ মানুষ শহরে বসতি স্থাপন করছে। বিশেষ করে এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশে শহুরে জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। চীনের শহরগুলোতে প্রতি বছর প্রায় ২ কোটি মানুষ যুক্ত হচ্ছে।

জাতিসংঘের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০৫০ সালের মধ্যে শহুরে জনসংখ্যা প্রায় ৬৮ শতাংশ হবে। এর ফলে শহরের অবকাঠামো এবং পরিষেবার ওপর বিশাল চাপ পড়বে। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশে এই চাপ আরও বেশি হতে পারে, যেখানে শহরের পরিষেবাগুলো ইতোমধ্যে সীমিত। শহুরে জনসংখ্যার বৃদ্ধির ফলে আবাসনের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। McKinsey Global Institute-এর তথ্যানুসারে, ২০৫০ সালের মধ্যে শহরে প্রায় ৩ কোটি নতুন আবাসনের প্রয়োজন হবে। এই চাহিদা পূরণের জন্য বড়মাপের আবাসন প্রকল্প এবং উন্নত নগর পরিকল্পনার প্রয়োজন পড়বে।

শহরে বসবাসকারী জনসংখ্যার বৃদ্ধির ফলে স্বাস্থ্যসেবা ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ তৈরি হচ্ছে। WHO-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, শহুরে এলাকায় স্বাস্থ্যসেবার চাহিদা পূরণ করতে হলে আরও হাসপাতাল, ক্লিনিক এবং স্বাস্থ্যকর্মীর প্রয়োজন হবে। বিশেষ করে, মহামারি ও সংক্রামক রোগের সময় এই চাহিদা আরও বৃদ্ধি পায়। সাম্প্রতিক করোনা অতিমারির ক্ষেত্রেও এমনটি দেখা গেছে।

শহুরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে পরিবহন এবং অবকাঠামো ক্ষেত্রে চাপ বাড়ছে। World Bank-এর তথ্য অনুসারে, শহরগুলোতে যানজট, বায়ুদূষণ এবং পানির সংকট বৃদ্ধি পাচ্ছে। উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা এবং টেকসই অবকাঠামো পরিকল্পনার মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে হবে।

জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবও বাড়বে। জলবায়ু পরিবর্তন জনসংখ্যার বাসস্থান এবং সম্পদের ওপর প্রভাব ফেলবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সমুদ্রের স্তর বৃদ্ধি এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে কৃষি জমি হ্রাস পেতে পারে। FAO-এর তথ্য অনুসারে, ২০৫০ সালের মধ্যে খাদ্য উৎপাদন প্রায় ১০ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে, যা খাদ্য নিরাপত্তার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশে খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দারিদ্র্য ও অপুষ্টি সমস্যা বৃদ্ধি পেতে পারে।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন বন্যা, খরা এবং ঝড়ের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। UNEP-এর তথ্য অনুসারে, প্রতি বছর প্রায় ২ কোটি মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বাসস্থান হারায়। এর ফলে অভিবাসন এবং মানবিক সংকট বৃদ্ধি পায়। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে জনস্বাস্থ্যের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। WHO-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে তাপমাত্রাজনিত রোগ, যেমন- হিটস্ট্রোক ও ডিহাইড্রেশন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পানিবাহিত ও  মশাবাহিত রোগ, যেমন- ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

অধিক জনসংখ্যার কারণে খাদ্য চাহিদা বৃদ্ধি পায়, যা খাদ্য নিরাপত্তা এবং খাদ্যের মানের ওপর প্রভাব ফেলে। কৃষি জমির সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাকৃতিক সম্পদের অপর্যাপ্ততার কারণে খাদ্য উৎপাদন কমে যেতে পারে। এর ফলে খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দারিদ্র্য ও অপুষ্টির সমস্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।

অধিক জনসংখ্যার কারণে পানিসম্পদের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। এর ফলে পানি সংকট, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর হ্রাস এবং জলাশয়গুলোর দূষণ বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশে এই সমস্যা গুরুতর হয়ে ওঠে, যেখানে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহের ব্যবস্থা নেই।

জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে সামাজিক সমস্যাগুলোর বৃদ্ধি ঘটে। শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। অধিক জনসংখ্যার কারণে গৃহহীনতা, অপরাধ এবং সামাজিক অস্থিরতা বাড়তে পারে। বিশেষ করে, উন্নয়নশীল দেশে এই সমস্যাগুলো আরও গুরুতর হয়ে দেখা দিতে পারে।

আধুনিক চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রধান কারণগুলোর একটি। শিশুর মৃত্যুর হার কমে যাওয়া এবং জীবনের গড় আয়ু বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভ্যাকসিন, উন্নত চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্য সচেতনতার ফলে বহু রোগের প্রকোপ কমেছে। শিক্ষার প্রসার এবং সচেতনতা বৃদ্ধির কারণে পরিবার পরিকল্পনা এবং জন্মনিয়ন্ত্রণে মানুষ সচেতন হচ্ছে। ফলে অনেক দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। তবে অনেক উন্নয়নশীল দেশে এখনও সচেতনতার অভাব রয়েছে, যার ফলে সেখানে জনসংখ্যা বৃদ্ধি বেশি।

আন্তর্জাতিক অভিবাসনও জনসংখ্যা পরিবর্তনের একটি বড় কারণ। উন্নত জীবনযাত্রার আশায় মানুষ এক দেশ থেকে অন্য দেশে স্থানান্তরিত হচ্ছে, যা বিভিন্ন দেশের জনসংখ্যা পরিবর্তনের কারণ। অনেক উন্নয়নশীল দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নের কারণে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যখন একটি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা উন্নত হয়, তখন স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়, যা জনসংখ্যার বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়।

কিছু দেশে সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কারণেও জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বেশি সন্তান ধারণ করা একটি সাধারণ প্রথা। সেখানে সন্তানদের ভবিষ্যতে আয়ের উৎস হিসেবে দেখা হয় এবং পরিবারের আয় বৃদ্ধি পায়। সে কারণে কৃষিনির্ভর এবং গ্রামীণ এলাকাগুলোতেও জনসংখ্যা বৃদ্ধি বেশি। সেখানে শ্রমিকের প্রয়োজন বেশি হওয়ায় পরিবারগুলো বেশি সন্তান ধারণ করে। এছাড়া, গ্রামীণ এলাকায় পরিবার পরিকল্পনায় সচেতনতা কম থাকায় জনসংখ্যা বৃদ্ধি দ্রুত ঘটে।

বিশ্ব জনসংখ্যা পরিস্থিতি এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন একটি জটিল এবং গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে খাদ্য নিরাপত্তা, পানি সংকট, স্বাস্থ্যসেবা, সামাজিক সমস্যাসহ নানা সমস্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। শহুরে জনসংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধির ফলে আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা এবং অবকাঠামোর ওপর চাপ বাড়ছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবও বাড়ছে, যা পরিবেশ এবং জনস্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে শিক্ষার মান এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ কমছে। সেজন্যে একমাত্র সঠিক পরিকল্পনা, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবা খাতে বিনিয়োগ এবং পরিবেশ সংরক্ষণের মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করা সম্ভব। আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং উদ্যোগ একটি উন্নত ও স্থিতিশীল ভবিষ্যৎ এই ধরিত্রীর বুকে গড়ে তুলতে সহায়ক হতে পারে। বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস আমাদের সবাইকে যেন এই চ্যালেঞ্জ ও সুযোগগুলোর প্রতি সচেতন করে এবং সম্মিলিতভাবে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করে, এই প্রত্যাশাই থাকলো।

লেখক:  অধ্যাপক, ফলিত পরিসংখ্যান এবং ডাটা সায়েন্স, পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
E-mail: [email protected]

/এসএএস/এমওএফ/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
‘আবদুল হামিদকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে’
‘আবদুল হামিদকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে’
আ.লীগের বিষয়ে আজ রাতেই ফয়সালা হবে: নাহিদ ইসলাম
আ.লীগের বিষয়ে আজ রাতেই ফয়সালা হবে: নাহিদ ইসলাম
এখন সময় আঙুল বাঁকা করার: সারজিস আলম
এখন সময় আঙুল বাঁকা করার: সারজিস আলম
করিডরের সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকার একা নিতে পারে না: সারজিস আলম
করিডরের সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকার একা নিতে পারে না: সারজিস আলম
সর্বশেষসর্বাধিক